ভয়ঙ্কর জোম্বি ও তার আক্রমণের প্রস্তুতি ---
বন্ধুরা কেমন আছেন? বন্ধুরা একটা সময় এমন ছিল যখন সিনেমাতে মানুষকে ভয় পাওয়ার জন্য ভূত প্রেত পিশাচতান্ত্রিক এইসবের ব্যবহার করা হতো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যখন মানুষ এইসব ভূত-প্রেতের থেকে বোর হয়ে গেছিল তখন এই ফিল্ম মেকাররা নতুন কিছু ভাবলো এবং ভূত-পেতের জায়গায় এক নতুন রকমের কনসেপ্ট নিয়ে এসেছিল, আপনি যদি হলিউড ফিল্ম দেখে থাকেন তবে জম্বির ব্যাপারে নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন।
যদিও আমাদের বলিউডেও একটা-দুটো সিনেমা হয়েছিল কিন্তু সেগুলো ততটা সাফল্য পায়নি।
জম্বি আসলে সেই ধরনের মানুষকে বলা হয় যাদেরকে রেবিসের মত এক ধরনের রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, এই লোকেরা চলমান লাশে পরিণত হয়। ফিল্মে দেখানো হয়, যদি এই জাতীয় কোন মানুষ অন্য একটি মানুষকে কামড়ে দেয় তবে সেই দ্বিতীয় মানুষটি সঙ্গে সঙ্গে সেই রোগে আক্রান্ত হয়। এরপর সেও জম্বি হয়ে যায় এবং জম্বি হওয়ার সাথে সাথে তার সমস্ত চিন্তাভাবনা শেষ হয়ে যায়। তার মস্তিষ্ক এক হিংস্র জানোয়ারের মত হয়ে যায়।মানে জম্বি কেবলমাত্র খাওয়া এবং অন্যান্য মানুষের ওপর আক্রমণ করা ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না। জম্বি হওয়া বাচ্চারা তার মা-বাবাকে এবং জম্বি বাবা-মা তার বাচ্চাকে ও কামড়াতে কোন রকম দ্বিধাবোধ করে না।
আপনারা হয়তো জম্বিদের ব্যাপারে সিনেমা থেকে অনেক কিছুই জেনে থাকবেন তাই বেশি বলার আশাকরি দরকার নেই তবে একটা জিনিস আপনারা হয়তো জানেন না যে, নর্থ আমেরিকা ও সাউথ আমেরিকা মহাদেশের মাঝামাঝি হাইতি নামে একটা ছোট দেশ আছে যেখান থেকে জম্বি শব্দটি প্রথম তৈরি হয়। মনে করা হয়, এই দেশের সত্তিকারের একসময় জোম্বি ছিল আঠারো শতকের শুরুর সময় এখানে একজন তান্ত্রিক ছিল যে এক ধরনের ঔষধ ব্যবহার করে মরা মানুষকে জ্যান্ত করে ফেলত এরপর তাদের নিজের গোলামে পরিণত করতো, ওদের দিয়ে নিজের যাবতীয় সব রকম কাজ যেমন ক্ষেতের কাজ করাতো। কিন্তু একদিন ওর তৈরি করা জম্বি তার হত্যা করে ফেলে। চলুন এবার ভবিষ্যতে কল্পনার দুনিয়ায় চলে যাই,
বন্ধুরা , যখন আপনারা এই জোম্বি সিনেমা গুলো দেখেন তখন আপনাদের মাথায় নিশ্চয়ই আসে যে এই ঘটনাগুলো বাস্তবে হলে, যার ফলে এই রোগ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে এবং বিভিন্ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হলে আপনি সেই বিপদের সময় কিভাবে ঠান্ডা মাথায় চলবেন এবং নিজেকে বাঁচাবেন।
বন্ধুরা এই সময় সবার আগে মাথায় যে কথাটি আসে সেটা হচ্ছে অস্ত্র। আপনি নিশ্চয়ই তখন কোন বন্দুক তলোয়ার বা ব্যাট এই জাতীয় কিছু খুঁজবেন কিন্তু যদি এতদূর বিপদ গড়ায় তবে আপনার বুঝতে হবে খুব দেরি হয়ে গেছে, আপনি খুব খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছেন হয়তো এবার আপনি বেশি সময় ধরে বেঁচে নাও থাকতে পারেন। যদিও বন্দুক রাইফেল এগুলো তো সিনেমার মতো সব জায়গায় পাওয়া যায় না যে যে আপনি দোকানে গিয়ে তুলে নেবেন, মনে রাখবেন হামলা করার থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজেকে রক্ষা করা; তাই যখন আপনার শহর বা গ্রামে এই ধরনের কোন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাবেন তখন পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগে এই জায়গাটি ছেড়ে দিতে চেষ্টা করবেন।
কিন্তু যদি আপনি এই পরিস্থিতিতে আটকে যান যখন আপনার শহর বা গ্রামে জীবন্ত মানুষের থেকে জম্বি সংখ্যা বেশি তখন আপনি প্রথমত একটি ব্যাগে নিজের জন্য দরকার পরিমাণ মতো জল এবং শুকনো খাবার নিয়ে নেবেন, এরপর সেই জায়গাটা ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেবেন।
আপনি নিজের হাত পা এবং গলা এবং যতটা সম্ভব স্থানে একটু মোটা খাতা বা বই জড়িয়ে সেলুটেপ দিয়ে আটকে নেবেন কারণ মানুষের দাঁত লম্বায় আধা ইঞ্চির থেকেও কম হয় তাই বাইরে বেরোলে যদি আপনি কোন জম্বির সম্মুখীন হন তাহলে এই বই-খাতা আপনার শরীরে তাদের দাঁতকে ঢুকতে দেবেনা। যদি সৌভাগ্যবশত আপনার কাছে বন্দুক থাকে তাহলে সেটি লোড করে নিজের কাছে রাখবেন। এছাড়া আপনার বাড়িতে যদি সবজি কাটার ছুরি থাকে তাহলে আপনি কোন লম্বা ও মজবুত লাঠিতে সেটাকে বেঁধে নিজের সাথে রেখে দিন, বন্দুকের সাথে সাথে এই হাতিয়ারও আপনার অনেক কাজে আসবে।
আপনি নিজের সাথে একটা টর্চ অবশ্যই রাখবেন না অনেক সময় আমরা এখন ফোনের ফ্লাশ লাইট টর্চ এর মত ব্যবহার করি তাই টর্চ নিজের সাথে রাখতে ভুলে যাই।
কিন্তু একটা বড় টর্চ অনেক দূর অব্দি ফোকাস করে আলো ফেলে যার জন্য টর্চ অন্ধকারে দেখার জন্য মোবাইলের ফ্লাশ লাইট এর থেকে অনেক উপযোগী।
আপনি নিজের ভেতর প্রচুর বিশ্বাস জাগিয়ে তুলুন এবং বলুন আজ আমি মরতে পারি না এবং ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসুন। আপনার যত প্রতিবেশী যারা এখনো জোম্বিতে পরিণত হয়নি তাদের সবাইকে নিজের সাথে নিয়ে যান, যত সংখ্যক লোক আপনার সাথে থাকবে তত আপনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে সব সময় এবং সব রকম পরিস্থিতিতে একসাথে থাকবেন যদিও নিজেদের মধ্যে বেশি কথাবার্তা বলা বা চেঁচামেচি করা একদম করবেন না।
যদি ফিল্মে দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আপনি কোনো বড় ট্রাকে চড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তাহলে এটা একদম করবেন না কারণ প্রথমত ট্রাকের ইঞ্জিনের শব্দ জম্বিদের আকর্ষণ করবে এবং তাছাড়া বাইরে শহরের রাস্তায় নিশ্চয়ই প্রচুর গাড়ি উল্টোপাল্টা ভাবে পরে থাকবে তাই আপনি সেই জাম হওয়া রাস্তা বা হাইওয়ে দিয়ে ট্রাক নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট জায়গা পাবেন না।
তাই এর থেকে ভাল হয় যে আপনি সাইকেল নিয়ে চলুন, সাইকেল নিঃশব্দ তো বটেই তার সাথে আপনি যে কোন গাড়ি বা গাছের মাঝখান দিয়ে সহজে বের হতে পারবেন।
ঘরের বাইরে বেরিয়ে আপনি দেখুন যে শপিংমল বা বাজার কোনদিকে আছে এবং ভুল করেও সেইদিকে যাবেন না। যদিও সিনেমাগুলোতে দেখানো হয় যে লোকেরা নিজেদের বাঁচানোর জন্য শপিং মল কে নিজের আশ্রয় স্থল বানায় কিন্তু এই জায়গা এমন একটি জায়গা যেখানে লোকেদের ভীড় হয় এবং জম্বিদের শিকার করার জন্য আদর্শ স্থান হয়।
তাই জায়গাতে একদম যাবেন না যেখানে সংক্রামক রোগ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে শুধু তাই নয় শপিং মোলে বা বাজারে অনেকগুলো প্রবেশপথ থাকে তাই সব দরজায় আপনি নিজের নজর রাখতে পারবেন না। জোম্বিরা যে কোন দিক দিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারে আর তাছাড়া যেখানে মানুষের সংখ্যা বেশি হয় সেখানে নিশ্চয়ই এখন জোম্বির সংখ্যাও বেশি হবে তাই আপনি ভিড় স্থান থেকে দূরে থাকবেন।
এই সময় আপনার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ঘর থেকে বেরিয়ে আপনি কোথায় লুকাবেন, কোন জায়গা আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হবে, তাহলে এমন কিছু জায়গা বলি যেগুলো এই বিপদের সময় আপনার পক্ষে জীবনদায়ী হবে। যেমন,
ব্যাংক---
ব্যাংক যে কোন ছোট বড় শহরে আপনি সহজে পেয়ে যাবেন ব্যাংকে ঢোকার জন্য একটাই রাস্তা হয় যাতে সুরক্ষার জন্য একের অধিক দরজার স্তর লাগানো থাকে এই গুলো সাধারণত লোহার এবং খুব মজবুত হয় যে জায়গায় টাকা - গয়না রাখা হয় সেই জায়গায় আলাদা করে আরো বেশি দরজা লাগানো হয় এবং তা আরো মজবুত ও সুরক্ষিত থাকে। আপনি বন্দুকধারী পেয়ে যাবেন যদি আপনার নিজের শহরে ব্যাংকের লোকরা এখনো জোম্বিতে পরিণত না হয়ে থাকে তাহলে আপনি দ্রুত সেখানে চলে যান এবং তাদের আকুতি-মিনতি করুন।
ব্রিজ---
যদি আপনার আশেপাশে কোন নদী থাকে যাতে সেতু থাকে আর আপনারা একসাথে অনেকগুলো লোক থাকেন তবে আপনি সেই ব্রিজ বা সেতুকে নিজের আশ্রয় স্থল করতে পারেন। আপনি হাতুড়ি বা কোন মেশিন দিয়ে কোন পদ্ধতিতে সেই পুলের দুইপাশ ভেঙে দিন যাতে আপনার আশেপাশে জোম্বিরা আসতে না পারে। আপনি যখন সুযোগ বুঝবেন তখন চাইলে কোন দড়ি বা মই দিয়ে আবার শহরে যাওয়া-আসা করতে পারবেন।
ফার্ম হাউস--
যদি আপনার শহর থেকে দূরে এমন জায়গায় যেখানে লোকের ভিড় কম থাকে, আপনি সেরকম কোন ফার্ম হাউস খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন। তাহলে এটা আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী স্থান হতে পারে এখানে আপনি জম্বিদের থেকে দূরে থাকতে পারবেন এবং সে নিজের জন্য সবজি চাষ করে বা উৎপাদন করে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারেন।
সমুদ্রের জাহাজ--
যদি আপনি সমুদ্রের আশেপাশে থাকেন তবে সমুদ্রে জাহাজের থেকে উপযোগী আর কিছু হবে না আপনি খুব তাড়াতাড়ি সেখানে চলে যান। সেখানে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো জাহাজ বা এই জাতীয় কিছু আপনি পেয়ে যাবেন। খালি এটা মনে রাখবেন যে ওই জাহাজের আগে থেকে যাতে কোনো জম্বি উপস্থিত না থাকে। আপনি সমুদ্রে কিছু দূরে চলে যান যাতে জোম্বিরা আপনার কাছে পৌঁছাতে না পারে।
উঁচু পর্বত--
যদি আপনি পর্বত এলাকার বাসিন্দা তবে আপনি কোন পাহাড়ে থাকতে চলে যান।
পাহাড়ে চড়া খুবই কঠিন হয় এবং খুব কমই ওঠার রাস্তা হয়। আপনি পর্বতে উঠলে এই রাস্তা গুলো পাথর বা কিছু ফেলে বন্ধ করে দিতে পারেন।
মিলিটারি বেস---
দুনিয়াজুড়ে মিলিটারি ক্যাম্প অথবা ট্রেনিং স্কুল থাকে যেখানে প্রচুর হাতিয়ার থাকে এবং সুরক্ষিত হয়। আপনি যদি সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন তাহলে বুঝবেন আপনার প্রাণ বেঁচে গেছে। এই স্থানগুলিতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সব রকম জিনিস থাকবে। এখানে আপনি উচ্চমানের হাতিয়ার সহ প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর ভাইদের পেয়ে যাবেন যারা নিজেদের দিকে আসা যেকোনো জম্বির বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে দেবে।
দুর্গ --
প্রাচীন রাজা-মহারাজাদের তৈরী দুর্গ বা কেল্লা আপনার আরেকটি বিকল্প হতে পারে। যারা শত্রুসেনাদের থেকে বাঁচার জন্য দুর্গগুলি সেইরকমভাবে ডিজাইন করেছিল এবং মজবুতও হয়, যার চারপাশে সাধারণত পরিখা বা খালও কাটা থাকে এবং দরজা গুলো খুব বড় এবং ভারী হয়। আপনি ভেতর থেকে কেল্লার চারিদিকে নজর রাখতে পারবেন এবং বাইরে থেকে এত উঁচু ও মজবুত দরজা ভাঙা জোম্বিদের পক্ষে খুবই মুশকিল হবে। এগুলি প্রচুর জমি নিয়ে অবস্থিত হয় তাই একটা দুর্গের ভেতর পুরো শহরের অধিবাসীরা সহজে থাকতে পারবে।
জেল --
নিজেকে বাঁচানোর জন্য আদর্শ স্থান যদি আপনি জেল খুঁজে পান তাহলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি সেখানে চলে যান এবং জেলের সুরক্ষা কর্মীদের কাছে সাহায্য চান জেলের প্রাচীর খুবই উঁচু এবং সুরক্ষিত তাই এখান থেকে বাইরে যাওয়া বা ভেতরে আসা খুবই মুশকিল হয়। তাই জোম্বিরা জেলের ভেতরে সহজে আসতে পারবেনা আর এখানে সুরক্ষা কর্মীর সাথে সাথে বিভিন্ন হাতিয়ার ও আপনি পেয়ে যাবেন।
আইল্যান্ড--
জম্বিদের থেকে নিজেকে দূরে রাখার সবচেয়ে আদর্শ এবং স্থায়ী স্থান হল সমুদ্রের মাঝামাঝি থাকা কোন দ্বীপ। আপনি এরকম কোন স্থানে যেতে পারেন। আজও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এরকম দ্বীপ থাকে যাতে মানুষ হয়তো থাকে না। সেখানে যাবো খুব কঠিন না শুধু শর্ত হলো আপনাকে কোন হেলিকপ্টার বা বোট বা জাহাজ এই জাতীয় কোন কিছুর ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যান্য স্থান থেকে আলাদা এই দ্বীপে আপনি নতুন করে নিজের জীবন শুরু করতে পারেন। ওখানে আপনি সহজে নিজের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা করতে পারবেন। জোম্বিরা চলমান লেসার মতো, তাদের মাথায় খাওয়া আর কামড়ানো ছাড়া আর কিছু থাকে না, তাই তাদের পক্ষে কোনো জাহাজ বা হেলিকপ্টার চালিয়ে আপনার কাছে আসা অসম্ভব বিষয় তাই সেই দ্বীপে আপনিও আপনার সাথে থাকা মানুষেরা নতুন করে নিজেদের জীবন আবার শুরু করতে পারবেন।
বন্ধুরা কেমন আছেন? বন্ধুরা একটা সময় এমন ছিল যখন সিনেমাতে মানুষকে ভয় পাওয়ার জন্য ভূত প্রেত পিশাচতান্ত্রিক এইসবের ব্যবহার করা হতো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যখন মানুষ এইসব ভূত-প্রেতের থেকে বোর হয়ে গেছিল তখন এই ফিল্ম মেকাররা নতুন কিছু ভাবলো এবং ভূত-পেতের জায়গায় এক নতুন রকমের কনসেপ্ট নিয়ে এসেছিল, আপনি যদি হলিউড ফিল্ম দেখে থাকেন তবে জম্বির ব্যাপারে নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন।
যদিও আমাদের বলিউডেও একটা-দুটো সিনেমা হয়েছিল কিন্তু সেগুলো ততটা সাফল্য পায়নি।
জম্বি আসলে সেই ধরনের মানুষকে বলা হয় যাদেরকে রেবিসের মত এক ধরনের রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, এই লোকেরা চলমান লাশে পরিণত হয়। ফিল্মে দেখানো হয়, যদি এই জাতীয় কোন মানুষ অন্য একটি মানুষকে কামড়ে দেয় তবে সেই দ্বিতীয় মানুষটি সঙ্গে সঙ্গে সেই রোগে আক্রান্ত হয়। এরপর সেও জম্বি হয়ে যায় এবং জম্বি হওয়ার সাথে সাথে তার সমস্ত চিন্তাভাবনা শেষ হয়ে যায়। তার মস্তিষ্ক এক হিংস্র জানোয়ারের মত হয়ে যায়।মানে জম্বি কেবলমাত্র খাওয়া এবং অন্যান্য মানুষের ওপর আক্রমণ করা ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না। জম্বি হওয়া বাচ্চারা তার মা-বাবাকে এবং জম্বি বাবা-মা তার বাচ্চাকে ও কামড়াতে কোন রকম দ্বিধাবোধ করে না।
আপনারা হয়তো জম্বিদের ব্যাপারে সিনেমা থেকে অনেক কিছুই জেনে থাকবেন তাই বেশি বলার আশাকরি দরকার নেই তবে একটা জিনিস আপনারা হয়তো জানেন না যে, নর্থ আমেরিকা ও সাউথ আমেরিকা মহাদেশের মাঝামাঝি হাইতি নামে একটা ছোট দেশ আছে যেখান থেকে জম্বি শব্দটি প্রথম তৈরি হয়। মনে করা হয়, এই দেশের সত্তিকারের একসময় জোম্বি ছিল আঠারো শতকের শুরুর সময় এখানে একজন তান্ত্রিক ছিল যে এক ধরনের ঔষধ ব্যবহার করে মরা মানুষকে জ্যান্ত করে ফেলত এরপর তাদের নিজের গোলামে পরিণত করতো, ওদের দিয়ে নিজের যাবতীয় সব রকম কাজ যেমন ক্ষেতের কাজ করাতো। কিন্তু একদিন ওর তৈরি করা জম্বি তার হত্যা করে ফেলে। চলুন এবার ভবিষ্যতে কল্পনার দুনিয়ায় চলে যাই,
বন্ধুরা , যখন আপনারা এই জোম্বি সিনেমা গুলো দেখেন তখন আপনাদের মাথায় নিশ্চয়ই আসে যে এই ঘটনাগুলো বাস্তবে হলে, যার ফলে এই রোগ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে এবং বিভিন্ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হলে আপনি সেই বিপদের সময় কিভাবে ঠান্ডা মাথায় চলবেন এবং নিজেকে বাঁচাবেন।
বন্ধুরা এই সময় সবার আগে মাথায় যে কথাটি আসে সেটা হচ্ছে অস্ত্র। আপনি নিশ্চয়ই তখন কোন বন্দুক তলোয়ার বা ব্যাট এই জাতীয় কিছু খুঁজবেন কিন্তু যদি এতদূর বিপদ গড়ায় তবে আপনার বুঝতে হবে খুব দেরি হয়ে গেছে, আপনি খুব খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছেন হয়তো এবার আপনি বেশি সময় ধরে বেঁচে নাও থাকতে পারেন। যদিও বন্দুক রাইফেল এগুলো তো সিনেমার মতো সব জায়গায় পাওয়া যায় না যে যে আপনি দোকানে গিয়ে তুলে নেবেন, মনে রাখবেন হামলা করার থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজেকে রক্ষা করা; তাই যখন আপনার শহর বা গ্রামে এই ধরনের কোন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাবেন তখন পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগে এই জায়গাটি ছেড়ে দিতে চেষ্টা করবেন।
কিন্তু যদি আপনি এই পরিস্থিতিতে আটকে যান যখন আপনার শহর বা গ্রামে জীবন্ত মানুষের থেকে জম্বি সংখ্যা বেশি তখন আপনি প্রথমত একটি ব্যাগে নিজের জন্য দরকার পরিমাণ মতো জল এবং শুকনো খাবার নিয়ে নেবেন, এরপর সেই জায়গাটা ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেবেন।
আপনি নিজের হাত পা এবং গলা এবং যতটা সম্ভব স্থানে একটু মোটা খাতা বা বই জড়িয়ে সেলুটেপ দিয়ে আটকে নেবেন কারণ মানুষের দাঁত লম্বায় আধা ইঞ্চির থেকেও কম হয় তাই বাইরে বেরোলে যদি আপনি কোন জম্বির সম্মুখীন হন তাহলে এই বই-খাতা আপনার শরীরে তাদের দাঁতকে ঢুকতে দেবেনা। যদি সৌভাগ্যবশত আপনার কাছে বন্দুক থাকে তাহলে সেটি লোড করে নিজের কাছে রাখবেন। এছাড়া আপনার বাড়িতে যদি সবজি কাটার ছুরি থাকে তাহলে আপনি কোন লম্বা ও মজবুত লাঠিতে সেটাকে বেঁধে নিজের সাথে রেখে দিন, বন্দুকের সাথে সাথে এই হাতিয়ারও আপনার অনেক কাজে আসবে।
আপনি নিজের সাথে একটা টর্চ অবশ্যই রাখবেন না অনেক সময় আমরা এখন ফোনের ফ্লাশ লাইট টর্চ এর মত ব্যবহার করি তাই টর্চ নিজের সাথে রাখতে ভুলে যাই।
কিন্তু একটা বড় টর্চ অনেক দূর অব্দি ফোকাস করে আলো ফেলে যার জন্য টর্চ অন্ধকারে দেখার জন্য মোবাইলের ফ্লাশ লাইট এর থেকে অনেক উপযোগী।
আপনি নিজের ভেতর প্রচুর বিশ্বাস জাগিয়ে তুলুন এবং বলুন আজ আমি মরতে পারি না এবং ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসুন। আপনার যত প্রতিবেশী যারা এখনো জোম্বিতে পরিণত হয়নি তাদের সবাইকে নিজের সাথে নিয়ে যান, যত সংখ্যক লোক আপনার সাথে থাকবে তত আপনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে সব সময় এবং সব রকম পরিস্থিতিতে একসাথে থাকবেন যদিও নিজেদের মধ্যে বেশি কথাবার্তা বলা বা চেঁচামেচি করা একদম করবেন না।
যদি ফিল্মে দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আপনি কোনো বড় ট্রাকে চড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তাহলে এটা একদম করবেন না কারণ প্রথমত ট্রাকের ইঞ্জিনের শব্দ জম্বিদের আকর্ষণ করবে এবং তাছাড়া বাইরে শহরের রাস্তায় নিশ্চয়ই প্রচুর গাড়ি উল্টোপাল্টা ভাবে পরে থাকবে তাই আপনি সেই জাম হওয়া রাস্তা বা হাইওয়ে দিয়ে ট্রাক নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট জায়গা পাবেন না।
তাই এর থেকে ভাল হয় যে আপনি সাইকেল নিয়ে চলুন, সাইকেল নিঃশব্দ তো বটেই তার সাথে আপনি যে কোন গাড়ি বা গাছের মাঝখান দিয়ে সহজে বের হতে পারবেন।
ঘরের বাইরে বেরিয়ে আপনি দেখুন যে শপিংমল বা বাজার কোনদিকে আছে এবং ভুল করেও সেইদিকে যাবেন না। যদিও সিনেমাগুলোতে দেখানো হয় যে লোকেরা নিজেদের বাঁচানোর জন্য শপিং মল কে নিজের আশ্রয় স্থল বানায় কিন্তু এই জায়গা এমন একটি জায়গা যেখানে লোকেদের ভীড় হয় এবং জম্বিদের শিকার করার জন্য আদর্শ স্থান হয়।
তাই জায়গাতে একদম যাবেন না যেখানে সংক্রামক রোগ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে শুধু তাই নয় শপিং মোলে বা বাজারে অনেকগুলো প্রবেশপথ থাকে তাই সব দরজায় আপনি নিজের নজর রাখতে পারবেন না। জোম্বিরা যে কোন দিক দিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারে আর তাছাড়া যেখানে মানুষের সংখ্যা বেশি হয় সেখানে নিশ্চয়ই এখন জোম্বির সংখ্যাও বেশি হবে তাই আপনি ভিড় স্থান থেকে দূরে থাকবেন।
এই সময় আপনার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ঘর থেকে বেরিয়ে আপনি কোথায় লুকাবেন, কোন জায়গা আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হবে, তাহলে এমন কিছু জায়গা বলি যেগুলো এই বিপদের সময় আপনার পক্ষে জীবনদায়ী হবে। যেমন,
ব্যাংক---
ব্যাংক যে কোন ছোট বড় শহরে আপনি সহজে পেয়ে যাবেন ব্যাংকে ঢোকার জন্য একটাই রাস্তা হয় যাতে সুরক্ষার জন্য একের অধিক দরজার স্তর লাগানো থাকে এই গুলো সাধারণত লোহার এবং খুব মজবুত হয় যে জায়গায় টাকা - গয়না রাখা হয় সেই জায়গায় আলাদা করে আরো বেশি দরজা লাগানো হয় এবং তা আরো মজবুত ও সুরক্ষিত থাকে। আপনি বন্দুকধারী পেয়ে যাবেন যদি আপনার নিজের শহরে ব্যাংকের লোকরা এখনো জোম্বিতে পরিণত না হয়ে থাকে তাহলে আপনি দ্রুত সেখানে চলে যান এবং তাদের আকুতি-মিনতি করুন।
ব্রিজ---
যদি আপনার আশেপাশে কোন নদী থাকে যাতে সেতু থাকে আর আপনারা একসাথে অনেকগুলো লোক থাকেন তবে আপনি সেই ব্রিজ বা সেতুকে নিজের আশ্রয় স্থল করতে পারেন। আপনি হাতুড়ি বা কোন মেশিন দিয়ে কোন পদ্ধতিতে সেই পুলের দুইপাশ ভেঙে দিন যাতে আপনার আশেপাশে জোম্বিরা আসতে না পারে। আপনি যখন সুযোগ বুঝবেন তখন চাইলে কোন দড়ি বা মই দিয়ে আবার শহরে যাওয়া-আসা করতে পারবেন।
ফার্ম হাউস--
যদি আপনার শহর থেকে দূরে এমন জায়গায় যেখানে লোকের ভিড় কম থাকে, আপনি সেরকম কোন ফার্ম হাউস খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন। তাহলে এটা আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী স্থান হতে পারে এখানে আপনি জম্বিদের থেকে দূরে থাকতে পারবেন এবং সে নিজের জন্য সবজি চাষ করে বা উৎপাদন করে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারেন।
সমুদ্রের জাহাজ--
যদি আপনি সমুদ্রের আশেপাশে থাকেন তবে সমুদ্রে জাহাজের থেকে উপযোগী আর কিছু হবে না আপনি খুব তাড়াতাড়ি সেখানে চলে যান। সেখানে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো জাহাজ বা এই জাতীয় কিছু আপনি পেয়ে যাবেন। খালি এটা মনে রাখবেন যে ওই জাহাজের আগে থেকে যাতে কোনো জম্বি উপস্থিত না থাকে। আপনি সমুদ্রে কিছু দূরে চলে যান যাতে জোম্বিরা আপনার কাছে পৌঁছাতে না পারে।
উঁচু পর্বত--
যদি আপনি পর্বত এলাকার বাসিন্দা তবে আপনি কোন পাহাড়ে থাকতে চলে যান।
পাহাড়ে চড়া খুবই কঠিন হয় এবং খুব কমই ওঠার রাস্তা হয়। আপনি পর্বতে উঠলে এই রাস্তা গুলো পাথর বা কিছু ফেলে বন্ধ করে দিতে পারেন।
মিলিটারি বেস---
দুনিয়াজুড়ে মিলিটারি ক্যাম্প অথবা ট্রেনিং স্কুল থাকে যেখানে প্রচুর হাতিয়ার থাকে এবং সুরক্ষিত হয়। আপনি যদি সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন তাহলে বুঝবেন আপনার প্রাণ বেঁচে গেছে। এই স্থানগুলিতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সব রকম জিনিস থাকবে। এখানে আপনি উচ্চমানের হাতিয়ার সহ প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর ভাইদের পেয়ে যাবেন যারা নিজেদের দিকে আসা যেকোনো জম্বির বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে দেবে।
দুর্গ --
প্রাচীন রাজা-মহারাজাদের তৈরী দুর্গ বা কেল্লা আপনার আরেকটি বিকল্প হতে পারে। যারা শত্রুসেনাদের থেকে বাঁচার জন্য দুর্গগুলি সেইরকমভাবে ডিজাইন করেছিল এবং মজবুতও হয়, যার চারপাশে সাধারণত পরিখা বা খালও কাটা থাকে এবং দরজা গুলো খুব বড় এবং ভারী হয়। আপনি ভেতর থেকে কেল্লার চারিদিকে নজর রাখতে পারবেন এবং বাইরে থেকে এত উঁচু ও মজবুত দরজা ভাঙা জোম্বিদের পক্ষে খুবই মুশকিল হবে। এগুলি প্রচুর জমি নিয়ে অবস্থিত হয় তাই একটা দুর্গের ভেতর পুরো শহরের অধিবাসীরা সহজে থাকতে পারবে।
জেল --
নিজেকে বাঁচানোর জন্য আদর্শ স্থান যদি আপনি জেল খুঁজে পান তাহলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি সেখানে চলে যান এবং জেলের সুরক্ষা কর্মীদের কাছে সাহায্য চান জেলের প্রাচীর খুবই উঁচু এবং সুরক্ষিত তাই এখান থেকে বাইরে যাওয়া বা ভেতরে আসা খুবই মুশকিল হয়। তাই জোম্বিরা জেলের ভেতরে সহজে আসতে পারবেনা আর এখানে সুরক্ষা কর্মীর সাথে সাথে বিভিন্ন হাতিয়ার ও আপনি পেয়ে যাবেন।
আইল্যান্ড--
জম্বিদের থেকে নিজেকে দূরে রাখার সবচেয়ে আদর্শ এবং স্থায়ী স্থান হল সমুদ্রের মাঝামাঝি থাকা কোন দ্বীপ। আপনি এরকম কোন স্থানে যেতে পারেন। আজও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এরকম দ্বীপ থাকে যাতে মানুষ হয়তো থাকে না। সেখানে যাবো খুব কঠিন না শুধু শর্ত হলো আপনাকে কোন হেলিকপ্টার বা বোট বা জাহাজ এই জাতীয় কোন কিছুর ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যান্য স্থান থেকে আলাদা এই দ্বীপে আপনি নতুন করে নিজের জীবন শুরু করতে পারেন। ওখানে আপনি সহজে নিজের জন্য খাবার ও জলের ব্যবস্থা করতে পারবেন। জোম্বিরা চলমান লেসার মতো, তাদের মাথায় খাওয়া আর কামড়ানো ছাড়া আর কিছু থাকে না, তাই তাদের পক্ষে কোনো জাহাজ বা হেলিকপ্টার চালিয়ে আপনার কাছে আসা অসম্ভব বিষয় তাই সেই দ্বীপে আপনিও আপনার সাথে থাকা মানুষেরা নতুন করে নিজেদের জীবন আবার শুরু করতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment