Pages

Monday, 29 March 2021

হিমালয়ের ভিনগ্রহী গতিবিধি কি বেড়েই চলেছে?

এর আগেও আমারা একটি লেখনীতে হিমালয়ের পার্বত্য এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত 'কংকা পাস' নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছিলাম। আজকে আরো কিছু প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী পাওয়া কিছু বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরছি; এই এলাকার কাছাকাছি যারা ভ্রমণ করার সুযোগ বা যারা ভ্রমণ করেছেন - তাদের সাথে কথা বলার সুযোগ পেলে সেই অভিজ্ঞতা কমেন্টে লেখার অনুরোধ রইল।



'কংকা পাস' বা 'কংকা-লা' হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলের একটি অত্যন্ত দুর্গম স্থান, এটি জম্বু কাশ্মীরের লাদাখ অঞ্চল থেকে শুরু করে চীনের 'চেং চেন্ম' অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত এবং বরফে ঢাকা উঁচু উঁচু শৃঙ্গ দিয়ে ঘেরা স্থান, এছাড়া বিভিন্ন দুর্গম গুহা থেকে শুরু করে ভ্যালি এবং হিমশীতল আবহাওয়া - যা আমাদের সাধারন মানুষদের জন্য অবশ্যই নয়। 
স্থানটিকে এক প্রকার পরিতক্ত দুর্গম স্থান বলা যেতে পারে যেখানে প্রাণী বলতে মাঝে মাঝে পশুপালক, যাযাবর, কিছু হিন্দু পুণ্যার্থী বা সাধু সন্ন্যাসী, অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী মানুষ ও মিলিটারির লোকদের দেখা যায়। কিছু আউটপোস্ট এর অবস্থান ও একটি জটিল ও বিতর্কিত ইন্ডিয়া ও চায়নার বর্ডার স্থানটির উপর দিয়ে অতিক্রম করেছে যেটি নিয়ে বিবাদের কথা আমরা এখনো প্রায়শই শুনতে পাই; যাই হোক এই পাথুরে দুর্গম এলাকাটি দেখতে কিছুটা ভিনগ্রহী মনে হলেও হতে পারে এবং এর পিছনে আরও একটি কারণ হলো ইউ এফ ও এবং রহস্যময় ভিনগ্রহী গতিবিধি সংক্রান্ত পৃথিবীর বিখ্যাত হটস্পট গুলির মধ্যে এটি একটি স্থান নিয়ে নিয়েছে।




বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন মানুষ যারা এই স্থানে গিয়েছেন তাদের মুখে বিভিন্ন রকমের রহস্যময় কাহিনী শোনা গিয়েছে। এগুলির মধ্যে প্রচুর মিল পাওয়া গিয়েছে যেমন- আকাশে রহস্যময় আলোর গতিবিধি যা বিভিন্ন কায়দায় ঘুরে বেড়ায় আবার হঠাৎ করে কোন এক প্রান্তে অদৃশ্য হয়ে যায়; এছাড়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রের গোলযোগ, সময়ের গোলমাল, অনেকেই অভিযোগ জানিয়েছেন হঠাৎ করে তারা বহু মাইল দূরে কোন এক স্থানে জেগে উঠেছেন এবং শেষবার তারা কোথায় ছিলেন তা ভুলে গেছেন, এর সাথে ইউএফওর গতিবিধি তো খুবই সাধারণ বিষয়। এই সকল রিপোর্টের অধিকাংশ মিলিটারি এবং মিলিটারির বিভিন্ন অধিকারীকের থেকে পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া এখানে একটি কাহিনী শোনা যায় যা হলো মাটির তলায় অবস্থিত বিশালাকৃতির বিভিন্ন টানেল এবং পৃথিবীতে বসবাসরত ভিনগ্রহীদের ইউ এফ ও এর একটি বিশাল আকৃতির বেস।

2003 সালে বর্ডারের কাছাকাছি কর্মরত ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কিছু ট্রুপ চীনের দিকের আকাশে বেশ কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন রকম আলোর গতিবিধি দেখতে পায় এবং সেগুলো এতই রহস্যময় ছিল যে তারা তাদের কমান্ডকে রিপোর্ট করে কিন্তু পরবর্তীকালে এ সম্পর্কে তাদের সুপেরিয়র অথবা চাইনিজ মিলিটারি কারোর থেকেই একটিও শব্দ শোনা যায়নি। 




এর থেকেও একটি রহস্যময় ঘটনা 2004 সালে ঘটেছিল যখন হিমাচল প্রদেশের 'লাহুল- স্পিতি' অঞ্চলে আমেদাবাদের ইসরোর স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের ডক্টর অনিল কুলকার্নির নেতৃত্বে 1 জিওলজিস্ট দল কর্মরত ছিল। 'সমুদ্র তাপু ভ্যালি' এই এলাকায় অন্যতম নির্জন ও দুর্গম অঞ্চল ছিল এই স্থানে এক্সপিডিশন করার সময় এই টিমটি আনুমানিক 4 ফুট লম্বা অদ্ভুত রকমের মানুষ আকৃতির রোবটিক কিছু একটাকে 50 মিটার দূরে পাথুরে অঞ্চল দিয়ে হেটে যেতে দেখে। বৈজ্ঞানিকরা এই রোবটটিকে প্রায় 40 মিনিট ধরে লক্ষ্য করেছিল এবং এর ছবি ও নিয়েছিল এবং তারা এই বস্তুটির কাছাকাছি যাওয়ার আগেই হঠাৎ করে বস্তুটি আকাশে উড়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। এই বিষয়টি সাক্ষী ছিলেন 14 জন মানুষ যার মধ্যে 6 জন বৈজ্ঞানিক ছিলেন। তাদের কাছে এর স্বাভাবিক কোনো বর্ণনা ছিলনা, এছাড়া তাদের এই রিপোর্টটির কোন সদুত্তর পরবর্তীকালে পাওয়া যায়নি - সম্ভবত এটি ফাইল এর ভিতর চাপা পড়ে গেছে।




 মজার ব্যাপার হলো আরো অনেকেই এই অঞ্চলে ঠিক একই রকম ছোট রোবটিক বস্তুর অস্তিত্ব বর্ণনা করেছে যারা হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে যায়, কখনও মাটির উপর একটি গর্তের উদয় হয় যাতে তারা ঢুকে যায় এবং সেটি অদৃশ্য হয়ে যায় যেন আগে কখনো সেখানে এরকম কিছু ছিল না।

আরো একটি হাইপ্রোফাইল রহস্যময় ঘটনা উন্মোচিত হয় 2012 সালে এই সময় 1 আগস্ট থেকে 15 অক্টোবর পর্যন্ত এই অঞ্চলে কর্মরত ইন্ডিয়ান আর্মির ইউনিট গুলি এবং ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশ ফোর্স লাদাখ অঞ্চলে প্রায় 100 টির উপর ঘটনা রিপোর্ট করেন, যেগুলি হল রহস্যময় বিভিন্ন উজ্জ্বল বস্তুর গতিবিধি সংক্রান্ত। এই স্থানটি জম্মু-কাশ্মীর, পাকিস্তান অকুপাইড কাশ্মীর এবং চীনের অকুপাইড আকসাই চীনের মাঝামাঝি প্রায় 86,000 স্কোয়ার কিলোমিটার বিশিষ্ট একটি বিস্তৃত এবং হেভিলি মিলিটারাইজড অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। বর্ণনা পাওয়া গেছে এই হলুদ উজ্জল বস্তুগুলি চাইনিজ প্রান্ত থেকে উদয় হয়, আকাশে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। আর্মি আধিকারিকরা যারা এর প্রত্যক্ষদর্শী ছিল তারা নিশ্চয়তার সঙ্গে বর্ণনা করেন যে, এগুলি কোন মনুষ্য পরিচালিত বিমান,ড্রোন অথবা পৃথিবীর কাছাকাছি ঘুরে বেড়ানো স্যাটেলাইট নয়। 

সেই বছরই সেপ্টেম্বর মাসে কাছাকাছি একটি পর্বত শৃঙ্গতে একটি 'ground based' ভ্রাম্যমান রাডার ইউনিট এবং একটি 'স্পেক্ট্রাম এনালাইজার' স্থাপন করা হয়। কিন্তু এই বস্তুগুলি একই সময় চোখে দেখা গেলেও রাডার বা স্পেক্ট্রাম এনালাইসিসে ধরা দেয়নি। এমনকি এই বস্তুর উদ্দেশ্যে একটি এয়ারক্রাফটও ছাড়া হয় কিন্তু সেটি বস্তুর কাছাকাছি যাওয়ার আগেই বস্তুটি হঠাৎ করে সোজা উপরে উঠে যায় এবং ধরাছোঁয়ার বাইরে বেরিয়ে যাবে। 




'ইন্ডিয়ান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি'র  জ্যোতির্বিদের একটি দল ও এই বস্তুগুলো তিন দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন এবং তারা সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে এগুলি কোন গ্রহ, উল্কা অথবা স্যাটেলাইট এর অংশ নয়। এই রহস্যময় বস্তুগুলি শয়ে শয়ে মিলিটারি অধিকারিক, বৈজ্ঞানিক এবং বিভিন্ন মানুষ দেখে গিয়েছেন কিন্তু কখনোই এদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এর উপর দেখা গেছে গুগল আর্থ কংকা পাশের উপর বিভিন্ন অদ্ভুত বিষয় তুলে ধরেছে। যেমন- হঠাৎ করে মাটির ভিতর থেকে রহস্যময় গহর উন্মুক্ত হওয়া এবং তার থেকে যন্ত্রের বহির্গমন এবং রহস্যময় বিভিন্ন স্থাপনা, আনরেজিস্টার্ড মিলিটারি ফেসিলিটি, জটিল আকৃতির বিভিন্ন বিল্ডিং। দেখা গেছে এই সমস্ত ছবিগুলি গুগল আর্থে খুঁজে পাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ব্লার্ড বা অস্পষ্ট হয়ে যায়। এটা স্পষ্ট নয় যে এর সাথে এই অঞ্চলের ভিনগ্রহী গতি প্রকৃতির সাথে কি সম্পর্ক থাকতে পারে; কিন্তু অবশ্যই  এটি স্থানটির রহস্যময়তা আরো একধাপ বাড়িয়ে দেয়। এই স্থানটিতে কি চলছে এই গুলির কি কোনো বৈজ্ঞানিক কাহিনী আছে? দেশের সরকারগুলি কি কিছু গোপন করছে? এখানে কি ভিনগ্রহী দের কোনো বেস আছে? আপনার কি মনে হয় এই দুর্গম স্থানে এই রহস্যের কারণ কি হতে পারে?

No comments:

Post a Comment