Pages

Sunday, 1 December 2019

ভয়ঙ্কর জোম্বি ও তার আক্রমণের প্রস্তুতি ---

ভয়ঙ্কর জোম্বি ও তার আক্রমণের প্রস্তুতি ---
বন্ধুরা কেমন আছেন? বন্ধুরা একটা সময় এমন ছিল যখন সিনেমাতে মানুষকে ভয় পাওয়ার জন্য ভূত প্রেত পিশাচতান্ত্রিক এইসবের ব্যবহার করা হতো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যখন মানুষ এইসব ভূত-প্রেতের থেকে বোর হয়ে গেছিল তখন এই ফিল্ম মেকাররা নতুন কিছু ভাবলো এবং ভূত-পেতের জায়গায় এক নতুন রকমের কনসেপ্ট নিয়ে এসেছিল, আপনি যদি হলিউড ফিল্ম দেখে থাকেন তবে জম্বির ব্যাপারে নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন।
যদিও আমাদের বলিউডেও একটা-দুটো সিনেমা হয়েছিল কিন্তু সেগুলো ততটা সাফল্য পায়নি।

জম্বি আসলে সেই ধরনের মানুষকে বলা হয় যাদেরকে রেবিসের মত এক ধরনের রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, এই লোকেরা চলমান লাশে পরিণত হয়।  ফিল্মে দেখানো হয়, যদি এই জাতীয় কোন মানুষ অন্য একটি মানুষকে কামড়ে দেয় তবে সেই দ্বিতীয় মানুষটি সঙ্গে সঙ্গে সেই রোগে আক্রান্ত হয়। এরপর সেও জম্বি হয়ে যায় এবং জম্বি হওয়ার সাথে সাথে তার সমস্ত চিন্তাভাবনা শেষ হয়ে যায়। তার মস্তিষ্ক এক হিংস্র জানোয়ারের মত হয়ে যায়।মানে জম্বি কেবলমাত্র খাওয়া এবং অন্যান্য মানুষের ওপর আক্রমণ করা ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না। জম্বি হওয়া বাচ্চারা তার মা-বাবাকে এবং জম্বি বাবা-মা তার বাচ্চাকে ও কামড়াতে কোন রকম দ্বিধাবোধ করে না।
আপনারা হয়তো জম্বিদের ব্যাপারে সিনেমা থেকে অনেক কিছুই জেনে থাকবেন তাই বেশি বলার আশাকরি দরকার নেই তবে একটা জিনিস আপনারা হয়তো জানেন না যে, নর্থ আমেরিকা ও সাউথ আমেরিকা মহাদেশের মাঝামাঝি হাইতি নামে একটা ছোট দেশ আছে যেখান থেকে জম্বি শব্দটি প্রথম তৈরি হয়। মনে করা হয়, এই দেশের সত্তিকারের একসময় জোম্বি ছিল আঠারো শতকের শুরুর সময় এখানে একজন তান্ত্রিক ছিল যে এক ধরনের ঔষধ ব্যবহার করে মরা মানুষকে জ্যান্ত করে ফেলত এরপর তাদের নিজের গোলামে পরিণত করতো, ওদের দিয়ে নিজের যাবতীয় সব রকম কাজ যেমন ক্ষেতের কাজ করাতো। কিন্তু একদিন ওর তৈরি করা জম্বি তার হত্যা করে ফেলে। চলুন এবার ভবিষ্যতে কল্পনার দুনিয়ায় চলে যাই,
 বন্ধুরা , যখন আপনারা এই জোম্বি সিনেমা গুলো দেখেন তখন আপনাদের মাথায় নিশ্চয়ই আসে যে এই ঘটনাগুলো বাস্তবে হলে, যার ফলে এই রোগ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে এবং  বিভিন্ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হলে আপনি সেই বিপদের সময় কিভাবে ঠান্ডা মাথায় চলবেন এবং নিজেকে বাঁচাবেন।
বন্ধুরা এই সময় সবার আগে মাথায় যে কথাটি আসে সেটা হচ্ছে অস্ত্র। আপনি নিশ্চয়ই তখন কোন বন্দুক তলোয়ার বা ব্যাট এই জাতীয় কিছু খুঁজবেন কিন্তু যদি এতদূর বিপদ গড়ায় তবে আপনার বুঝতে হবে খুব দেরি হয়ে গেছে, আপনি খুব খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছেন হয়তো এবার আপনি বেশি সময় ধরে বেঁচে নাও থাকতে পারেন। যদিও বন্দুক রাইফেল এগুলো তো সিনেমার মতো  সব জায়গায় পাওয়া যায় না যে যে আপনি দোকানে গিয়ে তুলে নেবেন, মনে রাখবেন হামলা করার থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজেকে রক্ষা করা; তাই যখন আপনার শহর বা গ্রামে এই ধরনের কোন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাবেন তখন পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগে এই জায়গাটি ছেড়ে দিতে চেষ্টা করবেন।
 কিন্তু যদি আপনি এই পরিস্থিতিতে আটকে যান যখন আপনার শহর বা গ্রামে জীবন্ত মানুষের থেকে জম্বি সংখ্যা বেশি তখন আপনি প্রথমত একটি ব্যাগে নিজের জন্য দরকার পরিমাণ মতো জল এবং শুকনো খাবার নিয়ে নেবেন, এরপর সেই জায়গাটা ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেবেন।
 আপনি নিজের হাত পা এবং গলা এবং যতটা সম্ভব স্থানে একটু মোটা খাতা বা বই জড়িয়ে সেলুটেপ দিয়ে আটকে নেবেন কারণ মানুষের দাঁত লম্বায় আধা ইঞ্চির থেকেও কম হয় তাই বাইরে বেরোলে যদি আপনি কোন জম্বির সম্মুখীন হন তাহলে এই বই-খাতা আপনার শরীরে তাদের দাঁতকে ঢুকতে দেবেনা। যদি সৌভাগ্যবশত আপনার কাছে বন্দুক থাকে তাহলে সেটি লোড করে নিজের কাছে রাখবেন। এছাড়া আপনার বাড়িতে যদি সবজি কাটার ছুরি থাকে তাহলে আপনি কোন লম্বা ও মজবুত লাঠিতে সেটাকে বেঁধে নিজের সাথে রেখে দিন, বন্দুকের সাথে সাথে এই হাতিয়ারও আপনার অনেক কাজে আসবে।
 আপনি নিজের সাথে একটা টর্চ অবশ্যই রাখবেন না অনেক সময় আমরা এখন ফোনের ফ্লাশ লাইট টর্চ এর মত ব্যবহার করি তাই টর্চ নিজের সাথে রাখতে ভুলে যাই।
 কিন্তু একটা বড় টর্চ অনেক দূর অব্দি ফোকাস করে আলো ফেলে যার জন্য টর্চ অন্ধকারে দেখার জন্য মোবাইলের ফ্লাশ লাইট এর থেকে অনেক উপযোগী।
আপনি নিজের ভেতর প্রচুর বিশ্বাস জাগিয়ে তুলুন এবং বলুন আজ আমি মরতে পারি না এবং ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসুন। আপনার যত প্রতিবেশী যারা এখনো জোম্বিতে পরিণত হয়নি তাদের সবাইকে নিজের সাথে নিয়ে যান, যত সংখ্যক লোক আপনার সাথে থাকবে তত আপনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে সব সময় এবং সব রকম পরিস্থিতিতে একসাথে থাকবেন যদিও নিজেদের মধ্যে বেশি কথাবার্তা বলা বা চেঁচামেচি করা একদম করবেন না।
 যদি ফিল্মে দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আপনি কোনো বড় ট্রাকে চড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তাহলে এটা একদম করবেন না কারণ প্রথমত ট্রাকের ইঞ্জিনের শব্দ জম্বিদের আকর্ষণ করবে এবং তাছাড়া বাইরে শহরের রাস্তায় নিশ্চয়ই প্রচুর গাড়ি উল্টোপাল্টা ভাবে পরে থাকবে তাই আপনি সেই জাম হওয়া রাস্তা বা হাইওয়ে  দিয়ে ট্রাক নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট জায়গা পাবেন না।
তাই এর থেকে ভাল হয় যে আপনি সাইকেল নিয়ে চলুন, সাইকেল নিঃশব্দ তো বটেই তার সাথে আপনি যে কোন গাড়ি বা গাছের মাঝখান দিয়ে সহজে বের হতে পারবেন।
 ঘরের বাইরে বেরিয়ে আপনি দেখুন যে শপিংমল বা বাজার কোনদিকে আছে এবং ভুল করেও সেইদিকে যাবেন না।  যদিও সিনেমাগুলোতে দেখানো হয় যে লোকেরা নিজেদের বাঁচানোর জন্য শপিং মল কে নিজের আশ্রয় স্থল বানায় কিন্তু এই জায়গা এমন একটি জায়গা যেখানে লোকেদের ভীড় হয় এবং জম্বিদের শিকার করার জন্য আদর্শ স্থান হয়।
 তাই জায়গাতে একদম যাবেন না যেখানে সংক্রামক রোগ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে শুধু তাই নয় শপিং মোলে বা বাজারে অনেকগুলো প্রবেশপথ থাকে তাই সব দরজায় আপনি নিজের নজর রাখতে পারবেন না।  জোম্বিরা যে কোন দিক দিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারে আর তাছাড়া যেখানে মানুষের সংখ্যা বেশি হয় সেখানে নিশ্চয়ই এখন জোম্বির সংখ্যাও বেশি হবে তাই আপনি  ভিড় স্থান থেকে দূরে থাকবেন।
এই সময় আপনার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ঘর থেকে বেরিয়ে আপনি কোথায় লুকাবেন, কোন জায়গা আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হবে, তাহলে এমন কিছু জায়গা বলি যেগুলো এই বিপদের সময় আপনার পক্ষে জীবনদায়ী হবে।  যেমন,
 ব্যাংক---
 ব্যাংক যে কোন ছোট বড় শহরে আপনি সহজে পেয়ে যাবেন ব্যাংকে ঢোকার জন্য একটাই রাস্তা হয়  যাতে সুরক্ষার জন্য একের অধিক দরজার স্তর লাগানো থাকে এই গুলো সাধারণত লোহার এবং খুব মজবুত হয় যে জায়গায় টাকা - গয়না রাখা হয় সেই জায়গায় আলাদা করে আরো বেশি দরজা লাগানো হয় এবং তা আরো মজবুত ও সুরক্ষিত থাকে। আপনি বন্দুকধারী পেয়ে যাবেন যদি আপনার নিজের শহরে ব্যাংকের লোকরা এখনো জোম্বিতে পরিণত না হয়ে থাকে তাহলে আপনি দ্রুত সেখানে চলে যান এবং তাদের আকুতি-মিনতি করুন।

 ব্রিজ---
 যদি আপনার আশেপাশে কোন নদী থাকে যাতে সেতু থাকে আর আপনারা একসাথে অনেকগুলো লোক থাকেন তবে আপনি সেই ব্রিজ বা  সেতুকে নিজের আশ্রয় স্থল করতে পারেন। আপনি হাতুড়ি বা কোন মেশিন দিয়ে কোন পদ্ধতিতে সেই পুলের দুইপাশ ভেঙে দিন যাতে আপনার আশেপাশে জোম্বিরা আসতে না পারে।  আপনি যখন সুযোগ বুঝবেন তখন চাইলে কোন দড়ি বা মই দিয়ে আবার শহরে যাওয়া-আসা করতে পারবেন।
 ফার্ম হাউস--
যদি আপনার শহর থেকে দূরে এমন জায়গায় যেখানে লোকের ভিড় কম থাকে, আপনি সেরকম কোন ফার্ম হাউস খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন। তাহলে এটা আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী স্থান হতে পারে এখানে আপনি জম্বিদের থেকে দূরে থাকতে পারবেন এবং সে নিজের জন্য সবজি চাষ করে বা উৎপাদন করে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারেন।
সমুদ্রের জাহাজ--
 যদি আপনি সমুদ্রের আশেপাশে থাকেন তবে সমুদ্রে জাহাজের থেকে উপযোগী আর কিছু হবে না আপনি খুব তাড়াতাড়ি সেখানে চলে যান।  সেখানে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো জাহাজ বা এই জাতীয় কিছু আপনি পেয়ে যাবেন। খালি এটা মনে রাখবেন যে ওই জাহাজের আগে থেকে যাতে কোনো জম্বি উপস্থিত না থাকে। আপনি সমুদ্রে কিছু দূরে  চলে যান  যাতে জোম্বিরা আপনার কাছে পৌঁছাতে না পারে।
 উঁচু পর্বত--
 যদি আপনি পর্বত এলাকার বাসিন্দা তবে আপনি কোন পাহাড়ে থাকতে চলে যান।
পাহাড়ে চড়া খুবই কঠিন হয় এবং খুব কমই ওঠার রাস্তা হয়।  আপনি পর্বতে উঠলে এই রাস্তা গুলো পাথর বা কিছু ফেলে বন্ধ করে দিতে পারেন।

 মিলিটারি বেস---
দুনিয়াজুড়ে মিলিটারি ক্যাম্প অথবা ট্রেনিং স্কুল থাকে যেখানে প্রচুর হাতিয়ার থাকে এবং সুরক্ষিত হয়। আপনি যদি সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন তাহলে বুঝবেন আপনার প্রাণ বেঁচে গেছে। এই স্থানগুলিতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সব রকম জিনিস থাকবে। এখানে আপনি উচ্চমানের হাতিয়ার সহ প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর ভাইদের পেয়ে যাবেন যারা নিজেদের দিকে আসা যেকোনো জম্বির বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে দেবে।

দুর্গ --
প্রাচীন রাজা-মহারাজাদের তৈরী দুর্গ বা কেল্লা আপনার আরেকটি বিকল্প হতে পারে। যারা শত্রুসেনাদের থেকে বাঁচার জন্য দুর্গগুলি সেইরকমভাবে ডিজাইন করেছিল  এবং মজবুতও হয়, যার চারপাশে সাধারণত পরিখা বা খালও কাটা থাকে এবং দরজা গুলো খুব বড় এবং ভারী হয়।  আপনি ভেতর থেকে কেল্লার চারিদিকে নজর রাখতে পারবেন এবং বাইরে থেকে এত উঁচু ও মজবুত দরজা ভাঙা জোম্বিদের পক্ষে খুবই মুশকিল হবে। এগুলি প্রচুর জমি নিয়ে অবস্থিত হয় তাই একটা দুর্গের ভেতর পুরো শহরের অধিবাসীরা সহজে থাকতে পারবে।
জেল --
 নিজেকে বাঁচানোর জন্য আদর্শ স্থান যদি আপনি জেল খুঁজে পান তাহলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি সেখানে চলে যান এবং জেলের সুরক্ষা কর্মীদের কাছে সাহায্য চান জেলের প্রাচীর  খুবই উঁচু এবং সুরক্ষিত তাই এখান থেকে বাইরে যাওয়া বা  ভেতরে আসা খুবই মুশকিল হয়। তাই জোম্বিরা জেলের ভেতরে সহজে আসতে পারবেনা আর এখানে সুরক্ষা কর্মীর সাথে সাথে বিভিন্ন হাতিয়ার ও আপনি পেয়ে যাবেন।

আইল্যান্ড--
 জম্বিদের থেকে নিজেকে দূরে রাখার সবচেয়ে আদর্শ এবং  স্থায়ী স্থান হল সমুদ্রের মাঝামাঝি থাকা কোন দ্বীপ। আপনি এরকম কোন স্থানে যেতে পারেন। আজও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এরকম দ্বীপ থাকে যাতে মানুষ হয়তো থাকে না। সেখানে যাবো  খুব কঠিন না শুধু শর্ত হলো আপনাকে কোন হেলিকপ্টার বা বোট বা জাহাজ এই জাতীয় কোন কিছুর ব্যবস্থা করতে হবে।  অন্যান্য স্থান থেকে আলাদা এই দ্বীপে আপনি নতুন করে নিজের জীবন শুরু করতে পারেন। ওখানে আপনি সহজে নিজের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা করতে পারবেন। জোম্বিরা চলমান লেসার মতো, তাদের মাথায় খাওয়া আর কামড়ানো ছাড়া আর কিছু থাকে না, তাই তাদের পক্ষে কোনো জাহাজ বা হেলিকপ্টার চালিয়ে আপনার কাছে আসা অসম্ভব বিষয় তাই সেই দ্বীপে আপনিও আপনার সাথে থাকা মানুষেরা নতুন করে নিজেদের জীবন আবার শুরু করতে পারবেন।

Saturday, 23 November 2019

মাংসখেকো প্যারাসাইট ও কিংবদন্তি লস্ট সিটি অফ দ্য মাঙ্কি গড --

2011 সালে এক অভিযাত্রী দল হন্ডুরাসের লা মসকুইটো অরণ্যে কিংবদন্তি লস্ট সিটি অফ দ্য মাঙ্কি গড বা হারিয়ে যাওয়া মাঙ্কি গডের শহর আবিষ্কার করে বা খুঁজে পায়।

বলা হয় যে এই শহরে অ্যাড এক্সট্রা পনেরো কুড়ি সাল অব্দি দখল করে রেখেছিল এবং তারপর এক মাংস খেকো রোগের প্রাদুর্ভাব হয় এবং তারপর থেকে এটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছিল এবং কারোর পা এখানে পড়েনি।
এই আবিষ্কারটি সত্যিই খুব চমকপ্রদ ছিল, আরও অবাক করা বিষয় এসে দাঁড়ায় যখন সেই দলটি বুঝতে পারে যে তারাও সেই মাংসখেকো রোগের স্পর্শে এসেছিল। তাদের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার দরকার ছিল নয়তো তারা তাদের মুখ হারিয়ে ফেলতে পারতো। প্রেস্টন নামক এক অভিযাত্রী পরবর্তীকালে এক সাক্ষাৎকারে জানায়, " এই প্যারাসাইট গুলো মুখের মিউকাস মেমব্রেনের দিকে মাইগ্রেট করে এবং আপনার নাক থেকে শুরু করে বাকি সবকিছু খেতে শুরু করে। এর ফলে আপনার নাক ঝুলে যায় আপনার ঠোঁট ঝুলে পড়ে যায় এবং আপনার মুখটা একরকম চুপসে যাওয়া অদ্ভুত রকমের দৃশ্য দাঁড়িয়ে পড়ে।"
এই শহরটিতে তদন্ত করার সময় অভিযাত্রী দলটি এক প্রকার বিষাক্ত সাপের মুখোমুখি হয়, সবগুলি রাত্তিরে আগুন থাকা সত্বেও তাদের ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল। অভিযাত্রী দল বরাতজোরে সাপের ছোবলের শিকার হওয়া থেকে পালিয়ে বাঁচতে পেরেছিল। তারা অনেকগুলি রহস্যময় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিতে সক্ষম হয় এবং স্থির করে আর কোনদিনও সেই শহরে ফিরে আসবেনা, কারণ এটা খুবই ভয়ানক ছিল, যদিও তারা এ বিষয়ে একমত যে সেখানে আরও অনেক রহস্যময় তথ্য লুকিয়ে আছে। কাছাকাছি কোন বসতি না থাকলেও দূরবর্তী কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের মতে এগুলো সেই মাংকি গডের প্রচেষ্টা যে অভিযাত্রী অথবা আগুন্তকদের পথে বাধা সৃষ্টি করে তাদের সেই হারিয়ে যাওয়া শহরের ভিতরে ঢুকতে না দেওয়া। এর ফলে এই শহরটি এখনও অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।

Monday, 7 October 2019

আমাজনের হারিয়ে যাওয়া দৈত্যপুরী

 একদল গবেষক ইকুয়েডরের আমাজন রেইন ফরেস্টের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পিরামিড এবং বিভিন্ন কাঠামোর একটি প্রাচীন শহর আবিষ্কার করেছিলেন।

দৈত্যদের হারিয়ে যাওয়া শহরটির সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক সাফল্য।

তারা স্থানটি নিয়ে যথাসম্ভব নথিবদ্ধ করেছেন, বেশ কয়েকটি অদ্ভুত কাঠামো এবং শিল্পকর্মের চিত্র এবং বেশ কয়েকটি ভিডিও তুলেছেন।

প্রাচীন এই শহরটি — যা দৈত্যদের বসতি ও তাদের দ্বারা নির্মিত বলে বিশ্বাস করা হয়, সে অঞ্চলের নেটিভরা সেটি উল্লেখ করেন, তবে এর আগে কেউ হারিয়ে যাওয়া শহরটি অনুসন্ধান করার সাহস পায়নি।





 ইকুয়েডরের কিংবদন্তিরা প্রাচীন দৈত্যদের  শহরগুলির কথা বলে, যা অনেক আগে পরিত্যক্ত হয়েছিল এবং শেষ কয়েক হাজার বছর ধরে সেগুলি এক এক করে প্রকৃতির মধ্যে হারিয়ে গেছে । 

প্রকৃতপক্ষে, কেবল ইকুয়েডরীয় কিংবদন্তিরা জায়ান্টদের বা দানবদের কথা বলে না, বরং অ্যামাজন অববাহিকার সব উপজাতিরা দৈত্যদের একটি প্রাচীন জাতিটির অস্তিত্বের কথা দাবি করে করে যারা ‘নিয়মিত আকারের’ মানুষেরা এলাকায় আসার অনেক আগে সেই সব সমৃদ্ধ শহরগুলি গড়ে তুলেছিল।

এই ধরণের অনুরূপ গল্পগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পাওয়া যাবে, আমরা যেখানেই তাকাই না কেন, পাতাগোনিয়া থেকে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত, প্রাচীন গ্রন্থ এবং মৌখিক কিংবদন্তিতে প্রাচীন যুগে পৃথিবীতে হাঁটাচলা করা বিশালকায় আকারের মানুষদের কথার উল্লেখ রয়েছে।

ঠিক এইরকম কিংবদন্তি  "দৈত্যের হারানো শহর" অনুসন্ধান করার জন্য একদল গবেষককে ইকুয়েডরের অ্যামাজনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্রমণ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল।

বলা হয় যে বেশ কয়েকটি উপজাতি প্রাচীনকাল থেকেই 'দৈত্যদের শহরে  '  আচার -অনুষ্ঠানের জন্য মিলিত হতো এবং এটি বিশ্বাস করা হয় যে এখানে শক্তিশালী আত্মার উপস্থিতি আছে ।

জায়গাটি স্থানীয়দের কাছে পবিত্র ছিল এবং তারা তাদের নির্মাতাদের সম্পর্কে ভয় এবং শ্রদ্ধার মিশ্রণ নিয়ে কথা বলেছিল।

প্রাকৃতিক গঠন হতে পারে ?

এই ধারণাটি নস্যাৎ হয়ে গেছিলো যখন সেই প্রত্নতাত্বিক দলটি সেই স্থানে প্রাচীন মেগালিথিক গঠনগুলি দেখতে পায়। 

তাদের দ্বারা প্রাপ্ত সবচেয়ে বড়ো কাঠামোটি হলো একটি পিরামিড, যা ছিল 80 মিটার উঁচু 80 মিটার প্রশস্ত উঁচু ঢাল বিশিষ্ট যা  প্রাকৃতিক গঠন হিসাবে বিবেচনা করা যায় না।

এটি শত শত বৃহত, বিভিন্ন আকারের শিলা ব্যবহার করে নির্মিত হয়েছিল, যার প্রতিটি ওজনের প্রায় 2 টনের মতো।

কাঠামোর শীর্ষে একটি সমতল অঞ্চল ছিল যা আনুষ্ঠানিক বা কোরবানির প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে।

পিরামিডের কাছে গবেষকরা পাথরের খোদাই করা অনেক নিদর্শন খুঁজে পেয়েছিলেন।

ফ্রেঞ্চ-আমেরিকান প্রত্নতাত্ত্বিক বেনোইট ডুভার্নুইল বলেছেন, "এটি দেখতে বাঁধানো দেয়ালের মতো, ৬০ ডিগ্রি কোণযুক্ত একটি বর্গক্ষেত্রের মতো, সম্ভবত কোনও বৃহত কাঠামোর ছাদ হতে পারে। "

"অনেকগুলি পাথর দক্ষ  হাতে সাজিয়ে তৈরী করা হয়েছিল, ধারালো কিনারা ছিল এবং মনে হয় এটি মানুষের হাতেই খোদাই করা হয়েছিল।"

উপরে মাটির স্তর পাথরের মসৃণ পৃষ্ঠকে সংরক্ষণ করে রেখেছিলো। সেখানে পাথরগুলি একসাথে ধরে রাখতে ব্যবহৃত সিমেন্টের মতো পদার্থের উপস্থিতিও দেখা গিয়েছিলো।

ধ্বংসাবশেষের আপাত বয়স বিবেচনা করে বলা যায় এটি এখনো অবধি পাওয়া আমেরিকাতে কংক্রিটের ব্যবহারের প্রথম নিদর্শন হতে পারে।

স্পষ্টতই, প্রাচীন এই নিদর্শনটির নির্মাতারা প্রযুক্তিগত দিক থেকে তাদের সময়ের হিসাবে বহুকাল এগিয়ে ছিল।

তবে, জায়ান্টদের শহরে পাওয়া কাঠামোগুলি সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক আবিষ্কার নয়। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, সাইটটিতে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলি ছিল বড় আকারের এবং অদ্ভুত রকমের  সরঞ্জাম যা অগণিত সময়ের জন্য প্রকৃতির সাথে অক্ষত হয়ে সাইটে রয়ে গিয়েছিলো। সরঞ্জামগুলির বিশাল আকার সাধারণ মানুষের পক্ষে ব্যবহার করা অসম্ভব।

গবেষক এবং সেই দলের সদস্য যারা এই দানবীয়দের শহরকে চিহ্নিত করেছিল ব্রুস ফেন্টমের মতে, "এটি চূড়ান্ত প্রমাণ যা দাবি করে যে দৈত্যরা সুদূর অতীতে পৃথিবীতে বাস করেছিল, এবং অবিশ্বাস্য শহর ও কাঠামো গড়ে তুলেছিল, এই ধরণের অত্যন্ত বিশাল আকৃতির হাতুড়ি ও যন্ত্র গুলি সেটাই নির্দেশ করে।
শক্ত কাঠের হ্যান্ডেলের সাথে সংযুক্ত এই যন্ত্রগুলির অবিশ্বাস্য আকার এবং ওজন উভয়ই এটি সাধারণ ইনকা বা আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানদের জন্য সরঞ্জাম হিসাবে ব্যবহারকে অসম্ভব করে তোলে, এই প্রাণীগুলি সাধারণত ১০ ফুট বা তারও বেশি ছিল ”

গবেষকরা যখন বুঝতে পারেন সেই হারিয়ে যাওয়া শহর তারা খুঁজে পেয়েছেন এবং আরো ভালো বলতে গেলে হারিয়ে যাওয়া দৈত্যপুরী  - তারা হতবাক হয়েছিল যখন সরকার থেকে স্থির করা হয় যে তার নিজস্ব বিশেষজ্ঞ দল পাঠাবে।

Earth4all.net -এ ব্রুস ফেন্টন যেমন উল্লেখ করেছিলেন, "ইকুয়েডরীয় সরকারী দলের সরকারী প্রতিবেদনে জানানো হয় যে স্থানটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক ছিল।"

বেনোইট ডুভার্নিউইল, ফেন্টন এবং তাদের সহকর্মীদের সাইটটি সঠিকভাবে খনন ও গবেষণা করার জন্য তাদের আসা বোরো রকমের ধাক্কা খেয়েছিলো।

তবে সরকার এই সাইটটিকে প্রাকৃতিক গঠন বলে অনড় থাকে এবং আরও অধ্যয়নের জন্য অযোগ্য বলে মনে করে, তবুও দলটি নিজের প্রচেষ্টায় অনুসন্ধান করে এবং  মেগালিথিক সাইটের কাছে আরও "কৃত্রিমভাবে তৈরি কাঠামো" পেয়েছিল।

দলটি মাটির উপর ছড়িয়ে থাকা প্রচুর বিভিন্ন আকৃতির বস্তুর এবং অদ্ভুত শিল্পকর্মগুলি লক্ষ্য করে।

তাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রাখার সাথে সাথে, তারা পুরোপুরি আয়তক্ষেত্রাকার ব্লকগুলি দেখতে পেলেন, ব্লকের পদক্ষেপগুলি, মসৃণভাবে সাজানো পাথরের এবং বিস্ময়কর আকারের পাথর এবং সিমেন্টের মতো চুন  — ভিজে গেলে যা কাদামাটির মতো দেখায়, তবে শুকনো অবস্থায় পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়।

আজ অবধি আর কোনও অগ্রগতি হয়নি এবং একসময় যা ঐতিহাসিক আবিষ্কার বলে বিবেচিত হয়েছিল, তা দ্রুত অন্ধকারে ঢুকে যায় বিতর্ক ও সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক কারণে খোঁড়ার আগ্রহ না থাকায়। যদিও সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলি খনন করতে চেয়েছিলো, তবে তেলের জন্য।

ইকুয়েডরের আমাজনের গভীরে একটি দীর্ঘকাল হারিয়ে যাওয়া দৈত্যপুরী বলে এই এক্সপ্লোরাররা যা দাবি করে তা নথিভুক্ত করা কয়েকটি চিত্র এবং কয়েকটি ভিডিও কেবলমাত্র রয়ে গেছে।

আরও বেশ কয়েকটি বড় টিলা এখনও খনন করা হয়নি। যদিও কাদা এবং গাছপালায় আচ্ছাদিত, তাদের আকৃতি থেকে বোঝায় যে পিরামিডগুলি তাদের নীচে সমাহিত করা হয়েছে। এটি কেবলমাত্র একটি পিরামিডের সাথে পুরো  শহরের অস্তিত্বের কৌতূহল জাগায় - এবং ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে যে এই জাতীয় কমপ্লেক্সগুলি কেন্দ্রীয় পিরামিডের চারপাশে নির্মিত হয়, এটিতে সাধারণত একজন মহান নেতার অবশেষ থাকে।

এটি যদি জায়ান্টদের শহর হয় তবে তাদের নেতা কে হতে পারে?

এই পরিস্থিতি কি ব্যাখ্যা করে যে সরকার কেন জায়গাটিকে "প্রাকৃতিক গঠন" বলে অভিহিত করেছে? তারা কি প্রাচীন দৈত্য তত্ত্বকে সমর্থন করবে এমন ধ্বংসাবশেষগুলিকে নিঃশব্দে সরানোর পরিকল্পনা করছিলেন? এরকম ঘটনা প্রথম নয় এর আগেও অনেক ঘটেছে।

দুর্ভাগ্যক্রমে, ফেন্টন জানিয়েছে যে ইতিমধ্যে অনেকগুলি নিদর্শন চুরি হয়ে গেছে, যার ফলে এর পিছনের ইতিহাস গুলি জানা আরো কঠিন হয়ে গেছে।

Monday, 30 September 2019

মারিককসি - দক্ষিন আমেরিকার রহস্যময় ও ভয়ঙ্কর বনমানুষ

দক্ষিণ আমেরিকার প্রত্যন্ত জঙ্গলগুলি দীর্ঘকাল ধরে অদ্ভুত প্রাণী এবং কিংবদন্তীর গল্পের উত্স ছিল এবং এর মধ্যে বিশাল বনমানুষের মতো প্রাণীর দেখতে পাওয়ার ঘটনাও অনেক আছে। এই পশুর বর্ণনা বিভিন্ন জায়গায় অল্প বিস্তর ফারাক হলেও বলা হয়,  3 ফুট চওড়া ও 12 ফুট লম্বা আকারের বিশাল  লোমশ দৈত্য, এবং প্রায়শই এই প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলির কাছের আদিবাসীরা দাবি করেন যে এই বনমানুষগুলোর নিজস্ব গ্রাম আছে , আদিম ধনুক এবং তীরগুলি ব্যবহার করতে পারে এবং  হুইসেল বা শিষ ও বানরের মতো বিভিন্ন আআওয়াজএর মতো এদের নিজস্ব ভাষা। যদিও আঞ্চলিক নামগুলি পৃথক হতে পারে তবে বেশিরভাগ  মেরিকক্সি নামেই তাদের পরিচিতি  এদের আসলে দক্ষিন আমেরিকান বিগফুট বা ইয়েটি বলা যেতে পারে।

এই রহস্যময় প্রাণীগুলির সাথে সম্ভবত সবচেয়ে দস্তাবেজযুক্ত এবং মর্মস্পর্শী এনকাউন্টারগুলির বা সাক্ষাৎ ছিল বিশিষ্ট ব্রিটিশ অভিযাত্রী কর্নেল পেরসিভাল এইচ ফ্যাসেট এর সাথে, যিনি পরবর্তীকালে  জেড নামে একটি রহস্যময় হারিয়ে যাওয়া শহরটি খুঁজতে গিয়ে জন্য এক দুৰ্ভাগ্যময় অভিযানে গিয়ে জঙ্গলে অদৃশ্য হয়েছিলেন। তাঁর ভ্রমণ ও অভিযানগুলির বিস্তৃত জার্নাল , যার অনেকগুলি অবলম্বনে তাঁর পুত্র ব্রায়ান ফ্যাসেটের বইগুলি সংকলিত হয়। 'Lost Trails, Lost Cities' নামে তার এক বইয়ের একটিতে জায়গায় মেরিকক্সির মুখোমুখি হওয়ার বর্ণনা পাওয়া যাবে।

ঘটনাটি ঘটেছিলো ১৯১৪ সালে যখন ফাউসেট বলিভিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুয়াপড়ে নদীর ঘন জঙ্গলে মানচিত্র নির্ধারণের জন্য মানচিত্রের বর্ণনা নেই এমন একটি স্থান  মাত্তো গ্রোসোতে  অভিযাত্রায় এসেছিলেন  এবং তারা ইতিমধ্যে স্থানীয় উপজাতিদের কাছ থেকে পশুটির বিচিত্র গল্পের সাথে পরিচিত হয়েছিল এবং যদিও এটিকে আকর্ষণীয় মনে হয়েছিল তবু তাদের চারপাশের বিষয়ে এবং তাদের যাত্রায় তারা কী খুঁজে পেতে পারে সে সম্পর্কে তাদের সতর্ক রাখতে যথেষ্ট ছিল। ইভান স্যান্ডারসন তার 1967 সালে তাঁর থিংস বইটিতে ফসেট যা শুনেছেন সেগুলি প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি লিখেছেন:

    এই প্রাণীগুলিকে ম্যাক্সুবিস অধিবাসীরা মেরিকক্সিস নামে অভিহিত করেছিলেন। তারা মেরিককসিসদেড় উত্তর-পূর্ব দিকে বাস করত। বলা হত পূর্বদিকে  লোমশ দেহের বেঁটে, কৃষ্ণাঙ্গদের একটি গ্রুপ, যারা সত্যই নৃশংস ছিল এবং খাবারের জন্য মানুষকে শিকার করত , বাঁশে বেঁধে আগুনের উপরে ঝলসে দেহ রান্না করত  এবং মাংস ছিঁড়ে খেত। এই ম্যাক্সুবিয়রা নিছক ঘৃণ্য এবং নীচু লোক হিসাবে পরিচিত। পরবর্তী ভ্রমণে, কর্নেল ফাউসেটকে একজন "এপ-পিপল" সম্পর্কে বলা হয়েছিল যারা মাটির ভিতর গর্তে বাস করত, তাদের  পুরো দেহ চুলে আবৃত ছিল এবং নিশাচর ছিল, তাই তারা আশেপাশের অঞ্চলে মরসেগোস বা ব্যাট-পিপল(বাদুড় -মানুষ) হিসাবে পরিচিত ছিল । স্পেনীয় ভাষায় ও টাটাস বা আর্মাদিলোস জাতীয় বেশ কয়েকটি আমেরেন্ডিয়ান গোষ্ঠী দ্বারা  এদের ক্যাবেলুডোস বা “লোমশ মানুষ” বলা হয় কারণ তারা বাদুড়ের মতো গর্তে বাস করে। ফাউসেট আমেরিন্ডসদের থেকে জানতে পারেন যে মরসেগোসের অবিশ্বাস্যরূপে উন্নত ঘ্রাণশক্তি রয়েছে যা শিকারীদের "ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়" এর মতো কাজ করে।

 প্রথম আকর্ষণীয় আবিষ্কারটি ছিল পূর্বের অজানা আমেরিন্ডিয়ান উপজাতি, যারা নিজেকে ম্যাক্সুবিস হিসাবে পরিচয় দেয় এবং সূর্যের উপাসনার ধর্মের মতো কিছু কৌতূহলীয় বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করেছিলেন এবং সৌরজগতের গ্রহগুলির একটি অবর্ণনীয় জ্ঞান প্রদর্শন করেছিলেন, যা তারা চমকপ্রদ নির্ভুলতার সাথে আঁকতে পারতো । পড়াশোনা করার জন্য এটি আরও  আকর্ষণীয় হত তবে ফাউসেট এবং তার সঙ্গীরা নৃতাত্ত্বিক কাজ করার জন্য সেখানে ছিল না, এবং কিছুদিন উপজাতির সাথে থাকার পরে তারা আরও একবার কুয়াশাচ্ছন্ন জঙ্গলে ফিরে এলো, এই মনোমুগ্ধকর লোকদের পিছনে ফেলে এবং এমন একটি অঞ্চল অতিক্রম করলেন যা বহিরাগতদের দ্বারা সম্পূর্ণ অদেখা ছিল এবং  এটি অনেকটা ভিন গ্রহের পৃষ্ঠের মতো বলা যেতে পারে।

কয়েক দিন ধরে এই অচেনা ভূমির অসংখ্য বিপদ মোকাবিলা করার পর, এই অভিযানটির মাঝপথে একটি রহস্যময় রাস্তার মুখোমুখি হয়েছিল, যা তারা এই অঞ্চলের আদিবাসীদের দ্বারা ব্যবহৃত বলে মনে করেছিল। তারা যখন সেখানে দাঁড়িয়ে এই ভাবছিলো যে এই পথ অনুসরণ করতে হবে কি না এবং কোন পথে যেতে হবে, ফাউসেট লিখেছেন যে সেই সময় তারা দুটি শরীর দেখতে পেয়েছিল প্রায় 100 গজ দূরের দিকে, সম্ভবত কিছু অজানা ভাষায় বকবক করছে এবং ধনুক এবং তীর বহন করেছিল। যদিও তারা প্রথমে স্থানীয় উপজাতির অন্তর্ভুক্ত বলে ধারণা করা হয়েছিল, তবুও কাছ থেকে দর্শন করার পরে তারা সম্পূর্ণ অন্যরকম দেখায় এবং ফাউসেট তাদের বর্ণনা করেছেন:

  ছায়ায় ঢেকে থাকার জন্য আমরা তাদের পরিষ্কারভাবে দেখতে পেলাম না, তবে আমাদের মনে হয়েছিল তারা বড়, লোমশ পুরুষ এবং ব্যতিক্রমী লম্বা বাহু এবং সম্পূর্ণ উলঙ্গ, আদিমকালের মতো. হঠাৎ করে তারা ঘুরে জঙ্গলে অদৃশ্য হয়ে গেলো, আমরা বুঝলাম যে এদের অনুসরণ করা যাবে না, আমরা তখন সেই রাস্তার উত্তর দিক অনুসরণ করা শুরু করি।

এ বিষয়টি দ্বারা এটি স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে ফাউসেট তাদের মানুষ হিসাবে ভেবেছিলেন কিন্তু তা বিবেচনা করেননি। এরপর অদ্ভুত ঘটনা ঘটে সন্ধ্যার সময়  যখন  হঠাৎ দূর থেকে অন্ধকারের মধ্যে ভেঁপু বা শিঙা বেঁকে উঠলো। অভিযানের সদস্যরা তত্ক্ষণাত্ সতর্ক হয়ে জেগে উঠলেন, কারণ তারা স্বভাবতই জানতেন যে এটি হুমকির সূচক একটি আক্রমণাত্মক শব্দের মতো। ফাউসেট লেখেন:

  সন্ধ্যার অন্ধকারে, সভ্য লোকের দ্বারা নিরক্ষিত এই বনের শাখাগুলির উঁচু তলদেশের নীচে শব্দটি কিছুটা  অপেরার উদ্বোধনী নোটের মতোই উদ্বেগজনক ছিল। আমরা জানতাম যে করা এটি তৈরি করেছে এবং সেই বন্যেরা এখন আমাদের অনুসরণ করছে। শীঘ্রই আমরা শুনতে পেলাম যে রুক্ষ  নির্দয় সিঙ্গার আওয়াজ ।

আমরা আমাদের একটি শিবিরের জন্য সন্ধান করলাম যা আক্রমণ থেকে কিছুটা সুরক্ষার দিতে পারে ও সেই গাছের জঙ্গল থেকে কিছু দূরে এবং অবশেষে টাকুয়ারা ঝোপের মাঝে একস্থানে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখানে সেই নগ্ন বর্বররা টাকুয়ারার কয়েক ইঞ্চি লম্বা দীর্ঘ কাঁটার কারণে অনুসরণ করার সাহস করবে না। প্রাকৃতিক আশ্রয়ের  চারপাশে উত্তেজনাপূর্ণ উত্তেজনা শুনতে পেলাম, কিন্তু তারা ঢুকতে সাহস পাচ্ছিল না। তারপরে, শেষ আলোটি যেতে যেতে তারা আমাদের ছেড়ে চলে গেল, আমরা তাদের আর কিছুই শুনলাম না।

পরের দিন সকালে দলটি তাদের আশেপাশের জায়গাটি চূড়ান্তভাবে পরীক্ষা করে এবং আশেপাশের অঞ্চলে 'তাদের' প্রবেশ করার কোনও  চিহ্নে দেখতে পেল না। তারা যে রাস্তাটি পেয়েছিল সেই পথ অনুসরণে চলতে থাকলো এবং সেদিন সন্ধ্যায় আবার কোনও ঘটনা ছাড়াই শিবির করেছিল। পরের দিন সকালে, তারা শিবির থেকে বেরিয়ে আসে এবং প্রায় এক মাইলের মধ্যেই দেখতে পেলো সেই অদ্ভুত উপজাতির গ্রামে, সেই  প্রাণীদের দ্বারা জনবহুল কিন্তু তারা স্পষ্টতই মানুষ ছিলেন না। ফাউসেট তার লেখায় বর্ণনা করেছেন:

    সকালে আমরা রওনা দিলাম  এবং এক মাইলের  এক চতুর্থাংশের মধ্যে এক ধরণের খেজুর-পাতা দিয়ে তৈরী ঘর পেরোলাম , তারপরে আরেকটি। তারপরে হঠাৎ করে আমরা জঙ্গলের উন্মুক্ত স্থানে পৌঁছে গেলাম। জঙ্গল , ঝোপঝাড় দূরে পড়ে গেল, গাছের মধ্যে কুঠুরি করে আদিম ধরণের ঘর, পাতা দিয়ে তৈরী ঘর, যেখানে সেই বনমানুষগুলোকে দেখতে পেলাম বসে থাকতে। কেউ কেউ তীর তৈরিতে ব্যস্ত ছিল, অন্যেরা কেবল অলস ভাবে বসে ছিল বনমানুষের মতো দেখতে  উন্নত শয়তান  কোনো প্রজাতি।

 আমি শিস দিয়েছিলাম, এবং একটি বিশাল প্রাণী, কুকুরের মতো লোমযুক্ত, নিকটের একটি ঘরে দৌড়ে ঢুকলো, এক মুহূর্তে তার ধনুকে তীর লাগিয়ে  এবং কেবল চার গজ দূরে অবধি এক পা থেকে অন্য পায়ে অনেকটা নাচতে নাচতে দৌড়ে এলো। তার মুখ থেকে আওয়াজ বেরিয়ে এলো অনেকটা  'অঘ 'আঘ ' করা শিম্পাঞ্জি জাতীয় বনমানুষের মতো ! সেটি  সেখানে নাচতে থাকল, এবং হঠাৎ আমাদের চারপাশের পুরো বনটি যেন জীবিত হয়ে উঠলো একই রকম শব্দ করে চারদিক থেকে আরো প্রাণীরা ধনুক নিয়ে এক এ রকম আওয়াজ ও নাচ করতে করতে ঘিরে ধরলো । এটি আমাদের জন্য খুব সূক্ষ্ম পরিস্থিতির মতো ছিল এবং আমি ভাবছিলাম যে এটিই শেষ। আমি ম্যাক্সুবিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সংকেত করলাম, কিন্তু তারা কোনও পাত্তা দিলো না। এ যেন মানুষের বক্তব্য তাদের বোধগম্যতার বাইরে ছিল।

 আমার সামনে প্রাণীটি তার নাচটি বন্ধ করে দিয়েছিল, এক মুহুর্তের জন্য নিখুঁতভাবে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিল এবং তার কান দিয়ে সমান হওয়া অবধি তার ধনুকটি আবার টেনে নিয়েছিল, একই সাথে ছয় ফুটের তীরের কাঁটা জায়গাটি আমার বুকের সোজা উচ্চতায় নিয়ে গেছিলো। আমি চোখের দিকে সরাসরি তাকালাম এবং জানলাম যে সেটি এখনই সেই তীরটি ছাড়বে না। ইচ্ছাকৃতভাবে যেমন ধনুকটি তুলেছিল ঠিক তেমনি ধনুকটি নীচে নামিয়ে নিলো  এবং আরও একবার ধীরে ধীরে নাচ শুরু করেছিলেন, এবং সেই "আঘ", আঘ " আওয়াজ করে উঠলো।  '

এই প্রাণীটি একই রকম কার্যকলাপ  কয়েকবার চালিয়ে যায়, কেবল ধনুকে লক্ষ্য করে তার অদ্ভুত, অদ্ভুত নাচ এবং তারপরে আবার লক্ষ্য রাখা । তবে ফাউসেট জানতো যে কোনও মুহুর্তে সেই তীরটি বেরিয়ে যেতে পারে এবং পুরো বিদেশী সিনেমার দৃশ্যের মতো সে তার হাতটি দৃঢ়ভাবে  তার পিস্তলের বোতামের উপরে রেখেছিল। এক পর্যায়ে ফাউসেট বলেছেন যে তিনি তার জীবনের জন্য মারাত্মকভাবে ভয় পেতে শুরু করেছিলেন এবং নিজের পিস্তল দিয়ে এটিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন, জন্তুটির পায়ের কাছে গুলি চালিয়েছেন এবং জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বজ্রধনীর মতো গুলির আওয়াজের  প্রতিধ্বনি প্রেরণ করলেন। তিনি ঘটনার এই ক্রম সম্পর্কে বলেছেন:

আমি আমার নিতম্বের উপর থাকা মাউসার পিস্তলটি বের করলাম। এটি একটি বড় ও সাংঘাতিক জিনিস, জঙ্গলে ব্যবহারের জন্য ঠিক নয়, তবে আমি এটি এনেছিলাম কারণ কাঠের হোলস্টার ক্লিপ পিস্তল-বাটে লাগিয়ে এটি একটি কার্বাইনে পরিণত করা যায় এবং সত্যিকারের রাইফেলের তুলনায় হালকা ছিল। এটিতে .38 কালো গুঁড়ো শেল ব্যবহার করা হয়, যা তাদের আকারের সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্রের থেকে এগিয়ে নিয়ে যায়. আমি সেটি উঁচু করিনি কেবল ট্রিগারটি টেনে এপ-ম্যানের পায়ের কাছের  মাটিতে চালিয়েছিলাম ।

 প্রভাব তাত্ক্ষণিক ছিল। তার মুখে সম্পূর্ণ বিস্ময় ও ভয়ের ভাব এসেছিলো , এবং ছোট্ট চোখগুলি বড় বড় হয়ে গিয়েছিলো। সে তার ধনুক এবং তীর ফেলে একটি গাছের পিছনে  বিড়ালের মতো দ্রুত লুকিয়ে গেল। তারপরে তীরগুলি উড়তে শুরু করল। আমরা কয়েকটি ঝোপঝাড়ের দিকে গুলি চালিয়েছিলাম , এই আশায় যে শব্দটি ওগুলোকে আরও চমকে ও ভয় পাইয়ে দেবে, তবে তারা আমাদের কোনওভাবেই মেনে নেবে না বলে মনে হয়েছিল এবং কাউকে আঘাত দেওয়ার আগে আমরা হতাশার সাথে পিছিয়ে এলাম এবং গ্রামটি আড়াল হওয়া অবধি চলতে থাকলাম। আমাদের অনুসরণ করা হয় নি, তবে উত্তর দিকে ওঠার সাথে সাথে গ্রামে হৈ চৈ দীর্ঘক্ষণ শুনতে পেলাম  সেই "আঘ", আঘ " করা বনমানুষের মতো আওয়াজ।

এই ঘটনাটি পুরোপুরি চাঞ্চল্যকর বলে মনে হতে পারে এমনকি আরও সন্দেহবাদী মনের পক্ষে এটিকে বরখাস্ত করা বা গল্প বলা সহজ হতে পারে, তবে এর বিবেচনা ও গুরুত্বদাবি রাখার কয়েকটি কারণ রয়েছে, প্রথমটি হ'ল এটি ফাউসেটের কোনো কাল্পনিক গল্প ছিলোনা। এটি তাঁর অভিযানকালে অরণ্য, বন্যজীবন এবং অঞ্চলের মানুষের  সম্পর্কে পর্যবেক্ষণগুলির মধ্যে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  নোটগুলির একটি অংশ ছিল। তিনি একজন অনবদ্য পেশাদার এবং রয়েল জিওগ্রাফিকাল সোসাইটির সদস্য ছিলেন, তেমনি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়, অভিজ্ঞ এক্সপ্লোরার এবং সমীক্ষকও ছিলেন এবং তার গবেষণাপত্রের মাঝামাঝি সময়ে একটি বানানো গল্প ছড়িয়ে দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কেন তিনি এমনটি করবেন এবং তাঁর খ্যাতি নষ্ট করবেন? তাতে কি হবে ?  তিনি  স্থানীয় উপজাতি বা বন্যজীবের সম্পর্কে ভুল বিবরণ দেননি, কারণ তিনি এই জঙ্গলের সাথে এতটা পরিচিত ছিলেন যতটা  সেই  যুগে সম্ভব হতে পারে।

ফাওসেটের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করা হয়েছিল যে তিনি সম্ভবত স্থানীয়দের সাথে তার আচরণকে অতিরঞ্জিত করেছিলেন এবং এই ক্ষেত্রে তাদেরকে কোনও বর্ণবৈষম্যমূলক কারণে লোমশ  হিসাবে দেখান, তবে যদি তা হয় তবে অন্যান্য স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে তার আচরণের অন্যান্য রেকর্ডে তাদের স্বভাব, বর্ণনা সম্পূর্ণ সঠিক কেন ? এটি কিছুটা সত্য যে ফাউসেট  আদিম উপজাতির সম্পর্কে কিছু ব্যক্তিগত মতামত পোষণ করতেন , তবে তিনি কখনোই তার গবেষণায় সেগুলি লিপিবদ্ধ করে গবেষণা ও কাজের সাথে আপস করতেন না। জার্নাল এন্ট্রিগুলির এই দিকটি সম্পর্কে স্যান্ডারসনের অনেক কথা রয়েছে, তিনি যা লিখেছেন:

    তিনি (ফাউসেট) কোনও জাতিবিদ, নৃতাত্ত্বিক বা প্রত্নতাত্ত্বিক ছিলেন না, তবে এই শাখাগুলির সাথেই তার কর্মজীবন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়েছিল। পৃথিবীর অনাবিষ্কৃত অঞ্চলগুলির মধ্যে তাঁর বিস্তৃত ভ্রমণকালে তিনি বহু অধিবাসীর সন্ধান প্রথমবার পেয়েছিলেন যাদের কথা আগে কেউ জানতো না, তাদের সাথে বসবাস করেছিলেন, প্রায়শই তাদের ভাষা শিখতে পারেননি, তাদের রীতিনীতি সম্পর্কে যতটা সম্ভব রেকর্ড করেছিলেন এবং তাদের উৎস সম্বন্ধে শ্রেণিবিন্যাসের চেষ্টা করেছিলেন। এগুলির বেশিরভাগই জাতিতত্ববিদদের বা এথেনোলোজিস্টদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাসের সাথে বিরোধী ছিল এবং ফাউসেটেরঐতিহাসিক তত্ত্বগুলি তখনকার সময়ের সাথে সম্পূর্ণ বৈচিত্র ছিল এবং এখনও তা মেনে নেওয়া হয়েছে। যদিও তারতত্ত্বগুলির তীব্র সমালোচনা করা হয়েছিল, তবুও তিনি যে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তার সত্যতা নিয়ে কখনও প্রশ্ন করা হয়নি। কেবল অধিবাসী সম্পর্কে তার মতামতের বিরোধিতা করা হয়েছে।

  তাঁর লোমশ মেরিকক্সিসের বিবরণকে কখনও সন্দেহ করা হয় নি, তার দুটি নির্ভরযোগ্য সাক্ষী ছিল এবং তিনি যা দেখেছিলেন তার আগে ও পরে অনেকেই এক রকম বর্ণনা দিয়েছিলো।  অতএব আমরা এই প্রতিবেদনটি পুরোপুরি গ্রহণ করতে বাধ্য হই; এবং এর সহজ অর্থ এই যে, ১৯১৪ সালে মাত্তো গ্রোসোতে পেরেসিস রেঞ্জের উত্তর-পূর্বে বসবাসকারী লোমশ আদিম মানব গোত্রের প্রাণী ছিল যাদের নিকটের আমেরিকার আমেরিইন্ডিয়ান আবরিজিনদেড় সাথে বংশগত কোনো সম্পর্ক ছিল না ।

যদিও পুরো এক্সপিডিশনটি  খুব তাত্পর্যপূর্ণ ছিল, তবে ফাউসেটের লেখার মধ্যে থাকা তথ্যগুলি উত্তরের চেয়ে আরও বেশি প্রশ্ন রেখে গেছে। সেই জঙ্গলে ফাউসেট এবং তাঁর সহযোগী অভিযানের সদস্যরা কীসের মুখোমুখি হয়েছিল? এগুলি কি আসলেই কিংবদন্তি মেরিকক্সি বা অন্য কিছু ছিল? এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে ফাউসেট এটিকে অনুসরণ করতে বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন না এবং এটিকে বেশিরভাগ যাত্রাপথের একটি বাধা হিসাবে বিবেচনা করেছেন। তিনি কখনই সেগুলি অনুসন্ধান করার জন্য কোনও প্রচেষ্টা করেননি এবং তারা কথা থেকে আস্তে পারে সে সম্পর্কে আগ্রহ দেখাননি। এই প্রাণীগুলি ফাউসেট তাদের বর্ণনা করার মতোভাবেই কি উপস্থিত ছিল এবং যদি তাই হয় তবে তারা কী ছিল  কিভাবে তাদের আবির্ভাব এবং তারা কীভাবে মেরিকক্সির কিংবদন্তীর হয়েছিল? উত্তরটি সেই নিষিদ্ধ জঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে থেকে গেছে ।

Sunday, 22 September 2019

জানা - অজানা জাপান --

শিন্টোইসম ও বুধ্ধিসম --

এই দুই ধর্ম জাপানের সবচেয়ে পরিচিত ধর্ম। একজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত জাপানিজ প্রোফেসর জাপানের বাসিন্দাদের উপর করা সমীক্ষায় প্রকাশ করেন যে জাপানের ৮০% হলো শিন্টোইস্ট এবং ৭০% হলো বুদ্ধ ধর্মাবলম্বী। যা মিলিয়ে ১৫০% হয়। কিন্তু কিভাবে? খুব সহজ. একজন জাপানিজ বলতে পারেন যে তিনি বৌদ্ধ ও শিন্টোইস্ট দুই ই। জাপানে এই দুই ধর্ম পালন খুব ই সাধারণ ব্যাপার। 

"karaoke" বা কারোকে --

এশিয়ান দেশগুলিতে বিশেষ করে আমাদের দেশে "karaoke" বা কারোকে গায়করা খুব জনপ্রিয় কিন্তু এই শব্দটি আসলে জাপানি শব্দ 'কারা ' যার অর্থ খালি ও 'ওকে ' যার অর্থ অর্কেস্ট্রা একসাথে করলে মানে বোঝায় রেকর্ড করা মিউজিক বা ছন্দের সাথে গান গাওয়া বা কণ্ঠ দেয়া।

ইকেবানা --
জাপানিজ ফুল সাজানোর একটি শিল্প হলো ইকেবানা। অন্য কোনো দেশে এই ফুল সাজানোকে শিল্প হিসাবে দেখা হয়না  কিন্তু জাপানে এটি বেশিরভাগ বাসিন্দা মেনে চলে।  ইকেবানা কেবল পাত্রে ফুল গুছিয়ে রাখার থেকে অনেক বেশি কিছু। ফুল সাজানোর বিভিন্ন পদ্ধতি আছে প্রতিটি ধাপে ধাপে যা আমাদের প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক ও মূল্য ব্যক্ত করে এবং জাপানিজরা একে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখে।

ওয়াসকু --

ঐতিহ্যবাহি জাপানিজ খাদ্যগুলিকে ওয়াসকু বলে যার অর্থ 'জাপানের খাবার'  এগুলি  স্বাস্থকর ও সুস্বাদু হিসাবে পৃথিবী খ্যাত ও 'ইউনেস্কো কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি' হিসাবে সীকৃতি পেয়েছে। এগুলি থেকে আমাদের দেশে 'ইনস্ট্যান্ট নুড্ল ' এর আমদানি হয়।

অটোমোবাইল --

ইয়ামাহা , টয়োটা , ইসুজু,হোন্ডা ,কাওয়াসাকি,সুজুকি, মাজদা, এগুলি বিখ্যাত গাড়ি নির্মাণ সংস্থা যা সারা বিশ্বে বিখ্যাত। গত ১০ বছরে জাপানের গাড়ি নির্মাণ প্রায় ১০ গুন্ বেড়েছে।

শিশুদের থেকে বৃদ্ধ বেশি --

জাপান সম্পর্কে একটি দুক্ষজনক তথ্য হলো এখানে শিশুর জন্ম নিয়ে খুব সমস্যা। এখানকার বর্তমান বাসিন্দাদের কাছে পরিবারের জন্য সময় নেই।  তাই বর্তমানে শিশুদের থেকে বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি।
এবং অবাক করা বিষয় শিশুদের থেকে বৃদ্ধদের ডাইপার বেশি বিক্রি হয়।
জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপে পৃথিবীর সবচে বেশি আয়ুসম্পন্ন মানুষরা থাকে যার মধ্যে দুজন ১১৭ ও ১১৬ বছর বয়সী।

পৃথিবীর সবচেয়ে কম অপরাধের ঘটনা --

জাপান পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান আপনার যদি অপরাধ জগতে ভয় থাকে তবে আপনি জাপানে চলে আসুন।  এখানে কিছু সবচেয়ে বেশি ঘটা অপরাধের মধ্যে হোলো - সাইকেল বা ছাতা চুরি।
অনেকসময় ই এখানে লোকেদের ব্যাগ খোলা রেখে যাতায়ত করতে দেখবেন বা তাদের ঘরে তালা দেয়ার বা সাইকেলে তালা দিতে দেখা যায়না - জাপান এতটাই নিরাপদ।


-- আপনি নিশ্চই জানেন জাপান একটি দ্বীপকেন্দ্রিক দেশ কিন্তু জানেন জাপানে প্রায় ৬৮০০ এর বেশি দ্বীপ আছে ? সবচেয়ে বড়ো চারটি দ্বীপ হলো হোনশু , কিউশু , হক্কাইডো এবং শিকোকু যা মিলিয়ে জাপানের মোট ভূমির প্রায় ৯৭%!

--পরিষ্কার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার বিষয় --

আইন- কানুন জাপানে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং শিশু বয়সের থেকেই এগুলি বাধ্যতামূলক ভাবে শিশুদের সেখান হয়। এই জন্য বেশিরভাগ জাপানি বিদ্যালয়ে শিশুদের বা শিক্ষার্থীদের ই   ক্লাসরুম, টয়লেট এবং বিদ্যালয়ের আশেপাশে পরিষ্কার করতে হয় নিয়মিত ভাবে।  এভাবে সাফাইকর্মীদের পয়সা দিতে হয়না ফলে খরচ কমে যায় এবং এই পরিষ্কার করার উপর মূল্যায়ন বা নম্বর ও আছে।

এগুলো আমাদের দেশে ভাবতে পারবেন ? এইজন্য আমি এটাকে জাপানের সবচে অবাক করা তথ্য মনে করি।


--- জুতো খুলে রাখা --
অবশ্যই জাপানের সবজায়গাতে বলছিনা তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ করে ঘরে ঢোকার আগে , 'তাতামি' নামক মাদুর বা ম্যাট দেখলে সেখানে জুতো খুলে রাখতে হয়।

-- ঝুকে অভিবাদন জানানো --

 জাপানে অনেক রকমের ঝুকে অভ্যর্থনা বা অভিবাদন বা ক্ষমাপ্রার্থনা জানানোর পদ্ধতি আছে এক একটি এক এক রকমের পরিস্থিতির উপর করা হয় - তবে জাপানিজরা বোঝে যে কোনো বিদেশিদের পক্ষে এগুলি সঠিক ভাবে করা সম্ভব নয় , মাথা থেকে কোমর অবধি প্রতিটি ঝোঁকে এক এক রকম অর্থ আছে , তবে যাই হোক কাউকে অভিবাদন করতে বা অভ্যর্থনা করতে অন্তত ঝুকে সম্মান দেখানো উচিত। সাধরণত যতটা বেশি সময় নিয়ে ও নিচু হয়ে ঝোকা হয় তত বেশি সম্মান প্রদান করা হয় ধরতে পারেন তবে এর জন্য বেশিবেশি প্রত্যেকবার ঝুকে পড়বেন না এতে আবার আলাদা ব্যাপার হতে পারে !

বখশিস বা টিপ্ --
অন্যান্য দেশের হোটেলের মতো জাপানের ট্রেডিশনাল বা গতানুগতিক হোটেল বা রেস্টুরেন্টে গুলিতে টিপ্ বা বখশিশ নেয়ার প্রচলন নেই।


--- সুরুৎ সুরুৎ করে নুডুল খেতে জাপানে কোনো লজ্জা নেই বরং একে খুব ভালো চোখে দেখা হয় যার অর্থ আপনার  নুডুলসটি খুব ভালো লাগছে এবং জাপানি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে দেখবেন যে আপনার  বাইরে সবাই কত জোরে জোরে সুরুৎ সুরুৎ আওয়াজ করে নুডুলস খাচ্ছে।


-- গাড়ির দরজা জোরে বন্ধকরা অভ্যাস ? জাপানে একটু খেয়াল রাখবেন।
আপনি অবাক হয়ে যাবেন যে এখানে গাড়ি বা ট্যাক্সির দরজা গুলি নিজে থেকে বন্ধ হওয়ার ব্যবস্থা আছে  এবং জোরে বন্ধ করা থেকে সাবধান থাকবেন , আমি একবার ভুল করে অভ্যাসের বসে বন্ধ করে দিয়েছিলাম, যার ফলে ড্রাইভারটি খুব ভয় পেয়ে গেছিলো।


--- জাপানে নিজের বিসনেস কার্ড সবসময় একটু ঝুকে ও দুই হাতে ধরে দিতে হয়।


--- চপস্টিক জাপানে খাবার খাওয়ার একটি অংশ তবে চপস্টিক দিয়ে খাবার ভেঙে বা চিরে না খেয়ে খাবার টি তুলে কামড়ে খাওয়া উচিত।  কারণ এর অর্থ অন্যরকম দাঁড়ায় যেমন ভাতের মধ্যে খাড়া ভাবে চপস্টিক দেয়া শেষকৃত্যের একটি প্রথা।


-- মদ্যপান --
জাপানে নিয়ম হচ্ছে পদ অনুসারে ড্রিংক অফার করা যিনি নিচের পদের কর্মী আগে এবং উপরের পদের কর্মী তারপরে ড্রিংক অফার করে তাই কারোর ড্রিংক এর অফার প্রত্যাখ্যান করা এখানে বেশ অপমানজনক আপনার মদ্যপানের অভ্যাস না থাকলে আস্তে আস্তে খাবেন।


--- মোবাইল ফোন --
জাপানের প্রায় সব মোবাইল এ খুব উন্নত প্রযুক্তির এবং আমাদের ছাড়ুন মার্কিন বা ইউরোপিয়ান দেশগুলির থেকেও অন্তত ৫ বছর এগিয়ে।  যদিও এখানে বাসে বা ট্রেনে ফোনে কথা বলা ভালো ভাবে দেখা হয় না. নিয়ম হচ্ছে মোবাইল সাইলেন্ট করে বাস বা ট্রেনে ওঠা যদি জরুরি দরকার হয় তবে যতটা সম্ভব কম শব্দ করে আস্তে কথা বলা যেতে পারে।



-- লাইন দেখলে ভাববেননা আমাদের দেশের মতো কিছু বিনামূল্যে বা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে , আসলে জাপানিরা সব ক্ষেত্রেই খুব শৃঙ্খলাবদ্ধ তাই যদি 'বাকা গাইজিন' বা মূর্খ বিদেশী কথাটি না শুনতে চান তবে ধৈর্য ধরে লাইন এ থাকবেন আগে বাড়িয়ে এগিয়ে যাবেন না।

-- যদি দেখেন সুট - টাই পরে রাস্তায় কেউ ব্রিফকেসে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে তবে অবাক হবেননা হয়তো শেষ ট্রেন মিস করেছে, এটা জাপানে সাধারণ ব্যাপার।

-- সাক্ষরতার হার জাপানে সবচেয়ে বেশি - ১০০% ওখানে জুনিয়র থেকে হাইস্কুল পর্যন্ত শিক্ষা বাধ্যতামূলক। 


--- জাপানিজ মহিলাদের কালো দাঁত -
জাপানে প্রাচীন যুগ থেকে 'ওহাগুরো ' বা দাঁত কালো করা মহিলাদের মধ্যে প্রচলন ছিল। বিশেষ করে বিবাহিত মহিলাদের মধ্যে। এই প্রচলনের কারণে তাদের আরো আকর্ষণীয় করার সাথে দাঁতের সমস্যা ও ক্ষয় দূর করবে এমন ধারণা ছিল. অনেক রকম জিনিস যেমন আঠা , কালি ইত্যাদি ব্যবহার করা হতো। এই প্রথাকে ১৯ শতকে নিষিদ্ধ করা হয় , জাপানকে আরো উন্নত ও অন্যান্য দেশের কাছে এই সভ্যতাকে আকর্ষণীয় ও ভালো করে তোলার জন্য।


-- পশ্চিমা দেশগুলি তে অনেক সময় এ মানুষকে হাটতে হাটতে খাবার খেতে বা কোল্ডড্রিঙ্কস/কফি পান করতে দেখা যায় কিন্তু জাপানে হাটতে হাটতে খাওয়া কে খুব ই অভদ্র আচরণ ও নিচু মানসিকতা বা নিম্ন বর্গের আচরণ ধরা হয়। খুব দরকার হলে তারা ভেন্ডিং মেসিনের পাশে দাঁড়িয়ে খেয়ে নেয়.

---সুমো জাপানের জাতীয় খেলা হলেও সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো বেসবল খেলা যা মেজি শাসনের সময় প্রচলিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যদের প্রচুর মাত্রায় উপস্থিতির প্রভাবে।

-- চা জাপান সংস্কৃতির একটি অংশ যদিও এই দেশে  উচ্চ গুণসম্পন্ন জ্যামাইকান কফি খুব জনপ্রিয়। জামাইকার রপ্তানিকৃত 'ব্লু মাউন্টেন ' কফির প্রায় ৭০% জাপানে যায়।


-- জাপানি রেস্টুরেন্ট গুলো প্রায় এ ওশিবোরি নাম ভিজে তোয়ালে খদ্দের দের দেয় খাবার খাবার আগে যাতে তারা হাত মুছতে পারে।  তোয়ালে গরম না ঠান্ডা থাকবে এটা নির্ভর করে খাবার কোন সময় দেয়া হচ্ছে। খালি এটা দিয়ে মুখ মুছবেন না বা সারাক্ষন ব্যবহার করবেন না।

---- জাপানে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৫০০ এর বেশি ভূমিকম্প হয়ে থাকে।  সৌভাগ্যবশত বেশিরভাগই ছোটোখাটো কিন্তু প্রতি বছর কিছু বড়ো ভূমিকম্পও হয় যা ৮ রিখটার স্কেলের বেশি হয়ে থাকে।

---জাপানে অন্যান্য দেশের থেকে লোকে বেশিক্ষন ও বেশিদিন কাজ করে। তাই অনেক অফিসেই কর্মীদের জন্য কাজের মাঝে পাওয়ার ন্যাপ বা ঘুমানোর ব্যবস্থা আছে। এখানে এটা খুব ই সাধারণ ব্যাপার।

--- জাপানে ফল কে খুব ভালো উপহার হিসাবে দেখা হয় '

--- বেশিরভাগ জাপানের মানুষদের কাজে যাওয়ার আগে রাঁন্নার সময় থাকে না।  তাই জাপানে বেশিরভাগ মানুষই রান্না খুব কম করে এবং বাইরে কিনে খায়। এটা খুব এ সাধারণ ব্যাপার।

--জাপানে ট্যাটু বা উল্কিকে খুব ই নোংরা ধরা হয় এবং সাজের জন্য নয় বরং অপরাধ ও গ্যাং এর সাথে সম্পর্কিত ভাবে দেখা হয়। এবং ট্যাটু নিয়ে আপনি সুইমিং পুলএ নামতে পারবেন না। কারণ এতে জল অপবিত্র হবে ধরা হয়। সৌভাগ্যবশত এখন চামড়ার রঙের একপ্রকার ব্যান্ড এড পাওয়া যায় যা দিয়ে ঢেকে স্নান করার ব্যাবস্থা আছে এবং এখন জাপান আস্তে আস্তে পাল্টাচ্ছে এবং বিদেশিদের কাছে আরো আকর্ষণীয় হওয়ার চেষ্টা করছে।

-- বাথরুমে ঢোকার আগে একধরণের স্লিপার এখানে পরে ঢোকার রেওয়াজ আছে।

--- রসায়নবিদ্যা , ওষুধ ও ফিজিক্স বিভাগে জাপানের ১৮ জন নোবেল পুরস্কার প্রাপক আছে..

--জাপানিজ ট্রেন হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সময়নিষ্ঠ।  এর গড় ডিলে বা দেরি হয় ১৮ সেকেন্ড এবং কোনো কারণে বেশি দেরি হলে আপনি তাদের থেকে অফিসের জন্য একটি ক্ষমাপ্রার্থী চিঠি পেয়ে যাবেন।

-- রোনাল্ড ম্যাক ডোনাল্ডকে জাপানে ডোনাল্ড ম্যাক ডোনাল্ড বলা হয় কারণ জাপানিজরা স্পষ্ট 'র ' উচ্চারণ করতে পারে না।


-- অনেকসময় জাপানের ট্রেনগুলিতে খুবই  ভিড় হয়ে যায় তাই জাপান শুধু রেলওয়ে যাত্রীদের ঠেলে ঢোকানোর জন্য আলাদা কর্মী নিযুক্ত করে ।

--আপনি যদি জাপানে ট্রেনের সামনে আত্মহত্যা করেন তবে আপনার পরিবারকে এই বিঘ্নের জন্য জরিমানা করা হবে.

--জাপানে 'ক্রাইং সুমো বলে এক প্রতিযোগিতা হয় যেখানে কুস্তিগিরদের মধ্যে যে আগে বাচ্চাকে কাঁদতে পারবে সে বিজয়ী হবে..

--জাপানে বাইরের লোক সবচেয়ে কম এখানে প্রায় ৯৮% জনসংখ্যা বংশগতভাবে জাপানিজ।

--- জাপানের টোকিও বসবাসের জন্য পৃথিবীর দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যায়বহুল শহর।


Sunday, 15 September 2019

বিশ্বের রহস্যময় ও ধনীতম পরিবার রোথসচাইল্ড সম্পর্কে কিছু তথ্য ---

রথসচাইল্ড পরিবার বিশ্বের অন্যতম ও সবচেয়ে শক্তিশালী রাজবংশ যখন থেকে 'মায়ের আমশেল রোথচাইল্ড' 1760 এর দশকে তার জন্মস্থান জার্মানিতে তাদের প্রথম ব্যাংকিং ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন।  সেই থেকে তারা একটি বিশাল বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে এবং কেবল বিশ্বের বেশিরভাগ ব্যাংককেই নিয়ন্ত্রণ করে না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বড় সংবাদ সংস্থা, সংবাদপত্র এবং টিভি নেটওয়ার্ককে নিয়ন্ত্রণ করে।


এর আগে নিশ্চই  রথসচাইল্ড নাম শুনেছেন  এবং সম্ভবত  এমন গুজব শুনেছেন যাতে তাদের হাত রয়েছে, তবে আসুন আমরা পরিবার সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জানি।

--তাদের প্রকৃত সম্পত্তি কত তা কেউ বলতে পারবেনা

এই পরিবারকে ফোর্বস এর তালিকায় দেখা যায় না এবং তাদের সম্পদ বিভিন্ন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে থাকে যারা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে , তবে তাদের সম্মিলিত সম্পদ আসলে কী তা কেউ জানে না। অনুমান করা হয় এটি  350 বিলিয়ন থেকে 500 ট্রিলিয়ন ডলারের মধ্যে হতে পারে!


--- রোথসচাইল্ডরা সবার প্রথমে নেপোলিয়নের পরাজয়ের কথা জানতে পারে ---

নেপোলিয়নের যুদ্ধের সময় তারা যথেষ্ট ধনী ছিল। 1813 সালে নাথন মায়ার রথসচাইল্ড যুদ্ধে নামেন এবং ব্রিটিশ পক্ষকে যুদ্ধ শেষ করতে  অর্থ সাহায্য করেছিলেন। তিনি যে পরিমাণ পরিমাণ পরিমাণ সরবরাহ করেছিলেন তা আজ $ ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমতুল্য হবে। ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া সেনাবাহিনীর কাছে ওয়েলিংটনের ডিউক মারফত মূল্যবান ধাতব চালান করা হয়েছিল।

 রথসচাইল্ডসের খবর সংগ্রহের এমন দক্ষ ব্যবস্থা ছিল যে তারা সরকারের থেকেও একদিন আগে জানতে পারে যে নেপোলিয়ন ওয়াটারলুতে হেরে গেছে। নাথন রথচাইল্ড এটিকে গোপন রেখে অবিলম্বে সরকারী বন্ডের বাজারটি কিনে ফেলেছিল। তারপরে তিনি দু'বছর পরে ৪০% মুনাফায় বন্ডগুলি বিক্রয় করেছিলেন।



---- জিব্ৰায় টানা গাড়ি ---

খুব বড় ধনী ব্যাংকার ও প্রাণিবিদ লর্ড ওয়াল্টার রথসচাইল্ড জেব্রা দিয়ে সওয়ারী করা যেতে পারে তা প্রমাণ করার জন্য নিয়মিত ছয় জেব্রা টানা একটি গাড়ি চালাতেন।


--- ডেরেক ডি রোথসচাইল্ড এক প্লাস্টিকের বোট তৈরী করেন --


ডেরেক ডি রোথসচাইল্ড প্রায় ১২,৫০০ টি প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে ৬ যাত্রী ধারক ক্যাটামারান তৈরী করেন এবং প্রশান্ত মহাসাগরে তার অভিযাত্রীদের নিয়ে  প্রায় ৮০০০ মাইল পারি দেন।


--- রোথসচাইল্ড  এবং জে পি মরগ্যান ইউ এস সরকারকে বেইল আউট করতে সাহায্য  করেছিল --


1895 সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মন্দার মধ্যে ভুগছিল এবং সোনার পরিমান এত কম ছিল যে তারা ভয় পেয়েছিল যে তারা পর্যাপ্ত ঋণ মেটাতে পারবে না । প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লেভল্যান্ড, একজন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ছিলেন, তিনি এটি জানতেন কিন্তু তবুও ঋণ খেলাপি হওয়া এড়াতে চেয়েছিলেন। তিনি নাথানিয়েল মায়ার রথসচাইল্ডকে সাহায্য করার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন, যিনি জে.পি. মরগানের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন।

তাদের মধ্যে, তারা সরকারকে তাদের ঋণ পরিশোধের জন্য, ঋণ খেলাপি এড়াতে এবং মার্কিন ট্রেজারি বাঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ ধার দিয়েছিলো। স্বাভাবিকভাবেই, এই ঋণ পরে সুদের সাথে ফেরত দেওয়া হয়েছিল।

---তারা সব রকমের সোনার মূল্য নির্ধারণ করে --

রোথসচাইল্ডদের মোট অনুযায়ী প্রতি কর্মদিবসে দুইবার করে লন্ডন গোল্ড মার্কেট ফিক্সিং লিমিটেড এর পাঁচ সদস্য সোনার মূল্য নির্ধারণ করেন।

--- রিও টিনটো রোথসচাইল্ড এবং দি কুইন দ্বারা মালিকানাপ্রাপ্ত ---

মাইনিং জায়ান্ট বিখ্যাত রিও টিনটো কোম্পানি রোথসচাইল্ড পরিবারের দ্বারা প্রথিষ্ঠিত এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত।

---তাদের ফ্রান্সএ যে ম্যানসন আছে সেটি 'কিংস ক্যাসেল' এর থেকেও ভালো --

জার্মান সম্রাট উইলিয়াম ফ্রান্স এ রোথসচাইল্ডদের ম্যানসন এর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন যে, 'কোনো রাজার সামর্থ্যে এটি কুলাবে না , এটা কেবলমাত্র রোথসচাইল্ডদের পক্ষেই সম্ভব।'


---ব্রাজিল এর স্বাধীনতায় তারা সাহায্য করেছিল --

১৯শতকের প্রথমদিকে ব্রাজিলএর সম্রাজ্য পর্তুগালের আধিপত্য থেকে মুক্তি লাভের চেষ্টা করছিলো।
এর অর্থ ছিল যুদ্ধ , তাই দুপক্ষের একটি যুদ্ধের পর পর্তুগাল কিছুটা নমনীয় হয়। . তারা ব্রাজিলকে স্বাধীন করতে পারে যদি তার বদলে ব্রাজিল তাদের সাম্মানিক প্রদান করে  যা ছিল ২ মিলিয়ন স্টার্লিং মুদ্রা। এখানে নাথান মেয়ের রহস্চিল্ড আসেন। তিনি এই অর্থ প্রদান করেন এবং এর বদলে ব্রাজিলকে পরবর্তীকালে রোথসচাইল্ড কোম্পানির পর্তুগাল সরকারের কাছে থাকা ঋণগুলি প্রদান করতে হয় যা সুদসমেত বেশ লাভজনক ছিল। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে রোথসচাইল্ডের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কতটা প্রতিপত্তি আছে ।

--- পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি থাকা --

অনেক রাজপরিবার ও জাতির মতো রোথসচাইল্ডেও পারিবারিক বিয়ের প্রথা ছিল। যেখানে কাজিন বা আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে করা হয় যাতে সম্পত্তি পরিবারের মধ্যেই থাকে এবং কাউকে সম্পত্তির দাবিদার হতে হলে  তাদের কাজিন কেই বিয়ে করতে হবে। সম্পত্তি যাতে বাইরের কারোর হাতে না যায় তার জন্য এই প্রথা।

--- সাইমন স্কিমা এর তথ্য অনুযায়ী রোথসচাইল্ড ইসরাইল এর ৮০ শতাংশ অংশের মালিক।

--- কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলেন রোথসচাইল্ডের ইলুমিনাতির সাথে সম্পর্ক আছে।

Sunday, 8 September 2019

লিওনার্দো দ ভিঞ্চি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য --


ইতালীয় রেনেসাঁর এক স্তম্ভ  লিওনার্দো দা ভিঞ্চির (1452-1519) তুলনামূলক সৃজনশীল খ্যাতিসম্পন্ন ঐতিহাসিক ব্যাক্তিত্ব বিশ্বে খুব কম রয়েছে।

আপনি মনে করতে পারেন যে আপনি বিখ্যাত রেনেসাঁর মানুষটি , যিনি "মোন লিসা" এঁকেছিলেন এবং উড়ন্ত মেশিনগুলির স্কেচ দিয়ে বিশ্বকে অবাক করেছিলেন তার সম্পর্কে সব জানেন তবে সম্ভাবনা রয়েছে, লিওনার্দো দা ভিঞ্চির জীবন সম্পর্কে কয়েকটি অল্প-অজানা তথ্য যা আপনাকে অবাক করে দিতে পারে।

১৫১৯ সালে দা ভিঞ্চি মারা যাওয়ার আগে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সংগীত, মুদি তালিকা এবং রসিকতায় ভরা জোকস এ ভর্তি ৬০০০ এর ও বেশি জার্নাল পৃষ্ঠাগুলি রেখে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁর অনুপ্রেরণার উত্স, স্থায়ী খ্যাতির জন্য তাঁর আকাঙ্ক্ষা এবং গভীরভাবে অনুভূত হওয়া ব্যথাগুলিও বিশদভাবে বর্ণনা করেছিলেন।

যদিও তাঁর জীবন নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লেখা হয়ে যেতে পারে (এবং রয়েছেও ), আমরা লিওনার্দো দা ভিঞ্চির জীবন সম্পর্কে আরও কিছু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা জেনেছি।

---1483 সালে মিলানের শাসক লুডোভিচো সফোরজার কাছে একটি চিঠিতে লিওনার্দো মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে তার ক্ষমতাগুলি প্রকাশ করেন । তিনি সামরিক বিভাগের দশটি ডিভাইস তালিকাভুক্ত করেছিলেন যাতে সেতু, বন্দুক এবং মর্টার রয়েছে; তিনি চিঠির শেষে উল্লেখ করেছিলেন যে তিনি "মার্বেল, ব্রোঞ্জ এবং কাদামাটির ভাস্কর্য, একইভাবে আঁকার ক্ষেত্রে, অন্য যে কোনও লোকের তুলনায় ভালো করতে পারবেন , সে তিনি যেই হোক না কেন" । আদালত থেকে নিয়মিত আয় পাওয়ার পর লিওনার্দো পুরো জীবন জুড়ে সমৃদ্ধশালী  হয়েছিলেন, যেখানে কমিশনে কাজ করার সময় তিনি অর্থভাবে ছিলেন।

---লিওনার্দোর অ্যানাটমি এবং ফিজিওলজির অধ্যয়নের ফলে কীভাবে মনুষ্যদেহ দ্বারা সংগীত তৈরি হয় সে সম্পর্কে আকর্ষণীয় ধারণা আসে। সেই সময় রাসায়নিক সংরক্ষণে ব্যবহৃত কেমিক্যালের অভাবের কারণে, তিনি ভোকাল কর্ডস বা ভিতরের কানের বিষয়ে অধ্যয়ন করতে অক্ষম ছিলেন, তবে তার শবব্যবচ্ছেদ তাকে ভয়েস বা শব্দ  উত্পাদন, মুখের পেশী, ঠোঁট এবং জিহ্বা এবং উচ্চারণে তাদের প্রভাবগুলি এবং সুরকারদের হাতের সম্পর্কে অধ্যয়ন করতে সক্ষম করেছিল।

---লিওনার্দো ছিলেন একজন পশুপ্রেমী ও পশু অধিকাররক্ষা কর্মী ।

শতাব্দীকাল ধরে প্রাণী অধিকার আন্দোলনের আগে লিওনার্দো প্রাণীর প্রতি তাঁর ভালবাসা এবং শ্রদ্ধার কথা লিখেছিলেন এবং প্রায়শই প্রশ্ন তোলেন যে মানুষ সত্যই তাদের উর্ধ্বতন ছিল কিনা। লিওনার্দো খাঁচা বন্দি পাখিদের মুক্ত করার জন্য এবং মাংস খাওয়া থেকে বিরত করার জন্য কিনতেন বলে জানা গেছে।

---বিল গেটস তার নোটবুকটি 30.8 মিলিয়ন ডলারে কিনেছিলেন।

1994 সালে, শিল্পীর একটি নোটবুক খ্রিস্টির নিলামে উঠেছিল। সেটির শিরোনাম ছিল কোডেক্স লিসেস্টার  , এটি 1506 থেকে 1510 এ সংকলিত ছিল যখন লিওনার্দো ফ্লোরেন্স এবং মিলান দুই স্থানেই ছিলেন ছিলেন এবং জীবাশ্মের উত্‍পত্তি থেকে আকাশকে কেন নীল দেখা যায় সব বিষয় এতে রয়েছে; আর একটি সাধারণ নোট ছিল যা সাবমেরিন আবিষ্কারের পূর্বাভাস দিয়েছে। মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বিজয়ী দরদাতা ছিলেন, যিনি  ৭২ পৃষ্ঠার এই বই সংগ্রহের জন্য ৩০.৮ মিলিয়ন প্রদান করেন।

---তিনি একজন দক্ষ সুরকার ছিলেন। যখন মিলানিজ কোর্টে  তাকে প্রথম উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেটি একজন শিল্পী বা উদ্ভাবক নয়, সঙ্গীতজ্ঞ হিসাবে।

----লিওনার্দো  জলকে পছন্দ করতেন : তিনি তুষারে বা বরফে চলার জুতো তৈরির পরিকল্পনা করেন , জলের তলায় চলার জন্য একটি শ্বাস প্রশ্বাসের যন্ত্র, জীবন রক্ষাকারী একটি ডুবন্ত বেলের মতো আকৃতির জলযান যা প্রয়োজনে নীচ থেকে জাহাজগুলিতে আক্রমণ করতে পারে এসব পরিকল্পনা করেন।

--তিনি প্রথম প্রকাশ করেছিলেন চাঁদের বিভিন্ন দশায় পৃথিবী পরিক্রমণকালে বিভিন্ন আকৃতি ও আলো থকার কারণ।

--লিওনার্দো দুই হাতে লিখতে পারতেন এছাড়া এক হাতে সোজা লিখে অন্য হাতে উল্টো করে লিখতে পারতেন যা আয়নায় বজায় যেত।

---তিনি বিভিন্ন ধরণের অস্ত্রসজ্জিত গাড়ি , অস্ত্র সমৃদ্ধ চাকা লাগানো রথ , ক্রেন , জাতিকল , উড়োজাহাজ ইত্যাদির নকশা করেন।

--- ডিসেম্বর ২০০০ এ স্কাইডাইভার আদ্রিয়ান নিকোলাস সাউথ আফ্রিকায় লিওনার্দোর নকশা দেখে তৈরী প্যারাসুটের সাহায্যে অবতরণ করেন।

---তিনি প্রথম বর্ণনা দেন যে পৃথিবী কিভাবে বাইবেলের বর্ণনার থেকেও পুরানো এবং নোহার বন্যায় কি হয়েছিল তা নিয়েও আলোচনা করেন।


Saturday, 10 August 2019

মঙ্গলগ্রহ থেকে আসা রাশিয়ান বোরিস্কা কিপ্রিয়ানোভিচের রহস্যময় কাহিনী ---

তিনিই সেই তরুণ রাশিয়ান, যিনি মঙ্গল গ্রহে জন্মেছিলেন বলে দাবি করার পরে বিজ্ঞানীদের তাঁর এই অবিস্মরণীয় বুদ্ধিমত্তা দিয়ে  বিস্মিত করেছিলেন।


রাশিয়ার ভলগোগ্রাডে বসবাসকারী বোরিস্কা কিপ্রিয়ানোভিচ দাবি করেছেন যে মানবজাতিকে বাঁচানোর মিশন বা লক্ষ্য নিয়ে তার পৃথিবীতে পুনর্জন্মের আগে তিনি লাল গ্রহের বাসিন্দা ছিলেন।

১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণকারী, বোরিস কিপ্রিয়ানোভিচ, যার অর্থ "ছোট বোরিস", তিনি একটি শিশু প্রতিভা হিসাবে বিবেচিত হন।

তাঁর মা একজন চিকিৎসক ছিলেন।তিনি বুঝেছিলেন যে বরিস এক বিশেষ শিশু যে জন্মের ঠিক দু'সপ্তাহ পরে কোনও সমর্থন ছাড়াই মাথা সোজা করে উঠতে পেরেছিলো।

জানা যায়, কয়েক মাস পরে তিনি কথা বলতে শুরু করেছিলেন এবং দেড় বছর বয়সে তিনি পড়তে, অঙ্কন করতে এবং আঁকতে সক্ষম হয়েছিলেন।

বোরিস্কা যখন মাত্র দু'বছর বয়সে কিন্ডারগার্টেনে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর শিক্ষকরা তাঁর বিস্ময়কর স্মৃতি দক্ষতার পাশাপাশি তাঁর অবিশ্বাস্য রচনা এবং ভাষার প্রতিভা লক্ষ্য করতে পারেন।

ছেলেটি বারবার দাবি করেছে যে তিনি এর আগে একজন মঙ্গলীয় পাইলট ছিলেন যিনি পৃথিবীতেও ভ্রমণ করেছিলেন।

বোরিস্কার মা এবং পিতা দাবি করেছেন যে তারা ছোটবেলায় তাদের পুত্রকে মহাকাশ বা পৃথিবী বিষয়ে কিছুই শেখাননি তবুও দেখা গেছিলো যে তিনি প্রায়শই বসে থাকতেন এবং মঙ্গল গ্রহ, সৌরজগৎ, গ্রহ -নক্ষত্র এবং ভিনগ্রহের সভ্যতা নিয়ে কথা বলতেন।

এরপর মহাকাশের প্রতি তার আকর্ষণ শীঘ্রই তার একমাত্র আগ্রহ হয়ে দাঁড়িয়েছিল  এবং তিনি মঙ্গল গ্রহে জন্মগ্রহণের দাবি করা শুরু করেন।

গবেষকরা তাকে উচ্চ-বূদ্ধিসম্পন্ন একজন অত্যন্ত লাজুক যুবক হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

গ্রহ ব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁর অসামান্য জ্ঞান অনেক বিজ্ঞানী সহ বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞদের বিস্মিত করেছে।

বর্তমানে ২১ বছর বয়সী বোরিস্কা  দাবি করেছেন যে তিনি মঙ্গল গ্রহের মানুষ, যাকে পৃথিবীকে একটি বিধ্ধ্বংসী পারমাণবিক যুদ্ধর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল।

তিনি দাবি করেন যে হাজার হাজার বছর আগে পারমাণবিক সংঘর্ষে মার্টিয়ানদের নিজস্ব জাতি কার্যতই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল এবং তিনি আশঙ্কা করছেন যে আমরা এখন একই দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

 কিম জং-উনের দ্রুত সম্প্রসারণ করা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির কারণে আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা ব্রেকিং পয়েন্টে পৌঁছে যাওয়ার পরে বোরিস্কার উদ্বেগের কারণ বোঝা যায়।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে আমরা যদি তাঁর সতর্কবাণী না মানি তবে আমরা "তাঁর লোকদের" মতো একই বিপর্যয়কর পরিণতির মুখোমুখি হব।

তিনি বলেছেন যে পৃথিবীর বাইরের স্থান থেকে তিনি একমাত্র সন্তান নন, দাবি করেছেন যে তাঁর মতো আরও অনেকে আছেন যারা এখানে মানবতা রক্ষার জন্য একটি নির্দিষ্ট মিশনে আছে ।

তিনি দাবি করেন যে এই সমস্ত পুনর্জন্ম নেয়া মঙ্গলগ্রহী বা মার্টিয়ানদের  "নীল শিশু" হিসাবে উল্লেখ করা হয় যারা অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা সম্পন্ন এবং মঙ্গলযুদ্ধ থেকে বেঁচে গিয়েছিল।

বোরিস্কার মতে, মার্টিয়ানরা অমর হয় এবং 35 বছর বয়সের পর তাদের বয়স বাড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং তারা খুব লম্বা, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং নক্ষত্রমন্ডলের মধ্যে ভ্রমণে পারদর্শী  হয় ।

তিনি বলেছিলেন: "আমার সেই সময়ের কথা মনে পরে, যখন আমার বয়স ১৪ বা ১৫ বছর ছিল। মার্টিয়ানরা সারাক্ষণ যুদ্ধ চালাচ্ছিল তাই আমাকে প্রায়শই আমার এক বন্ধুর সাথে বিমান হামলায় অংশ নিতে হত।

"আমরা গোল স্পেসশিপগুলিতে সময় এবং মহাকাশের মধ্যে দিয়ে  ভ্রমণ করতে পারতাম, তবে আমরা ত্রিভুজাকার বিমানগুলির মাধ্যমে পৃথিবী ভ্রমণে যেতাম ও পৃথিবীর প্রাণীদের জীবন পর্যবেক্ষণ করতাম। মার্টিয়ান স্পেসশিপগুলি অত্যন্ত জটিল ছিল। এগুলি বিভিন্ন স্তরযুক্ত হতো এবং তারা সমস্ত মহাবিশ্ব জুড়ে উড়তে পারে  "

বরিস্কা বলেছিলেন যে সুদূর অতীতে বিশাল পারমাণবিক বিপর্যয় ভোগ করেও মঙ্গল গ্রহেএখনো ভিনগ্রহী সভ্যতা বেঁচে আছে ।

তিনি গিজার গ্রেট পিরামিডের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন যে  পৃথিবীতে আরও অনেক কিছু আবিষ্কার করা যায় যা তার মতে গোপন ও বড়ো রহস্য।

“স্ফিংস খুললে মানুষের জীবন বদলে যাবে, কানের পিছনে কোথাও এটির একটি গুপ্ত যান্ত্রিক নির্মাণ রয়েছে;  কোথায় আমার ঠিক এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না , "বোরিস্কা দাবি করেন।
এর দশ বছর পর একটি ডিপ সেন্সরি স্ক্যানে  স্ফিংসের কানে ও এর তলায় কিছু অদ্ভুত বিষয় দেখা যায়, বিশেষজ্ঞদের মতে হল অফ রেকর্ড (প্রাচীন জ্ঞানের ও সভ্যতার  লাইব্রেরি ) গুপ্ত প্রাচীন শহর ইত্যাদি উঠে আসে যা ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির মাধ্যমে আবিষ্কার করার অপেক্ষায়।

বোরিস্কা মঙ্গল গ্রহে যে বিপর্যয় ঘটেছিল তা সেখানে বসবাসকারী “প্রাণীদের” মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের ফলে ঘটে বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

তিনি দাবি করেন, সেখানে মাত্র কয়েকজন বেঁচে গিয়েছিল যারা সুরক্ষা লজ তৈরি করেছিল এবং নতুন অস্ত্র তৈরি করেছিল, তারা এখন মঙ্গলের মাটির তলায় বসবাস করে ।

ছেলেটি বলে যে মার্টিয়ানরা কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে শ্বাস নিত এবং যদি তারা কখনও কখনও আমাদের গ্রহে আসত তবে তাদের কার্বন ডাই অক্সাইড ভরা পাইপ থেকে শ্বাস নিতে হতো।
তিনি বলেন মঙ্গলগ্রহীদের সাথে প্রাচীন ইজিপ্সিয়ানদের কাছের সম্পর্ক ছিল।

ডাঃ জন ব্র্যান্ডেনবার্গ, পিএইচডি, একজন প্লাজমা পদার্থবিদ, যিনি বিশ্বাস করেন যে পারমাণবিক যুদ্ধের কারণে  মঙ্গল গ্রহের  প্রাচীন সভ্যতা ধ্বংস হয়েছিল। আলফ্রেড ম্যাকউইনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল, “মঙ্গলগ্রহের অভ্যন্তরে জীবনের সম্ভাবনা সবসময়ই খুব বেশি ছিল, মঙ্গলগ্রহের ভূত্বরে কোথাও কোথাও জল আছে, সম্ভবত, আমার মনে হয়, এর ভূত্বকের কোথাও জীবনের অস্তিত্ব আছে।"


জেমস গ্রিন নাসা গ্রহ বিজ্ঞানের পরিচালক এবং তিনি বলেছেন, "মঙ্গল শুকনো, লাল গ্রহ নয় যা আমরা অতীতে ভেবেছিলাম, মঙ্গল গ্রহে তরল জল পাওয়া গেছে।" এবং, "মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর মতো গ্রহ। অতীতে মঙ্গল গ্রহ ছিল খুব আলাদা ধরণের। এতে একটি বিস্তৃত বায়ুমণ্ডল ছিল এবং আমরা যা বিশ্বাস করি এতে একটি বিশাল সমুদ্র ছিল উত্তর গোলার্ধের দ্বি-তৃতীয়াংশের মতো বৃহৎ এবং সেই মহাসাগরের গভীরতা এক মাইলের চেয়েও বেশি হতে পারে। সুতরাং মঙ্গলে তিন বিলিয়ন বছর পূর্বে বিস্তীর্ণ জলের সংস্থান ছিল, কিন্তু কিছু ঘটেছিল। মঙ্গল গ্রহ একটি বড় জলবায়ু পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছিল এবং তার জল হারিয়েছিল  "


পাঁচবারের মহাকাশ নভোচারী জন গ্রানসফেল্ড, নাসার সায়েন্স মিশন ডাইরেক্টিভের এসোসিয়েট এডমিনিস্ট্রেটর হেড বলেছেন, “আমরা মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছি। আমাদের মঙ্গল গ্রহে যাত্রা এখন একটি বৈজ্ঞানিক অভিযাত্রা পর্যায়ে। তবে শীঘ্রই আমি আশা করি আমরা মানুষকে লাল গ্রহে অন্বেষণের জন্য প্রেরণ করব এবং বিজ্ঞান এই পথ পরিচালিত করবে। বর্তমানে মঙ্গল গ্রহে জলের সম্পর্কে যে চিত্তাকর্ষক ফলাফলের ঘোষণা হয়েছে তা খুবই জরুরী কারণ আমরা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এবং গ্রহ বিজ্ঞানীরা মঙ্গল গ্রহে বর্তমান জীবন আছে কিনা তা অনুসন্ধানের জন্য মঙ্গল গ্রহে মহাকাশযান প্রেরণ করেছি "এবং," যত বেশি আমরা মঙ্গলকে পর্যবেক্ষণ করছি , তত বেশি তথ্য আমরা পেয়ে যাচ্ছি যে এটি সত্যই আকর্ষণীয় একটি গ্রহ। রোভার থেকে আমরা এখন জানি যে মঙ্গল গ্রহ একসময় খুব লম্বা নোনা সমুদ্র সমেত, মিঠা পানির হ্রদ, সম্ভবত তুষারের শিখর সমৃদ্ধ পর্বত এবং মেঘ এবং পৃথিবীর মতো একটি জলচক্র সহ পৃথিবীর মতো গ্রহ ছিল। মঙ্গলগ্রহের সাথে কিছু ঘটেছে, যার ফলে এটি তার জল হারিয়েছে ”

মঙ্গলগ্রহ নিয়ে এই রহস্য করি সময়ের সাথে উদ্ঘাটন হবে আসা করি সাথে ভবিষ্যতে নতুন চমকের আসা করি এবং তা যেন মানবসভ্যতাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যায় এটাও আশাকরি।