‘খক খক, খুক খুক’ ক্লাসে বা অফিসে বসে কাশছেন আপনি অনবরত। আপনার কাশির শব্দে তাকিয়ে আছে আপনার দিকে সবাই। কি বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই না পড়েছেন আপনি! শীত ও বসন্তের এই সময়টাতে অধিকাংশ মানুষই খুসখুসে কাশির যন্ত্রণায় ভোগেন। কারণে অকারণে শুকনো কফের থেকে কাশি ওঠে কিছুক্ষণ পর পর।
খুসখুসে কাশির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় আছে । ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করেই কমিয়ে ফেলা সম্ভব খুসখুসে কাশি।
-গরম বাষ্প শ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করলে কাশি অনেকটাই তরল হয়ে আসবে এবং আরাম মিলবে। হালকা গরম লবণ পানি দিয়ে গার্গল করলেও উপকার হবে।
- ঠান্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করুন।
-প্রাচীনকাল থেকেই গলা খুশখুসে ভাব দূর করতে ব্যবহার করা হয় আদা চা। ২ কাপ জলে আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে সামান্য মধু মিশিয়ে পান করলে খুশখুসে ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বেশ সহজেই। কারণ আদা মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান গলার গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
-প্রচুর জল পান করুন। প্রতিবার হালকা গরম জল খাওয়ার চেষ্টা করুন। দিনে অন্তত ১২ গ্লাস হালকা গরম জল পান করলে খুসখুসে কাশি কিছুটা কমে যায়।
-রাতে বিরক্তিকর কাশি থেকে বাঁচতে একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করুন, শোবার আগে একটু গার্গল করুন।
-খুসখুসে কাশির উৎপাত দেখা দিলে ধূমপান ছেড়ে দিন। ধূমপান করলে কাশি বাড়ে। তাই কাশি কমাতে ধূমপান ছাড়ুন এবং ধূমপায়ীদেরকে এড়িয়ে চলুন।
-কলা একটি নন-অ্যাসিডিক খাবার যা গলা খুশখুসে ভাব কমাতে বিশেষ ভাবে কার্যকরী। এছাড়াও কলা একটি লো গ্লাইসেমিক খাবার যা ঠাণ্ডা-সর্দি ভাব কমায়।
-কুসুম কুসুম গরম পানি পান করা ভালো। হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করা উচিত।
-প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরা। তীব্র শীতের সময় কান-ঢাকা টুপি পরা এবং গলায় মাফলার ব্যবহার করা ভালো।
-সমপরিমাণ লেবুর রস এ মধুর মিশ্রন গলার ভেতরের ইনফ্লেমেশন কমায় এবং ঠাণ্ডা লেগে গলার ভেতর সরু হয়ে আসার ফলে যে সমস্যা তৈরি হয় তা দূর করতে সহায়তা করে।
-ঘরে মশার ওষুধ কিংবা এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করবেন না। খুসখুসে কাশি বেড়ে যেতে পারে এগুলোর কারণে।
-নাকের ভিতরে হালকা বাম ব্যবহার করতে পারেন। এটি নাকের পথকে পরিষ্কার করে কাশি কমাতে সহায়তা করবে।
--বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই, বিশেষ করে সঙ্গে জ্বর না থাকলে। চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিহিস্টামিন বা মনটিলুকাস্ট জাতীয় ওষুধ খাওয়া যায়। এগুলো গলা বা শ্বাসনালিতে কাশি উৎপাদনকারী রাসায়নিকের পরিমাণ কমাবে, শ্বাসনালিকে প্রসারিত করবে। ফলে জমে থাকা কফ বেরিয়ে আসতে পারবে। প্রচলিত কফ সিরাপ কাশি আরও শুষ্ক করে দিতে পারে।
-প্রতিদিন চারটি তুলসি পাতা নিয়ে, তার সাথে মধু মিশিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিন। চায়ের সাথে তুলসি পাতা মিশিয়েও খাওয়া যায়। তুলসী পাতা দ্রুত খুসখুসে কাশি নিরাময়ে সহায়ক।
-প্রতিদিন হালকা গরম জলে স্নান করুন। এতে শুকনা কফ ও খুসখুসে কাশির উপদ্রব কমে যাবে।
-অতিরিক্ত ঘাম যেনো না হয় সেটা খেয়াল করা। বেশি ঘেমে গেলে ভেজা কাপড় দিয়ে ঘাম মুছে ফেলতে হবে।
-শুষ্ক কাশিতে প্রচুর পানি পান করতে হয়। এবং অবশ্যই সেই পানি হালকা গরম হতে হবে। সারাদিনই অল্প অল্প করে গরম পানি পান করলে, খুসখুসেজাতীয় কাশি দূর হয়ে যাবে। দিনে অন্তত ১২ গ্লাস হালকা গরম পানি পান করুন। কাশি থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যাবে।
-ধুলাবালি, ধূমপান এড়িয়ে চলা। এর জন্য মাস্ক ব্যবহার করা।
-ঠাণ্ডা লেগে গলায় ব্যথা হওয়া অনেক স্বাভাবিক ঘটনা। এই সমস্যা দূর করতে নেশ সহায়তা করে ডিমের সাদা অংশ। কারণ ডিমের সাদা অংশ গলার ভেতরের গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ইনফ্লেমেশন দূর করে।
-ঘরের দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ না রেখে মুক্ত ও নির্মল বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা।
-গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। বিশেষ করে শীতকালীন এই সকল সাধারণ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সব চাইতে ভালো সবজি হচ্ছে এই গাজর। গাজরের ভিটামিন ও মিনারেলস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যার ফলে সর্দি-ঠাণ্ডা ও কাশি থেকে মুক্তির জন্য আমাদের দেহই কাজ করে থাকে। তবে সর্দি-ঠাণ্ডা ও কাশির সময় কাঁচা না খেয়ে সেদ্ধ করা গাজর খাওয়া উচিত।
-হাত ধোয়ার অভ্যাস করা। বিশেষ করে চোখ বা নাক মোছার পরপর হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে।
-প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। মধু খুসখুসে কাশি কমাতে সাহায্য করে।
No comments:
Post a Comment