Tuesday, 8 May 2018

গরমে সতেজ ত্বক (ছেলে ও মেয়ে উভয়)--


গরমে বাড়ির বাইরে বেরনোর নাম শুনলেই গায়ে যেন জ্বর এসে যাচ্ছে। সারা বছরের যত্ন যেন এক নিমেষেই শেষ! সব পরিশ্রমে জল ঢেলে দিচ্ছে যেন সূর্য মামা।
সারাদিন বাইরেই কাটাতে হয়, তাই ত্বকে ধুলাবালিও বেশি জমে।আয়নার দিকে তাকালেই মনটা কেমন যেন ভার হয়ে যাচ্ছে তো? এখনি এতটাও ভেঙে পড়ার কিছুই হয়নি। হাতের কাছেই  আছে জেল্লা ফিরে পাওয়ার ম্যাজিক। যাতে ত্বক যেমন ভালো থাকে তেমনি আপনি থাকেন ফ্রেশ।


-ত্বক ভালো রাখতে হলে সপ্তাহে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ দিন বার মুখে স্ক্রাব করুন।

-জল দিয়ে কিছু সময় মুখ ধুয়ে নিলে তা সজেত থাকে। তে ত্বক যেমন ভালো থাকে তেমনি আপনি থাকেন ফ্রেশ।


অ্যালো ভেরা--

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে স্কিনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ত্বকের স্বাস্থের উন্নতিতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে অ্যালো ভেরার ভিতরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান, ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে প্রদাহের মাত্রা কমায়। ফলে একাধিক ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনাও যায় কমে।

প্রশ্ন হল অ্যালো ভেরাকে কাজে লাগিয়ে ত্বকের পুড়ে যাওয়া ভাবকে কমান যায় কীভাবে? এক্ষেত্রে ত্বকের যে যে জায়গা পুড়ে গেছে সেখানে অ্যালো ভেরা জেল লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিতে হবে। এইভাবে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন এই প্রকৃতিক উপাদানটির সাহায্যে ত্বকের পরিচর্য়া করলে পোড়া ভাব যেমন কমে, তেমনি পুনরায় যাতে ত্বকের ক্ষতি না হয়, সে সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে।

শসা -

ত্বকের ভিতরে প্রদাহের মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শসার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। প্রচন্ড সূর্যালোকে যাতে ত্বক পুড়ে না যায়, সে বিষয়েও খেয়াল রাখে এই প্রকৃতিক উপাদানটি। তাই গরমে ত্বকের পরিচর্যায় শসাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডার্মাটোলজিস্টরা।

-পরিমাণ মতো শসা নিয়ে তার পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্টটির সঙ্গে পরিমাণ মতো লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে কম করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে।

-প্রতিদিন ঘরে ফিরে মুখ ধোয়ার আগে শসার টুকরো দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখ ঘষে পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এটি ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। এ ছাড়া শসার রস ত্বকে প্রাকিতিক মশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।

-রোদ থেকে বাড়ি ফিরে এক টেবিল চামচ করে শসার রস, লেবুর রস এবং গোলাপ জল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। ট্যান হয়ে যাওয়া অংশে তুলোর সাহায্যে মিশ্রণটি লাগান। উপকার পাবেন।


তরমুজ-

সুস্বাদু এই ফলটিকে কাজে লাগিয়ে ত্বকের পোড়া ভাব কমিয়ে ফেলা সম্ভব হয়। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে চোখে পরার মতো। ত্বকের পোড়াভাব কমাতে যত রকম ভাবে কাজে লাগাতে পারেন তরমুজকে।

- অল্প পরিমাণ তরমুজ নিয়ে তার রস সংগ্রহ করে সেটি মুখে লাগাতে পারেন।

- তরমুজের খোসা মুখে ঘোষলেও সমান উপকার পাওয়া যায়। তাই এই গরমে ত্বককে সুন্দর রাখতে নিয়মিত তরমুজ যেমন খেতে হবে, তেমনি এই ফলটিকে ত্বকের পরিচর্যায় কাজেও লাগাতে পারেন!

চন্দন গুঁড়ো এবং হলুদ-

একাধিক গবেষণা অনুসারে চন্দন গুঁড়োয় উপস্থিত প্রকৃতিক তেল একদিকে যেমন ত্বকের পোড়া ভাব কমায়, তেমনি উজ্জ্বল করে তোলে। তাই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সময় লাগে না।

– যদি চন্দন গুঁড়োর সঙ্গে অল্প পরিমাণে হলুদ গুঁড়ো মেশাতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই, হলুদের অন্দরে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান, ত্বকের ভিতরে প্রদাহ কমায়। ফলে তাপ প্রবাহের কারণে নানাবিধ ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।সম পরিমাণে চন্দন এবং হলুদ গুঁড়ো নিতে হবে। তারপর তার সঙ্গে পরিমাণ মতো গোলাপ জল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিয়ে সেই পেস্টটা মুখে লাগিয়ে কম করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা। এই মিশ্রণটি নিয়মিত মুখে লাগালে দেখবেন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে একেবারেই সময় লাগবে না।

-এছাড়া কাঁচা হলুদের সঙ্গে কাঁচা দুধ মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করে সম্পূর্ণ মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। কাঁচা হলুদ ত্বকের কোমলতা ধরে রাখে এবং কাঁচা দুধ স্কিনের কমপ্লেকশনকে আরো ফর্সা করতে সাহায্য করে। এছাড়া শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু ব্যবহার করতে পারেন। এটি অনেক বেশি উপকারী ছেলেদের ত্বকের জন্য।

নারকেল তেল-

চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এই গরমে ত্বকের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নারকেল তেলের বিকল্প হয় না বললেই চলে। এই তেলটির ভিতরে মজুত রয়েছে প্রচুর মাত্রায় 'স্কিন প্রোটেকশন প্রপাটিজ’, যা ত্বকের পোড়া ভাব কমানোর পাশাপাশি স্কিনকে উজ্জ্বল এবং তুলতুলে করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাড়ি থেকে বেরনোর আগে একেবারে অল্প পরিমাণে নারকেল তেল নিয়ে মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!


- ত্বক শুষ্ক হলে আপনি এতে লেবু খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারেন। লেবু কেটে খোসাসহ মুখে ভালভাবে ঘষে নিলে তা ব্রণ থেকে শুরু করে এ্যালার্জি সমস্যা নিমিষেই দূর করে। লেবুর সাইট্রিক এসিড আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল, পিগমেন্টেশন, রোদে পোড়া দাগ দূর করতেও সাহায্য করে, এর ভিটামিন ‘সি’ মুখের কালো দাগ দূর করে ত্বককে আরো ফর্সা করতে সাহায্য করে।

-দুই টেবিল চামচ বেসন, এক চিমটে গুঁড়ো হলুদ, এক টেবিল চামচ কমলা লেবুর রস এবং ঠাণ্ডা গোলাপ জল একটি পাত্রে মিশিয়ে মিশ্রণতৈরি করে নিন। ২০ মিনিট পর মুখে, হালকা ঘষে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

-একটা আলুর পেস্ট বানিয়ে তাতে এক চামচ পাতিলেবুর রস মিশিয়ে পুড়ে যাওয়া অংশে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। উপকার পাবেন।

-এক টেবিল চামচ মুসুর ডাল সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সেই ডালের সঙ্গে ১ চামচ অ্যালোভেরার রস এবং ১ চামচ টমাটোর রস মিশিয়ে নিন। ২০ মিনিট ত্বকে রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।

No comments:

Post a Comment