-গাছের Latex হল আফিম‚ সেই গাছের শুকনো বীজই আমাদের অতি আদরের পোস্তদানা |
- কয়েক হাজার বছর ধরে মানুষ অভ্যস্ত আফিম ও পোস্তদানায় |
- মিশরে খ্রিস্টের জন্মের ১৫৫০ বছর আগে পোস্ত ছিল সিডেটিভ | ব্রোঞ্জ যুগে মিনোয়ান সভ্যতায় পোস্ত ছিল পরিচিত | দু জায়গাতেই ব্যবহৃত হতো ওষধি হিসেবে |
- ২৭০০-১৫৫০ খ্রিস্টপূর্বে ক্রীট দ্বীপে পোস্ত খাওয়ানো হতো শিশুদের | দুধ বা মধুতে মিশিয়ে | যাতে তাদের কান্না বন্ধ হয় |
- সুমেরীয় সভ্যতায় পোস্ত ছিল ওষধি | অনিদ্রা দূর করতে‚ ফার্টিলিটি বাড়াতে দেওয়া হতো পোস্ত | এমনকী কালো জাদুতে পোস্ত ছিল অদৃশ্য-বিদ্যার টোটকা |
- ভারতীয় সভ্যতাতেও আফিম বা পোস্তর মূল পরিচয় ছিল ওষধি | ধন্বন্তরি তাঁর বইয়ে নিদান দিয়েছেন পোস্তকে নিয়ে |
- সম্রাট আকবর এর কদর বাড়ান রান্নার উপকরণ হিসেবে | তাঁর নির্দেশে বাংলায় বাড়ানো হয় পোস্ত চাষ | মুঘল হেঁশেলে রান্নায় স্বাদ বাড়াতে বা কোনও ঝোল ঘন করতে পোস্তর কদর ছিল বেশ |
- ব্রিটিশরা এসে আবিষ্কার করল চিনে বেআইনি গাঁজার বিশাল বাজার | তারা বাংলা বিহার ওড়িশা জুড়ে ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দিল গাঁজা চাষ |
- ফলত পলাশীর যুদ্ধের পর থেকে গ্রাম বাংলায় অতি দ্রুত বেড়েছিল পোস্ত চাষ |
- চাষিদের ঘরে হাহাকার | আফিম ব্যবসা কর ব্রিটিশদের আঙুল ফুলে কলাগাছ |
- এদিকে গাঁজা চাষের বাই প্রোডাক্ট হিসেবে পড়ে থাকল প্রচুর উদ্বৃত্ত ওপিয়াম সিড বা পোস্ত দানা |
- ফলে বাঙালি হেঁশেলে হুহু করে ঢুকে পড়ল পোস্ত | মোটেও দামী খাবার নয় | সাধারণ গৃহস্থ আলুসিদ্ধ-পান্তাভাতে খেত পোস্ত বাটা আর পোস্তর বড়া |
- শুকনো জায়গায় চাষ হয় বলে বাংলার পশ্চিম প্রান্তে বেশি চাষ হতো | ফলে এদেশীয়দের রসুইয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে পোস্ত |
- ধীরে ধীরে পদ্মানদীর ওপাড়েও জমিয়ে বসে পোস্তর স্বাদ |
- ব্রিটিশদের রাজধানী প্রথমে বাংলায় হওয়ায় ইউরোপীয়‚ জুইশ খাবার যেমন কেক-পেস্ট্রি সাজাতেও ব্যবহৃত হতে লাগল পোস্ত |
- দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে পোস্ত হয়ে গেল মহার্ঘ্য | গাঁজা চাষ ব্যাপক ভাবে রোধ করা হল | ফলে পোস্তর যোগানও রুদ্ধ হল |
- আকবরের সময়ের মতো পোস্ত আবার অভিজাত হয়ে পড়াতে আম বাঙালির মহা মুশকিল হল | এদিকে তাদের তো খেয়ে খেয়ে অভ্যাস হয়ে গেছে | কিন্তু সরকারি উদ্যোগে পোস্ত হয়ে গেল দুর্মূল্য |