Pages

Saturday, 22 December 2018

গলা খুসখুস করলে কি করতে পারি ?




‘খক খক, খুক খুক’ ক্লাসে বা অফিসে বসে কাশছেন আপনি অনবরত। আপনার কাশির শব্দে তাকিয়ে আছে আপনার দিকে সবাই। কি বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই না পড়েছেন আপনি! শীত ও বসন্তের এই সময়টাতে অধিকাংশ মানুষই খুসখুসে কাশির যন্ত্রণায় ভোগেন। কারণে অকারণে শুকনো কফের থেকে কাশি ওঠে কিছুক্ষণ পর পর।


 খুসখুসে কাশির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় আছে । ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করেই কমিয়ে ফেলা সম্ভব খুসখুসে কাশি।

-গরম বাষ্প শ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করলে কাশি অনেকটাই তরল হয়ে আসবে এবং আরাম মিলবে। হালকা গরম লবণ পানি দিয়ে গার্গল করলেও উপকার হবে।

- ঠান্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করুন।

-প্রাচীনকাল থেকেই গলা খুশখুসে ভাব দূর করতে ব্যবহার করা হয় আদা চা। ২ কাপ জলে আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে সামান্য মধু মিশিয়ে পান করলে খুশখুসে ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বেশ সহজেই। কারণ আদা মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান গলার গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

-প্রচুর জল পান করুন। প্রতিবার হালকা গরম জল খাওয়ার চেষ্টা করুন। দিনে অন্তত ১২ গ্লাস হালকা গরম জল পান করলে খুসখুসে কাশি কিছুটা কমে যায়।

-রাতে বিরক্তিকর কাশি থেকে বাঁচতে একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করুন, শোবার আগে একটু গার্গল করুন।

-খুসখুসে কাশির উৎপাত দেখা দিলে ধূমপান ছেড়ে দিন। ধূমপান করলে কাশি বাড়ে। তাই কাশি কমাতে ধূমপান ছাড়ুন এবং ধূমপায়ীদেরকে এড়িয়ে চলুন।

-কলা একটি নন-অ্যাসিডিক খাবার যা গলা খুশখুসে ভাব কমাতে বিশেষ ভাবে কার্যকরী। এছাড়াও কলা একটি লো গ্লাইসেমিক খাবার যা ঠাণ্ডা-সর্দি ভাব কমায়।

-কুসুম কুসুম গরম পানি পান করা ভালো। হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করা উচিত।

-প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরা। তীব্র শীতের সময় কান-ঢাকা টুপি পরা এবং গলায় মাফলার ব্যবহার করা ভালো।

-সমপরিমাণ লেবুর রস এ মধুর মিশ্রন গলার ভেতরের ইনফ্লেমেশন কমায় এবং ঠাণ্ডা লেগে গলার ভেতর সরু হয়ে আসার ফলে যে সমস্যা তৈরি হয় তা দূর করতে সহায়তা করে।

-ঘরে মশার ওষুধ কিংবা এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করবেন না। খুসখুসে কাশি বেড়ে যেতে পারে এগুলোর কারণে।

-নাকের ভিতরে হালকা বাম ব্যবহার করতে পারেন। এটি নাকের পথকে পরিষ্কার করে কাশি কমাতে সহায়তা করবে।

--বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই, বিশেষ করে সঙ্গে জ্বর না থাকলে। চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিহিস্টামিন বা মনটিলুকাস্ট জাতীয় ওষুধ খাওয়া যায়। এগুলো গলা বা শ্বাসনালিতে কাশি উৎপাদনকারী রাসায়নিকের পরিমাণ কমাবে, শ্বাসনালিকে প্রসারিত করবে। ফলে জমে থাকা কফ বেরিয়ে আসতে পারবে। প্রচলিত কফ সিরাপ কাশি আরও শুষ্ক করে দিতে পারে।

-প্রতিদিন চারটি তুলসি পাতা নিয়ে, তার সাথে মধু মিশিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিন। চায়ের সাথে তুলসি পাতা মিশিয়েও খাওয়া যায়। তুলসী পাতা দ্রুত খুসখুসে কাশি নিরাময়ে সহায়ক।


-প্রতিদিন হালকা গরম জলে স্নান করুন। এতে শুকনা কফ ও খুসখুসে কাশির উপদ্রব কমে যাবে।

-অতিরিক্ত ঘাম যেনো না হয় সেটা খেয়াল করা। বেশি ঘেমে গেলে ভেজা কাপড় দিয়ে ঘাম মুছে ফেলতে হবে।

-শুষ্ক কাশিতে প্রচুর পানি পান করতে হয়। এবং অবশ্যই সেই পানি হালকা গরম হতে হবে। সারাদিনই অল্প অল্প করে গরম পানি পান করলে, খুসখুসেজাতীয় কাশি দূর হয়ে যাবে। দিনে অন্তত ১২ গ্লাস হালকা গরম পানি পান করুন। কাশি থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যাবে।

-ধুলাবালি, ধূমপান এড়িয়ে চলা। এর জন্য মাস্ক ব্যবহার করা।

-ঠাণ্ডা লেগে গলায় ব্যথা হওয়া অনেক স্বাভাবিক ঘটনা। এই সমস্যা দূর করতে নেশ সহায়তা করে ডিমের সাদা অংশ। কারণ ডিমের সাদা অংশ গলার ভেতরের গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ইনফ্লেমেশন দূর করে।

-ঘরের দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ না রেখে মুক্ত ও নির্মল বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা।

-গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। বিশেষ করে শীতকালীন এই সকল সাধারণ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সব চাইতে ভালো সবজি হচ্ছে এই গাজর। গাজরের ভিটামিন ও মিনারেলস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যার ফলে সর্দি-ঠাণ্ডা ও কাশি থেকে মুক্তির জন্য আমাদের দেহই কাজ করে থাকে। তবে সর্দি-ঠাণ্ডা ও কাশির সময় কাঁচা না খেয়ে সেদ্ধ করা গাজর খাওয়া উচিত।

-হাত ধোয়ার অভ্যাস করা। বিশেষ করে চোখ বা নাক মোছার পরপর হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে।

-প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। মধু খুসখুসে কাশি কমাতে সাহায্য করে।


Saturday, 15 December 2018

মানবসভ্যতার ইতিহাসের কতগুলি অন্যতম রহস্য ----

কিং আর্থার ---

কিং আর্থার, পাথরের মধ্যে একটি তরোয়াল, তার বিশ্বস্ত যাদুকর, মেরিলিন এবং নাইটসের গোলাকার টেবিল - স্টাফ কিংবদন্তি এবং পৌরাণিক কাহিনীগুলি তৈরি করা হয়েছে। স্পষ্টতই, পুরো কিং আর্থার গল্পটি ছিল এমন একটি ফ্যাব্রিকেশন যা ইংরেজ সৈন্যদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য তৈরি হয়েছিল।

পৌরাণিক কাহিনী বিভিন্ন সাহিত্য উত্স থেকে উদ্ভূত, যা আর্থারকে রাজা হিসাবে সমাদৃত করে, যিনি স্যাক্সনের উপর বিজয় অর্জন করেছিলেন এবং 6 ষ্ঠ শতাব্দীতে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে এবং গৌলের উপর শাসক সাম্রাজ্য সৃষ্টি করেছিলেন।


যদিও এমন কোনও মানুষের সত্যিকারের প্রমাণ নেই তবে ঐতিহাসিকরা এই বিষয়ে বিতর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন। দ্বিতীয় শতাব্দীতে বসবাসকারী রোমান কমান্ডার লুসিয়াস আর্টরিয়িয়াস কাস্তাসের সাথে বেশিরভাগ মিল রয়েছে, যার অর্থ আর্থার হয়তো এক যৌথ চরিত্র হতে পারে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। রাজা আর্থার একটি কল্পিত সৃষ্টিকর্তা হিসাবে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হলেও , এখনও অন্যথায় তর্ক করে এমন অনেক লোক রয়েছে।


স্টোনহেঞ্জ --


স্টোনহেঞ্জ  ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের স্যালিসবারি প্লেইন-এর সবথেকে সুন্দর ও আধ্যাত্মিক গৌরব। এই সাইটটিতে অসংখ্য খোদাইকৃত পাথর রয়েছে যা প্রতিটি ছয় টন ওজনের এবং একে অপরের উপরে স্ট্যাক করা হয়।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা নিশ্চিত করেছেন যে প্রস্তর স্মৃতিস্তম্ভটি ২500-3000 খ্রিস্টপূর্বাব্দে এবং এটি বিশ্বাস করে যে এটি নিওলিথিক অধিবাসীদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।


স্টোনহেনের উদ্দেশ্য ও সৃষ্টি এখনও মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত এবং সর্বাধিক রহস্যের মধ্যে একটি। তত্ত্ব, এইভাবে, ব্যাপক। কেউ কেউ মনে করেন এটি হিমবাহ আন্দোলন বা মানুষের তৈরি অলৌকিক ঘটনা হতে পারে, অন্যেরা বিশ্বাস করে যে এটি বিদেশী আক্রমণের ভবিষ্যদ্বাণী করে বা এই স্থান অলৌকিক ক্ষমতা দ্বারা পূর্ণ।

সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব হল স্টোনহেন একটি কবরস্থান। এটি প্রমাণিত হয়েছিল ২008 সালে প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ দ্বারা, যখন এই সাইটটির চারপাশের সমাধিগুলির সাথে স্টোনহেনের সৃষ্টির আনুমানিক তারিখের সাথে মিলে যায়।



জ্যাক দ্য রিপার --


সব সময় সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী, জ্যাক দ্য রিপারের পরিচয় অপরাধের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ রহস্যের মধ্যে রয়ে গেছে।

আগস্ট ও নভেম্বর 1888 এর মাঝামাঝি লন্ডনে হোয়াইটচ্যাপেলের কমপক্ষে পাঁচ পতিতার নৃশংস হত্যাকান্ডের জন্য জ্যাক দ্য রিপারের হাত আছে এটা অনেক পরিষ্কার।


যাইহোক, অন্য সবকিছুর মধ্যে  - অপরাধীর প্রকৃত পরিচয়, শিকারের সংখ্যা, এবং পুলিশকে পাঠানো ধাধাঁ ময়  চিঠিগুলির পদ্ধতি - এতে বোঝা যায় একটি বিপজ্জনক মামলা।


অস্পষ্টতার কথা বিবেচনা করে, রয়েল পরিবার, বিখ্যাত লেখক লুইস ক্যারল এবং এমনকি একজন মহিলা জিল দ্য রিপারের উপর দোষারোপ সহ বিভিন্ন প্রচলিত তত্ত্ব রয়েছে। জ্যাক দ্য রিপার, যে  দারিদ্র্যসীমার যুগে, সমগ্র সাম্রাজ্যের ত্রাস হয়ে উদয় হয়েছিল , তা অস্বীকার করা কঠিন।


বগ বডি ---


বগ বডি বা বগ মানুষ, স্বাভাবিকভাবে সংরক্ষিত মানব দেহাবশেষ যা উত্তর ইউরোপের স্প্যাগগন বগ নামক স্থানে পাওয়া যায়। পচে যাওয়ার পরিবর্তে, বগ শরীরের সংরক্ষণ করার জন্য নিখুঁত অবস্থা সরবরাহ করে, ত্বক এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিকে তুলনামূলকভাবে অক্ষত রাখে।

হাজার হাজার পাওয়া মৃতদেহগুলি লৌহ যুগের বা আইরন এজ এর আগের হতে পারে এবং খুন হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ করে। এটি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে এরা পৌত্তলিক অনুষ্ঠান বা ফৌজদারি শাস্তি হিসাবে একটি বলিষ্ঠ শিকার।


তবে, হাজার হাজার মৃতদেহ কেন পোতা হয়েছিল তার কোনো প্রমাণ নেই, বিশেষত এগুলি জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ব্রিটেন, নেদারল্যান্ডস এবং ডেনমার্ক জুড়ে স্পোরাডিক্যালি পাওয়া গেছে।


হারিয়ে যাওয়া শহর অ্যাটলান্টিস --


আটলান্টিসের লস্ট সিটি বিশ্বের প্রাচীনতম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ রহস্য একটি। প্রাচীনকাল থেকেই, লোকেরা আটলান্টিসকে সনাক্ত করার চেষ্টা করছে, যা ভূমিকম্প বা সুনামির পরে ডুবে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গ্রীক দার্শনিক প্লেটো অ্যাটলান্টিসকে জিব্রাল্টার প্রণালীর কাছে অবস্থিত একটি বড় দ্বীপ হিসাবে বর্ণনা করেছেন, যা সবচেয়ে উন্নত সভ্যতার গড় এবং মহিমান্বিত প্রাসাদের সাথে অতুলনীয়। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে, আটলান্টিস অসাধারণ নাগরিক, একটি পোসিডন মন্দির এবং ঘন প্রাচীর এবং খাল দিয়ে ভরা ছিল।


আজ অবধি কেউই শহরটিকে জলের নিচে বা অন্য কোনও জায়গায় খুঁজে পেতে সক্ষম হয়নি - যদিও এটি তার সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে অসংখ্য তত্ত্বকে নিরুৎসাহিত করেনি।

অগণিত ঐতিহাসিক এবং অভিযাত্রীরা এই  দ্বীপ খুঁজে বের করার জন্য অভিযান চালানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকা (যেমন সম্প্রতি রিপোর্ট করা হয়েছে), গ্রিক দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি, অথবা অ্যান্টার্কটিকা কাছাকাছি, আটলান্টিস মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রহস্যের মধ্যে একটি রয়ে গেছে।




Saturday, 24 November 2018

রহস্যময় প্যারালাল ইউনিভার্স রহস্য :---

রহস্যময় প্যারালাল ইউনিভার্স বা সমান্তরাল একটি মহাবিশ্ব সত্যি কি সম্ভব ?

আজ প্যারালাল ইউনিভার্সের বৈজ্ঞনিক তত্ত্ব গুলি নিয়ে আজ আলোচনা করছি  আমার লেখাটি বিভিন্ন তথ্য থেকে সংগ্রহ করা।


মাল্টিভার্স একটি তত্ত্ব যাতে বলা হয় আমাদের মহাবিশ্ব একমাত্র নয়, অনেকগুলি মহাবিশ্ব একে অপরের সমান্তরালে অবস্থান করছে। মাল্টিভার্স তত্ত্বের মধ্যে এই স্বতন্ত্র মহাবিশ্বকে সমান্তরাল মহাবিশ্ব বা প্যারালাল ইউনিভার্স বলা হয়। বিভিন্ন তত্ত্ব বিভিন্ন ভাবে এই মাল্টিভার্স কে ব্যাখ্খা করেছে।

সমস্ত পদার্থবিজ্ঞানী অবশ্য বিশ্বাস করেন না যে এই মহাবিশ্ব বিদ্যমান। এমনকি অনেকেই বিশ্বাস করে যে এই সমান্তরাল মহাবিশ্বের সাথে যোগাযোগ করার সম্ভাবনা খুব এ কম।

লেভেল ১:

আপনি যদি যথেষ্ট দূরে এগিয়ে যান, আপনি বাড়িতেই  ফিরে আসবেন।

লেভেল 1 সমান্তরাল মহাবিশ্বের ধারণাটি মূলতঃ বলে যে মহাবিশ্ব স্থানটি এত বড় যে অবশ্যই সম্ভাবনার নিয়ম অনুযায়ী , কোনো না কোনো স্থানে ঠিক পৃথিবীর মতোই অন্য গ্রহ আছে । প্রকৃতপক্ষে, একটি অসীম মহাবিশ্বের অসংখ্য গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে এবং তাদের মধ্যে কিছুতে , যা ঘটবে সেগুলি আমাদের পৃথিবীর মতোই  হবে বা পৃথিবীতেও তার অনুরূপ ঘটনা ঘটবে। আমরা এই অন্যান্য মহাবিশ্বগুলি দেখতে পাই না কারণ আমাদের মহাজাগতিক দৃষ্টি আলোর গতি দ্বারা সীমিত - যা  চূড়ান্ত গতির  সীমা। আলো প্রায় 14 বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাংয়ের মুহূর্ত থেকে ভ্রমণ শুরু করে এবং তাই আমরা 14 বিলিয়ন আলোকবর্ষের চেয়ে বেশি কিছু দেখতে পাচ্ছি না (একটু বেশ হতে পারে , যেহেতু মহাকাশ প্রতিনিয়ত বাড়ছে)। মহাকাশের এই ভলিউমকে বা আকারকে  হাবল ভলিউম বলা হয় এবং এটি হলো  আমাদের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্ব।

লেভেল 1 সমান্তরাল মহাবিশ্বের অস্তিত্ব দুটি অনুমানের উপর নির্ভর করে:১.মহাবিশ্ব অসীম (বা কার্যত তাই)

 ২.
একটি অসীম মহাবিশ্বের মধ্যে, একটি হাবল ভলিউমের  প্রতিটি 
সম্ভাব্য কণার কনফিগারেশন একাধিক বার সঞ্চালিত হয়।
    লেভেল  1 সমান্তরাল মহাবিশ্ব বা প্যারালাল ইউনিভার্স  উপস্থিত থাকলে, এতে  পৌঁছানো কার্যত (কিন্তু সম্পূর্ণরূপে নয়) অসম্ভব। একটা ব্যাপার হলো , আমরা কোথায় এমন একটির  সন্ধান করব তা আমরা জানি না, কারণ সংজ্ঞা অনুসারে, লেভেল 1 সমান্তরাল মহাবিশ্ব এতদূর দূরে যে কোনও বার্তা তাদের কাছ থেকে আমাদের কাছে বা আমাদের কাছ থেকে তাদের কাছে আসতে পারে না। (মনে রাখবেন, আমরা কেবল আমাদের নিজের হাবল ভলিউমএর মধ্যে বার্তা আদান প্রদান করতে  পারি।)


লেভেল ২:

আপনি যদি যথেষ্ট দূরে এগিয়ে যান, আপনি একটি অবাক জগতে এসে পড়বেন 


একটি লেভেল ২ প্যারালাল ইউনিভার্স এ , মহাকাশের এলাকা গুলি স্ফীত এক ক্রমাগত বর্ধমান স্ফীত পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যায়। ব্রহ্মাণ্ড বা ইউনিভার্স  গুলির মধ্যে এই ক্রমাগত inflationary phase চলার কারণে, আমাদের এবং অন্যান্য মহাবিশ্বগুলির মধ্যের  স্থানটি আক্ষরিক অর্থে আলোর গতির চেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল হচ্ছে  এবং তাই তারা আমাদের নাগালের বাইরে।দুটি সম্ভাব্য তত্ত্ব লেভেল ২ প্যারালাল ইউনিভার্স বিশ্বাস করার কারণ উপস্থাপন করে বা যুক্তি দেয় :  এটর্নাল ইনফ্লেশন (eternal inflation) এবং  একপ্যারোটিক থিওরী (ekpyrotic theory) । এটর্নাল ইনফ্লেশনে , স্মরণ করিয়ে দেয় যে শুরুর মহাবিশ্বগুলির ভ্যাকুয়াম এনার্জি তে কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের (quantum fluctuations) কারণে চারিদিকে  buble বা বুদ্বুদের মতো ইউনিভার্স গুলির সৃষ্টি হয়েছিল, বিভিন্ন হারে তাদের ইনফ্লেশন স্টেজের মাধ্যমে বিস্তার পেয়েছে । এই মহাবিশ্বগুলির প্রাথমিক অবস্থা সর্বোচ্চ শক্তির স্তরে বিবেচনা করা হয়, যদিও কমপক্ষে একটি বৈকল্পিক, বিশৃঙ্খলার ইনফ্লেশনে, ভবিষ্যদ্বাণী করে যে প্রাথমিক অবস্থাটি যেকোনো শক্তি স্তর হিসাবে বিশৃঙ্খলার ভিত্তিতে নির্বাচিত হতে পারে, যার ফলাফল হয়তো সর্বাধিক হতে পারে না এবং ফলাফলগুলি একই হবে। 

এটর্নাল ইনফ্লেশন এ যা পাওয়া গাছে তার মানে  হলো যখন ইনফ্লেশন শুরু হয়, এটি কেবল একটি মহাবিশ্ব বা ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি করে না, বরং একটি অসীম সংখ্যক মহাবিশ্ব সৃষ্টি করে।এই মুহুর্তে, একমাত্র noninflationary মডেল যেটি  যে কোন ধরনের ওজন বহন করে, সেটি হলো  ekpyrotic মডেল, যা এত নতুন যে এটি এখনও বেশ দূরকল্পিত।ইকপিরটিক থিওরি অনুযায়ী, যদি মহাবিশ্ব এমন অঞ্চল হয় যা দুইটি brane  (an extended object analogous to the strings of string theory but having any number of dimensions rather than one dimension) এর সংঘর্ষের ফলে ঘটে তবে এর ফলে বেনগুলি আসলে একাধিক অবস্থানে সংঘর্ষ করতে পারে। ধরেনিন একটি চাদর দিয়ে বিছানার উপর ক্রমাগত ঝাড়ছেন বা বাড়ি মারছেন। চাদরটি শুধুমাত্র এক অবস্থানে বিছানা স্পর্শ করে না, বরং এটি একাধিক অবস্থানে স্পর্শ করে। যদি চাদর এর জায়গায় একটি ব্রেন হতো, তবে প্রতিটি সংঘর্ষ প্রতিটি নিজস্ব মহাবিশ্বের সঙ্গে তার নিজস্ব অবস্থা  তৈরি করবে।ব্রেনগুলি শুধুমাত্র এক জায়গায় সংঘর্ষ করেছে এমনটা  প্রত্যাশা করার কোন কারণ নেই, তাই এককপিটিক তত্ত্বটি অন্যান্য অবস্থানে অন্যান্য বিশ্ব রয়েছে এমনকি প্রসারিত হয়ে চলেছে এমন সম্ভাব্য সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে।

লেভেল ৩:

যদি তুমি কোনো  জায়গাতে  থেমে যাও , তবে তুমি তোমার মধ্যেই ঢুকে যাবে বা ধাক্কা খাবে।

একটি লেভেল ৩ সমান্তরাল মহাবিশ্ব হলো কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর  many worlds  interpretation (MWI) এর ফলস্বরূপ, যাতে প্রতিটি একক কোয়ান্টাম সম্ভাবনা  কোয়ান্টাম ওয়েভফাঙ্কশন এ  লুকিয়ে থাকে এবং কিছুটা প্রকৃত ক্ষেত্রে  প্রকৃত সম্ভাবনা যোগায়। যখন কোনো সাধারণ ব্যক্তি (বিশেষত একটি সায়েন্স ফিক্শন ফ্যান) একটি "সমান্তরাল মহাবিশ্বের" চিন্তা করে, সে সম্ভবত লেভেল 3 সমান্তরাল মহাবিশ্বের কথা ভাবছে।

লেভেল 3 সমান্তরাল মহাবিশ্ব অন্যদের থেকে আলাদা, কারণ তারা আমাদের নিজস্ব মহাবিশ্বের মতো একই স্থান এবং সময়ে অবস্থান করে তবু  আপনার কাছে এখনও সেখানে পৌঁছানো বা প্রবেশের কোন উপায় নেই। আপনি কোনও লেভেল 1 বা লেভেল ২ মহাবিশ্বের সাথে কখনই যোগাযোগ করতে পারেননি বা পারবেন না (আমরা ধরে নিচ্ছি ) কিন্তু আপনি প্রতিনিয়ত লেভেল ৩ ইউনিভার্সের সংস্পর্শে আছেন -- জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে, আপনি যে সিদ্ধান্তগুলি প্রতিনিয়ত নেন , সেগুলি  এখনকার "আপনি" ও অসংখ্য ভবিষ্যতের আপনিগুলির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে চলেছে, যা সব একে অপরের থেকে অজ্ঞাত।

যদিও আমরা মহাবিশ্ব "বিভক্ত" কথা বলি, তবুও এটি সঠিক নয়। একটি গাণিতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, শুধুমাত্র একটি ওয়েভফঙ্কশন আছে, এবং এটি সময়ের সাথে সাথে বিকশিত হয়। "The superpositions of  different universes all coexist simultaneously in the same  infinite-dimensional Hilbert space" এই পৃথক, সহস্রাব্দের ইউনিভার্সগুলি একে অপরের উপর প্রভাব বিস্তার করে, উদ্ভট কোয়ান্টাম আচরনের সৃষ্টি করে।চারটি ধরণের মহাবিশ্বের মধ্যে, লেভেল  3 প্যারালাল ইউনিভার্সের সরাসরি স্ট্রিং তত্ত্বের সাথে যোগাযোগ নেই।

লেভেল ৪:

রামধনুর ওপারে কোথাও, একটা জাদুকরী দুনিয়া আছে,

একটি লেভেল 4 সমান্তরাল মহাবিশ্ব হলো সবচে অদ্ভুত  স্থান (এবং সর্বাধিক বিতর্কিত), কারণ এটি আমাদের মহাবিশ্বের তুলনায় প্রকৃতির ভিন্ন গাণিতিক আইন অনুসরণ করে। সংক্ষেপে, যে কোনও মহাবিশ্ব যার সম্পর্কে পদার্থবিদরা  কাগজে কাজ করতে পারেন, গাণিতিক নীতির উপর ভিত্তি করে বিদ্যমান থাকবে এবং  যে কোনও মহাবিশ্ব যার গাণিতিকভাবে থাকার সম্ভাবনা বিদ্যমান।

অন্য কথায় এটি ঠিক permuations এবং combinations  এর মত। যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে এমন সম্ভাবনা / সবকিছু / থাকতে পারে।




সমান্তরাল মহাবিশ্ব, ঠিক আছে এই বাস্তবিকভাবে বোঝাই।


সমান্তরাল মহাবিশ্ব, এটির অস্তিত্ব কিভাবে আসে?
Schrödinger এর বিড়াল পরীক্ষা--
 এই গবেষণায়, স্ক্রোডিঙ্গার বাক্সে একটি বিড়াল রেখেছিলেন যার মধ্যে একটি বিষ ও ছিল এবং তারপর তিনি কিছু সময়ের জন্য বিড়ালটিকে বাক্স এ বন্ধ রেখেছিলেন। দুটি সম্ভাবনা ছিল, বিড়াল বিষ খেয়ে মরবে বা বিড়ালটি বিষ না খেলে জীবিত থাকবে। শ্রোডিংগার বলেন যে এই দুটি সম্ভাবনা বাক্স না খোলা পর্যন্ত একযোগে চলবে, তখন দুটি সম্ভাবনা একের মধ্যে মিলিত হবে এবং সেটিকে "ডিকোরেসেন্স" হিসাবে ডাকা হবে কিন্তু তারপর প্রশ্নটি উত্থাপিত হযে যে,  যদি উভয় সম্ভাবনা চলতে থাকে এবং মিল না হয়? যেন  উভয় সম্ভাবনা একযোগে চলমান! সুতরাং এইখানে সমান্তরাল মহাবিশ্বের অস্তিত্ব জানান দেয়!


তাই এখন আপনি মনে করতে পারেন যে প্রতি সেকেন্ডে একটি নতুন মহাবিশ্ব অসংখ্যবার তৈরি হচ্ছে, যেমন ধরুন আপনি একটি ঘরে প্রবেশ করেছেন এবং এখানে একটি চেয়ার এবং বিছানা রয়েছে, তাই আপনি বেডে বসবেন অথবা আপনি চেয়ারে বসবেন, যদি আপনি বিছানায় বসেন ধরে নিন যে বিছানাটি এতটা আরামদায়ক যে আপনি ঘুমাবেন, কিন্তু যদি আপনি চেয়ারে বসেন তবে আপনি নিজের মোবাইল ফোনে এমন একজন নতুন আকর্ষণীয় ব্যক্তির সাথে কথা বলতে পারেন যার সাথে আপনি ভবিষ্যতে সম্পর্কযুক্ত হবেন(সম্ভবত), তাই এখানে দুটি মহাবিশ্ব চলছে, যার মধ্যে একটিতে আপনি ঘুমিয়েছেন তাই আপনি সিঙ্গেল এবং অপরটিতে আপনি সম্পর্কে জড়িয়ে আছেন, আমি মাত্র দুটি সম্ভাবনার  উদাহরণ দিয়েছি কিন্তু প্রতি সেকেন্ডে অসংখ্য সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং এইভাবে সমান্তরাল মহাবিশ্ব কাজ করে। এটিও বলা হয়েছে যে আপনি যে জিনিসগুলি যা স্বপ্নে দেখেন তা হল অন্য কোনো  সমান্তরাল মহাবিশ্বের মধ্যে আপনার সাথে কী ঘটছে। সুতরাং আপনি যে বিছানায় ঘুমাচ্ছেন তখন অন্য মহাবিশ্বের মধ্যে কারো সাথে সম্পর্ক থাকার স্বপ্ন থাকতে পারে! (উদাহরণস্বরূপ)

কিছু -- মজার উদাহরণ হল -- আমরা মানুষরা যেমন এখন রাস্তায় চলতে চলতে পাখির বিষ্ঠা পড়লে বিরক্ত হয় পাখির দিকে ঢিল মারি , তেমনি হয়তো অন্য কোনো মহাবিশ্বে পাখিরা রাস্তায় হাটছে এবং মানুষের দিকে বিরক্ত হয়ে ঢিল ছুড়ে মারছে,
 আজ পৃথিবীতে যেমন মানুষরা রাজত্ব করছে তেমনি হয়তো অন্য বিশ্বের পৃথিবীতে পশুরা রাজত্ব করছে। 


যদি আপনি এই আকর্ষণীয় খুঁজে পান, এবং আরো পরিষ্কারভাবে বুঝতে চান আমি একটি সিনেমা  "coherent " সুপারিশ করব!


বলা হয় ভুত প্রেত এগুলি আর কিছুই না প্যারালাল ইউনিভার্স এর মধ্যে কোনো সময় interfare এর ফলে হয়।  

আবার আমরা অনেক সময় কোনো ঘটনার মধ্যে দিয়ে চলার সময় অনেক ক্ষেত্রেই মনে হয় যেন এবার কি হবে জানি বা ইটা যেন কোথায় দেখেছি বা জানতাম আসলে ইটা আমাদের এ সাথে ঘটেছে অন্য কোনো মহাবিশ্বের আমাদের সাথে। 

যখন নিউটন এবং হ্যালি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ধূমকেতুটি তারা দেখেছিল 76 বছর পরে ফিরে আসবে, এবং এটা ঘটেছিল, পৃথিবী এখন ভাবতে পেরে আনন্দিত হচ্ছে, কেবল সময়ের অপেক্ষা ছিল যে "ল অফ এভরিথিং " আবিষ্কার হবে এবং সফল ভবিষ্যৎবাণী করা সম্ভব হবে ।

আচ্ছা, ২0 শতকের এবং কোয়ান্টাম ফিজিক্সএর  অগ্রগতি আমাদের দেখায় যে মহাবিশ্বটি আরও বেশি অস্পষ্ট জিনিস। ডাবল স্লিট পরীক্ষায় দেখা যায় যে ঘটনাটির ফলাফল শুধুমাত্র তখনই জানা সম্ভব যখন একবার দেখা যাবে, ---হেইজনবার্গ এর কোয়ান্টাম অনিশ্চয়তা নীতি।



এছাড়া 11 মাত্রার মেমব্রেন থিওরি, দেখায় যে প্রায় অসীম সংখ্যক "মহাবিশ্ব " হতে পারে যেখানে কোনও ঘটনার সব রকমের সম্ভাব্য ফলাফল বিদ্যমান থাকতে পারে।
অবশ্যই ধারণাটি সুন্দর এবং সায়েন্স - ফিক্শন লেখকেরা টাইম ট্রাভেলারদের ওয়ার্মহোলের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থান ও সময়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন। এটা দারুন সব কল্পবিজ্ঞান গল্প তৈরী করে। 

অন্যান্য লোকেরা প্যারালাল ইউনিভার্সগুলিকে কল্পনা করে একটি জারের মধ্যে থাকা এক একটি চিনির বিস্কুটের মতো। কিন্তু যদি তা হয়, জারটি বা জারগুলি  আবার কিসের মধ্যে আছে , এবং সেটি বা কিসে? আমাদের "সমান্তরাল মহাবিশ্ব" বা "বহুবিধ" ধারণাটি বিবেচনা করা উচিত, যেমনটি কখনও কখনও বলা হয়, চিন্তাধারার পরীক্ষা হিসাবে এবং এমন কিছুই যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ক্ষতি করতে পারে না।


Sunday, 18 November 2018

রেপটিলিয়ান রহস্য--

****আগেই বলে রাখি আমার লেখা গুলো কেবল বিভিন্ন তথ্য থেকে  সংগ্রহ করা আমি নিজে এ বিষয়ে কোনো মতামত দিচ্ছি না.****

কে না  রহস্য ভালোবাসে বিশেষ করে তার বিষয় যদি রেপটিলিয়ানদের মানুষকে ক্রীতদাস বানানোর চক্রান্ত হয় ?

তারা আমাদের মধ্যে। রক্ত পান করা , মাংস খাওয়া, মানুষের  আকৃতি নেয়া বহিরাগত সরীসৃপ, তাদের ঠান্ডা রক্তের মস্তিষ্কের একমাত্র উদ্দেশ্য: মানব জাতিকে দাসত্ব করা। তারা আমাদের নেতা, আমাদের কর্পোরেট জগতের কর্তারা , আমাদের প্রিয় অস্কার বিজয়ী অভিনেতা এবং গ্র্যামি-বিজয়ী গায়ক, এবং তারা হলোকস্ট, ওকলাহোমা শহরের বোমা হামলা এবং 9/11 হামলার জন্য দায়ী। বিশবিখ্যাত ষড়যন্ত্র তত্ত্ববিদ ডেভিড ইকে এই তত্ত্ব টি  তুলে ধরেন। আমরা অবশ্যই রেপটিলিয়ার ওভারলোর্ডের কথা বলছি যা প্রাচীনকাল থেকেই মানবজাতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে।


এই তত্ত্বটির সাথে আলফা ড্রাকোনিস নক্ষত্র  থেকে আগত বহিরাগত ড্রাকো জাতিটি  জড়িত। মানুষের বিপরীতে, রেপটিলিয়ানরা এমন এক গোষ্ঠীর গোষ্ঠী, যাদের আবেগ বলে কিছু নেই  এবং খুব লজিক্যাল বা যুক্তিবান এবং আধিপত্যপূর্ণ। ফ্রীমেসন এবং ইলুমিনাতি মতো গোপন সমাজের পিছনে তাদের হাত আছে বলা হয়েছে এবং ইংল্যান্ডের রানী, বিল ক্লিনটন, বুশ পরিবার, বারাক ওবামা, জন কেরি, ব্র্যাড পিট, ম্যাডোনা, মেরিলিন মনরো এবং টম হেন্ডস তাদের পদে রয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে রাজকীয় পরিবারের সকল সদস্য মুকুটধারী রূপ পরিবর্তন করা সরীসৃপ ছাড়া আর কিছুই নয়। যদিও সমস্ত রেপটিলীয়রা রূপ পরিবর্তন  করে না নির্ভর করে তারা কোন প্রজাতির  তার উপর । রেপটিলিয়ানদের বেশিরভাগই মানুষ মস্তিস্ক পরিচালনা করে, যেখানে খুব কম স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব এবং স্বাধীনতা থাকে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন শীর্ষকর্তারা নিয়ন্ত্রণ রাখে।

আইক যুক্তি দেন যে এই মানবরূপী সরীসৃপদের সৃষ্টি করা হয়েছিল পৃথিবীর বহিরাগত প্রাচীন জাতির দ্বারা পরিচালিত সিক্রেট সোসাইটির নেটওয়ার্ক  ও পৃথিবীর মধ্য ও পূর্বের মানবজাতির মিলনের ফলে আইক তাদের "বাবিলনিয়ান ব্রাদারহুড" বলে। এই সিক্রেট সোসাইটি বা ব্রাদারহুডের সদস্যরা বেশিরভাগই পুরুষ। মিশন বোঝার জন্য তাদের সন্তানদের অল্প বয়স থেকেই প্রস্তুত করা হয়; যারা এটা বুঝতে ব্যর্থ হয় তাদের ত্যাগ করা হয়। সরীসৃপের রক্ত বইছে  43 টি আমেরিকান রাষ্ট্রপতি, তিনটি ব্রিটিশ এবং দুই কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন সুমেরীয় রাজা ও মিশরীয় ফারাও এবং কয়েকজন সেলিব্রিটিদের মধ্যে। মূল ব্রাদারহুডের রক্তবাহক  বংশধর হলো  রকফেলার, রথসচাইল্ড , ইউরোপীয় রাজকীয় এবং অভিজাত পরিবারগুলি , পূর্ব আমেরিকার প্রতিষ্ঠিত পরিবার এবং ব্রিটিশ হাউস অব উইন্ডসর। আইক  "প্রকৃত সরীসৃপ" হিসাবে 2001 সালে কুইন মাদার বা এলিজাবেথকে চিহ্নিত করেছিলেন।

ইলুমিটিটি, রাউন্ড টেবিল, কউন্সিল অব ফরেন রিলেশনস , ক্যাথাম হাউস, দ্য ট্রাইল্যাটারাল কমিশন, বিল্ডারবার্গ গ্রুপ, ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড  এবং ইউনাইটেড নেশনস, -- সমস্ত ব্রাদারহুডের তৈরি এবং নিয়ন্ত্রণ করা, সঙ্গে  মিডিয়া, সামরিকবাহিনী, সিআইএ, মোসাদ, বিজ্ঞানধর্ম ও ইন্টারনেট, লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্স। ব্রাদারহুডের শীর্ষস্থানে "গ্লোবাল এলিট" দাঁড়িয়ে, যা ইতিহাস জুড়ে ইলুমিনাতি হিসাবে পরিচিত এবং গ্লোবাল এলিটের শীর্ষে "কারাগারের ওয়ার্ডেন" দাঁড়িয়ে আছে। ব্রাদারহুডের লক্ষ্য - তাদের "যুগ যুগ ধরে করা  মহান কাজ" - বিশ্ব আধিপত্য এবং একটি মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করা ।

তত্ত্বটি নির্দেশ করে যে, রেপটিলিয়ানরা তাদের মূল্যবান ধাতুগুলির জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন। তারা বিশেষত "monatomic gold" এর জন্য আসে, এটি একটি খনিজ যা তার মতে, স্নায়ুতন্ত্রের বাহন ক্ষমতা দশ হাজার গুণ বৃদ্ধি করতে পারে। এটি খাবার পরে, সরীসৃপগুলি বিশাল পরিমাণে তথ্য প্রক্রিয়া করতে পারে, ট্রান্স ডাইমেশনাল ভ্রমনের গতি বাড়ায় এবং সরীসৃপ থেকে মানব আকারে রুপান্তরিত হতে পারে। তারা মানুষের ভয়, অপরাধবোধ, এবং আগ্রাসন, শক্তি কে ব্যবহার  করে.  "এইভাবে আমরা যুদ্ধের প্রতি  উত্সাহ পেয়েছি," আইক  1999 সালে লিখেছিলেন, "মানব গণহত্যা, প্রাণীদের গণহত্যা, যৌন বিকৃতি যা অত্যন্ত শক্তিশালী নেগেটিভ এনার্জি  তৈরি করে।"

আইক লিখেছেন যে, সরীসৃপগুলি মানুষের সাথে মিলন করেছিল, রাজনৈতিক কারণে, তারা সেই ধর্মীয় গ্রন্থের  বিতর্কিত, পতিত ফেরেশতাগণ, অথবা "গ্রিগরি", যারা  মহিলাদের সাথে মিলিত হয়েছেন। তাদের প্রথম সরীসৃপ-মানব সংকর, সম্ভবত এডাম , 200,000-300,000 বছর আগে সৃষ্ট  হয়েছিল। দ্বিতীয় প্রজনন প্রোগ্রাম ঘটানো হচ্ছিলো 30,000 বছর আগে এবং তৃতীয় 7,000 বছর আগে। যারা আজ পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা হলো  তৃতীয় প্রজনন কর্মসূচির রক্তবাহক , মানুষের তুলনায় বেশী "অনুনাকি"(প্রবাদে বর্ণিত দেবতা )তাদের কাছে একটি শক্তিশালী, সম্মোহিত দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, যেটির থেকে  "শয়তানের চোখ " শব্দটির উৎপত্তি এবং তাদের সংকর ডিএনএ র  কারণে তারা মানুষের রক্ত পান করে , রূপ পরিবর্তন করতে পারে  তিনি আরও জানিয়েছেন যে , তারা "নরডিক্স" নামক আরেকটি বহির্জাগতিক জাতির সাথে মিলন ঘটিয়েছিল,যাদের স্বর্ণালী চুল আছে , নীল চোখ আছে, উদ্দেশ্য ছিল মানব দাসদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অধিপতি জাতি তৈরী করা - যাদের আমরা আরিয়ান বা আর্য জাতি বলে ইতিহাসে পড়েছি । আরিয়ানরা অনেক সরীসৃপের বৈশিষ্ট্য বহন করতো, ঠান্ডা মাথার মনোভাব, শীর্ষ-নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা, এবং রীতি নীতির আবেগ সহ ফ্যাসিবাদ, যুক্তিবাদ ও বর্ণবাদের দিকে প্রবণতা।

রেপটিলিয়ানরা শুধুমাত্র অন্য গ্রহ থেকে আসেনি , অন্য ডাইমেনশন থেকেও, চতুর্থ ডাইমেনশনের নিম্ন স্তরের, যা পৃথিবীর নিকটতম। আইকে লিখেছেন যে মহাবিশ্বের মধ্যে অগুনতি  ফ্রিকোয়েন্সি বা ডাইমেনশন রয়েছে যা একই স্থান শেয়ার করে, যেমন টেলিভিশন এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিগুলি। কিছু মানুষ তাদের জ্ঞান বা তথ্য অন্য তরঙ্গ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারে, জেক আমরা সাইকিক পাওয়ার বলি এবং এগুলি সেই অন্য ডাইমেনশন থেকে আসা শক্তি যার মাধ্যমে অনুনাকি  এই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করছে - যদিও চতুর্থ ডাইমেনশনের রেপটিলিয়ানরা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে, তারা আবার নিয়ন্ত্রিত হয় পঞ্চম ডাইমেনশন দ্বারা। চতুর্থ  ডাইমেনসনের  নিম্ন স্তরকে  "lower astral dimension" বলা হয়। আইক যুক্তি দিয়েছিলেন যে, এখানে দৈত্য-দানবরা  বাস করে। সাতানিস্টরা যখন পূজা করে, তারা আসলে, রেপটিলিয়ানদের ডেকে আনে।

সর্বাধিক সংগঠিত ধর্মগুলি ইলুমিনাতির সৃষ্টি যা জাতিগত, আদর্শগত ও লিঙ্গবৈষম্যগতভাবে ডিসাইন করা যা  অবিরাম দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে মানব জাতিকে বিভক্ত করে রাখবে। তিনি গ্লোবাল এলিট কর্তৃক সম্পাদিত ঘটনার  উদাহরণ হিসাবে ওকলাহোমা সিটি বোমা হামলা এবং 9/11 উল্লেখ করেছেন। এই ঘটনাগুলি গ্লোবাল এলিটের  তারা যেভাবে চায় সেভাবে কাজ করতে পারে -এর একটি নিদর্শন যেই কন্সেপ্টকে আইক  বলেন  "order out of chaos",  বা "problem-reaction-solution"। তিনি লিখেছেন যে, এমন কোনও পাবলিক ইভেন্ট হয়নি যাতে  ব্রাদারহুডের হাত নেই। 

"You want to introduce something you know the people won't like, you first create a problem, a rising crime rate, more violence, a terrorist threat, you make sure someone else is blamed for this problem. You create a "patsy", as they call them in America, a Timothy McVeigh or a Lee Harvey Oswald. This brings us to stage two, the reaction from the people – "This can't go on; what are they going to do about it?" This allows them to then openly offer the solution to the problems they have created".

রেপটালিয়ান আছে কি নেই তা বিতর্কের বিষয় কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষরা প্রতিদিন কি দাসের মতো নিয়ন্ত্রিত হই না? মুখোশ পড়া লোকদের শীর্ষস্তরে এগিয়ে যেতে দেখিনা ? প্রকৃত রেপটালিয়ান যদি অস্বীকার করিও তবুও তার বিশিষ্ট গুলো বর্তমান সমাজ থেকে সরিয়ে দেয়া অসম্ভব। 

Saturday, 10 November 2018

রহস্যময় চাকতি রহস্য ---

আজ  ইউএফও এর সাথে সম্পর্কযুক্ত খুব বেশি আলোচিত একটা ঘটনা বলছি। ঘটনার সুত্রপাত ১৯৪৭ সালে একটি বজ্রপাত সহ ঝড়ের মাধ্যমে। ‘ম্যাক’ নামের এক ভদ্রলোক তখন তার ঘরে বসেই ঝড় দেখছিলেন। হঠাৎ তার বাড়ির সংলগ্ন বড় ক্ষেতে তিনি বেশ বড়সড় এবং অস্বাভাবিক এক বজ্রপাতের শব্দ পান। তিনি যখন তার ছেলেকে নিয়ে তার ক্ষেত এর ক্ষয় ক্ষতি দেখতে গেলেন তখন অবাক হয়ে দেখলেন, বজ্রপাতের কোন চিহ্নই নেই, বরং সারা মাঠ জুড়ে পড়ে রয়েছে কোন কিছুর ধ্বংসাবশেষ। প্রায় তিন মাইলের ও বেশি লম্বা এবং দুই তিনশত ফুট প্রস্থ জুড়ে ধ্বংসাবশেষ গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।

সেই স্থানের আশে পাশে অনেক মানুষ ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখলো। সবাই ছুটে গিয়েছিল সেই স্থানে কিন্তু প্রচণ্ড তাপ আর আগুনের ফুলকির মতো বের হওয়ার কারণে সেই যায়গার কাছে যেতে পারছিলো না কেউ। এই খবর রসওয়েল আর্মি এয়ার বেস এ ঘটনাটি জানানো হয়, কিছুক্ষণ পরই বিরাট মার্কিন সেনার দল এসে পৌঁছে সেখানে এবং পুরো জায়গাটি ঘিরে ফেলে। সেনা সদস্যরা পরে সেই এলাকায় আর কোনও ব্যক্তিকে ঢুকতে দেয়নি।

ম্যাক এর ভাষ্য অনুসারে, উদ্ধারকৃত টুকরো গুলিকে এককথায় ধাতু বলা যায়না। টুকরোগুলি ছিল বেশ মজবুত, এবং প্লাস্টিক এর মতো হালকা অথচ প্লাস্টিক নয়। দুই তিন ফুট লম্বা টুকরো গুলিও খবরের কাগজের মতোই হালকা ছিল, বলেন ম্যাক। তবে এই টুকরো গুলোকে তিনি কাটতে পারেননি এবং আগুনেও পোড়াতে পারেন নি বলে জানান তিনি। সেদিন বিকেলেই আর্মি ইন্টেলিজেন্স এর কিছু কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মেজর জেসি মারসেল যার উপরে এই ঘটনাটি তদন্তের মুল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। তিনিও টুকরো গুলি দেখে হতভম্ব হয়ে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বলে গেছেন যে এটি তার জীবনে দেখা সবচেয়ে বেশি অস্বাভাবিক ঘটনা।

তিনি দৃঢ়ভাবেই দাবী করেন, এটি কোনভাবেই এয়ার বেলুন, অথবা পৃথিবীতে তৈরি কোন আকাশ যান এর ধ্বংসাবশেষ নয়। তার কাছে সবচেয়ে আশ্চর্য লেগেছে যে টুকরোটি সেটি একটি ছোট এল আকৃতির বিম এর টুকরো যেটি এর উপরে কিছু অদ্ভুত চিহ্ন এবং অক্ষর খোদাই করা ছিল। এটা থেকে তার মনে বিশ্বাস আরও প্রবল হয় যে এটি পৃথিবীর বাইরের কোন একটা স্থানে তৈরি কোন আকাশযান। খবরটা নিউজপেপারে চলে আসে মুহূর্তের মাঝেই। ঠিক ওইদিন সক্করো, মেক্সিকো থেকেও ইউএফও দর্শনের কিছু রিপোর্ট পাওয়া যায়। এই ঘটনাগুলি রসওয়েল এ বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।

তবে রসওয়েল এয়ার বেস কোন এক অজ্ঞাত কারনে খবরটা ধামাচাপা দেওয়ার প্রানপন চেষ্টা করে।


সেনা বাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা শুধু সাংবাদিকদের উপস্থিত জানান যে, এখানে আকাশ থেকে বিরাট চাকতির মতো যে বস্তু পড়েছে, সম্ভবত সেটি কোনও আকাশ যান, বাকিটা আপনাদের পরে জানানো হবে। পরে আবার জানানো হয় যে এটি উল্কা পিন্ড ছিল, বিশ্বব্যাপী খবরটি যখন জানাজানি হয় এবং সংবাদপত্রে খবরটি ফলাও করে প্রচার করা হয় তখন বিষয়টি নিয়ে সবার মাঝে কৌতূহলের সৃষ্টি করে। সবাই ভাবতে থাকে এটা কি তাহলে ভিন গ্রহ বাসীদের বাহন UFO ছিল!!

 গ্লেন ডেনিস নামের ২২ বছরের এক ছেলেও ম্যাক এর মাঠটি পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। পরবর্তীতে তাকেও মিলিটারি ক্যাম্প এ নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে বলা হয়, এটি নিয়ে আর কোন রকম উচ্চ্যবাচ্চ্য না করার জন্য। এছাড়া ঠিক ওই সময়ে একজন নার্স দাবী করেন, তাকে এয়ার বেস ক্যাম্প এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিনটি বডি অটোপসি করার জন্য। তিনি বলেন, তিনটি প্রাণীর কোনটি ই পৃথিবীর নয় এ ব্যাপারে তিনি শতভাগ নিশ্চিত। তিনি প্রানীগুলির বর্ণনা দেন এভাবে- “তারা আমাকে ডেকেছিল partial autopsy এর জন্য। তাদের ওখানে একটা বড় ক্রাশ ব্যাগ ছিল যেটির মধ্যে দোমড়ানো মোচড়ানো খুব ছোট দুটি বডি ছিল যাদের মাথা ছিল দেহের তুলনায় অনেক বড়। তাদের কোন কান ছিল না, বরং তাদের কানের দুটি ক্যানাল ছিল। তাদের বিবর ছিল দুটি ,এবং তাতে কোন দাত ছিল না।”

পরবর্তীতে গ্লেন অবশ্য নার্সটিকে অনেক খুজতে চেষ্টা করেছিল, যদিও তাকে আর কখনোই খুজে পাওয়া যায়নি। এটি প্রমানিত হলে এয়ার বেস মিলিটারি তাদের বিবৃতি দান করে বলেন, তাদের প্রাপ্ত প্রাণীগুলো আসলে একটি এয়ার বেলুনের ডামি ছিল। যদিও তাতে সন্দেহ দূরীভূত না হয়ে উল্টো সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।


এলিয়েনরা কি তাহলে সত্যিই পৃথিবীতে এসেছে? বিশ্বজুড়ে যখন এই রহস্য নিয়ে চিন্তা ভাবনা জোরালো হচ্ছে তখনই মার্কিন সরকার এই ঘটনাটিকে নিয়ে বিশ্ববাসীর সাথে নাটক শুরু করে। প্রথমে তারা বিশ্ববাসীকে জানায় এটা ছিল তাদের আর্মিদেরই নতুন একটি আকাশযান আবার পরে তারা বলে এটা ছিল খসে পড়া একটি উল্কাপিণ্ড! কিন্তু প্রকৃত যে ওই দিন সেখানে কি পতিত হয়েছিল সেটা আজও সবার কাছে এক রহস্য!

Tuesday, 6 November 2018

কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-

উপকার--


--- কাঁচা সবুজ পেঁপেতে নানা রকম প্রাকৃতিক এনজাইম থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি এনজাইম হচ্ছে সাইমোপ্যাপিন ও প্যাপিন। এই দুটি এনজাইম প্রোটিন চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে সাহায্য করে।

---কাঁচা পেঁপে আমাদের দেহের সঠিক রক্ত সরবরাহে কাজ করে। আমাদের দেহে জমা থাকা সোডিয়াম দূর  করতে সহায়তা করে যা হৃদপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী। নিয়মিত পেঁপে খেলে উচ্চ রক্ত চাপের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এতে করে হৃদপিণ্ড জনিত যে কোনো সমস্যার সমাধান হয়।

---পেঁপেতে থাকা আঁশ ক্রনিক কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি বা অম্লতা, পাইলস ও ডায়রিয়া দূর করতে পারে। মানুষের শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে পেঁপে দারুণ কার্যকর।

---ডায়াবেটিস বর্তমানে কমবেশি সবাইকে বেশ ভোগান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আর কেউ যদি এই ডায়াবেটিসে ভোগেন, তাহলে আপনি আজ থেকেই কাঁচা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস শুরু করুন। খেতে পারেন কাঁচা পেঁপের জুসও। কেননা, কাঁচা পেঁপে বা এর জুস রক্তে চিনির পরিমাণ কমায়। আর এটি শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়ায়।

--‘নিউট্রিশন’ নামের ব্রিটিশ জার্নাল বা সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, কাঁচা পেঁপেতে অনেক বেশি ক্যারটিনয়েডস থাকে, যা গাজর বা টমেটোর চেয়ে বেশি। মানুষের শরীরে জন্য কাঁচা পেঁপেতে থাকা ক্যারটিনয়েড বেশি উপযোগী।

---নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে ত্বকের সমস্যা দূর হয়। বিশেষ করে ব্রণ এবং ত্বকের ওপর নানা দাগ দূর করতে পারে কাঁচা পেঁপে। মৃত কোষ সমস্যা দূর করতে পারে পেঁপে। ব্রণের সমস্যা প্রায় সবারই থাকে। এসব ব্রণের কারণে মুখে আনেক ধরনের দাগ তৈরি হয়। এই বাজে দাগগুলো নিরাময় করতে পারে সুমিষ্ট এই ফলটি। মুখের অন্যান্য যেকোনো দাগ যেমন মেছতা, ফুস্কুরির দাগও খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে।মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করার পাশাপাশি পেঁপে ফলটি মুখের উজ্জ্বলতাও ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।

---সালাদ খান না এমন পরিবার খুব কমই পাওয়া যাবে।যাদের পেটে গোলমাল দেখা দেয়, তারা পেঁপে খেতে পারেন। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেঁপেতে ক্যারোটিন অনেক বেশি থাকে। কিন্তু ক্যালরির পরিমাণ বেশ কম থাকায় যারা মেদ সমস্যায় ভুগছেন তারা পেঁপে খেতে পারেন অনায়াসে। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি আছে।

--- প্রত্যেহ সকালে কাঁচা পেঁপের আঠা ৫/৭ ফোঁটা ৫/৬ টি বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। ২/৩ দিন খাওয়ার পর রক্ত আমাশয় কমতে থাকবে।

--যে কোনো প্রকারের ক্রিমি হলে, পেঁপের আঠা ১৫ ফোঁটা ও মধু ১চা চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এরপর আধা ঘন্টা পরে উষ্ণ পানি আধ কাপ খেয়ে তারপরে ১ চামচ বাখারি (শসা-ক্ষীরার মতো এর স্বাদ) চুনের পানি খেতে হয়। এভাবে ২ দিন খেলে ক্রিমির উপদ্রব কমে যাবে।

---আমাশয় ও পেটে যন্ত্রনা থাকলে কাঁচা পেঁপের আঠা ৩০ ফোঁটা ও ১ চামচ চুনের পানি মিশিয়ে তাতে একটু দুধ দিয়ে খেতে হবে। একবার খেলেই পেটের যন্ত্রনা কমে যাবে এবং আমাশয় কমে যাবে।


---৩০ ফোঁটা পেঁপের আঠাতে এক চামচ চিনি মিশিয়ে এক কাপ পানিতে ভালো করে নেড়ে মিশ্রণটি সারাদিনে ৩বার খেতে হবে। ৪/৫ দিনের পর থেকে যকৃতের বৃদ্ধিটা কমতে থাকবে, তবে ৫/৬ দিন খাওয়ার পর সপ্তাহে ২ দিন খাওয়াই ভালো। এভাবে ১ মাস খেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।


---প্রত্যেকদিন সকালে ২/৩ ফোঁটা পেঁপের আঠা পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা ক্ষুধাও বেড়ে যাবে এবং হজমও ঠিকভাবে হবে।


---কয়েক টুকরো পাকা পেঁপের শাঁষ, আর সামান্য লবন এবং একটু গোলমরিচের গুড়ো একসংগে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা পেট ফাঁপার উপশম হয।


---দেড় চামচ পেঁপে পাতার রস এক কাপ জলে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা জ্বরের বেগ, বমি, মাথার যন্ত্রনা, শরীরে দাহ কমে যাবে। জ্বর কমে গেলে আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

---যাদের মাসিক ঋতু বন্ধ হওয়ার সময় হয়নি অথচ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অথবা যেটুকু হয় তা না হওয়ারই মত, সেক্ষেত্রে ৫/৬ টি পাকা পেঁপের বিচি গুড়া করে রোজ সকালে ও বিকালে দু’বার জলসহ খেতে হবে। এর ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই মাসিক স্রাব ঠিক হয়ে যাবে, তবে অন্য কোন কারনে এটা বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

---সে যে কোনো প্রকারের হোক না কেন, কাঁচা পেঁপের/গাছের আঠা ঐ দাদে লাগিয়ে দিতে হবে, একদিন লাগিয়ে পরের দিন লাগাতে হবে না, এরপরের দিন আবার লাগাতে হবে, এইভাবে ৩/৪ দিন লাগালে দাদ মিলিয়ে যাবে।


---যে একজিমা শুকনা অথবা রস গড়ায় না, সেখানে ১ দিন অথবা ২ দিন অন্তর পেঁপের আঠা লাগালে ওটার চামড়া উঠতে উঠতে পাতলা হয়ে যায়।

----- ১ চামচ পেঁপের আঠা, তার সঙ্গে ৭/৮ চামচ জলে মিশিয়ে ফেটিয়ে নিতে হয়। তারপর ওই জলে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর মাথা ধুয়ে ফেলতে হয়। এইভাবে একদিন অন্তর আর একদিন বা ২ দিন লাগালে উকুন মরে যায়।


--প্রতিদিন দুপুর ও রাতের খাবারের পর এক টুকরো কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খেলে এবং তারপর এক গ্লাস পানি খেলে সকালে পেট পরিষ্কার হয়। গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের কষ্ট দূর হয়।


--- প্রতিদিন পাকা পেপের সাথে মধু ও টকদই মিশিয়ে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

----শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত কাঁচা পেঁপের জুস খেতে পারেন। কাঁচা পেঁপের সঙ্গে শসা মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এতে একটু লেবু চিপে দিয়ে খেতে পারেন।


অপকার ---

---গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে খাওয়া সমস্যা তৈরি করতে পারে। ব্রিটিশ ও ভারতের বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, কাঁচা পেঁপের মধ্যে লেটেক্স থাকে। লেটেক্সের মধ্যে উপস্থিত উপাদান পেপেইন জরায়ুর রক্তপাত ঘটিয়ে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, কাঁচা পেঁপে খেলে এসিড হতে পারে। এর ফলে বদ হজম, বমি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই এ সময় পাকা পেঁপে খান।

---পুষ্টিকর বলে কোনকিছুই অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। পেঁপে অতিরিক্ত খেলে খাদ্যনালীর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। দিনে এক কাপের বেশি পেঁপে খাওয়া উচিত নয়।

---পেঁপের বীজের নির্যাস পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমাতে সক্ষম। বীর্জে শুক্রাণুর সংখ্যা কমাতে এবং শুক্রাণুর নড়াচড়ার ক্ষমতা কমার পেছনেও দায়ী হতে পারে পেঁপে।


---অ্যালার্জিক কারণে যাদের প্রায়শই শ্বাস কষ্ট হয়ে থাকে, তাদের ভুলেও পেঁপে খাওয়া চলবে না। কারণ এতে উপস্থিত প্য়াপিন নামে একটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র শ্বাস কষ্টের আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। প্রসঙ্গত, অ্যাস্থেমা রোগেও যারা ভুগছেন, তাদেরও এই ফলটি খাওয়া চলবে না।
কাঁচাপেঁপের বোটা থেকে বের হওয়া সাদা তরল চামড়ায় অ্যালার্জির সৃষ্টি করতে পারে।

---পেঁপে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়। তাই যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান তাদের জন্য পেঁপে বিপজ্জনক হতে পারে, এর ফলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে মাথা ঘোড়া, শরীর দুর্বলতা ইত্যাদি হতে পারে।

---কোনও কিছুই বেশি পরিমাণে শরীরে প্রবেশ ভাল নয়, তা সে পুষ্টিকর উপাদানই হোক না কেন! এক্ষেত্রেও কিন্তু একই ঘটনা ঘটে। পেঁপেতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে। এই পরিমাণ ভিটামিন প্রায় দিনই যদি শরীরে প্রবেশ করতে শুরু করে, তাহলে দেহে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পায়। আর এমনটা হলে কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

---পেঁপে পাতায় থাকা ‘পাপাইন’ নামক উপাদান গর্ভের সন্তানের জন্য বিষাক্ত হতে পারে। সন্তান বুকের দুধ খাওয়ানোর বয়সে মায়ের পেঁপে খাওয়া ক্ষতিকর কি না তা নিশ্চিত নয়। তবে সাবধানের মার নেই, তাই গর্ভাবস্থায় এবং সন্তান জন্মের কয়েক মাস পর্যন্ত পেঁপে এড়িতে চলা উচিত।





Saturday, 3 November 2018

ইতিহাসের ভয়ঙ্কর যোদ্ধা জাতি - অ্যাপাচি

এপাচি হেলিকপ্টার, ২ চাকার গাড়ি এগুলির নাম আসা করি শুনেছেন কিন্তু প্রকৃত এপাচি জাতি - যাদের অনুপ্রেরণায় পরবর্তীতে বিভিন্ন সংস্থা নিজেদের আবিষ্কার এর নাম রেখেছ, তারা সত্যিই খুব দুর্ধর্ষ জাতি ছিল। সভ্য সমাজের নেতারা যাদের ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দিতে চাইলেও বীরত্বের কথা মুছে যায়নি যাদের অবহেলা করা হলেও পরে তাদের উপরই নির্ভর করতে হয় এরম এক যোদ্ধা জাতি নিয়ে আজ আলোচনা করলাম।



অ্যাপাচি আসলে দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকার একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। তারা ঐতিহ্যগতভাবে নিউ মেক্সিকো, টেক্সাস, আরিজোনা, মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলে এবং কলোরাডোতে বাস করে। তাদের বসবাস করার এলাকাগুলোকে একত্রে অ্যাপাচেরিয়া বলে।


এই উপজাতির লোকেরা ছিল ভয়ঙ্কর যোদ্ধা এবং উঁচুমানের সমর পরিকল্পনাবিদ।
অ্যাপাচিদের বলা হয় আমেরিকার নিনজা।স্প্যানিশদের সাথে দশকের পর দশক সফলভাবে যুদ্ধ আর বাণিজ্যের বদৌলতে তারা ঘোড়া আর অস্ত্রশস্ত্র যোগাড় করে। মেসকালেরো, জিকারিল্লা, চিরিকাহুয়াসহ নানা গোত্রে তারা বিভক্ত। তারা এতটাই গোপনে আসত যে বোঝার কোনো উপায়ই থাকত  না এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই সব শেষ হয়ে যাবে। রেড ইন্ডিয়ানদের মতো এই জাতিও আমেরিকার আদিবাসী। কিন্তু এরা অন্যান্য আমেরিকান আদিবাসীর মতো এত সহজে নিজেদের ভূমি বা দলের মেয়েদের অন্যদের হাতে তুলে দিত না। এরা আদিম কাঠ, পশুর হাড় ব্যবহার করে নিজেদের জন্য বেশির ভাগ অস্ত্র তৈরি করত। অ্যাপাচি যোদ্ধা হিসেবে এরা অনেক ধূর্ত এবং চালাক প্রকৃতির ছিল। প্রতিপক্ষকে সব সময় লুকিয়ে হামলা করত, হঠাৎ করে প্রতিপক্ষের পেছনে গিয়ে এরা এক টানে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফেলত। এতে প্রতিপক্ষের কিছুই বোঝার উপায় থাকত না। তারা ছিল বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ছুরি-যোদ্ধা এবং কুঠার নিক্ষেপে খুবই পারদর্শী। এরা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমে লুটপাট, হামলা করত এবং তাদের উচ্ছেদ করতে সামরিক বাহিনীকেও অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছিল।

১৮৪৬ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মেক্সিকোর যুদ্ধ বেঁধে গেলে অ্যাপাচিরা মার্কিন সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করেছিল। কিন্তু পরে যুক্তরাষ্ট্রের সাথেই তাদের আবার যুদ্ধ বেঁধে যায়। ১৮৮৬ সালে চূড়ান্তভাবে পরাস্ত হওয়ার আগপর্যন্ত জেরোনিমো, মাঙ্গাস কলোরাডো বা ভিক্টোরিওর মতো নেতাদের হয়ে অ্যাপাচিরা লড়াই করে গিয়েছে। ঘোড়ায় চড়ে, তীর-ধনুক আর বন্দুক নিয়ে আক্রমণরত অ্যাপাচি যোদ্ধারা মার্কিন বসতি স্থাপনকারীদের কাছে ছিল সাক্ষাত যমদূত। অ্যাপাচিদেরকে মূলধারার মিডিয়াতে সবসময় তুলে ধরা হয় যুদ্ধবাজ, নিষ্ঠুর এবং ভয়ংকর যোদ্ধাজাতি হিসেবে। অথচ বাস্তবে কিন্তু তারা স্রেফ নিজেদের বিচরণভূমি, অ্যাপাচেরিয়া রক্ষার জন্যই লড়েছিল।
আরো অনেক রেড ইন্ডিয়ানের মতো অ্যাপাচিরাও বাইসন শিকার করে জীবন চালাতো। বর্তমানে লক্ষাধিক অ্যাপাচি যুক্তরাষ্ট্রে বাস করে।

তারা গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে ছিল অত্যন্ত প্রখর ও তাদের উত্তরাধিকাররা আজ আধুনিক দিনের স্পেশাল ফোর্সকে কিভাবে হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট প্রশিক্ষণ দেয়।

তাছাড়া লাদেন বধের কোড নাম ছিল অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার। তবে অপারেশন জেরোনিমো নামে বিশেষ খ্যাতি পায় এটি। আর যার নামে এই অপারেশন তিনি একজন অ্যাপাচি।

Saturday, 22 September 2018

ব্ল্যাক হোল রহস্য

আমাদের পৃথিবীটা যেই সৌরজগত এর মধ্যে অবস্থিত সেই সৌরজগত এর বাইরে যে মহাবিশ্ব আছে সেখানে খুবই রহস্যময় বিষয়বস্তু চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। আমরা কিন্তু সবাই সেই বিষয়গুলি নিয়ে খুব একটা জানতে চাই না। তবে যারা বিজ্ঞানের উপরে বিশ্বাস রাখে তাদের  এক অংশ কে দেখা যায় এসব অজানা নিয়ে আরো জানতে আগ্রহী কিন্তু, বাকীরা জীবনে কয়েকবার মাত্র আকাশের দিকে যখন সময় পায় তখন একটু তাকিয়ে মনে কল্পনা করে কি আছে এই আকাশে। কিছু তারা ও চাঁদ দেখতে পারলেই মহাকাশ সম্পর্কে জানার ইচ্ছা শেষ হয়ে যায় তাদের। আজকে ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বর নিয়ে অল্প কিছু আলোচনা করবো।



রহস্যময় মহাবিশ্বের অনেক রহস্যময় জিনিসের মধ্যে মানুষ আজ পর্যন্ত খুব অল্প কিছুই জানতে পেরেছে, ৯৯,৯৯% এখনও মানুষের অজানা। তাহলে একবার ভেবে দেখুন এই মহাবিশ্বের কি জানতে পেরেছে আজকের পৃথিবীর মানুষ। পৃথিবী থেকে ভাগ হয় সৃষ্ট সেই চাদে মানুষ আজ থেকে প্রায় অর্ধশত বছর আগেই ঘুরে এসেছেন। চাদের থেকেও এই মহাবিশ্বের আরো একটি রহস্য হচ্ছে এই ব্ল্যাক হোল। পৃথিবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই কৃষ্ণ গহ্বর সম্পর্কে এ পর্যন্ত জানতে পেরেছেন সামান্যই। তবে যতটা তথ্য উদ্ধারে সক্ষম হয়েছেন তা যথার্থই অভাবনীয়, সাধারণ চিন্তার বাইরে।


পদার্থবিজ্ঞানী জন হুইলার এর নাম দেন ব্ল্যাক হোল, কারন ব্ল্যাক হোলের মহাকর্ষ বল এতই বেশি যে এর আকর্ষন থেকে এমনকি আলোও(ফোটন) বের হয়ে আসতে পারে না। ১৯১৬ সালে আইনস্টাইন তার জেনারেল রিলেটিভিটি তত্ত দিয়ে ধারনা করেন ব্ল্যাক হোল থাকা সম্ভব। আর মাত্র ১৯৯৪ সালে এসে নভোচারিরা প্রমাণ করেন আসলেই ব্ল্যাক হোল আছে। এটি কোন সাইন্স ফিকশন নয়। জার্মান বিজ্ঞানী কার্ল শোয়ার্জস্কাইল্ড ১৯১৬ সালেই দেখান যেকোন তারকা ব্ল্যাক হোলে পরিণত হতে পারে। সূর্যের ব্যাসার্ধ (৮৬৪,৯৫০মাইল) যদি কমতে কমতে সঙ্কুচিত হয়ে ১.৯ মাইলে পরিণত হয় তাহলে সূর্যও ব্ল্যাক হোলে পরিণত হবে।

সূর্যের চেয়ে কমপক্ষে দশগুণ বড় নক্ষত্রদের জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে এরা সঙ্কুচিত হতে হতে অতি খুদ্র অন্ধকার বিন্দুতে পরিণত হয়। এধরণের ব্ল্যাক হোলকে বলা হয় স্টেলার মাস (Stellar Mass) ব্ল্যাক হোল। বেশীরভাগ ব্ল্যাক হোলই এধরণের। কিন্তু নক্ষত্রের সঙ্কুচিত হয়ে ব্ল্যাক হোলে পরিণত হওয়ার পরও ব্ল্যাক হোলে নক্ষত্রের সমান ভর ও অভিকর্ষ টান থাকে। আমাদের গ্যালাক্সিতে সম্ভবত ১০০ মিলিয়ন ব্ল্যাক হোল রয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে প্রতি সেকেন্ডে একটি ব্ল্যাক হোল সৃষ্টি হয়। আরেক ধরণের ব্ল্যাক হোল হল সুপার মেসিভ (Super massive) ব্ল্যাক হোল। তাদের এক মিলিয়ন তারার ভর এমনকি এক বিলিয়ন তারার ভরও থাকতে পারে। সুপার মেসিভ ব্ল্যাক হোলরা কোন গ্যালাক্সির মিলিয়ন বা বিলিয়ন তারাকে একত্রে ধরে রাখে। আমাদের গ্যালাক্সিতেও কিন্তু একটি সুপার মেসিভ ব্ল্যাক হোল আছে। সেটির নাম Sagittarius A, যা আবিষ্কৃত হয়েছিল ৪০ বছর আগে।

ব্ল্যাক হোলের আকর্ষণ এতই বেশী যে এর থেকে দৃশ্যমান আলো, এক্স রে, অবলোহিত রশ্মি কিছুই রক্ষা পায় না। এজন্যই ব্ল্যাক হোল আমাদের কাছে অদৃশ্য। বিজ্ঞানীরা তাই ব্ল্যাক হোল নিয়ে গবেষণা করার সময় খেয়াল করেন ব্ল্যাক হোল তার আশপাশকে কিভাবে প্রভাবিত করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ব্ল্যাক হোল থেকে প্রায়ই উজ্জ্বল গ্যাস ও তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফোয়ারা নিক্ষিপ্ত হয়।

আলট্রা ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলরা বিলিয়ন বছর আগে তৈরি হয়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে ভর অর্জন করে এত বৃহৎ ব্ল্যাক হোলে পরিণত হয়েছে। বড় ব্ল্যাক হোলরা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে এটিই একমাত্র রহস্য নয়! এই ব্ল্যাক হোলরা কিভাবে সহস্র বিলিয়ন তারা ধরে রাখে তাও বিশাল রহস্য। সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলরা আগে সৃষ্টি হয়েছে নাকি গ্যালাক্সির গুচ্ছ বা ক্লাস্টার আগে সৃষ্টি হয়েছে তা আজও অজানা।

একটি আবিস্কার ব্ল্যাক হোল নিয়ে রহস্যকে আরও ঘনীভূত করেছে। বৈজ্ঞানিক Jonelle Walsh ও তাঁর সহকর্মীরা হাবল টেলিস্কোপের সাহায্যে NGC 1277 নামের একটি গ্যালাক্সি আবিস্কার করেছেন। গ্যালাক্সিটি ২০০ আলোক বছরের চেয়েও অধিক দূরে অবস্থিত। NGC 1277 এর আকার আমাদের মিল্কিওয়ের চার ভাগের এক ভাগ। কিন্তু Jonelle Walsh ও তাঁর সহকর্মীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গ্যালাক্সিটির কেন্দ্রে একটি ব্ল্যাক হোল আছে যার আকার এই পর্যন্ত যত বড় ব্ল্যাক হোল আবিস্কার হয়েছে তার একটি। ধারণা মতে এটি Sagittarius A এর তুলনায় ৪০০০ গুণ বড়! Jonelle Walsh এর ভাষায় ‘ব্ল্যাক হোলটি তার গ্যালাক্সির তুলনায় অনেক বড়”

আগে ধারণা করা হত ব্ল্যাক হোল ও গ্যালাক্সি এক সাথে বড় হয় এবং এক সাথেই বড় হওয়া থেমে যায়। কিন্তু এই নতুন আবিস্কার অনুযায়ী হয় ব্ল্যাক হোল তার আশেপাশের তারা ও ব্ল্যাক হোল খেয়ে বড়  হতে থাকে অথবা শুরু থেকেই এটি কোন উপায়ে বেশী বড় হয়ে গিয়েছে।

এরকম আরো কি আশ্চর্য হবার মতো ঘটনা আছে এই ব্ল্যাক হোল এর ভেতরে যা আমাদের এই পৃথিবীতে কখনই ঘটে না। আলোর ব্যাপারটি দেখুন। যেহেতু এই ব্লাক হোল থেকে আলো পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না তাহলে ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ত কিভাবে দেখা যায় বা বুঝা যায় এরকম প্রশ্ন উঠতে পারে। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, অনেক সময়েই মহাকাশে প্রচুর তারকারাশি দেখা যায় যারা একটি বিশেষ বিন্দুকে কেন্দ্র করে ঘুরছে অথবা সর্পিলাকার গ্যাসীয় বস্তু দেখা যায় যা কোন বিন্দুকে কেন্দ্র করে অবস্থান করছে। এই বিশেষ বিন্দুগুলোই হল ব্ল্যাক হোল যেগুলোকে দেখা যাচ্ছে না ঠিকই কিন্তু তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে তারকারাশি বা গ্যাসীয় বস্তুগুলোর অবস্থান আর তাদের গতি-প্রকৃতির মাধ্যমে। বর্তমানে কিছু উন্নত প্রযুক্তি ব্যাবহার করে কিছু টেলিস্কোপ দিয়ে নেগেটিভের মতো কিছু ছবিও তুলে দেখাতে সক্ষম হয়েছে সৌরবিজ্ঞানীরা।

একসময় আশংকা করা হত, সূর্য কি তবে একদিন নিজেই ব্ল্যাক হোলে পরিণত হবে –পৃথিবীকে গ্রাস করবে? নাসার বিজ্ঞানিরা এ আশংকা উড়িয়ে দিয়েছেন।

 আমাদের গ্যালাক্সির নাম মিল্কি ওয়ে বা আকাশ গঙ্গা। আকাশ গঙ্গার ঠিক মাঝখানে রয়েছে সূর্য থেকে ৪ মিলিয়ন বেশি ভরের একটি ব্ল্যাক হোল। ১৬ বছর ধরে আশে-পাশের তারামন্ডলীর গতি-বিধি পর্যবেক্ষণ করে গত ২০০৮ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা Sagittarius A-star নামের ব্ল্যাক হোলটি শনাক্ত করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ব্ল্যাক হোলটি কোন কিছু গলাধঃকরণ করছে না। ব্ল্যাক হোল এর ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত ধারণাটি হচ্ছে ব্লাক হোল সব কিছু গ্রাস করে নেয়।

আলো শুষে নেয় বলে ব্ল্যাক হোল দেখা সম্ভব নয়। আলো শুষে নিতে পারে বলে হয়তো ব্ল্যাক হোল সব কিছু গলাধঃকরণ করতে পারে এই ধারণা সবারই হতে পারে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ব্ল্যাক হোলেরও নিজস্ব ভর রয়েছে। অধিকাংশ গ্যালাক্সিই ব্ল্যাক হোলকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান থাকতে পারে। তাই বলে, ব্ল্যাক হোল গ্যালাক্সিতে থাকা নক্ষত্র, গ্রহসমূহ গিলে ফেলে না। তাই এটা বলা যায়, আকাশ গঙ্গার মাঝখানে বৃহৎ ব্ল্যাক হোল যদি থেকেও থাকে, তা আমাদের পৃথিবীকে কখনোই গিলে ফেলবে না। বরং সূর্য এবং অন্যান্য গ্রহগুলোর সাথে সমান দূরত্ব রেখে ঘূর্ণায়মান থাকবে। আবার ব্ল্যাক হোল সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় বৃহদায়তনের ভর সূর্যের নেই বলে সূর্যও কখনো ব্ল্যাক হোল এ পরিণত হবেনা।

এবার একটু ছোট্ট একটি চিন্তা করুন আমরা জানি যে আমাদের এই বিশাল পৃথিবী থেকে যেই ছোট্ট সূর্যটি আমরা দেখতে পায় তা আমাদের এই পৃথিবী থেকে ১৩ লক্ষ গুন বড় একটি বস্তু। তার মানে এই সূর্যের কাছে আমাদের পৃথিবী কিছুই না। আবার যেই নক্ষত্র বা তারার কথা বলা হচ্ছে যাদের এই ব্ল্যাক হোল গিলে ফেলতে পারে সেই নক্ষত্রর একেকটার আকৃতি কিন্তু এই সুর্য থেকে কয়েক হাজার এমনকি কয়েক লক্ষ গুন বড় হতে পারে। তাহলে একটি ব্ল্যাক হোল বা (Super massive) ব্ল্যাক হোল এর ভেতরে আমাদের এই পৃথিবীর সমান কতটা পৃথিবী ধরতে পারে একটু চিন্তা করে দেখুন একবার। দরকার নেই থাক। আমাদের বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এতোই বিশাল যে এর গ্রহ-উপগ্রহ, তারা, নক্ষত্র বিজ্ঞানীদের প্রায়ই ধাঁধায় ফেলে দেয়। আর এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ‘ইউওয়াই স্কুটি’ (UY Scuti) নামের সবচাইতে বড় তারা যেটা একাই বিজ্ঞানীদের মাথা গুলিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।