Saturday, 24 March 2018

ওয়েবের অন্ধকার জগত-- ডার্ক ওয়েব ও Blue- হোয়েল---

অতি সম্প্রতি ডার্ক ওয়েব থেকে Blue- হোয়েল গেম নামিয়ে ব্যবহার করার একটা কথা শুনে আসছি। আমরা হয়ত অনেকেই Blue- হোয়েল সম্পর্কে জানলেও জানিনা আসলে ডার্ক ওয়েব জিনিস টা কি!
সম্পূর্ণ ইন্টারনেটকে মোট তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সার্ফেস ওয়েব (Surface Web), ২.ডীপ ওয়েব (Deep Web), এবং .৩.ডার্ক ওয়েব (Dark Web)।

সার্ফেস ওয়েব (Surface Web)--

সার্ফেস ওয়েব হলো ঐ ওয়েব যেটি দুনিয়া জুড়ে প্রত্যেকটি সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যবহার করে থাকে। যেটি আপনি ব্যবহার করেন, যেটি আমি ব্যবহার করি এবং ভবিষ্যতেও ব্যবহার করেত থাকবো সেটিই হলো সার্ফেস ওয়েব। যেমন- গুগল,ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি। সেসব সাইট গুলো সার্ফেস ওয়েবের মধ্যে পড়ে।
এমনকি আপনি যে আমার এই পোস্টটি পড়ছেন এটিও সার্ফেস ওয়েব এর একটি অংশ, এমন ইন্টারনেট যেটি দুনিয়া জুড়ে যেকোনো ইউজার যেকোনো সময় কোন স্পেশাল অনুমতি ছাড়া অ্যাক্সেস করতে পারে এবং সার্ফেস ওয়েবের প্রায় সকল তথ্য আপনি গুগল সার্চ করে পেয়ে যেতে পারেন ও আপনি লিঙ্ক ক্লিক করে যে ওয়েব সাইট গুলো খুলতে পারেন তারা প্রত্যেকে এই সার্ফেস ওয়েবের এক একটি অংশ। এমনি ভাবে আপনার প্রতিদিনের নিউজ আপডেট সাইট গুলো, প্রযুক্তি সাইট গুলো, গান ডাউনলোড সাইট গুলো ইত্যাদি সবাই সার্ফেস ওয়েবের অংশ।
তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সাথে প্রসার পেয়েছে ইন্টারনেট, আর তা আজ মহাসমুদ্রের ন্যায় বিশাল এক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে সক্ষমতা বেড়েছে সার্চ ইঞ্জিনগুলোর। বিশেষ করে Google এর নাম বলতেই হবে, যা এখন বিশ্বব্যাপী অন্যতম এক বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডে পরিণিত হয়েছে।

কিন্তু এই Google এর সক্ষমতা কতটুকু?

জেনে অবাক হয়ে যাবেন যে আপনি যখন কোন বিষয়ে সার্চ দেন আর গুগল তার লক্ষ লক্ষ ফলাফল আপনার সামনে হাজির করে তা ইন্টারনেটে থাকা মোট তথ্যের মাত্র ১০ শতাংশ থেকে প্রাপ্ত! অর্থাৎ গুগল অনলাইনের মোট তথ্যের ৯০ শতাংশ জানে না! এলেমে থাকা মাত্র ১০ শতাংশের মধ্যেই সার্চ দিয়েই সে তার ফলাফলকে গ্রাহকের সামনে হাজির করে। বাকি ৯০ শতাংশ চিরকালই আপনার অজানা থেকে যাবে।
এক জরিপে জানা গেছে দৃশ্যমান ওয়েবে যে পরিমাণ ডেটা সংরক্ষিত আছে তার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশী ডেটা সংরক্ষিত আছে অদৃশ্য ওয়েবে।

ডীপ ওয়েব (Deep Web)--

ডীপ ওয়েব হল ইন্টারনেটের ওই সমস্ত অংশ যেগুলো সার্চ ইঞ্জিন খুঁজে পায় না কিন্তু আপনি যদি এগুলোর ঠিকানা জানেন তাহলে আপনি এই অংশে যেতে পারবেন।
এখন এই ডীপ ওয়েবে কি কি সংরক্ষিত রয়েছে সে বিষয়ে প্রথমে জেনে নেয়। দেখুন আপনার যতো অনলাইন স্টোরেজ রয়েছে যেখানে আপনার সকল ডাটা স্টোর করা রয়েছে। যেমন কথা বলি গুগল ড্রাইভ নিয়ে বা ড্রপ বক্স নিয়ে। আবার বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে যতো গুলো গবেষণা তথ্য বা গোপন তথ্য স্টোর করা রয়েছে বা ব্যাংক এর যতো গুলো তথ্য বা ডাটাবেজ রয়েছে অথবা সরকারের যে গোপন প্রজেক্ট গুলো সংরক্ষিত রয়েছে তো এই সবই হলো ডীপ ওয়েবের অংশ। অর্থাৎ বাংলা ভাষায় বলতে যে তথ্য গুলো আপনি গুগল সার্চ করে কখনোও খুঁজে পাবেন না সেটিই হলো ডীপ ওয়েব।
ডীপ ওয়েব থেকে আপনি যদি কোন তথ্য অ্যাক্সেস করতে চান তবে আপনার প্রয়োজন পড়তে পারে একটি বিশেষ সাইট একটি বিশেষ সার্ভারের জন্য একটি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস এবং ওয়েব অ্যাড্রেসের সাথে আপনার প্রয়োজন একটি বিশেষ অনুমতি, যে আপনি ঐ ওয়েবসাইট টির তথ্যটি অ্যাক্সেস করার উপযোগী। অনুমতি গ্রহন করার জন্য আপনাকে হয়তো কোন লগইন আইডি বা পাসওয়ার্ড প্রবেশ করাতে হতে পারে অথবা সেটি যেকোনো ধরনের অথন্টিকেশন হতে পারে। কিন্তু আপনি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস ছাড়া কখনই ডীপ ওয়েবে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেননা ডীপ ওয়েবের কোন তথ্যই গুগল বা যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করা থাকে না। তো আপনি যতই সার্চ করতে থাকুন না কেন, আমার গুগল ড্রাইভে কি সেভ করা আছে তা আপনি কখনই খুঁজে এবং অ্যাক্সেস করতে পারবেন না।
আপনি তখনই সেই ফাইল গুলো অ্যাক্সেস করতে পারবেন যখন আমি আপনাকে ঐ ফাইল গুলোর বিশেষ লিঙ্ক আপনার সাথে শেয়ার করবো। অনেক সময় আমাদের ইন্টারনেটে ফাইল তো রাখতে হয়, কিন্তু আমরা চাই সেটা শুধু নির্দিষ্ট কিছু লোকের জন্যই প্রাপ্য হোক। উদাহরণ স্বরূপ যদি কোন কোম্পানির কোন ডাটাবেজ হয় তবে সেই কোম্পানিটি অবশ্যই চাইবে যে সেই ডাটা গুলো শুধু মাত্র তার নির্বাচিত ইউজাররা অ্যাক্সেস করুক। তাছাড়া গোপন তথ্য ইন্টারনেট সবার জন্য প্রাপ্য রাখা টাও অনেক ঝুঁকির ব্যাপার।


ডার্ক ওয়েবঃ
সতর্কবার্তা:এই পোষ্টের তথ্য ব্যবহার করে আপনি যদি কোন ক্ষতির সম্মুখিন হন তার জন্য আমি বা আমার ব্লগ কত্রৃপক্ষ কোনভাবেই দায়ী হবে না । এর দায়ভার একান্তই আপনার । আমরা এর ভাগ নিতে চাইনা ।
হলিউডি ছবির ওই দৃশ্যের কথা মনে আছে যেখানে গডফাদার তার পোষা খুনীর সাথে কখনো মখোমুখি সাক্ষাত না করে এক অতি গোপন নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়ে হুকুম দিয়ে যান, অথবা কি মনে পড়ে আঞ্জেলিনা জুলি অভিনীত ‘Hacker’ ছবিটির কথা যেখানে অপরাধীরা এক নাম না জানা নেটওয়ার্কের ভেতর নানা অপরাধ করত—যেখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নাক গলাতে পারত না?
আপাতদৃষ্টিতে রূপালী পর্দার এসব সাইফাই মুভিগুলোকে শুধুই কেচ্ছা মনে হলেও এইসব মুভির অজানা নেটওয়ার্কের মতই আমাদের অতিচেনা ইন্টারনেটের আছে এক অন্ধকারজগত…

আমি শুরু করার আগে আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই যে এই ডার্ক ওয়েব সম্পূর্ণ অবৈধ ইন্টারনেট। ডার্ক ওয়েব কখনই ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন না।
ডার্ক ওয়েবে মনে করুন যা ইচ্ছা তাই করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবে ড্রাগস ডিলিং, আর্মস ডিলিং সহ এমন এমন অসংখ্য অবৈধ কাজ সম্পূর্ণ করা হয় যার সম্পর্কে আজ এই পোস্টে খুলে বলা সম্ভব নয়। ডার্ক ওয়েব ইন্টারনেটের সেই কালো অধ্যায় যেখানে যেকোনো কিছু যেকোনো সময় করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবও কিন্তু সাধারন গুগল সার্চ করে কখনো খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
সকল প্রকারের ব্লাক মার্কেট অবস্থান করে ডার্ক ওয়েবে। টর ব্রাউজার আপনার অ্যাড্রেসকে অনেক অনেক লোকেশনে বাউঞ্জ করিয়ে তবেই কাঙ্ক্ষিত ওয়েব অ্যাড্রেসে পৌঁছে দেয়। টর প্রথম প্রথম আবিষ্কার হয়েছিলো ইউএস নেভির জন্য। কিন্তু এটি বর্তমানে একদম ওপেন একটি বিষয় হয়ে গিয়েছে। গোটা ইন্টারনেট জগতে জালের মতো ছড়িয়ে আছে এই ডার্ক ওয়েব। এবং একে নিয়ন্ত্রন করা অনেক মুশকিল ব্যাপার। সরকার ডার্ক ওয়েব ধিরেধিরে বন্ধ করছে। কিন্তু এখনো ডার্ক ওয়েবের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে আমি বলবো না যে একদম টর ব্রাউজারই ব্যবহার করবেন না। টর ব্রাউজার আপনি ভিপিএন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এবং এটির মাধ্যমে সার্ফেস ওয়েব ও ডীপ ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। কিন্তু ভুলেও ডার্ক ওয়েবের দিকে পা বাড়াবেন না।

সার্চ ইঞ্জিন কেন খুঁজে পায় না?

Google, Yahoo, Bing এসব সার্চ ইঞ্জিন ওয়েব সাইটের লিঙ্ক সংগ্রহ করে Crawling এর মাধ্যমে। Web Crawler এক ধরণের সয়ংক্রিয় স্ক্রিপ্ট প্রোগ্রাম যা বট নামেও পরিচিত। এর কাজ হচ্ছে ওয়েব সাইটে গিয়ে ঐ পেজের সমস্ত লিঙ্ক ইন্ডেক্স করা এবং কপি করে ডেটাবেজে জমা করা।
কিন্তু ডীপ ওয়েবে ওয়েবসাইট গুলো বিশেষ ভাবে তৈরী এবং সাইটের ওয়েব সার্ভারে Sitemap.xml, Robot.txt - না থাকার কারণে বট Crawling করতে পারেনা।
অপরাধ জগতের প্রায় সকল প্রকার কাজ এখানে করা যায়। মাদক দ্রব্য থেকে শুরু করে ভাড়া করা কিলার(টাকার বিনিময়ে খুন করে) এখানে পাওয়া যায়। কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ কাজগুলো যেমন শিশু পর্নোগ্রাফি, পতিতা ভাড়া করা, ড্রাগ কেনা-বেচা, অস্র ক্রয়-বিক্রয় ও পাসপোর্ট যোগার, চুরি করা ক্রেডিট কার্ড নম্বরসহ ইত্যাদি অন্যান্য অবৈধ ও নিষিদ্ধ জিনিস পাওয়া যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন দামি সফটওয়্যারের ক্র্যাক, পাইরেসী পাওয়া গিয়ে থাকে।
ডীপ ওয়েবের কারেন্সি হল বিটকয়েন বিটকয়েন লেনদেনের সময় পার্সনাল আইডিন্টির প্রয়োজন নেই এবং ট্যাক্সও দিতে হয় না।
ডার্ক নেটের এই অংশে একমাত্র উঁচু লেভেল এর হ্যাকার রাই প্রবেশ করতে পারে। সরকারি বিভিন্ন তথ্য চুরি করাতে এদের জুড়ি নেই। বলা হয়, উইকিলিকে যে তথ্য ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছে, তা অনেক বছর আগেই ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ পেয়েছিল।
টর্চার, রেপ – বিকৃত রুচির মানুষের বিচরণ রয়েছে এ সকল সাইটে। যারা টাকার বিনিময়ে লাইভে অন্য মানুষদেরকে টর্চার হতে দেখে। বিভিন্ন মানুষ কে জোর করে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়। এবং তা লাইভে দেখান হয় যা এতই ভয়াবহ যে সাধারণ মানুষ তা সহ্য করতে পারবে না।
এমনকি, মানুষ এর উপর মেডিকেল গবেষণা করার জন্য জ্যান্ত মানুষ ও পাওয়া যায়। অর্থাৎ , বিভিন্ন ছিন্নমূল মানুষ যাদের মৃত্যু হলেও কেও জানবে না, এমন মানুষ দের ধরে নিয়ে এসে, তাদের উপর অমানবিক গবেষণা গুলো করা হয়।
তাহলে কি ডার্ক ওয়েবে নিরাপদে অপরাধ করা যায়!
ধারনা করা হয় যে, যেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করা হয়, তার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কোন প্রসাশনের কাছে রয়েছে। ২০১১ সালে একবার Tor এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এটি নাকি CIA-এর একটি স্পাই নেটওয়ার্ক। তাছাড়া আপনি যদি আপনার আসল পরিচয় প্রকাশ করেন বা কোন ভাবে প্রকাশ হয়ে যায় তাহলে আপনি বিপদে পড়তে পারেন।

আমরা সচরাচর যেসব সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করি, সেগুলো আমাদেরকে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ম্যালওয়্যার,ভাইরাস এর ঝুকি থেকে নিরাপদ রাখে। কিন্তু ডার্ক ওয়েবের অধিকাংশ ওয়েব সাইটই অনিরাপদ। সেই সব সাইট আপনাকে বিভিন্নরকম সফটওয়্যার বা এপস পিসিতে ইন্সটল করার জন্য উৎসাহিত করবে, যাতে রয়েছে অত্যন্ত ক্ষতিকর ভাইরাস/ম্যালওয়ার। ডার্কনেটে এরকম ম্যালওয়্যার পাওয়া গিয়েছে যা কিনা একটি পিসিকে অকেজো করে দিতে সক্ষম। এখানে প্রবেশ করা অনেক ঝুকিপূর্ণ আপনি যেকোনো উপায়ে হ্যাকিং এর শিকার হতে পারেন। মনে রাখবনে, সরকারের অঢেল টাকা আছে, তাই তারা চাইলেই ডার্ক ওয়েবের মেধাবী হাজারো হ্যাকারকে ভাড়া করতে পারবে আপনারমত লোকদের ডার্ক ওয়েবে চোখে চোখে রাখতে।
রেড রুম--
রেড রুম নামটি এসেছে জাপানী একটি এনিমেশন এবং একই নামের একটি শহরের কিংবদন্তী থেকে ।
অনেকে বলে থাকে সন্ত্রাসীদের উপার্যনের একটি অংশ হল এই রেড রুম । ভিক্টিমকে একটি রুমে আটকে রেখে তাকে বিভিন্ন ভাবে টর্চার করে সেই ভিডিও রেড রুমে ছেড়ে দেয়া হয় ।
এখানে মানুষকে টর্চার, খুন, রেপ ইত্যাদির লাইভ স্ট্রিমিং হয়। এই সবই সেখানে মানুষ টাকা দিয়ে দেখে । টাকা বলতে লেনদেন সব বিটকয়েনেই হয় । বলা হয়, কুখ্যাত আইসিস গোষ্ঠী তাদের টর্চার ভিডিও গুলী এখানে দিত। রেড রুমের অস্তিতও নিয়ে রয়েছে বিতর্ক , কারন এটি নিয়ে পূর্নাংগ কোন প্রমান পাওয়া যায়নি , এমন কোন ব্যাক্তি নিজে দাবি করেনি যে সে রেডরুম নিজের চোখে দেখেছে । তবে এটি নিয়ে গেমস , মুভি , ড্রামা তৈরী হয়েছে । 

বিভিন্ন সূত্র বিভিন্ন সময় রেডরুম সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করলেও পূর্নাং প্রমানের অভাবে তা আসলে আমলে নেয়া হয়নি
রেডরুম এ বিকৃত মানসিকতার কর্মকান্ড হয় । সম্পূর্ন অবৈধ এই অংশ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ না করাই ভাল ।
সিল্ক রোড –
অবৈধ পণ্য কেনাবেচার জন্য অনলাইনের কালোবাজার হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছিল সিল্ক রোড ও বিটকয়েন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিল্ক রোড যাত্রা শুরু করলেও এর আরও আগে থেকে এর প্রস্তুতি চলছিল। আমাজন ডটকম বা ইবে ডটকম যেমন ই-কমার্স সাইট হিসেবে খ্যাত তেমনি অনলাইনে মাদক কেনাবেচার সাইট হিসেবে সিল্ক রোড দ্রুত পরিচিতি পেয়েছিল। কিন্তু ২ অক্টোবর এফবিআই এ সাইটটি বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ করে দেওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবহারকারীরা এ সাইটে বিনামূল্যে নিবন্ধন করতে পারতো। তবে কেউ কিছু বিক্রি করতে চাইলে অর্থ খরচ করে অ্যাকাউন্ট খুলতে হতো। এখানে মাদক ছাড়াও পর্নোগ্রাফি, চুরি করা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যসহ নানা অবৈধ জিনিসের লেনদেন হতো।

মারিয়ানা'স ওয়েবঃ
এখন যদি বলা হয় এই ডার্ক ওয়েব এর চাইতেও গভীর একটি ওয়েব রয়েছে; আর তখনই তা ব্রাউজ করা যাবে যখন;সেই ওয়েবসাইট এর এড্রেস আপনার কাছে থাকবে আরও থাকতে হবে সেই ওয়েবসাইটে ঢোকার চাবি। মারিয়ানা'স ওয়েব এতই গভীর যে এখানে ঢোকা সহজ কোন ব্যাপার নয়; খুবই কঠিন একটি প্রক্রিয়া। যেকেউ চাইলে প্রবেশ করতে পারবে না এই ইন্টারনেটের অন্ধকার জগতে।

এই মারিয়ানা নামটি এসেছে মানিয়ানা ট্রেঞ্জ থেকে।
এটা মানা হয় যে; সরকার এর যতসব টপ সিক্রেট তথ্যগুলো আছে তা এখানে পাওয়া যায়। দুনিয়ায় সবচেয়ে রহস্যময় আর গোপনীয় জিনিস যদি থাকে সেসব এখানে দেখা যায়। "এটলান্টিস" সমুদ্রের নিচে এক কাল্পনিক দ্বীপ যেটি আছে, ইলুমিনাটি বা ইলুমিনাটিদের লোকদের সাথে যোগাযোগ, এলিয়েন দের তথ্য, বিভিন্ন অলৌকিক ও অশরীরী তথ্য, Human Experiments এবং তার ডাটাবেসও সেভ করা হয় এখানে এই মারিয়ানা'স ওয়েবে আছে।
তো গর্ভমেন্ট কী জন্য এটার বিরুদ্ধে কিছু করছে না? কেন এটাকে প্রকাশ করা হচ্ছে না? এখনে গর্ভমেন্ট এই জন্য এটি করেনা কেননা;অনেক দেশের সিক্রেট অনেক তথ্য এই মারিয়ানা'স ওয়েবে আছে;এমনকি তাদেরও থাকতে পারে।
আর এখানে আপনার কাজের কোনও কিছুও নেই। এসবই মূল কারন কেউ মারিয়ানা'স ওয়েব প্রকাশ এর জন্য কোন অভিযান করে না। গর্ভমেন্ট কোন পদক্ষেপ কোন পদক্ষেপ নেয়না; আগেই বলেছি তাদেরও অনেক গোপন তথ্য এখানে বিদ্যমান। বড় থেকে বড় হ্যাকারও এই মারিয়ানা'স ওয়েব নিয়ে কিছু করার আগে অনেকবার ভাববে। এটি ইন্টারনেটের একটি কোনা যেখানে বিনা ঠিকানা, বিনা চাবিতে ঢোকা বলতে অসম্ভব এটি বিষয়।
এটাও মানা হয় যে, মারিয়ানা'স ওয়েবে ঢুকতে তা দখল করতে কোয়ান্টাম কম্পিউটারস এর প্রয়োজন হবে।কোয়ান্টাম কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটারও বলা যেতে পারে; এদের প্রোসেসিং স্পীড আমাদের সাধারন কম্পিউটার থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশী হবে। [মানা হয় মাত্র ৪টি কোয়ান্টাম কম্পিউটার দিয়ে সম্পূর্ণ আমেরিকার Computer Needs পূরন করা সম্ভব! ]
Blue- হোয়েল--
গেমটি ২০১৬ সালে মে মাসে প্রথম রাশিয়ার পত্রিকা “নোভায়া গেজিটা” প্রকাশের মাদ্ধমে ব্যপক আলোচনায় আসে। যেহেতু এটি গুগল সার্চ অথবা বিং সারচ অপশন অথবা সমকক্ষ কোনটি দ্বরা খুজে পাওয়া যায়না তাহলে ধরে নিতে হবে এটি মোবাইল গেম নয়। কারন আমার জানা মতে ব্লু হয়েল আন্ড্রয়েড এপিকে ফাইল চিনেতে সক্ষম নয়। বেপারটা আরেক টু খুলে বলি।

যদি একটু অনুসন্ধান করা যায় বুঝতে পারা সহজ হয় যে
১। ডার্ক ওয়েব থেকে কোন ফাইল নামানোর জন্যে অবশ্যই আপনাকে রিয়েল আইপি ব্যবহার করা অত্যাবশ্যক এবং পিসি (পারসনাল কম্পিউটার) থাকা জরুরি। তা না হলে একটি মোবাইল দিয়ে এই গেম পরিচালনা করা আসলেই সম্বভ হয়ে উঠেনা।
২। ডার্ক ওয়েব যেহেতু রিয়েল আইপি ছাড়া খেলা সম্ভব নয় তাহলে ধরে নিন আপনার সন্তান যে গেম টি খেলছে তা কোন হ্যাকার মজা করেই গেম টি পরিচালনা করছে অথবা তথ্য আহরণ করার কাজে ব্যবহার করছে যা ইন্টারনেট ভাষায় পিশিং, স্নুফিং বলে পরিচিত।
৩। যেখানে সবাই গুগল সার্চ এর উপর নির্ভরশীল এবং মজিলা আর গুগল ক্রম ব্যবহার করে সাইট ব্রাউজিং কাজ পরিচালনা করে সেখানে কজন মানুষ টর ব্রাউজার এর মাদ্ধমে দৈনিন্দিন কাজ পরিচালনা করে? টর ব্রাউজার ইউজার ফ্রেন্ডলি নয়।
৪। ডার্ক ওয়েবে আপনি কোন স্ক্রিন শর্ট নিতে পারবেন না । অনলাইন ভিত্তিক ডার্ক ওয়েবে গেম ছাড়াও অনলাইন ক্রাইম যেমন সোশাল মিডিয়া হ্যাক, চুরি, পিশিং, স্নুফিং, স্প্যামিং, যৌন নিপীড়ণ ইত্যাদি পরিচালনা করে থাকে। Blue- হোয়েল সেই ক্রাইমের একটি অংশ মাত্র।
৫। রিয়েল আইপি ব্যায়বহুল। বেশিরভাগ মানুষ বাসা বাড়িতে ইন্টারনেট শেয়ার্ড লাইন ব্যবহার করে যা Blue- হোয়েল এ লগিন করার পরিপন্থি।
৬। Blue- হোয়েল গেম কোন হ্যাকার দ্বারা আমন্ত্রন অথবা পিয়ার টু পিয়ার শেয়ারিং ছাড়া খুজে পাওয়া সম্ভব নয়। দুর্বল চিত্তের মানুষদের নিজেদের কাছে টানা সম্বভ হলেও বেশিরভাগ মানুষ এই গেম খুজে বের করে খেলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
ডার্ক ওয়েবে্ পৌছানো কোন সহজ কাজ নয় বিধায় অনেকেই আমরা এর অজানা রহস্য থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। ডার্ক ওয়েবে্র ছোবল থেকে আপনার সন্তানকে নিরাপদ রাখুন এবং জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে দেশের তড়ে, সমাজের উন্নয়নে ব্যবহার করতে সাহায্য করুন।
তবে ডীপ ওয়েব মানেই খারাপ না কেবল ডার্ক ওয়েব অবৈধ, ডীপ ওয়েব এ উইকিলিক্সএর মত, সাইট আছে, স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেকেই একে ব্যবহার করেন, অনেক ব্লগ, সোশ্যাল সাইট পাবেন।

No comments:

Post a Comment