Tuesday, 31 March 2020

গরমে ঘামের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে কয়েকটি টিপস-

গরমকাল আসছে সাথে ঘামের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

যদিও ঘাম খুবই স্বাভাবিক এক প্রক্রিয়া যা গরম কালে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। শরীর থেকে বেরোনো ঘাম কিন্তু সব সময় দুর্গন্ধ পূর্ণ হয়না, আসলে কিছু ব্যাকটেরিয়া আপনার শরীরের কিছু অংশে বংশবিস্তার করে এবং দ্রুত তাদের সংখ্যা বাড়াতে থাকে এরপর আপনার চামড়ার উপরের কেরাটিন নামক প্রোটিন ভাঙ্গার সময় এই দুর্গন্ধের উৎপত্তি হয়। সাধারণত বগলে সবচেয়ে বেশি এর প্রভাব দেখা যায় এছাড়াও যৌনাঙ্গের আশেপাশে, থাই এর উপরের অংশ পায়ের তলা এই সকল স্থানেও ব্যাকটেরিয়ার কারণে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।

আপনার কখনো কি মনে হয় যে আপনার গায়ের গন্ধ ততটা ভালো নয়?তাহলে পুরোপুরি গরম আসার আগে এখনই কিছু নিয়ম মেনে চলা শুরু করে দিতে পারেন--

 ১. রোজ দিনে অন্তত একবার করে স্নান করুন এর ফলে চামড়ায় থাকা ব্যাকটেরিয়া গুলি এবং জমে থাকা ঘাম ধুয়ে যাবে যদি আবহাওয়া গরম হয় তাহলে একবারের বেশি স্নান করুন।
২. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করুন।

৩. ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করুন; ডিওড্রেন্ট গুলিতে অ্যালকোহল থাকে যা ব্যাকটেরিয়া নিধন করতে সাহায্য করে এবং  চামড়াকে এসিডিক করে দেয় ফলে যা ব্যাকটেরিয়াদের বাঁচার জন্য অনুপযোগী হয়ে যায়। এছাড়া দুর্গন্ধ দূর করে এটি দিনে দুবার ব্যবহার করতে পারেন।

৩. Anti-perspirant বা রোল অন ব্যবহার করতে পারেন, এগুলিতে অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড থাকে এবং অনেক সময় কিছু পরিমাণে ডিওড্রেন্ট থাকে এরা ঘাম বেরোনো ব্লক করে দেয় এরফলে কম ঘাম বেরোয়। তবে স্নান করার পর বা বেরোনোর সময় এগুলি দিলে কতটা কার্যকরী দাড়ায় না কারণ ঘামে এগুলো ধুয়ে যায় তাই আপনি রাত্তিরে শোয়ার আগে ব্যবহার করতে পারেন যাতে যখন আপনি ঘুমিয়ে থাকবেন তখন ঘাম হবে না এবং এগুলি আপনার চামড়ার ওপর নিজেদের কাজ  করার সুযোগ পাবে, এরপর দরকার হলে দিনে আরও একবার অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট বা সাধারণ ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে আপনাকে সতর্ক করে দিই কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এই অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট এর সাথে ব্রেস্ট ক্যান্সার বা প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে এবং যেহেতু শরীর থেকে ঘাম বেরোনো কমে যায় ফলে তাপমাত্রা জনিত কিছু সমস্যা দেখা যেতে পারে।
৪.যতটা পারুন শুকনো থাকার চেষ্টা করুন কারণ ব্যাকটেরিয়া শুকনো জায়গায় সহজে বংশবৃদ্ধি করতে পারে না।

৫. যদি আপনি লক্ষ্য করেন যে ব্যায়াম করার জন্য আপনার সবচেয়ে বেশি ঘাম এবং দুর্গন্ধ হচ্ছে তাহলে অবশ্যই আপনার ব্যায়াম করার জন্য যে কাপড়গুলি পড়েন সেগুলিকে নিয়মিত পরিষ্কার করুন কারণ হতে পারে এই কাপড়গুলি ব্যাকটেরিয়া তে ভরে গেছে ।
৬. নিজের খাদ্যাভাসের পরিবর্তন করুন তেল-ঝাল-মসলা জাতীয় খাবার কম খান এবং পিয়াজ রসুন এগুলি বেশি খেলে অনেক সময় ঘামের মাধ্যমে এদের গন্ধ বেরিয়ে আসে।
৭.আপনার যদি অতিরিক্ত ঘাম অথবা হাইপারহাইড্রোসিস এর সমস্যা থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং তার কথামত ট্রিটমেন্ট করেন।
৮. নিয়মিতভাবে বগলের চুল সেভ করতে হবে কারণ দেখা গেছে এই সকল অঞ্চলে চুল থাকলে সহজে ঘাম উবে যেতে পারে না যা ব্যাকটেরিয়া কে প্রোটিন ব্রেকডাউন করতে আরো সময় দেয় তাই নিয়মিত বগলের তলায় চুল পরিষ্কার পরিষ্কার করবেন অর্থাৎ সেভ করবেন।
৯. দিনে অন্তত একবার গরম জলে পা দুটি পরিষ্কার করবেন আঙ্গুলের মাঝখান গুলো পরিষ্কার করতে ভুলবেন না ।

১০. পায়ে দুর্গন্ধের সমস্যা থাকলে অবশ্যই ফাইবার এবং ফুলের তৈরি মৌজা পড়ার চেষ্টা করবেন এবং প্রতিদিন পরিষ্কার মোজা পরার চেষ্টা করবেন।
১১. প্লাস্টিক লাইনিং করা জুতো বেশি সময় ধরে পড়বেন না চেষ্টা করবেন চামড়া লাইনিং এর জুতো পড়তে কারণ চামড়ার জুতো থেকে সহজে ঘাম উবে যেতে পারে । চেষ্টা করবেন একটা জুতো যাতে দুদিন না পড়তে হয় কারণ একটা রাত্তিরে জুতো পুরোপুরি শুকাতে পারে না।
১২. খরখরে ঝামাপাথর বা পিউমিক স্টোন দিয়ে পা ধোয়ার সময় ঘষে দেবেন কারণ ব্যাকটেরিয়া চামড়ার মৃতকোষ গুলির ওপর নির্ভর করে বৃদ্ধি পায় ফলে এই মৃত চামড়া স্তর ঘষে তুলে দিলে পা পরিষ্কার থাকবে ।
১৩. কাজের মাঝে সময় পেলে জুতো খুলে খালি পায়ে থাকার চেষ্টা করবেন বা দিনে কিছু সময় খালি পায়ে থাকার চেষ্টা করবেন ।
১৪.সুতি বা সিল্কের জামা কাপড় পড়ার চেষ্টা করবেন । 
১৫. নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে জল খান, দরকার হলে সঙ্গে সবসময় বোতল রাখুন । পর্যাপ্ত পরিমাণে জল গায়ের দুর্গন্ধ কমাতে সাহায্য করে।
১৬. স্নান করতে যাওয়ার আগে বগলের তলায় কিছুক্ষণ লেবুর রস  এবং বেকিং সোডা মিশিয়ে লাগিয়ে রাখতে পারেন এর ফলে লেবুর এসিডিটি আপনার চামড়ার পিএইচ বাড়িয়ে দেয় যার ফলে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কমে যায় ।

কিছু কিছু মেডিক্যাল সমস্যা অতিরিক্ত ঘামের কারণ হতে পারে যেমন থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের, লিভারের, কিডনির অথবা ডায়াবেটিসের সমস্যা।
যদি নিম্নোক্ত সমস্যাগুলো দেখতে পারেন তাহলে একবার ডাক্তার কে দেখিয়ে নেওয়া উচিত-

  • রাত্তিরে আপনি ঘামতে শুরু করেন।
  • কোন কারন ছাড়াই আপনি স্বাভাবিক যেরকম ঘামতে তার থেকে অনেক বেশি ঘামতে শুরু করেছেন।
  • আপনার গা দিয়ে ঠান্ডা ঘাম নির্গত হচ্ছে।
  • অতিরিক্ত ঘাম আপনার নিত্যদিনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।

Monday, 30 March 2020

সিনেমা নয়, বাস্তবের উন্মাদ নাৎসি বৈজ্ঞানিক এবং আর্জেন্টিনায় তার তৈরী দুর্গম দ্বীপ-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যা পৃথিবীজুড়ে বহু ক্ষয়ক্ষতি এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে ছিল, সেই  যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে আর্জেন্টিনা দেশটি স্বাধীনতার সাথে সাথে শিল্প এবং অর্থনীতির বৃদ্ধি করতে চেয়েছিল, লক্ষ ছিল পৃথিবীর শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

তৎকালীন স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতি যুয়ান পেরণ যুদ্ধের পর চারিদিকে ছড়িয়ে যাওয়া বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে এমন কয়েকজন কে খুঁজছিলেন যারা নতুন প্রজেক্ট এর সন্ধানে আছে যা দেশকে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে এবং যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অনেক অস্ট্রিয়ান এবং জার্মান বৈজ্ঞানিক আর্জেন্টিনায় ও দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য এলাকায় সবার আড়ালে এসে আত্মগোপন করেছিল। এদের মধ্যে অ্যাডলফ ইচমান ও জোসেফ মেঙ্গেলের মতো বড় বড় নাৎসী নামও ছিল।
এরকম সব দজ্জাল বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে একজন ছিল চেকোস্লোভাকিয়া জন্মানো অস্ট্রিয়ান বৈজ্ঞানিক রোনাল্ড রিখটার। তিনি প্রথম দাবি করেন যে তিনি নিউক্লিয়ার ফিউশন এনার্জি রহস্য ভেদ করতে পেরেছেন যার ফলে খুব সুলভে অসীমিত পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করা যাবে এবং এরপর তিনি নাৎসিদের পার্টিকেল অ্যাক্সিলারেটর ডেভেলপ করতে সাহায্য করেছিলেন।

এইভাবে ঘটনাটি সূত্রপাত হয় যাতে আমাদের কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্রে দেখা পাগল বৈজ্ঞানিক এবং তার পরীক্ষাগার ও খলনায়ক এর মত বিভিন্ন ভয়ানক স্তরে ঘেরা দ্বীপপুঞ্জ সবই ছিল।

রিখটার ইউরোপ থেকে নকল পাসপোর্টে আর্জেন্টিনায় একদল অন্যান্য জার্মান বৈজ্ঞানিক এবং ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে পালিয়ে এসেছিল। তাদেরকে আর্জেন্টিনার সরকার বিনা বাধায় সক্রিয়ভাবে স্বাগত জানিয়েছিল এবং সরকার থেকে তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত সুযোগ-সুবিধা জিনিসপত্র এবং স্থান দেওয়া হয়েছিল যাতে আর্জেন্টিনার উন্নতি হয়। রিখটার ডক্টর পেদ্রো মাতিস এর সঙ্গে করে তার নিউক্লিয়ার ফিউশনের স্বপ্নটি আবার তুলে ধরেন, যেটা তখনও তারা সম্পাদন করতে পারেনি। সেই সময়ই তিনি জার্মান এরোনোটিকাল ইঞ্জিনিয়ার কুর্ত ট্যাংক কে নিয়ে আসেন যিনি নাৎসিদের আকাশযানগুলি তৈরি করতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। 
জুয়ান পেরোন 

 মিটিং এর সময় রিখটার খুব উৎসাহ সহকারে তার বিস্ময়কর আবিষ্কারের বর্ণনা করেন যা খুবই সুলভে অসীম শক্তির যোগান দেবে এবং এর জন্য ইউরেনিয়াম এর দরকার পড়বে না কেবলমাত্র কিছু খুবই প্রাথমিক এবং সহজলভ্য বস্তু যেমন হাইড্রোজেন, লিথিয়াম, বেরিয়াম ইত্যাদি দিয়ে শুরু করা যাবে। যতক্ষণে রিখটার তার বক্তৃতা সম্পন্ন করেছিল ততক্ষনে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট রাজি হয়ে গিয়েছিল। এমনকি রিখটারের কথাগুলোর সেরকম ভিত না থাকলেও তার দাবি ও বিশ্বাস এত জোরালো ছিল যে আর্জেন্টিনা সরকার তাকে পুরোপুরিভাবে সবকিছুর বন্দোবস্ত করে দিল। 1949 সালে তাকে সানকারলোস -দে-বারি  লোচের কাছে ভুয়াভিলেক এর মধ্যে অবস্থিত প্রত্যন্ত স্থানে হিউমুল নামে একটি গোটা দ্বীপ দিয়ে দেওয়া হলো যাতে সে 'থারমো ট্রন' নামক তার ফিউশন যন্ত্র তৈরি করতে যা কিছু চায় করতে পারবে।

এইভাবে প্রজেক্ট হিমুল শুরু হয় যাতে সরকার প্রচুর অর্থ যোগান দিতে থাকে যাতে কোন খরচ বাকি থেকে যায় না। একটি আঁকাবাঁকা ভাবে বিশাল এলাকা নিয়ে তৈরি প্রাঙ্গণ যাতে বিশাল কংক্রিটের তৈরি 40 ফুট উঁচু বাঙ্কার এবং তার সাথে অনেকগুলি রিয়াক্টর তৈরি করা হলো যার খরচ প্রায় 300 মিলিয়ন ডলার ছিল। এর সাথে বহু পালিয়ে আসা বৈজ্ঞানিক কে কাজে রাখা হল এবং গবেষণাটি কে আরো কার্যকর করে তুলতে বহুমূল্য যন্ত্রপাতি কেনা হল।  যেমন- একটি 'ফুল-ব্লোন পার্টিকেল অ্যাক্সিলারেটর' যা সেই সময় পুরো দক্ষিণ আমেরিকায় মাত্র একটি ছিল।
এই গোপন গবেষণাগারের সবকিছু পাহারা দেওয়ার জন্য এক ধরনের বাহিনী থাকতো যারা অনেকটা জেমস বন্ড চলচ্চিত্রের মতোই ছিল। 1951 সালের মধ্যে গবেষণাগার তৈরি হয়ে যায় এবং বাইরের পৃথিবী অগোচরে দ্বীপের জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে বৈজ্ঞানিকরা তাদের কাজ শুরু করে দিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মূলত একটি ছোটখাটো সূর্য তৈরি করা যেটি সহজলভ্য ও অসীমিত শক্তির যোগান দেবে এবং যা পৃথিবীর সকল পদার্থবিদের স্বপ্ন ছিল। একটা এমন সময় ছিল যখন প্রোজেক্টের মাঝে তারা খুঁজে পেল  রিঅ্যাক্টরের নকশাতে কিছু গলদ আছে যার ফলে সেটি ছিড়ে আবার নতুন করে শুরু করতে বাধ্য হতে হয় এবং পুরো প্রজেক্টটা একটা পয়সার ব্ল্যাক হোলে এসে দাঁড়ায়; কিন্তু কোন স্পষ্ট সাফল্যের ইঙ্গিত না থাকা সত্ত্বেও পয়সার যোগান বন্ধ থাকেনি।
রিখটার ও পেদ্রো মাতিস 

এতকিছু সামগ্রী এবং পয়সা প্রজেক্ট এর পেছনে লাগলেও ভবিষ্যৎ ধোঁয়াশা ছিল কিন্তু তবুও রিখটার সাফল্য সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছিল যদিও সে কিভাবে এগুলি কাজ করবে তাও পর্যন্ত তখনও বলেনি এবং বৈজ্ঞানিকজগৎ ধীরে ধীরে তার থেকে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছিল। বাইরের জগত থেকে ঘটনাটির তদন্ত করার জন্য অনেক সাংবাদিক এবং মানুষদের পাঠানো হয়েছিল কিন্তু রিখটারের গুন্ডা বাহিনীর কাছে সকলে ব্যর্থ হয়ে যায়। কোন তথ্য পাওয়া যায়নি যে তারা সেই দ্বীপে কি করছিল এবং বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক সমাজ ভ্রুকুটি তুলে চেয়েছিল। এই ব্যয়বহুল প্রোজেক্টের তিন বছরের মাথায় প্রথম  রিখটার সামনে এসে সবার উদ্দেশ্যে ঘোষণা করে যে সবাই যার পেছনে প্রচুর টাকা ও সময় ব্যয় করে অপেক্ষা করছিল সেই ফলাফল এসেছে তিনি ঘোষণা করলেন মূল ফিউশন সম্পন্ন করা গেছে। রিক্সার যথেষ্ট জয়ী ভঙ্গিমায় বিশ্বের সম্মুখে ঘোষণা দিল যে সে তার লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে এবং সেইদিন খুব শিগগিরই আসবে যখন পারমাণবিক এই শক্তিকে বা এনার্জি কে দুধের বোতল এর মত ছোট প্যাকেটে বিক্রি করা যাবে। এই খবরটি বিশ্বের চারিদিকে খবরের শিরোনামে এসে গেল এবং অনেকেই আশান্বিত হল যে সকলের কাছে ভবিষ্যতে এই স্বল্পমূল্যে পারমাণবিক শক্তি একদিন পৌঁছে যাবে। যদিও এই ঘোষণা সন্দেহজনক হিসাবে অনেক ভ্রুকুটির  সম্মুখীন হয়েছিল। গবেষণার কিছু যন্ত্রপাতি দেখে বোঝা যায় এবং সেখানকার কোন এক প্রযুক্তিবিদ গোপনে দাবি করেন যে এই গবেষণা কেবলমাত্র থেমে গেছে এক্সপেরিমেন্ট করার সময় একটি ত্রুটির কারণে এবং এটাও ঠিক ছিল যে রিকটার আবার নতুন করে গবেষণাটি শুরু করতে অনুমতি দেবে না অথবা কারোর সাহায্য নেবে না আবার এই আবিষ্কারটি সে খুব গোপনে করেছিল, ফলে  অন্য কেউ এ নিয়ে সাহায্য করতে পারতো না। এতকিছুর পর রিখটার পুরনো রিয়াক্টর কে খুলে তার জায়গায় নতুন করে আরও উন্নত মানের রিয়াক্টর তৈরি করার আদেশ দেন যাতে সেই ত্রুটিটি আর না হয়। দুর্ভাগ্যবশত রাষ্ট্রপতি জুয়ান প্রেরণের সন্দেহ বেড়ে যায় এবং তিনি তদন্ত করার জন্য তার নিজস্ব বাহিনী পাঠান যারা দাবি করে যে তারা পারমাণবিক ফিউশন সম্পন্ন করার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ খুঁজে পায়নি। বরঞ্চ তারা কিছু সূত্র খুঁজে পায় যাতে জানা যায় রিখটার তার পরীক্ষার ফলাফল কে অতিরঞ্জিত করার জন্য এলাকার আশেপাশে লাউড স্পিকার লাগায় একাউষ্টিক ওয়েভের সৃষ্টি করে ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। এবং দেখা যায় অনেক যন্ত্রপাতি একে অপরের সাথে ঠিকমত যুক্ত করা ছিল না যা দেখে বোঝা যায় এটা পারতপক্ষে জালিয়াতি ছিল।
আর্জেন্টিনা সরকারের কাছে এটা যথেষ্ট ছিল প্রজেক্টর বন্ধ করে দেওয়ার জন্য এবং 1952 সালে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রিখটার কে গ্রেফতার করা হয় এবং কংগ্রেসের থেকে তার উপর বিভিন্ন মামলা করা হয়, এদিকে স্বৈরাচারী প্রেরণ কেও 1955 সালে গদিচ্যুত করা হয়। এই জালিয়াতির পরেও এর পাশাপাশি অনেকগুলি ফিউশন রিক্টর প্রজেক্ট শুরু করা হয় এমনকি এই প্রজেক্ট এর পরিমাণ বেড়ে যায় এই সময়।
আমরা এখনো নিউক্লিয়ার ফিউশান পেয়ে উঠতে পারিনি এবং এটা সেই কল্পনা কারি শক্তি উৎপাদন থেকে গেছে যা আগেও ছিল।

এখনো শিমুল দ্বীপে সেই প্রয়োগ শালার অবশিষ্ট গুলি রয়ে গেছে এবং সেখানে ঘোরার জন্য এবং ইতিহাসের সর্ব বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক জালিয়াতি দেখার জন্য বোট ভাড়ায় দেওয়া হয়। অনেকেই ভাবতে থাকবে রিক্তার কোন উন্মাদ ছিল, বুজরুক ছিল জালিয়াত শিল্পী ছিল নাকি সে সত্যিকারেরই কোন কিছুর পিছনে এগিয়ে চলেছিল। সেকি ফগ জোচ্চোর ছিল নাকি লোকে তার প্রতিভা না বুঝতে পেরে ভুল বুঝে তাকে বন্ধ করে দিয়েছিল? পদার্থবিদ এডওয়ার্ড টেলার খুব সুন্দরভাবে রিখটার সম্পর্কে বর্ণনা করে বলেছিলেন কেউ যদি রিখটারের লেখা একটি লাইন পড়ে সে বুঝতে পারবে সে প্রতিভাবান ছিল। পরের লাইন পড়লে সে মনে করবে রিখটার পাগল ছিল। রিখটারের হাতে সত্যিই কিছু ছিল কি ছিল না তবুও তার এবং দ্বীপের জঙ্গলে তার ভয়ঙ্কর দুর্গের কথা ইতিহাসের অস্বাভাবিক ঘটনা গুলির মধ্যে উল্লেখিত হয়ে থাকবে।

Sunday, 29 March 2020

রহস্যময় ব্রাজিলিয়ান খুনি যে অপরাধীদের শিকার করতো --

ধারাবাহিক খুনি  বা সিরিয়াল কিলার, যারা মানুষের জীবনহানি,সংসারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং আমাদের দুঃস্বপ্নের কারন হয়ে দাঁড়ায়। এইসব পাশবিক দানব গুলির কাহিনী ইতিহাস জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
এদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যান্যদের থেকেও খারাপ আবার এদের মধ্যে কারোর খুনের পেছনে এমন উদ্দেশ্য বা কারণ রয়েছে যা সত্যিই কৌতুহল জোগায়। এরকমই একটি সিরিয়াল কিলারের ঘটনা আজকে বলবো যে বহু হত্যাকাণ্ড ঘটায়, যদিও তার শিকার এর মধ্যে প্রায় সবাই খুনি নয়তো দুষ্কৃতী।

মানুষটির নাম হল পেদ্রো রডরিগেজ ফিলহো, যার জন্ম 1954 সালে ব্রাজিলের সান্তাড়িতা নামক স্থানে এবং জন্মানোর পর তার মাথার খুলি কিছুটা চ্যাপ্টা দেখা যায় কারণ অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন তার বাবা তার মাকে লাথি মেরেছিল। ফলে খুব কম বয়সেই সে হিংস্রতার স্বাদ পায়।
এছাড়াও কৈশোর থাকাকালীন প্রায়ই তার পিতা তাকে প্রচুর মারামারি করত হয়তো তার এই হিংস্র জীবনের পেছনে এটির সামান্য অনুদান থাকতে পারে যা তাকে অত্যাচার এবং মৃত্যুর সাথে কিছুটা পরিচয় করে দেয়। যখন তার 13 বছর বয়স ছিল তখন একটি মারপিট চলাকালীন সে তার থেকে বয়সে বড় চাচাতো দাদাকে আখের রস কাটার মেশিনে ঠেলে হত্যা করার চেষ্টা করে; যদিও সে বেঁচে যায় কিন্তু ফিলহো  এই সময় প্রথম সাহস পায় এবং শক্তির স্বাদ পায় যেটা সে ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে পারবে তাদের উপর যারা অন্যায় করে। সে অনুভব করে যে সে খুন করার জন্য প্রস্তুত।

এর পরের বছর যখন ফিলহোর বয়স 14 বছর ছিল তার পিতা যিনি স্কুলের গার্ড ছিলেন, তাকে খাবার চুরির অভিযোগে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। যদিও তিনি একজন ভালো পিতা ছিলেন না কিন্তু তিনি চোর ছিলেন না। ফিলহর মনে খুব রাগ হল সে অনুভব করল শহরের মেয়র, যে চাকরি থেকে তার পিতাকে বিতাড়িত করেছিল তার মরে যাওয়া উচিত এবং এরপর ফিলহো বন্দুক নিয়ে বেরিয়ে পরলো যেটি একটি শটগান ছিল এবং তার সমস্ত হিংস্রতা বের করে টাউনহলে তাকে গুলি করে মারল এবং তারপর সময় নষ্ট না করে সে আসল অপরাধীকে খুন করে মারলো। এই হিংস্র ঘটনাটি আইনের কাছে ফিলহকে অন্যতম খুনি অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করলো এবং তাকে বাধ্য হয়ে দাস ক্রুজেস নামে সাও পাওলোর এক জঘন্য বস্তি এলাকায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করলো। এটি ভয়ঙ্কর খুনি, অপরাধী এবং ড্রাগ ডিলার এর মত সমাজের ঘৃণ্য বস্তু গুলিতে ভর্তি এক স্থান যেখানে ফিলহর সঠিকভাবে স্থান হয়ে গেল।

জীবন যাপনের জন্য ফিলহো এরপর থেকে খুন এবং চুরি করতে শুরু করলো, না কোন নিষ্পাপ সাধারণ মানুষদের না, সে ড্রাগ ট্রাফিকার এবং দুষ্কৃতী দলগুলোকে শেষ করতে লাগলো যাদের এটা প্রাপ্য ছিল। কোন ভাবে সে বিয়ে করারও সুযোগ পেয়ে গেল।  মারিয়া আপারেসিডা অলিম্পিয়া নামে এক মহিলাকে বিয়ে করে প্রথমবার সে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের স্বাদ পেয়েছিল এবং আবার নতুন করে জীবন শুরু করেছিল এবং অবশেষে মারিয়া সন্তানসম্ভবা হয়েছিল। এই সময় ড্রাগ এবং দুষ্কৃতী দলের সাথে তার সংঘর্ষ বলতে গেলে বন্ধ হয়ে গেছিল, যদিও তারা কিন্তু ফিলহোকে ভুলে যায়নি। তারা মারিয়া এবং তার পেটে থাকা বাচ্চাকে মেরে ফেলে ও অনূর্ধ্ব 18 এর ফিলহোকে হিংস্র প্রতিশোধের পথে আবার নামতে বাধ্য করে। খুব শীঘ্রই এটা প্রমাণিত হয়ে যায় পৃথিবীতে আর যে কেউ হোক ফিলহোর সাথে রেষারেষি করে পার পাওয়া যায় না।

এরপর ফিলহো প্রায় নিয়ম করে  ড্রাগ ডিলার এবং দুষ্কৃতী ও গ্যাংস্টারদের এক এক করে তথ্য সংগ্রহ করে যন্ত্রণা এবং মৃত্যু দিতে শুরু করে যা কোন একশন সিনেমা কেও হার মানাতে পারে এবং যখন তার স্ত্রীর মৃত্যু সম্পর্কে সব তথ্য সংগ্রহ করে ফেলে তখন পরিকল্পনামাফিক সে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ভয়ঙ্কর আক্রমণ করে বসে যেখানে তার স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী দুষ্কৃতী দলের নেতা এসেছিল। যখন ফিলহো এবং তার বন্ধুরা লড়াই শেষ করল ততক্ষনে 7 জন দুষ্কৃতী দলের সদস্যের মৃত্যু এবং 16 জন ভয়ংকরভাবে আহত হয়; দিন-দুপুরে এই  আক্রমণে ফিলহো তার প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয়।
পুলিশরা এইসময় তাকে ধরার জন্য সেরকম কোন প্রচেষ্টা করল না, কারণ সে সমাজের আবর্জনাগুলো পরিষ্কারেরই কাজ করছিল। তাই পুলিশরা তার ওপর কেবল লক্ষ্য রেখেছিল এবং তাকে দুষ্কৃতী দলগুলোকে একে একে শেষ করতে দিয়ে গেছিল। যদিও সে সীমা অতিক্রম করতে চলেছিল এবং আরো দূরে অগ্রসর হয়ে যেতে শুরু করেছিল।

ফিলহো একের পর এক  ড্রাগ মাফিয়া এবং দুষ্কৃতী দলের সাথে একা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে  তার ছোটবেলার সেই বাড়িতে কম হিংসা চলছিল না। এক রাত্তিরে তার পিতা নেশা করে এসে তার মাকে ছুরি দিয়ে কেটে খুন করে। যখনই ফিলহোর কানে খবরটা গেল, সে তাই করলো যাতে সে শ্রেষ্ঠ ছিল, সে প্রতিশোধ নিতে বেরিয়ে পরলো এবং 1973 সালের মে মাসে সে একটি ছুরি নিয়ে সেই জেলে পৌঁছে গেল যেখানে তার পিতা আটক ছিল। জেলে ঢুকে সে তার পিতার সাথে দেখা করতে চাইলো এবং সেখানে রক্ষী এবং অন্যান্য অপরাধীদের সামনে তাদেরকে হতবাক করে দিয়ে প্রায় 22 বার কুপিয়ে তার পিতাকে হত্যা করলো। ঘটনাটি কেবল এখানেই সীমিত ছিল না এরপরে আরো ভয়ানক মাত্রা পেল যখন ফিলহো তার পিতার হৃৎপিণ্ডটি বের করে আনল এবং তাতে কামড় বসিয়ে একটি টুকরো মুখে নিয়ে নিল।যেহেতু এটা জেলের ভিতর হয়েছিল এবং তার পালানোর কোন জায়গা ছিল না, তাই তাকে গ্রেফতার করা হলো। খবরের সুত্র অনুযায়ী,  যখন তাকে  অন্যান্য দুজন অপরাধীর সাথে পুলিশের গাড়িতে ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সে জানতে পারে তাদের মধ্যে একজন হল ধর্ষণকারী। ঠিক সেই মুহুর্তে সে সেই অপরাধী কে হত্যা করল এবং অন্য অপরাধী ভয় পেয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করে উঠেছিল।

ফিলহো দোষী প্রমাণিত হলো এবং তাকে ব্রাজিলের সবচেয়ে কুখ্যাত ও  ভয়ঙ্কর কারাগারে পাঠানো হলো এবং এখানেও সে খুব দ্রুত নিজেকে ভয়ঙ্কর খুনি হিসেবে প্রতিষ্টিত করল। কারাগারের দেয়ালের ভেতর অন্যান্য দুষ্কৃতীদের কাছে সে একাই উকিল, বিচারপতি এবং কোতোয়াল ছিল। সে যাকেই অপরাধী হিসেবে গণ্য করতো তাকে নির্মম ভাবে এবং নিয়ম অনুসারে হাতের কাছে যা পেতো তা দিয়ে অত্যাচার করে এবং খুন করে শাস্তি দিত বিশেষ করে ধর্ষণকারী, ড্রাগ ডিলারদের এবং যৌন হেনস্থা কারীদের। জেলের মধ্যে একটি প্রবাদ রটে গিয়েছিল যে ফিলহো হল এমন এক খুনি যে অন্যান্য দুষ্কৃতীদের খুন করতে ভালোবাসে এবং পৃথিবীর এই জেল যাতে বিখ্যাত বহু ভয়ঙ্কর, নির্মম অপরাধীরা থাকতো তারাও তাকে ভয় পেত। জেলের একটি রিপোর্টে জানা গেছে একবার জেলের একদল দুষ্কৃতী তাকে খুন করতে গিয়েছিল; তারা পাঁচ জন মাঠে তাকে আক্রমণ করেছিল এবং স্বভাব অনুসারে তাদের মধ্যে তিনজনকে ফিলহো খুন করে এবং অন্য দুজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর আর কেউ তাকে বিরক্ত করার সাহস পায়নি বরং সকলে যেন ভীতসন্ত্রস্ত ভাবে তাদের পিছনের দিকে খেয়াল রাখা শুরু করেছিল, কারণ কেউই জানত না ফিলহোর পরবর্তী শিকার কে হবে।

 2003 সালে যখন তাকে ছাড়া হয়, জানা যায়, ফিলহো কমপক্ষে 47 জন অন্যান্য দুষ্কৃতীদের খুন করে।যদিও এটা প্রমাণ করা খুবই দুষ্কর ঘটনা ছিল কারণ ব্রাজিলের এই ভয়ঙ্কর জেলে প্রায় প্রতিদিন কারোর না কারোর মৃত্যু ঘটে। তাকে আরো চার বছর নজরদারিতে রাখা হয় এবং অবশেষে 2007 সালে সে মুক্তি পায়। ফিলহো এরপর ব্রাজিলের সিয়েরা স্টেটের অন্তর্গত ফর্টালেজা গিয়ে বসবাস করে কিন্তু সেখানেও তাকে তার পুরনো অপরাধ মুক্তি দিল না। তাকে 2011 সালে আবার গ্রেফতার করা হয় দাঙ্গা লাগানোর অভিযোগে যা ভুয়া ছিল। শেষের দিকে এক সময় সে স্বীকার করেছিল যে সে 100 র ও বেশি মানুষকে হত্যা করে কিন্তু তার সাথে এটিও সংযোজন করে যে তারা সকলে খারাপ মানুষ ছিল এবং এটি তাদের প্রাপ্য ছিল। সে বর্ণনা দেয় যে সে এই সকল অপরাধীকে দমন করে কিভাবে  সমাজের উপকার করেছিল  এবং সমাজের জঘন্যতম আবর্জনা গুলিকে সাফ করতে তার কিরকম রোমাঞ্চ লাগত। এতকিছুর পরেও 2018 সালে ফিলহো, যাকে 'ব্রাজিলিয়ান ডেক্সটার' বলা হয় (আমেরিকান টিভি শো 'ডেক্সটার' থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যেখানে একজন সিরিয়াল কিলার অন্যান্য সিরিয়াল কিলারদের হত্যা করে) আট বছর বাদে জেল থেকে মুক্তি পায়। এরপর তিনি তার রাস্তা বদল করেন, সমস্যায় জর্জরিত সমাজের কম বয়সিদের কাছে পৌঁছতে থাকেন এবং তাদের অপরাধ জগত ও হিংসা থেকে দূরে রাখার প্রচেষ্টা শুরু করেন। অবশ্যই তাদের খুন করে নয়, তার একটি ইউটিউব চ্যানেল ও আছে। 

এটা বলা খুবই কঠিন যে আমরা এই ধরনের অপরাধ কে ছাড় দেব না বন্ধ করি কারণ এগুলি খালি দুষ্ট কে দমন করার জন্যই ঘটেছিল। যদিও এটা অস্বীকার করা যায় না যে ফিলহো এক সম্পূর্ণ অন্যধরনের খুনি ছিল যে সমাজের নিকৃষ্টতমদের চিহ্নিত করতো এবং আপনি তাকে নায়ক না খলনায়ক আখ্যা দেবেন তা আপনার উপর ছেড়ে দিলাম।

Wednesday, 11 March 2020

রহস্যময় আফ্রিকান সাইক্লোন এবং হারপ এক্সপেরিমেন্ট--

2019 সালের মার্চে এক ভয়ানক ক্রান্তীয় সাইক্লোন ইডাই দক্ষিণ পূর্ব আফ্রিকার মোজাম্বিকে ভয়ানক ক্ষতি করে এবং ধ্বস নামায়। ঝড় টি প্রায় 17 দিন ধরে তান্ডব চালায় বিশাল এলাকা জুড়ে যার ফলে বন্যা এবং প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এই ক্ষতি প্রায় দু মাস পরেও চলতে থাকে কারণ সাইক্লোন পরবর্তীকালে প্রাণঘাতী কলেরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং সব ক্ষয়ক্ষতি মিলিয়ে প্রায় বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

যখন ইদাই এর মত মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলি আসে তখন সাধারণতঃ মানুষের মনে প্রশ্ন জেগে থাকে কি কারনে এত নৃশংস ঘটনা ঘটছে হয়তো এটা ভগবানের অভিশাপ অথবা কোন দৈবশক্তির কারণে এবং এই সময় আফ্রিকান মানুষরা মনে করেন হয়তো ঈশ্বর না কোন রহস্যময় শক্তি এই ইডাই  এর কোপ তাদের ওপর নামায়।
হেরাল্ড এ প্রকাশিত হওয়া একটি রিপোর্টে মজাম্বিকান প্রেসিডেন্ট মানা গাওয়া নিজে এই ঝড়ের প্রতি এবং তার পরবর্তীকালে ক্ষয়ক্ষতির প্রতি সংশয় প্রকাশ করেন যখন তিনি ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকাগুলি প্রদক্ষিণ করেন তিনি ইঙ্গিত দেন যে কোন অজানা শক্তি এই ধরসনা মা এবং অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির পিছনে রয়েছে।
কিছু স্থানে বৃষ্টি নামার আগেই ধস নেমেছিল এবং স্থানীয়দের মতে তারা কিছু শব্দ শুনতে পায়ে যার পর পাহাড় থেকে প্রচুর কাদামাটি নেমে আসে এবং তার প্রায় দু'ঘণ্টা বাদে বৃষ্টি নামে এটা সত্যিই রহস্যময় যা সত্যিই রহস্যময়।

বর্তমানে আফ্রিকান ম্যাগাজিন এই সংসার টা কি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে তারা প্রশ্ন করেছে এই ইডাই কি কোন ভূতাত্ত্বিক বা জিও ফিজিকাল ওয়ার ফেয়ারের ফসল?
'নিউ আফ্রিকান' এর মতামত অনুযায়ী এই ঝড় টি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছিল ইউনাইটেড স্টেটস দাঁড়া এবং নতুন তথ্য নির্দেশ করে সাইক্লোন আগাই ইউএসএর ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এবং জিও ফিজিকাল ওয়ারফেয়ার প্রোগ্রাম যাকে আমরা  হারপ বলে জানি তার ফসল।

প্রতিবেদনে তারা বলে যে মোজাম্বিক এবং জিম্বাবুয়ে বাসিন্দারা মনে করেন এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ হারপ এর নতুন রিসার্চ ক্যাম্পেইনের ফসল যেটা মার্চের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল।
এর আগেও আলাস্কার যেনোকায় একই সময়ে একটি ভূমিকম্প আঘাত করে যার ফলে পরীক্ষাটি একটু দেরিতে হয়। হারপের সরকারি ওয়েবসাইট অনুযায়ী হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ট্রান্সমিশন কে আয়োনোস্ফিয়ার এর বহু দূরত্ব জুড়ে আঘাত করে এই পরীক্ষা গুলি চালনা করা হয়। এমনকি কিছু কিছু ট্রান্সমিশনে মিক্সড মেডিয়া আর্ট কে ব্যবহার করা হয়। এগুলি কি মোজাম্বিকের সাইক্লোনের কারণ?

এই হারপ প্রোগ্রাম কি সত্যি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নামিয়ে আনতে পারে? কে জানে! পৃথিবী কি সত্যিই কোন বিশাল শক্তির অঙ্গুলি-হেলনে চলছে? কোন মানুষ কি সত্যিই সাতবার অলৌকিক ঘটনা ঘটানোর পর মৃত্যু থেকে জেগে উঠতে পারে? সত্যিই কোন বিশাল ব্যাং বা বিস্ফোরণ এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি করেছিল? আমরা সবাই আমাদের বিশ্বাস কোন না কোন বর্ণনার উপর রেখে থাকি। তবে আমি খালি ভাবি যে এই হারপের মত শক্তিকে এবং প্রচুর পরিমাণে সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমেরিকা কেন পৃথিবীর অপর প্রান্তে তার বন্ধু দেশের ক্ষতিসাধন করতে চাইবে। কেন ইউ এস প্রতিপক্ষ দেশকে ছেড়ে মোজাম্বিক এর মত দেশকে এই পরীক্ষার জন্য লক্ষ্য করবে?

Thursday, 5 March 2020

রহস্যময় হারিয়ে যাওয়া মহাকাশচারী---




1950 থেকে 1960 সালের মধ্যে রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে মহাকাশ অভিযানের প্রতিযোগিতা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুই শক্তিশালী দেশ, কে আগে সেই পৃথিবীর বাইরে যেখানে মানুষের পা পড়েনি সেখানে প্রথম মানুষ কে পাঠাবে তার জন্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ পর্যায়ে ব্যবহার করার চেষ্টা করছিল। একসময় অক্টোবর 1960 সালে একটি সোভিয়েত রকেট ওড়ার সময় বিস্ফোরিত হয় এবং নিকটবর্তী প্রায় দেড়শ মানুষ তাতে মারা যায় এবং একজন মহাকাশ যাত্রী তার স্পেস ক্যাপসুল এর ভেতর আগুন ধরে মারা যায়, এরপরেও 12 এপ্রিল 1961 সালে সোভিয়েত গর্বিতভাবে ঘোষণা করে যে তারা প্রথম মানুষ কে মহাকাশে পাঠিয়েছে। 27 বছর বয়সী মহাকাশযাত্রী ইউরি গ্যাগারিন পৃথিবীর চারদিকে ভস্টক ১ প্রদক্ষিণ করে প্রথম মানুষ হিসাবে সংবাদমাধ্যম এবং বিনোদন জগতের শীর্ষস্থানে আসেন। যদিও এর আগে অনেক গুজব বা তথ্য ভেসে বেরিয়েছিল যে এর আগেও আরো অনেকে উপরে গিয়েছিল যদিও তাদের ভবিতব্য কি হয়েছিল তা সম্পর্কে জানা যায়নি তারা ইতিহাসের অন্ধকার গর্তে তলিয়ে গেছে যা সযত্নে গোপন করা হয়েছিল।
বহুকাল ধরেই বলা হয়ে আসছে যে সোভিয়েত ইউনিয়ন ইউরি গ্যাগারিন এর আগেও অনেকগুলো ফ্লাইট মহাকাশে পাঠিয়েছিল। এমনকি গ্যাগারিনের মহাকাশ যাত্রার আগেও একটা মহাকাশযান সাফল্যের সাথে পাঠানো হয়েছিল যেটা একটি গণমাধ্যম কভার করছিল কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেই ঘটনাটি সম্পর্কে কোন তথ্য আর খুঁজে পাওয়া যায় না এবং তাকে কোনদিনও টিভিতে দেখানো হয়নি। যে গণমাধ্যমটি প্রথম সেই মনুষ্য অভিযান প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছিল তাদের তথ্য অনুযায়ী অভিযানটি সাফল্য লাভ করেছিল এবং পাইলট ছিলেন মহাকাশ যাত্রী 'ভ্লাদিমির লিউসিন'। এই ঘটনার কথা জানত আরো কিছু সাংবাদিক যাদের মধ্যে বিখ্যাত ছিল ব্রিটিশ 'ডেইলি ওয়ার্কারের' ডেনিস অগদেন এবং ফ্রেঞ্চ সাংবাদিক এদুয়ার্দ বব্রভাকী।

বেসরকারিভাবে লিউসিন কে প্রথম মহাকাশচারী বলা হলেও তিনি নিজে সম্পূর্ণ নিশ্চুপ ছিলেন। সরকারি মতে তার গাড়ি দুর্ঘটনা হওয়ার কারণে তিনি ছুটিতে ছিলেন।যদিও সোভিয়েত সরকার কখনোই তাকে মহাকাশচারী হিসেবে স্বীকার করেনি এবং বিভিন্ন সময়ে তার সম্পর্কে বিভিন্ন রকম তথ্য দিতে থাকে কখনো বলা হয় তিনি কোমায় আছেন আবার কখনো অন্য কোনো কারণ যদিও প্রকৃত কি চলছে তা সম্পর্কে কারোরই ধারণা ছিল না।

মহাকাশ তাত্ত্বিক আরমান ওবার্থ, যিনি দাবি করেন সোভিয়েত বহু আগে 1958 সালে মানুষকে মহাকাশে পাঠায় কিন্তু সেই মহাকাশযাত্রী মারা যায় এবং গোয়েন্দা সংস্থার কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এটি ছাড়াও আরো অনেক ব্যর্থ মহাকাশ অভিযান করা হয়। 1959 সালে ওগো নিয়োক নামক খবরের কাগজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যাতে বলা হয় কর্নেল দলগোভ, ইভান কাচুর এবং অ্যালেক্সি গ্রাচো যারা হাই অল্টিটিউড প্যারাসুট জাম্পার ছিলেন তারা হাই অল্টিটিউড মহাকাশযান এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সাথে যুক্ত ছিলেন এবং এর ফলে পরবর্তীকালে এদের অনেকেই রহস্যজনকভাবে হয় মারা যায় নয় গায়েব হয়ে যায় তাদের কথা আর কোনদিনও শুনতে পাওয়া যায়নি।

সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘটনা গুলির মধ্যে একটি হলো লেখক 'রবার্ট এ' অভিযোগ করেন, 1960 সালে তাকে সোভিয়েত আর্মির এক কর্তা বলেন যে একজন মানুষকে করাবি স্পুৎনিক 1 এ মহাকাশে পাঠানো হয় কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে তাকে সেই মহাকাশযান ছেড়ে দিতে বাধ্য হতে হয়
এরপর মহাকাশে তার ভবিতব্য কি হয় তা জানা যায়নি সরকার দ্রুত এই ঘটনাটি চাপা দিয়ে দেয় এই বলে যে সেটি মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান ছিল। কিন্তু সত্যিই যদি তাতে কোন মানুষ থেকে থাকে তাহলে সরকারিভাবে সে তো কোনো স্বীকৃতি পায়নি বরং ইতিহাস থেকেও সে মুছে গেছে।
এর মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি করেন আখিলে এবং জিওভানি বলে দুই ভাই যারা বেতার নিয়ে উৎসাহী ছিলেন এবং 1957 সাল থেকে সোভিয়েত এবং আমেরিকানদের মহাকাশ তথ্য আদান-প্রদানের উপর নজর রাখছিলেন। তাদের তথ্য অনুযায়ী তারা হাজার হাজার ঘন্টা বিভিন্ন সোভিয়েত এবং আমেরিকান মিশনের উপর তথ্য রেকর্ড করেন। 1960 সালে তারা দাবি করেন তারা এক ধরনের মোর্সকোড পেয়েছেন যার সমাধান করে তারা বুঝেছেন সোভিয়েত এমন কিছু উপরে পাঠাচ্ছে যা তাদের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে চলেছে এমনকি বেশ কিছু ট্রান্সমিশন প্রমাণ করে যে এগুলি মহাকাশ যাত্রীদের আপৎকালীন ট্রান্সমিশন ছিল যা বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় যে এদের মধ্যে কেউ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং কেউ পুড়ে মারা গেছিল এমনকি তাদের কাছে মহিলা ও বিভিন্ন পুরুষের বেতার যোগাযোগের রেকর্ডও আছে যাতে মহিলাটি দগ্ধ হতে হতে তার শেষ এমার্জেন্সি ট্রান্সমিশন পাঠায়। এর থেকে বোঝা যায় গ্যাগগ্রিন প্রথম নন যিনি মহাকাশে গেছিলেন। অ্যাপেলো 11 এর চাঁদে ঐতিহাসিক পদার্পণের আগেই একটি বিতর্কিত তথ্য সামনে আসে যেটি হল সোভিয়েত 1969 সালের জুলাইতে  একটি মহাকাশযান চাঁদে পাঠানোর প্রচেষ্টা করেন যদিও সেটি লঞ্চপ্যাড এই বিস্ফোরণ ঘটায় এবং আশেপাশে সকলে মারা যায় যেটি খুব দ্রুত সরকার থেকে ধামাচাপা দেওয়া হয় এবং সরকারি ভাবে বলা হয় এটি মনুষ্যবিহীন পরীক্ষা ছিল।
আরো একটি রহস্যজনক ঘটনা ঘটে, জানা যায় 1969 সালে মহাকাশচারী আন্দ্রেই মিকয়ান এবং অন্যান্য মহাকাশ যাত্রীরা সাফল্যের সাথে সাফল্যের সাথে চাঁদের দিকে পাড়ি দেয় কিন্তু প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং ভুল হিসাবের কারণে তারা গন্তব্যস্থানে দিকে না গিয়ে অন্ধকার মহাকাশে কোথাও হারিয়ে যায়। 2001 সালে সোভিয়েত মহাকাশ গবেষণাগারের এক উচ্চ পদাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার 'ইজি এসে' দাবি করেন যে যুথিকা এবং কর দিঘলিয়া এবং এছাড়াও লেডভস্কিক, সাবরিন এবং মৃত কবে নামে আরও কিছু মহাকাশ যাত্রী 1957, 1958 এবং 1959 সালে এভাবেই পৃথিবী থেকে মহাকাশের দিকে গায়েব হয়ে গিয়েছিলেন এগুলি কি সত্যি? সমস্যা হচ্ছে যদি এগুলি কোনভাবে সামনে আসে তবে শীতল যুদ্ধের সময় ইউনাইটেড স্টেট সঙ্গে সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের সেই ব্যর্থতা নিয়ে একটি বড় জয় পেত ফলে সোভিয়েত কোনভাবে সেগুলিকে তখন বাইরে আসতে দেয়নি এবং প্রথম সরকারিভাবে মহাকাশচারী গ্যাগারিন যিনি সারাজীবন এগুলি অস্বীকার করে গেছিলেন। একটি রহস্যজনক ঘটনা হল গ্যাগারিন এক সময় দাবি করেন তিনি সেই মহাকাশ যাত্রার সময় মহাকাশে একটি অলৌকিক ঘটনার সম্মুখীন হন তার মহাকাশযান ভস্টক এর যাত্রাকালে দুটি সময় তিনি পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেললেন যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি বলেছিলেন তিনি জানেন না কী হয়েছিল তিনি যেন তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে গেছিল। পরবর্তীকালে তিনি দাবি করেন সেই সময় তার মনে পড়ে তিনি মহাকাশে তার সামনে এক রহস্যজনক দেহকে ভাসতে দেখেন এবং তার মাথায় একটি কন্ঠ ধ্বনিত হয় যে, 'চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে তুমি পৃথিবীতে ফিরে যাবে।'

এইসব মহাকাশ যাত্রী এবং মহাকাশ যাত্রার কথা কি কোনদিনই প্রকাশ্যে আসবে না? সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পর্কে এত অন্ধকার দিক থাকলে ইউনাইটেড স্টেটস এর হয়তো এরকমই অনেক তথ্য থাকতে পারে যে তথ্যগুলি হয়তো শীত যুদ্ধকালীন প্রকাশ্যে আনা হয়নি এবং কোন গোপনীয় সুরক্ষিত স্থানে চাপা রেখে দেওয়া হয়েছে অথবা পুড়িয়ে দেয়া হতে পারে। ইতিহাসে এই ঘটনা নতুন নয়। এইভাবে বহু কাল অধ্যায় ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে গেছে এবং হয়তো অন্ধকার যুগ ইতিহাসে বারে বারে এসেছে।