Pages

Saturday, 13 June 2020

নিকোলা টেসলা এবং তার কিছু অবর্ণনীয় রহস্য--

নিকোলা টেসলার মৃত্যুর পর তার বেশ কিছু গবেষণা অসমাপ্ত থেকে যায় যেগুলি দুনিয়া কাঁপানো আবিষ্কার হতে পারত।
এই আবিষ্কার গুলিকে ঘিরে এখনো বহু রহস্য জড়িয়ে রয়েছে, এত দশক পরেও মানুষেরা এগুলো নিয়ে ধন্দে রয়েছে।



ওয়ারলেস এনার্জি--

1901 সালে টেসলা বিখ্যাত বিনিয়োগকারী জে পি মরগানের থেকে লং আইসল্যান্ডের উত্তর তীরে একটি 185 ফুট লম্বা মাশরুমের মত আকৃতির টাওয়ার প্রজেক্ট করার জন্য 1,50,000 ডলার বিনিয়োগ পেতে সক্ষম হন। এই টাওয়ারটি সমুদ্রের জাহাজ এবং আটলান্টিক মহাসাগরের অপর প্রান্তে মেসেজ, টেলিফোন এবং ছবি ট্রান্সমিট বা আদান-প্রদান করার জন্য গড়ে তোলা হতো। এই টাওয়ারটির নাম দেওয়া হয়েছিল 'ওয়ার্ডডেনক্লিফ টাওয়ার'। এর কাজ শুরু হয়ে যায় এবং টেসলা চেয়ে ছিলেন ওয়ারলেস অর্থাৎ তারবিহীন ভাবে পাওয়ার ডেলিভারি বা বৈদ্যুতিক শক্তির আদানপ্রদান। তিনি বিশ্বাস করতেন, রেডিও এবং মাইক্রোওয়েভ এর উপর তার এই গবেষণার সক্ষম হলে তিনি মিলিয়ন ভোল্ট বৈদ্যুতিক শক্তি হাওয়া এর মাধ্যমে ট্রান্সমিট করে পুরো নিউইয়র্ক শহরকে বৈদ্যুতিক শক্তির যোগান দিতে পারতেন। যদিও টেসলার এই মহান কর্মযজ্ঞের জন্য মর্গান অতিরিক্ত অর্থের যোগান দিতে অসম্মতি জানায়। কিছু সূত্র মতে, মর্গান আসলে টেসলার এই প্ল্যান এর জন্য তার ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছিলেন যখন তিনি জানতে পারেন, টেসলার এই প্ল্যান এর ফলে তার অন্যান্য এনার্জি সেক্টর গুলির বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। টেসলা 1906 সালে এই প্রজেক্টটি বন্ধ করে দেন এবং ওয়ার্ডেনক্লিফ টাওয়ারটি 1917 সালে ভেঙে ফেলা হয়।



ইলেকট্রিক পাওয়ারড সুপারসনিক এয়ার্শিপ--

বাল্যকাল থেকে টেসলা আকাশযান সম্পর্কে খুবই উৎসাহী ছিল। ওয়ার্ডইনক্লিফের ব্যর্থতার পর থেকে তিনি তার ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জ্ঞানের সাহায্যে এভিয়েশনের ব্যাপারে গবেষণা শুরু করেন। রিকনস্ট্রাকশন ম্যাগাজিনের 1919 সালের জুলাই একটি আর্টিকেলে টেসলা তার একটি সুপারসনিক এয়ারক্রাফট তৈরি করার গবেষণা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এই বিমানটি পৃথিবীর থেকে আটমাইল উঁচু দিয়ে উড়তে সক্ষম হতো এবং যাত্রীদের নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে মাত্র 3 ঘণ্টায় পৌঁছে দেওয়া যেত।
এয়ারক্রাফট গুলিতে গ্রাউন্ডে থাকা পাওয়ার প্লান্ট বা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলি থেকে ওয়ারলেস বা তার বিহীন ভাবে বিমান গুলিতে বৈদ্যুতিন যোগান দেওয়া যেত যার ফলে এগুলিতে জ্বালানি বহন করার দরকার ছিলনা।





ডেথ বিম--

শেষ জীবনেও টেসলার সৃষ্টিশীল মস্তিষ্কে বিভিন্ন দূরদর্শী ঝলক দেখা দিয়েছিল। তার 78 তম জন্মদিনে তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসে বলেছিলেন, তিনি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আবিস্কারের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন এই আবিষ্কার টি ব্যবহার করতে পারলে প্রায় লাখ লাখ সৈন্য কে মুহূর্তে নিঃশেষ করে দেওয়া যাবে। এই মিলিটারি অস্ত্রটি শব্দের প্রায় 48 গুণ বেশি দ্রুত মারকিউরি বা পারদকণাকে একটি ভ্যাকিউম চেম্বারের ভিতরে এক্সিলারেট করে একটি হাই ভেলোসিটি বিম নিক্ষেপ করতে সক্ষম। পরিষ্কার আকাশে ভয়ঙ্কর শক্তিটি প্রায় 250 মাইল দূরত্ব থেকে 10,000 সংখ্যক এর কাছাকাছি শত্রু বিমান কে ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। যদিও সংবাদমাধ্যম এটিকে 'ডেথ বিম' আখ্যা দেয় কিন্তু নিকোলা টেসলা এটিকে 'পিস বিম' বলে মনে করতেন। কারণ এটি অতর্কিতে আক্রমণ কারী শত্রুদের বিমান ধ্বংস করে মানুষের জীবন বাঁচাতে পারত। অনেকটা অদৃশ্য চীনের প্রাচীরের মত যদিও এটি কয়েক লক্ষ গুণ দুর্ভেদ্য হত। টেসলা তারে পার্টিকেল বিম অস্ত্রটিকে অনেক দেশের সরকারকে অফার করেছিলেন যার মধ্যে ইউনাইটেড স্টেটস ও ছিল; কিন্তু কেবলমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন এর মধ্যে উৎসাহ প্রকাশ করেছিল এবং 1939 সালে তারা পার্টিকেল টেস্ট করেছিল।

No comments:

Post a Comment