Friday, 30 March 2018

মধুর রহস্য

কার্ল ভন ফ্রিশ নামে এক  বিজ্ঞানী মৌমাছির ওপর ব্যাপক গবেষণা করে ১৯৭৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান । গবেষণায় মধুর গুণাবলি ধাপে ধাপে আবিষ্কারের আগে প্রাণীর যুগ থেকেই মধুকে প্রচলিত ওষুধ হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্য সংরক্ষণ ও খাদ্য প্রস্তুতে ব্যবহার করা হতো।

---রাসায়নিক উপাদান : লেভিউলোজ, ডেক্সট্রোজ, সুক্রোজ, ডেক্সট্রিন, খনিজ পদার্থ, এমাইনো এসিড, প্রোটিন, উদ্ভিদজাত প্রাকৃতিক রঞ্জক পদার্থ, টেনিক এসিড, সুমিষ্ট ঘ্রাণযুক্ত অ্যাসেনসিয়াল অয়েল, এলডিহাইড, বিভিন্ন এনজাইম, ভিটামিন, হরমোন, ফ্লেভোনয়েড, ফেনোলিক এসিডজাতীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং জীবাণুনাশক পদার্থ। জৈব এসিডগুলোর মধ্যে মধুতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রয়েছে অ্যাসিটিক, লেকটিক, টারটারিক, অক্সলিক ও সাইট্রিক এসিড। টেনিক এসিড, কেরোটিন, জেনথোফিল ইত্যাদি প্রাকৃতিক রঞ্জক পদার্থগুলোর জন্য মধু রঙিন হয়ে থাকে।
----খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন : খনিজ পদার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ক্লোরিন, সালফার, ফসফরাস, আয়রন, নিকেল, সিলিকন, কপার ইত্যাদি যা মানবদেহের বিভিন্ন এনজাইমের কার্যকারিতার জন্য অতীব জরুরি। ভিটামিন-এ ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স ও ভিটামিন-সি এর একটি ভালো উৎস হিসেবে মধুকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
----এনজাইম : ইনভারটেজ, ডায়াস্টেজ, এমাইলেজ, ইনুলেজ, ক্যাটালেজ ইত্যাদি এনজাইম মধুর বিচিত্র গুণাবলিতে ভূমিকা রাখে। মধুতে বিদ্যমান অক্সিডেজ এনজাইম দ্বারা তৈরি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের জীবাণুনাশক গুণের জন্য চামড়ার পোড়া জায়গায় মধুর বাহ্যিক ব্যবহার অন্যন্ত ফলপ্রসূ। মধুর আর্দ্রতা নিরোধক গুণের জন্য বিস্কুটজাতীয় খাদ্যকে মচমচে রাখতে সহায়তা করে বিধায়, বিস্কুট প্রস্তুতিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মধু ব্যবহৃত হয়।

----ঔষধি গুণাবলি : পোড়া জায়গায় সংক্রামণের কারণে যে প্রদাহ সৃষ্টি হয় তাতে রক্তের কৈশিকনালিগুলো ছিঁড়ে যায় এবং চর্তুদিকের কোষ থেকে রক্ত বের হয়ে পোড়া এলাকা ফুলে যায়। মধু ব্যবহারে দেখা যায় যে এ ধরনের প্রদাহ, ফোলা অথবা নিঃসরণ ও ব্যথা কমে যায়। ক্ষত টিস্যুতে অণুবীক্ষণিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায় মধুর বাহ্যিক ব্যবহারে শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ, প্রদাহে ক্ষত টিস্যুর রক্ত কনিকার তুলনায় হ্রাস পায় এবং এতে বোঝা যায় যে মধু সরাসরি প্রদাহের উপশম হিসেবে কাজ করে। মধুর এ ধরনের বাহ্যিক ব্যবহারে কোনো উত্তেজনা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আংশিক পোড়া চামড়ার চিকিৎসায় দেখা যায় যে, প্রচলিত ড্রেসিং হিসেবে কার্যকর পলিইউরেথের, সিলভার সালফাডায়াজিন ইত্যাদি অপেক্ষা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াশূন্য অ্যামনিয়ন মেমব্রেন, বয়েলড পটেটো পিল মধুসহ অধিকতর কার্যকর। পূর্ণ পোড়া চামড়ার চিকিৎসায় দেখা যায় যে, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল নাইট্রোফিউরাজোন, এমপিসিলিন অপেক্ষা মধু দ্রুত কার্যকর। মধুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও এন্টিভাইরাল গুণাবলির জন্য ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে মধু বিশেষ উপকারী ভূমিকা রাখে। অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি জীবাণুর ক্রমান্বয়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সিনথেটিক ওষুধগুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে যেখানে মানুষের মধ্যে ওষুধভীতি দেখা যাচ্ছে, সেখানে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া জীবাণুনাশক ও আরোগ্যকারী, অথচ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াশূন্য মধু মানুষের জন্য একটি নিরাপদ ওষুধ যা একই সঙ্গে ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাদ্য হিসেবে চির উন্নত।

Thursday, 29 March 2018

প্যারালাল ইউনিভার্স : অজানা সত্য


প্যারালাল ইউনিভার্স কি? : আমরা মহাবিশ্বে বাস করি। কিছু কিছু বিজ্ঞানীর মতে ঠিক এই বিশ্বের সমান্তরালে ভলে আরও একটি বা অনেক বিশ্ব, যেখানে আমি আছি আপনিও আছেন ( মাইরালাইচ্ছে)। আমরা জানি বিগ ব্যাং এর সাথে সাথে সৃষ্টি এই মহাবিশ্বের। কিছু কিছু মানুষের মতে ( বিখ্যাত মানুষ) ঠিক আমার আপনার সমান্তরালে চলছে আরেকটি বা একাধিক বিশ্ব। যদি টাইম ট্র‍্যাভেল সম্ভব হয়, তাহলে এর পিছনে থাকবে এই প্যারালাল ইউনিভার্স ( উহা নিয়ে পরে ব্যাখ্যা করব) চলুন বিস্তারিত প্রলাপ পড়া যাক

প্রলাপ : 'বিগ ব্যাং' বা মহাবিস্টেম্ফারণের ফলে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছিল এই মতবাদ বহু পুরনো। এ নিয়েও মতভেদের কমতি নেই। বিগ ব্যাং-এর ৯.১ বিলিয়ন বছর পর পৃথিবী গঠিত হয় । বিজ্ঞানীদের মতে, যে ভয়ানক বিস্টেম্ফারণকে বিগ ব্যাং বলা হয়, তা আসলে আমাদেরই মতো ভিন্ন দুটি ব্রহ্মাণ্ডের সংঘর্ষের ফল। আর সেখান থেকেই পুরো বিশ্বের সৃষ্টি ।
আমাদের বিশ্বের পাশাপাশি কল্পিত ভিন্ন ব্রহ্মাণ্ডকেই বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন প্যারালাল ইউনিভার্স। সেই ব্রহ্মাণ্ডর ঠিক আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের মতোই। সেখানে রয়েছে হুবহু আমাদেরই মতো দেখতে মানুষজন, ঠিক যেন আমাদেরই
জেরক্স কপি। বিজ্ঞানীদের ধারণা এ রকম হওয়াটা একেবারে অসম্ভব নয়!
প্যারালাল ইউনিভার্স হচ্ছে আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের মতো আরও একটি বা একাধিক ব্রহ্মা যা ঠিক
আমাদেরই মতো। সেখানকার প্রকৃতি, ভূমণ্ডল এমনকি প্রাণিজগৎও একেবারে আমাদেরই মতো। হুবহু
আমাদেরই মতো দেখতে সবকিছু। একেবারে যেন আমাদের যমজ বিশ্ব। আমাদের পৃথিবীতে এখন
যা ঘটছে সেখানেও ঠিক তাই ঘটছে। আমাদের পৃথিবীতে আমরা যা করছি সেখানে আমাদেরন
'জেরক্স কপি' ঠিক তাই করছে। এই ব্যাপারটা পুরোপুরি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আওতায় পড়ে। ১৯৫৬
সালে মার্কিন বিজ্ঞানী হাগ এভাবেই সর্বপ্রথম কোয়ান্টাম মেকানিক্সের
সাহায্যে প্যারালাল ইউনিভার্স রহস্য ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোথায় আছে এই
প্যারালাল ইউনিভার্স? অনেকের মতে, আমাদের খুব কাছেই, একেবারে নাগালের মধ্যেই আছে এই
যমজ ব্রহ্মা । আবার কারও কারও মতে পৃথিবী থেকে বহু বহু দূরের কোনো গ্যালাক্সিতে রয়েছে এটি।
তবে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও আশ্চর্যজনক যে তত্ত্বটি খাড়া করেছেন কয়েকজন গবেষক তা হলো-
প্যারালাল ইউনিভার্সের অস্তিত্ব রয়েছে আমাদের জানা তিনটি ডাইমেনশন বা মাত্রার (দৈর্ঘ্য,
প্রস্থ ও বেধ) বাইরে। অবাক হওয়ার মতোই ব্যাপার বটে। যেখানে রয়েছে ঠিক আমাদের মতো 'জেরক্স কপি'।

অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন যে, প্যারালাল ইউনিভার্সের সংখ্যা এক নয়, একাধিক। আমাদের
ব্রহ্মাণ্ডের একেবারে পাশাপাশি রয়েছে এসব ব্রহ্মান্ড ।
বলতে গেলে একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে। ক'দিন আগে বিশ্বের বেশ
কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, এরকম একাধিক প্যারালাল ইউনিভার্সের
ঘর্ষণের ফলেই 'বিগ ব্যাং' বা মহাবিস্টেম্ফারণ ঘটেছিল। আর দুই প্যারালাল ইউনিভার্সের ঘর্ষণের
ফলেই নতুন আরেকটি ইউনিভার্স অর্থাৎ
পৃথিবীর উৎপত্তি। কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে গেষণায়
মগ্ন বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বটি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন।


ডীপ ওয়েব!!!ইন্টারনেটের এক অজানা অধ্যায়

সতর্কবার্তা:এই পোষ্টের তথ্য ব্যবহার করে আপনি যদি কোন ক্ষতির সম্মুখিন হন তার জন্য আমি বা আমার ব্লগ কত্রৃপক্ষ কোনভাবেই দায়ী হবে না । এর দায়ভার একান্তই আপনার । আমরা এর ভাগ নিতে চাইনা ।
আমরা গুগল এ যখন কোন কিছু লিখে অনুসন্ধান করি; তখন আমাদের সামনে কতরকম এর তথ্য এসে হাজির হয়; এর পরিমান হাজার হাজর, কখনও লাখ লাখ। আমরা অবাক হয়ে ইন্টারনেটে কত তথ্য! এত তথ্য আমাদের জন্য অনেক। কিন্তু আমরা অবাক হব এই জন্য যে; ইন্টারনেটে দৃশ্যমান এইসব কনটেন্ট এবং তথ্য এর অংশকে বলা হয় সারফেস ওয়েব। আর সারফেস ওয়েব হল ইন্টারনেটের মোট তথ্যের প্রায় ১০% মাত্র। বাকি ৯০% থেকে যায় গুগল এর অজানা, মানুষের অজানা।

বলতে গেলে এটি অনেকাংশে সারফেস ওয়েব এর সাথে যুক্ত। ধরুন আপনি পরীক্ষার রেজাল্ট নেয়ার জন্য; বোর্ডের ওয়েবসাইটে গেলেন, এখানে বোর্ডের ওয়েবসাইটে সকল ছাত্র ছাত্রীর রেজাল্ট রয়েছে ঠিকই; তবে তা রয়েছে লুকায়িত অবস্হায়। কেবল একজন এর রোল বা রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিলে; তার রেজাল্ট বের হয়ে আসছে। এখানে যে রেজাল্ট গুলো লুকায়িত অবস্হায় রয়েছে তা ডীপ ওয়েব এর উদাহরন।
তেমনিভাবে কোন ওয়েবসাইটের সাবস্ক্রিপশন রিপোর্ট, ইউজারদদের রিপোর্ট ইত্যাদি ডীপ ওয়েব এর উদাহরন।
ডার্ক ওয়েব ও ডীপ ওয়েব এক জিনিস না--
ডীপ ওয়েবের একটি অংশে নানাধরনের অনৈতিক ও অপরাধমূলক কাজ করা হয়। আর সেই অংশকে বলা হয় ডার্ক ওয়েব। সেখানে আপনি আপনার সাধারণ ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একধরনের বিশেষ নেটওয়ার্কের সাহায্য নিতে হবে।
ডার্ক ওয়েবের আরেকটি বিশেষত্ব হলো এরা ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবের (WWW) সাইটগুলোর মত টপ লেভেল ডোমেইন (যেমন .com, .net, .org) ব্যবহার না করে “Pseudo Top Level Domain” ব্যবহার করে যা মূল ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবে না থেকে দ্বিতীয় আরেকটি নেটওর্য়াকের অধীনে থাকে। এ ধরনের ডোমেইনের ভেতর আছে Onion, Bitnet, Freenet আরও অনেক। এই ডোমেইনগুলোর নামগুলোও একটু ভিন্নধরনের, সাধারণ কোনো নামের মতো না। যেমন: http://hpuuigeld2cz2fd3.onion



ডিপ ওয়েব নিয়ে বিভ্রান্তী--
ডীপ ওয়েব সম্পর্কে টেক ব্লগ গুলোতে অনেক আর্টিকেল আছে। কিন্তু কিছু ত্রুটি চোখে পড়লো। তাই ভাবলাম লিখে ফেলি। কিছু তথ্য যেগুলো গুলো, সেগুলো উল্লেখ করে সঠিকটা দেয়ার চেষ্টা করলাম।
– একটি জরিপে দেখা গেছে দৃশ্যমান ওয়েবে যে পরিমাণ ডাটা সংরক্ষিত আছে তারচেয়ে ৫০০গুণ বেশি পরিমাণ ডাটা সংরক্ষিত আছে অদৃশ্যওয়েবে।
-> এটা সঠিক না, কারন ডিপ নেটওয়ার্ক গুলো আসলে বেশিরভাগই ব্যাক্তিগত উদ্যোগে তৈরী। এগুলো বেশিরভাগই হোম সার্ভারে তৈরী। ফলে ডাটাস্পেস তুলনামূলক ভাবে কম। একমাত্র টর ছাড়া কেউ ডীপ ওয়েব ডাটাসেন্টার দেয় না। দিলেও সেটার মূ্ল্য এতো বেশি যে সবাই নেয় না। ইনডেক্স না হওয়া ডাটা আর সংরক্ষিত ডাটার মধ্যে পার্থক্য আছে !
– সাইটের এডমিন পেইজ ইনডেক্স করার অনুমতি না দিলে গুগল সেটা খুঁজে বের করতে পারবে না।
-> এটাও ভুল। কারন রোবট টেক্সট ফাইলে যদি নো-ফলো দিয়েও রাখা হয়, সেটা গুগল এর ওপর ডিপেন্ড করবে যে সেটা মানবে কি মানবে না। এটাকে বলা হয় বট সার্চ ইনডেক্স অনার। বট যদি সেটা না মানে, তাহলে গুগল এর আইপি ব্লক না করলে বট সেটা ইনডেক্স করতেও পারে।
– ডার্ক ওয়েবের আরেকটি বিশেষত্ব হল এরা ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবের সাইটগুলোর মত টপ লেভেল ডোমেইন (যেমন .com) ব্যবহার না করে “Pseudo Top Level Domain” ব্যবহার করে যা কিনা মূল ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবে না থেকে দ্বিতীয় আরেকটি নেটওর্য়াকের অধীনে থাকে।
-> টপ লেভেল ডোমেইনেও অনেক ডীপ ওয়েব সাইট আছে। কিন্তু সেগুলোতে ঢোকার জন্য তাদের রাউটার এর সাথে কানেক্টেড হতে হবে নয়তো নিজের আইপি সেই সার্ভারে হোয়াইট লিষ্ট করতে হবে।
-এই ওয়েবের মুল লক্ষই হল অপরাধের একটি অভয়ারণ্য গড়ে তোলা।
-> এখানেও ভুল আছে। ডীপ ওয়েব এর জন্ম হয়েছিলো সিকিউরিটি এজেন্সীর নজরদারী থেকে বাঁচার জন্য। প্রাথমিক সময়ে সিকিউরিটি এজেন্সী গুলো একটু বেলাইনে চলে গিয়েছিলো। তাদের নজরদারীর পরিমান এতো বেশী বেড়ে গিয়েছিলো যে তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে অনেক তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল। যদিও সেসব নিয়ে পরে অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্যই মূলত ডীপ ওয়েবের আইডীয়া জন্ম নেয়। তবে টর জন্ম নিয়েছিলো ঠিক উলটো ভাবে। আমেরিকান নেভীর ইন্টার্নাল কমিউনিকেশন নিরাপদ করার জন্যই প্রথম অনিয়ন রাউটার ডিজাইন করা হয়।
– সেখানে আপনি আপনার সাধারণ ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না।
-> সাধারন ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করা যায়। কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা টর এর প্রক্সি ব্যবহার করে তাদের রাউটার এর মাধ্যমে নরমাল ব্রাউজার দিয়ে অনিয়ন নেটওয়ার্কে প্রবেশ করার সুযোগ দেয়।
– এর উত্তর হল ডীপ ওয়েবের নেটওয়ার্ক এতই গভীর যে FBI, CIA এরা কিছুই করতে পারে না ।
-> এটাও ভুল, সাধারন মানূষ কল্পনাও করতে পারবে না এরা ডিপ কভার অপারেশন কিভাবে চালায়। ২০১১ তে একবার টর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছিলো যে টর আসলে সি আই এ’র একটা স্লিপার নেটওয়ার্ক। এটা তৈরী করা হয়েছিলো যাতে অপরাধীরা এটাকে নিরাপদ মনে করে ইচ্ছা মতো নিজেদের প্রকাশ করতে থাকে এবং সরকার যাতে তাদের ধরতে পারে। এটা সত্যি কিনা সে ব্যাপারে কোন তথ্য নেই, তবে সি আই এ নিজেরাই যে এমন গোপন নেটওয়ার্ক তৈরী করে পাবলিকের কাছে সার্ভিস দিচ্ছে না, তার কোন গ্যারান্টি নাই !
ডীপ ওয়েব মানেই যে সেটার জন্য আলাদা সফটওয়্যার লাগবে এমন নয়। সেটা সর্বসাধারন এর দৃষ্টির আড়ালে, সেটাই ডীপ ওয়েব।

প্রশ্ন হল ডীপ ওয়েব ভাল কাজে কিভাবে ব্যবহার করা যায়?
দেখুন ডীপ ওয়েবে প্লাতফরমটি ফ্রী স্পিচকে সমরথন করতে বিভিন্ন সাইট আছে, যেহেতু এখানে নিজের পরিচয় গোপন রাখা যায়, এবং ট্রেস করা কঠিন, তাই জারনালিস্ট বা সাংবাদিক, অ্যাক্টিভইষ্ট, প্রতিবাদী, বিভিন্ন সংগঠন গুলি ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান ও পোস্ট করার জন্য, দুনিয়ার অন্য প্রান্তে শেয়ার করার জন্য আমরা জানি অনেক দেশের সরকার ইন্টারনেট এ ব্যান বসায় বা মানুষকে সাধারন ভাবে মত প্রকাশ করতে দেয় না, অথবা অনেক জায়গায় বিভিন্ন অপরাধ সংগঠন এর অত্যাচার থাকে, সেসব জায়গায় ডীপ ওয়েব ব্যবহার হয়।
বিভিন্ন বিখ্যাত ভালো সাইট গুলি---
-- ProPublica – প্রথম অনলাইন পাবলিকেশন জেটি পুলিতযার পুরস্কার পায়।
---Wikileaks – বিখ্যাত সাইট যেটি বিভিন্ন দেশের সরকারি আমলার অনৈতিক কাজের তথ্য ফাঁস করেছে।
---Facebook’s .onion site --- যেসব দেশে ফেসবুক ব্যান সেসব দেশে যাতে মানুষ পরিচয় গোপন রেখে নিরাপদে যোগাযোগ রাখতে পারে।
----DuckDuckGo – এটি একটি সার্চ এঞ্জিন যেটি ডীপ ওয়েব সার্চ করতে কাজে লাগে, এটি নিরাপদ, অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন গুলার মত আপনার তথ্য সংগ্রহ করে না, কিন্তু আপনাকে সেসব তথ্য দিতে পারে যা গুগল পারে না।
---Blockchain for Bitcoins on .onion --- এখানে Bitcoins গোপনে কিনতে ও জমা রাখতে পারবেন।
ProPublica , The Intercept এবং এটি হল একমাত্র HTTPS certification প্রাপ্ত .onion address.
---Sci-Hub — the world’s scientific database

---বিজ্ঞানের বিভিন্ন তথ্য কে সকলের জন্য উন্মুক্ত করার উদ্দেশে এতির গঠন হয়, বিশ্বে অনেক রিসার্চ, পড়াশুনা, আবিস্কার অর্থের অভাবে আটকে গেছে ও আছে, তারা টাকার অভাবে অন্যান্য রিসার্চ পেপার, বই বা তথ্য সংগ্রহ করতে পারছেনা, বলা যায়না এদের মধেই লুকিএ আছে ভবিষ্যতের রোগ, খরা ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান। এদের উদ্দেশে এই সাইটটি করা। প্রায় ৫ কোটিরও বেশি রিসার্চ পেপার আছে এই সাইটটিতে সবই বিনামূল্যে।
The Intercept — a .onion SecureDrop with TLS
-- আপনার কাছে কন গোপন তথ্য যা আপনি কারোর সাথে গোপনে সুরক্ষিত ভাবে শেয়ার করতে ছান তবে এই সাইটটি আপনার কাজে আসবে।
The Hidden Wiki on .onion
--ডীপ ওয়েব এর Wikipedia

Wednesday, 28 March 2018

চুল পড়া প্রতিরোধে রসুন

চুল পড়া রোধে রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চুল পড়া প্রতিরোধে রসুন অনেকটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এটি শুধু চুল পড়া ঠেকায় না সেইসঙ্গে মাথার ত্বকের ইনফেকশন ও খুশকি দূর করতে সহায়ক। শুধু তাই নয়, রসুন নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
বিশেষজ্ঞদের মত, তেলের মতো করে চুলে ও মাথার ত্বকে রসুনের রস লাগালে অনেক দ্রুত নতুন চুল গজায়। রসুনের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এলিসিন যা রক্তে হিমোগ্লোবিন সঞ্চালন বাড়িয়ে দিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কপার যা চুলকে ঘন ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে।

রসুনের রস ব্যবহার পদ্ধতি---
------1. প্রথমে রসুন পেস্ট করে এর রস বের করে নিতে হবে। এরপর একটি এয়ার টাইট বোতলে তা সংরক্ষণ করতে হবে। যাতে যখন প্রয়োজন তখন তেলের মতো করে এই রস চুলে ব্যবহার করা যায়।
-------2. চুল শুষ্ক হলে গোলাপজলের পানিতে তা আধাঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। গোলাপজল চুলের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখে। এই আধাঘণ্টা পর ভালো করে চুলে ও মাথার তালুতে রসুনের রস লাগাতে হবে।
-------3.চুলে রসুনের রস লাগিয়ে আধাঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। এরপর চিরুনি দিয়ে তা আঁচড়াতে হবে। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এবার চুলে ভালো করে মাইল্ড শ্যাম্পু লাগিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এর ১৫ মিনিট পর কন্ডিশনার লাগিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।

Monday, 26 March 2018

কৈলাস পর্বতের রহস্য-

কৈলাস পর্বতকে দেবাদিদেব মহাদেবের আবাস বলে বর্ণনা করেছে হিন্দু পুরাণ।পশ্চিম তিব্বতের এই পর্বত কেবল হিন্দুদের কাছেই নয়, জৈন, বৌদ্ধ, তিব্বতের প্রাচীন ‘বন’ ধর্ম- সব কয়টিই কৈলাসকে পবিত্র বলে মনে করে। ২২০০০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট এই পর্বত তার চেহারার দিক থেকেও স্বাতন্ত্রপূর্ণ। তার উপরে এই পর্বতের সন্নিহিত মানস সরোবরের অবস্থান একে অন্য মহিমা দান করেছে।

--ছটি পর্বতশ্রেণী পদ্মফুলের পাপড়ির মত ঘিরে আছে কিলাস পর্বতকে, এই পাহাড়কে প্রাচীন কাল থেকেই পৃথিবীর স্তম্ভ বলে মনে করা হয়, যা নাকি ধরে রেখেছে পৃথিবীর ভর।
----এই পর্বত থেকেই উৎসারিত হয়েছে এশিয়ার বেশ বড় একটা জনসংখ্যার প্রাণের উৎস। সিন্ধু, শতদ্রু, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণালী (গঙ্গার উপনদী) – সব এই পর্বতের আশেপাশে থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।
প্রথমদিকের মহাদেশগুলোর সংঘর্ষে তৈরি হয়েছিলো এই পর্বত। একটা আগ্নেয়গিরির সূত্রপাত হয়েছিলো তিব্বতের লাসা খাঁড়িতে ঐ সময়। সমুদ্রের চামড়া ফেটে যাচ্ছিলো ইউরেশিয়ার (Eurasia = ইউরোপ আর এশিয়ার যৌথ ভূমি) সাবডাকশনে। সেগুলোর ক্ষয় হলো, আর বাকি অংশটুকু থেকে সৃষ্টি হলো কৈলাস পর্বত।
----কৈলাস পাহাড়ের আবহাওয়ায় এমন কিছু আছে যাতে নাকি মানুষের চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ দ্রুত ফুটে ওঠে | সাধারণভাবে মানুষের নখ-চুল যে হারে বাড়ে‚ কৈলাস পাহাড়ে অন্তত ১২ ঘণ্টা কাটালে নাকি এই বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ হয়ে যায় | এরকমই হাজারো বিস্ময়ের ধারক ও বাহক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ধ্যানস্থ মহাদেবের আবাস কৈলাস পর্বত |
---ইউরোপের অকাল্টবাদীরা কৈলাসকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। তাদের মতে, এখানে অতিপ্রাকৃত শক্তির অবস্থান। অনেকের মতে আবার এই স্থান যাবতীয় অতিপ্রাকৃতের কেন্দ্র।
---পুরাণ অনুযায়ী কৈলাস পর্বতের চারটি পাশ স্ফটিক, চুনি, সোনা এবং লাপিস লাজুলি দ্বারা গঠিত। এই তথ্য সত্য নয়। কিন্তু, দিনের বিভিন্ন সময়ে আলোর পড়ে এই সব পাথর বা ধাতুর বিভ্রম কৈলাস অবশ্যই তৈরি করে।

---সবথেকে আশ্চর্যজনক হল‚ কৈলাস পাহাড় এখনও কেউ জয় করতে পারেননি | বিশ্বের নানা দেশ থেকে এসে চেষ্টা করেছেন পর্বতারোহীরা | কিন্তু তাঁদের কারও প্রয়াস সফল হয়নি | কৈলাস থেকে গেছে অধরা | অথচ এই পাহাড় কিন্তু দুর্গম নয় | এর থেকে অনেক বেশি দুর্গম শৃঙ্গ জয় করেছেন পর্বতারোহীরা | কিন্তু কোনও এক রহস্যময় কারণে তাঁদের কাছে অজেয় কৈলাস |
---তিব্বতে প্রচলিত প্রাচীন কিংবদন্তি হল, ১১ শতকের তিব্বতী মহাযোগী মিলারেপাই একমাত্র কৈলাসে আরোহণ করেছিলেন।ফিরে এসে তিনি নিষেধ করেছিলেন এই পর্বত জয়ে যেতে | কারণ একমাত্র সে-ই মানুষই পারবে এর শীর্ষে যেতে‚ যার গায়ে কোনও চামড়া নেই | আধুনিক পর্বতারোহীরাও বলছে মাউন্ট কৈলাসা ইজ আটারলি আনক্লাইম্বেবল | কেন‚ সে কারণ অস্পষ্ট |
---তিব্বতী তান্ত্রিক ঐতিহ্য অনুযায়ী কৈলাস তাদের দেবতা ডেমচমংয়ের আবাস। হিন্দুদের মতে এখানে বাস করেন শিব। জৈন-ধারণায় কৈলাসের বাসিন্দা তাদের প্রথম তীর্থঙ্কর। এই তিন ধর্ম অনুসারে কৈলাসে আরোহণ নিষিদ্ধ।
----সংস্কৃতে কেলাস (Crystal) কথা থেকে কৈলাস কথাটির উৎপত্তি | কারণ বরফে ঢাকা কৈলাসকে দেখতে লাগে স্ফটিকের মতো | তিব্বতি ভাষায় এর নাম গাঙ্গো রিনপোচে | তিব্বতে বৌদ্ধ গুরু পদ্মসম্ভবাকে বলা হয় রিনপোচে | তাঁর থেকেই নামকরণ হয়েছে কৈলাস পর্বতের | অর্থ হল বরফের তৈরি দামী রত্ন |
----এক সময়ে রাশিয়ান বিশেষজ্ঞরা কৈলাসকে একটি বিশালাকৃতি পিরামিড বলে বর্ণনা করেছিলেন। তারা এই পর্বতকে মানুষের তৈরি বলেও জানান। কোনো গোপন কাল্টের উপাসনাস্থল হিসেবে তারা কৈলাসকে ব্যক্ত করেন। খুঁটিয়ে দেখলে কৈলাসের পিরামিডাকৃতি বোঝা যায়।

---কৈলাস পাহাড়ের পায়ের কাছে আছে মানস সরোবর এবং রাক্ষসতাল | এ দুই হ্রদ এশিয়ার বেশ কিছু দীর্ঘতম নদীর উৎস | ১৪‚৯৫০ ফিট উচ্চতায় মানস সরোবর বিশ্বের উচ্চতম মিষ্টি জলের হ্রদ | প্রকৃতির আজব সৃষ্টি !মানস-রাক্ষস দুই হ্রদ পাশাপাশি আছে | অথচ‚ মানসে আছে মিষ্টি জল | আর রাক্ষসে নোনা জল | মানস সরোবরের জল শান্ত | কিন্তু রাক্ষস তালের জল অশান্ত |
----কৈলাসের অবস্থান ইয়ার্লাং-সাংপো সন্ধিতে, এখানেই ইওসীন যুগের মহাদেশগুলো মিলিত হয়েছিলো আর আশেপাশের পাললিক শিলার রুপান্তর ঘটিয়েছিলো। এই কংগ্লোমারেটের সাথে শিলার ভার্টিক্যাল জয়েন্ট একত্রিত হয়ে, বরফ আর শিলার গায়ে তৈরি করেছিলো একটা স্বস্তিকা। স্বস্তিকা, যেটা পবিত্রতার চিহ্ন, প্রায় সব কয়টি ধর্মে। স্বস্তিকা, যেটাকে গত শতাব্দীতে নাৎসীরা ব্যবহার করেছিল। 

----তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে এসেছিলেন যে পদ্মসম্ভব আর প্রথম জৈন হিসেবে খ্যাত তীর্থংকর, দুজনেই এখানে বোধিপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। আঞ্চলিক তিব্বতীয় বনপো ধর্মের মানুষ এটাকে ডাকে নয়তলা স্বস্তিকা পর্বত
----একদম চূড়াতে কোনো বরফ জমে না, কারণ এটার শরীর এতোটাই খাড়া। বরফ নিচে পড়ে যায়, গলে যায়, আর উৎপত্তি হয় পবিত্র সেই নদীগুলোর। এই মরুভূমির মত এলাকাতে এটাই শ্বেতশুভ্র পর্বত হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, হিমালয়ের প্রথম ও প্রধান রেঞ্জ হিসেবে।
কেউ এখন পর্যন্ত এটার চূড়ায় ওঠেনি, যদিও লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী হাজার হাজার বছর ধরে এটাকে চক্কর মেরেছে, জ্ঞান আর পুনর্জন্মে সুখী হবার আশায়। অনেকেই বারবার অবনত হয়ে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করেছে এর চারপাশে যে ৫০ কিলোমিটার ট্র্যাক আছে, সেই পথে হাঁটতে হাঁটতে। পর্বত আরোহণ জগতের বিখ্যাত নক্ষত্র রেইনহোল্ড মাইসনার এর চূড়াতে আরোহণ করার জন্য চায়না সরকারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।

Saturday, 24 March 2018

ওয়েবের অন্ধকার জগত-- ডার্ক ওয়েব ও Blue- হোয়েল---

অতি সম্প্রতি ডার্ক ওয়েব থেকে Blue- হোয়েল গেম নামিয়ে ব্যবহার করার একটা কথা শুনে আসছি। আমরা হয়ত অনেকেই Blue- হোয়েল সম্পর্কে জানলেও জানিনা আসলে ডার্ক ওয়েব জিনিস টা কি!
সম্পূর্ণ ইন্টারনেটকে মোট তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সার্ফেস ওয়েব (Surface Web), ২.ডীপ ওয়েব (Deep Web), এবং .৩.ডার্ক ওয়েব (Dark Web)।

সার্ফেস ওয়েব (Surface Web)--

সার্ফেস ওয়েব হলো ঐ ওয়েব যেটি দুনিয়া জুড়ে প্রত্যেকটি সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যবহার করে থাকে। যেটি আপনি ব্যবহার করেন, যেটি আমি ব্যবহার করি এবং ভবিষ্যতেও ব্যবহার করেত থাকবো সেটিই হলো সার্ফেস ওয়েব। যেমন- গুগল,ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি। সেসব সাইট গুলো সার্ফেস ওয়েবের মধ্যে পড়ে।
এমনকি আপনি যে আমার এই পোস্টটি পড়ছেন এটিও সার্ফেস ওয়েব এর একটি অংশ, এমন ইন্টারনেট যেটি দুনিয়া জুড়ে যেকোনো ইউজার যেকোনো সময় কোন স্পেশাল অনুমতি ছাড়া অ্যাক্সেস করতে পারে এবং সার্ফেস ওয়েবের প্রায় সকল তথ্য আপনি গুগল সার্চ করে পেয়ে যেতে পারেন ও আপনি লিঙ্ক ক্লিক করে যে ওয়েব সাইট গুলো খুলতে পারেন তারা প্রত্যেকে এই সার্ফেস ওয়েবের এক একটি অংশ। এমনি ভাবে আপনার প্রতিদিনের নিউজ আপডেট সাইট গুলো, প্রযুক্তি সাইট গুলো, গান ডাউনলোড সাইট গুলো ইত্যাদি সবাই সার্ফেস ওয়েবের অংশ।
তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সাথে প্রসার পেয়েছে ইন্টারনেট, আর তা আজ মহাসমুদ্রের ন্যায় বিশাল এক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে সক্ষমতা বেড়েছে সার্চ ইঞ্জিনগুলোর। বিশেষ করে Google এর নাম বলতেই হবে, যা এখন বিশ্বব্যাপী অন্যতম এক বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডে পরিণিত হয়েছে।

কিন্তু এই Google এর সক্ষমতা কতটুকু?

জেনে অবাক হয়ে যাবেন যে আপনি যখন কোন বিষয়ে সার্চ দেন আর গুগল তার লক্ষ লক্ষ ফলাফল আপনার সামনে হাজির করে তা ইন্টারনেটে থাকা মোট তথ্যের মাত্র ১০ শতাংশ থেকে প্রাপ্ত! অর্থাৎ গুগল অনলাইনের মোট তথ্যের ৯০ শতাংশ জানে না! এলেমে থাকা মাত্র ১০ শতাংশের মধ্যেই সার্চ দিয়েই সে তার ফলাফলকে গ্রাহকের সামনে হাজির করে। বাকি ৯০ শতাংশ চিরকালই আপনার অজানা থেকে যাবে।
এক জরিপে জানা গেছে দৃশ্যমান ওয়েবে যে পরিমাণ ডেটা সংরক্ষিত আছে তার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশী ডেটা সংরক্ষিত আছে অদৃশ্য ওয়েবে।

ডীপ ওয়েব (Deep Web)--

ডীপ ওয়েব হল ইন্টারনেটের ওই সমস্ত অংশ যেগুলো সার্চ ইঞ্জিন খুঁজে পায় না কিন্তু আপনি যদি এগুলোর ঠিকানা জানেন তাহলে আপনি এই অংশে যেতে পারবেন।
এখন এই ডীপ ওয়েবে কি কি সংরক্ষিত রয়েছে সে বিষয়ে প্রথমে জেনে নেয়। দেখুন আপনার যতো অনলাইন স্টোরেজ রয়েছে যেখানে আপনার সকল ডাটা স্টোর করা রয়েছে। যেমন কথা বলি গুগল ড্রাইভ নিয়ে বা ড্রপ বক্স নিয়ে। আবার বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে যতো গুলো গবেষণা তথ্য বা গোপন তথ্য স্টোর করা রয়েছে বা ব্যাংক এর যতো গুলো তথ্য বা ডাটাবেজ রয়েছে অথবা সরকারের যে গোপন প্রজেক্ট গুলো সংরক্ষিত রয়েছে তো এই সবই হলো ডীপ ওয়েবের অংশ। অর্থাৎ বাংলা ভাষায় বলতে যে তথ্য গুলো আপনি গুগল সার্চ করে কখনোও খুঁজে পাবেন না সেটিই হলো ডীপ ওয়েব।
ডীপ ওয়েব থেকে আপনি যদি কোন তথ্য অ্যাক্সেস করতে চান তবে আপনার প্রয়োজন পড়তে পারে একটি বিশেষ সাইট একটি বিশেষ সার্ভারের জন্য একটি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস এবং ওয়েব অ্যাড্রেসের সাথে আপনার প্রয়োজন একটি বিশেষ অনুমতি, যে আপনি ঐ ওয়েবসাইট টির তথ্যটি অ্যাক্সেস করার উপযোগী। অনুমতি গ্রহন করার জন্য আপনাকে হয়তো কোন লগইন আইডি বা পাসওয়ার্ড প্রবেশ করাতে হতে পারে অথবা সেটি যেকোনো ধরনের অথন্টিকেশন হতে পারে। কিন্তু আপনি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস ছাড়া কখনই ডীপ ওয়েবে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেননা ডীপ ওয়েবের কোন তথ্যই গুগল বা যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করা থাকে না। তো আপনি যতই সার্চ করতে থাকুন না কেন, আমার গুগল ড্রাইভে কি সেভ করা আছে তা আপনি কখনই খুঁজে এবং অ্যাক্সেস করতে পারবেন না।
আপনি তখনই সেই ফাইল গুলো অ্যাক্সেস করতে পারবেন যখন আমি আপনাকে ঐ ফাইল গুলোর বিশেষ লিঙ্ক আপনার সাথে শেয়ার করবো। অনেক সময় আমাদের ইন্টারনেটে ফাইল তো রাখতে হয়, কিন্তু আমরা চাই সেটা শুধু নির্দিষ্ট কিছু লোকের জন্যই প্রাপ্য হোক। উদাহরণ স্বরূপ যদি কোন কোম্পানির কোন ডাটাবেজ হয় তবে সেই কোম্পানিটি অবশ্যই চাইবে যে সেই ডাটা গুলো শুধু মাত্র তার নির্বাচিত ইউজাররা অ্যাক্সেস করুক। তাছাড়া গোপন তথ্য ইন্টারনেট সবার জন্য প্রাপ্য রাখা টাও অনেক ঝুঁকির ব্যাপার।


ডার্ক ওয়েবঃ
সতর্কবার্তা:এই পোষ্টের তথ্য ব্যবহার করে আপনি যদি কোন ক্ষতির সম্মুখিন হন তার জন্য আমি বা আমার ব্লগ কত্রৃপক্ষ কোনভাবেই দায়ী হবে না । এর দায়ভার একান্তই আপনার । আমরা এর ভাগ নিতে চাইনা ।
হলিউডি ছবির ওই দৃশ্যের কথা মনে আছে যেখানে গডফাদার তার পোষা খুনীর সাথে কখনো মখোমুখি সাক্ষাত না করে এক অতি গোপন নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়ে হুকুম দিয়ে যান, অথবা কি মনে পড়ে আঞ্জেলিনা জুলি অভিনীত ‘Hacker’ ছবিটির কথা যেখানে অপরাধীরা এক নাম না জানা নেটওয়ার্কের ভেতর নানা অপরাধ করত—যেখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নাক গলাতে পারত না?
আপাতদৃষ্টিতে রূপালী পর্দার এসব সাইফাই মুভিগুলোকে শুধুই কেচ্ছা মনে হলেও এইসব মুভির অজানা নেটওয়ার্কের মতই আমাদের অতিচেনা ইন্টারনেটের আছে এক অন্ধকারজগত…

আমি শুরু করার আগে আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই যে এই ডার্ক ওয়েব সম্পূর্ণ অবৈধ ইন্টারনেট। ডার্ক ওয়েব কখনই ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন না।
ডার্ক ওয়েবে মনে করুন যা ইচ্ছা তাই করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবে ড্রাগস ডিলিং, আর্মস ডিলিং সহ এমন এমন অসংখ্য অবৈধ কাজ সম্পূর্ণ করা হয় যার সম্পর্কে আজ এই পোস্টে খুলে বলা সম্ভব নয়। ডার্ক ওয়েব ইন্টারনেটের সেই কালো অধ্যায় যেখানে যেকোনো কিছু যেকোনো সময় করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবও কিন্তু সাধারন গুগল সার্চ করে কখনো খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
সকল প্রকারের ব্লাক মার্কেট অবস্থান করে ডার্ক ওয়েবে। টর ব্রাউজার আপনার অ্যাড্রেসকে অনেক অনেক লোকেশনে বাউঞ্জ করিয়ে তবেই কাঙ্ক্ষিত ওয়েব অ্যাড্রেসে পৌঁছে দেয়। টর প্রথম প্রথম আবিষ্কার হয়েছিলো ইউএস নেভির জন্য। কিন্তু এটি বর্তমানে একদম ওপেন একটি বিষয় হয়ে গিয়েছে। গোটা ইন্টারনেট জগতে জালের মতো ছড়িয়ে আছে এই ডার্ক ওয়েব। এবং একে নিয়ন্ত্রন করা অনেক মুশকিল ব্যাপার। সরকার ডার্ক ওয়েব ধিরেধিরে বন্ধ করছে। কিন্তু এখনো ডার্ক ওয়েবের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে আমি বলবো না যে একদম টর ব্রাউজারই ব্যবহার করবেন না। টর ব্রাউজার আপনি ভিপিএন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এবং এটির মাধ্যমে সার্ফেস ওয়েব ও ডীপ ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। কিন্তু ভুলেও ডার্ক ওয়েবের দিকে পা বাড়াবেন না।

সার্চ ইঞ্জিন কেন খুঁজে পায় না?

Google, Yahoo, Bing এসব সার্চ ইঞ্জিন ওয়েব সাইটের লিঙ্ক সংগ্রহ করে Crawling এর মাধ্যমে। Web Crawler এক ধরণের সয়ংক্রিয় স্ক্রিপ্ট প্রোগ্রাম যা বট নামেও পরিচিত। এর কাজ হচ্ছে ওয়েব সাইটে গিয়ে ঐ পেজের সমস্ত লিঙ্ক ইন্ডেক্স করা এবং কপি করে ডেটাবেজে জমা করা।
কিন্তু ডীপ ওয়েবে ওয়েবসাইট গুলো বিশেষ ভাবে তৈরী এবং সাইটের ওয়েব সার্ভারে Sitemap.xml, Robot.txt - না থাকার কারণে বট Crawling করতে পারেনা।
অপরাধ জগতের প্রায় সকল প্রকার কাজ এখানে করা যায়। মাদক দ্রব্য থেকে শুরু করে ভাড়া করা কিলার(টাকার বিনিময়ে খুন করে) এখানে পাওয়া যায়। কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ কাজগুলো যেমন শিশু পর্নোগ্রাফি, পতিতা ভাড়া করা, ড্রাগ কেনা-বেচা, অস্র ক্রয়-বিক্রয় ও পাসপোর্ট যোগার, চুরি করা ক্রেডিট কার্ড নম্বরসহ ইত্যাদি অন্যান্য অবৈধ ও নিষিদ্ধ জিনিস পাওয়া যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন দামি সফটওয়্যারের ক্র্যাক, পাইরেসী পাওয়া গিয়ে থাকে।
ডীপ ওয়েবের কারেন্সি হল বিটকয়েন বিটকয়েন লেনদেনের সময় পার্সনাল আইডিন্টির প্রয়োজন নেই এবং ট্যাক্সও দিতে হয় না।
ডার্ক নেটের এই অংশে একমাত্র উঁচু লেভেল এর হ্যাকার রাই প্রবেশ করতে পারে। সরকারি বিভিন্ন তথ্য চুরি করাতে এদের জুড়ি নেই। বলা হয়, উইকিলিকে যে তথ্য ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছে, তা অনেক বছর আগেই ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ পেয়েছিল।
টর্চার, রেপ – বিকৃত রুচির মানুষের বিচরণ রয়েছে এ সকল সাইটে। যারা টাকার বিনিময়ে লাইভে অন্য মানুষদেরকে টর্চার হতে দেখে। বিভিন্ন মানুষ কে জোর করে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়। এবং তা লাইভে দেখান হয় যা এতই ভয়াবহ যে সাধারণ মানুষ তা সহ্য করতে পারবে না।
এমনকি, মানুষ এর উপর মেডিকেল গবেষণা করার জন্য জ্যান্ত মানুষ ও পাওয়া যায়। অর্থাৎ , বিভিন্ন ছিন্নমূল মানুষ যাদের মৃত্যু হলেও কেও জানবে না, এমন মানুষ দের ধরে নিয়ে এসে, তাদের উপর অমানবিক গবেষণা গুলো করা হয়।
তাহলে কি ডার্ক ওয়েবে নিরাপদে অপরাধ করা যায়!
ধারনা করা হয় যে, যেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করা হয়, তার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কোন প্রসাশনের কাছে রয়েছে। ২০১১ সালে একবার Tor এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এটি নাকি CIA-এর একটি স্পাই নেটওয়ার্ক। তাছাড়া আপনি যদি আপনার আসল পরিচয় প্রকাশ করেন বা কোন ভাবে প্রকাশ হয়ে যায় তাহলে আপনি বিপদে পড়তে পারেন।

আমরা সচরাচর যেসব সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করি, সেগুলো আমাদেরকে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ম্যালওয়্যার,ভাইরাস এর ঝুকি থেকে নিরাপদ রাখে। কিন্তু ডার্ক ওয়েবের অধিকাংশ ওয়েব সাইটই অনিরাপদ। সেই সব সাইট আপনাকে বিভিন্নরকম সফটওয়্যার বা এপস পিসিতে ইন্সটল করার জন্য উৎসাহিত করবে, যাতে রয়েছে অত্যন্ত ক্ষতিকর ভাইরাস/ম্যালওয়ার। ডার্কনেটে এরকম ম্যালওয়্যার পাওয়া গিয়েছে যা কিনা একটি পিসিকে অকেজো করে দিতে সক্ষম। এখানে প্রবেশ করা অনেক ঝুকিপূর্ণ আপনি যেকোনো উপায়ে হ্যাকিং এর শিকার হতে পারেন। মনে রাখবনে, সরকারের অঢেল টাকা আছে, তাই তারা চাইলেই ডার্ক ওয়েবের মেধাবী হাজারো হ্যাকারকে ভাড়া করতে পারবে আপনারমত লোকদের ডার্ক ওয়েবে চোখে চোখে রাখতে।
রেড রুম--
রেড রুম নামটি এসেছে জাপানী একটি এনিমেশন এবং একই নামের একটি শহরের কিংবদন্তী থেকে ।
অনেকে বলে থাকে সন্ত্রাসীদের উপার্যনের একটি অংশ হল এই রেড রুম । ভিক্টিমকে একটি রুমে আটকে রেখে তাকে বিভিন্ন ভাবে টর্চার করে সেই ভিডিও রেড রুমে ছেড়ে দেয়া হয় ।
এখানে মানুষকে টর্চার, খুন, রেপ ইত্যাদির লাইভ স্ট্রিমিং হয়। এই সবই সেখানে মানুষ টাকা দিয়ে দেখে । টাকা বলতে লেনদেন সব বিটকয়েনেই হয় । বলা হয়, কুখ্যাত আইসিস গোষ্ঠী তাদের টর্চার ভিডিও গুলী এখানে দিত। রেড রুমের অস্তিতও নিয়ে রয়েছে বিতর্ক , কারন এটি নিয়ে পূর্নাংগ কোন প্রমান পাওয়া যায়নি , এমন কোন ব্যাক্তি নিজে দাবি করেনি যে সে রেডরুম নিজের চোখে দেখেছে । তবে এটি নিয়ে গেমস , মুভি , ড্রামা তৈরী হয়েছে । 

বিভিন্ন সূত্র বিভিন্ন সময় রেডরুম সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করলেও পূর্নাং প্রমানের অভাবে তা আসলে আমলে নেয়া হয়নি
রেডরুম এ বিকৃত মানসিকতার কর্মকান্ড হয় । সম্পূর্ন অবৈধ এই অংশ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ না করাই ভাল ।
সিল্ক রোড –
অবৈধ পণ্য কেনাবেচার জন্য অনলাইনের কালোবাজার হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছিল সিল্ক রোড ও বিটকয়েন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিল্ক রোড যাত্রা শুরু করলেও এর আরও আগে থেকে এর প্রস্তুতি চলছিল। আমাজন ডটকম বা ইবে ডটকম যেমন ই-কমার্স সাইট হিসেবে খ্যাত তেমনি অনলাইনে মাদক কেনাবেচার সাইট হিসেবে সিল্ক রোড দ্রুত পরিচিতি পেয়েছিল। কিন্তু ২ অক্টোবর এফবিআই এ সাইটটি বন্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ করে দেওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবহারকারীরা এ সাইটে বিনামূল্যে নিবন্ধন করতে পারতো। তবে কেউ কিছু বিক্রি করতে চাইলে অর্থ খরচ করে অ্যাকাউন্ট খুলতে হতো। এখানে মাদক ছাড়াও পর্নোগ্রাফি, চুরি করা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যসহ নানা অবৈধ জিনিসের লেনদেন হতো।

মারিয়ানা'স ওয়েবঃ
এখন যদি বলা হয় এই ডার্ক ওয়েব এর চাইতেও গভীর একটি ওয়েব রয়েছে; আর তখনই তা ব্রাউজ করা যাবে যখন;সেই ওয়েবসাইট এর এড্রেস আপনার কাছে থাকবে আরও থাকতে হবে সেই ওয়েবসাইটে ঢোকার চাবি। মারিয়ানা'স ওয়েব এতই গভীর যে এখানে ঢোকা সহজ কোন ব্যাপার নয়; খুবই কঠিন একটি প্রক্রিয়া। যেকেউ চাইলে প্রবেশ করতে পারবে না এই ইন্টারনেটের অন্ধকার জগতে।

এই মারিয়ানা নামটি এসেছে মানিয়ানা ট্রেঞ্জ থেকে।
এটা মানা হয় যে; সরকার এর যতসব টপ সিক্রেট তথ্যগুলো আছে তা এখানে পাওয়া যায়। দুনিয়ায় সবচেয়ে রহস্যময় আর গোপনীয় জিনিস যদি থাকে সেসব এখানে দেখা যায়। "এটলান্টিস" সমুদ্রের নিচে এক কাল্পনিক দ্বীপ যেটি আছে, ইলুমিনাটি বা ইলুমিনাটিদের লোকদের সাথে যোগাযোগ, এলিয়েন দের তথ্য, বিভিন্ন অলৌকিক ও অশরীরী তথ্য, Human Experiments এবং তার ডাটাবেসও সেভ করা হয় এখানে এই মারিয়ানা'স ওয়েবে আছে।
তো গর্ভমেন্ট কী জন্য এটার বিরুদ্ধে কিছু করছে না? কেন এটাকে প্রকাশ করা হচ্ছে না? এখনে গর্ভমেন্ট এই জন্য এটি করেনা কেননা;অনেক দেশের সিক্রেট অনেক তথ্য এই মারিয়ানা'স ওয়েবে আছে;এমনকি তাদেরও থাকতে পারে।
আর এখানে আপনার কাজের কোনও কিছুও নেই। এসবই মূল কারন কেউ মারিয়ানা'স ওয়েব প্রকাশ এর জন্য কোন অভিযান করে না। গর্ভমেন্ট কোন পদক্ষেপ কোন পদক্ষেপ নেয়না; আগেই বলেছি তাদেরও অনেক গোপন তথ্য এখানে বিদ্যমান। বড় থেকে বড় হ্যাকারও এই মারিয়ানা'স ওয়েব নিয়ে কিছু করার আগে অনেকবার ভাববে। এটি ইন্টারনেটের একটি কোনা যেখানে বিনা ঠিকানা, বিনা চাবিতে ঢোকা বলতে অসম্ভব এটি বিষয়।
এটাও মানা হয় যে, মারিয়ানা'স ওয়েবে ঢুকতে তা দখল করতে কোয়ান্টাম কম্পিউটারস এর প্রয়োজন হবে।কোয়ান্টাম কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটারও বলা যেতে পারে; এদের প্রোসেসিং স্পীড আমাদের সাধারন কম্পিউটার থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশী হবে। [মানা হয় মাত্র ৪টি কোয়ান্টাম কম্পিউটার দিয়ে সম্পূর্ণ আমেরিকার Computer Needs পূরন করা সম্ভব! ]
Blue- হোয়েল--
গেমটি ২০১৬ সালে মে মাসে প্রথম রাশিয়ার পত্রিকা “নোভায়া গেজিটা” প্রকাশের মাদ্ধমে ব্যপক আলোচনায় আসে। যেহেতু এটি গুগল সার্চ অথবা বিং সারচ অপশন অথবা সমকক্ষ কোনটি দ্বরা খুজে পাওয়া যায়না তাহলে ধরে নিতে হবে এটি মোবাইল গেম নয়। কারন আমার জানা মতে ব্লু হয়েল আন্ড্রয়েড এপিকে ফাইল চিনেতে সক্ষম নয়। বেপারটা আরেক টু খুলে বলি।

যদি একটু অনুসন্ধান করা যায় বুঝতে পারা সহজ হয় যে
১। ডার্ক ওয়েব থেকে কোন ফাইল নামানোর জন্যে অবশ্যই আপনাকে রিয়েল আইপি ব্যবহার করা অত্যাবশ্যক এবং পিসি (পারসনাল কম্পিউটার) থাকা জরুরি। তা না হলে একটি মোবাইল দিয়ে এই গেম পরিচালনা করা আসলেই সম্বভ হয়ে উঠেনা।
২। ডার্ক ওয়েব যেহেতু রিয়েল আইপি ছাড়া খেলা সম্ভব নয় তাহলে ধরে নিন আপনার সন্তান যে গেম টি খেলছে তা কোন হ্যাকার মজা করেই গেম টি পরিচালনা করছে অথবা তথ্য আহরণ করার কাজে ব্যবহার করছে যা ইন্টারনেট ভাষায় পিশিং, স্নুফিং বলে পরিচিত।
৩। যেখানে সবাই গুগল সার্চ এর উপর নির্ভরশীল এবং মজিলা আর গুগল ক্রম ব্যবহার করে সাইট ব্রাউজিং কাজ পরিচালনা করে সেখানে কজন মানুষ টর ব্রাউজার এর মাদ্ধমে দৈনিন্দিন কাজ পরিচালনা করে? টর ব্রাউজার ইউজার ফ্রেন্ডলি নয়।
৪। ডার্ক ওয়েবে আপনি কোন স্ক্রিন শর্ট নিতে পারবেন না । অনলাইন ভিত্তিক ডার্ক ওয়েবে গেম ছাড়াও অনলাইন ক্রাইম যেমন সোশাল মিডিয়া হ্যাক, চুরি, পিশিং, স্নুফিং, স্প্যামিং, যৌন নিপীড়ণ ইত্যাদি পরিচালনা করে থাকে। Blue- হোয়েল সেই ক্রাইমের একটি অংশ মাত্র।
৫। রিয়েল আইপি ব্যায়বহুল। বেশিরভাগ মানুষ বাসা বাড়িতে ইন্টারনেট শেয়ার্ড লাইন ব্যবহার করে যা Blue- হোয়েল এ লগিন করার পরিপন্থি।
৬। Blue- হোয়েল গেম কোন হ্যাকার দ্বারা আমন্ত্রন অথবা পিয়ার টু পিয়ার শেয়ারিং ছাড়া খুজে পাওয়া সম্ভব নয়। দুর্বল চিত্তের মানুষদের নিজেদের কাছে টানা সম্বভ হলেও বেশিরভাগ মানুষ এই গেম খুজে বের করে খেলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
ডার্ক ওয়েবে্ পৌছানো কোন সহজ কাজ নয় বিধায় অনেকেই আমরা এর অজানা রহস্য থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। ডার্ক ওয়েবে্র ছোবল থেকে আপনার সন্তানকে নিরাপদ রাখুন এবং জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে দেশের তড়ে, সমাজের উন্নয়নে ব্যবহার করতে সাহায্য করুন।
তবে ডীপ ওয়েব মানেই খারাপ না কেবল ডার্ক ওয়েব অবৈধ, ডীপ ওয়েব এ উইকিলিক্সএর মত, সাইট আছে, স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেকেই একে ব্যবহার করেন, অনেক ব্লগ, সোশ্যাল সাইট পাবেন।

Thursday, 15 March 2018

প্রচণ্ড গরমে খাবার ভালো রাখার কৌশল--

প্রচণ্ড গরমে খাবারকে ভালো রাখার জন্য সঠিক তাপমাত্রায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অর্থাৎ যে তাপমাত্রায় খাবার ভালো থাকে সেই তাপমাত্রাতেই খাবার রাখতে হবে। খাবারকে রেফ্রিজারেটরের মধ্যে রাখলে এর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হতে হবে এবং হিমায়কের তাপমাত্রা মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হবে। প্রচন্ড গরমে অনেকেরই এই অভিযোগ থাকে যে ফ্রিজে রাখা খাবার সতেজ থাকে না, সবজিগুলো কেমন শুকিয়ে যায়, রান্না করা খাবারে গন্ধ হয়ে যায় কিংবা এক খাবারের গন্ধ মিশে যায় অন্য খাবারের সাথে, অনেকেই বুঝতেই পারেন না কেন ফ্রিজে রাখা সত্ত্বেও দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে খাবার, কিংবা কেন ডিপ ফ্রিজে রাখা খাবারে স্বাদ মিলছে না মোটেও! এই সমস্ত সমস্যার সমাধান পেতে জেনে নিন গরমে খাবার ভালো রাখার কিছু কৌশলঃ

-- সবজি পলিথিনের ব্যাগে রাখেন? এই কাজটি করবেন না মোটেও, সবজি রাখুন কাগজের প্যাকেটে কিংবা খবরের কাগজ দিয়ে মুড়ে, অনেকদিন সতেজ থাকবে।
-- কিছু খাবার একটু অন্যভাবে রাখে হয় ফ্রিজে, যেমন ধরুনঃ শাক কুটে রাখবেন,ধনে পাতা রাখবেন গোঁড়া সহ,শাকের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রাখার উপায় হচ্ছ একটু ভাপিয়ে রাখা, বেগুনের গায়ে মেখে রাখতে পারেন সামান্য একটু তেল।
-- ফ্রিজের গায়ের সাথে লাগিয়ে কোন খাবার রাখবেন না, বিশেষ করে কোন রকমের তাজা ফলমূল বা সবজি তো একেবারেই না।

-- মাখন তো ফ্রিজে রাখতেই হয়, ঘি-কেও ফ্রিজে রাখতে পারেন অনেকদিন ভালো রাখার জন্য, তবে দুটিই রাখবেন একদম এয়ার টাইট পাত্রে।
-- আপনি জানেন কি, গুঁড়ো দুধ কিংবা চানাচুর-বিস্কিটের মত খাবার ফ্রিজে একদম সতেজ ও মুচমুচে থাকে? এক্ষেত্রে সবচাইতে ভালো হবে প্লাস্টিকের পাত্রে সংরক্ষণ করলে।
-- ফ্রিজে যাই রাখুন না কেন,প্লাস্টিকের এয়ার টাইট বাক্সে সংরক্ষন করুন,এবং ফ্রিজে সর্বদা এক টুকরো কাটা লেবু রাখুন,মাঝে মাঝে বেকিং সোডা মেশানো পানি দিয়ে ফ্রিজ মুছে নিন,এতে এক খাবারের গন্ধ অন্য খাবারে প্রবেশ করবে না,ফ্রিজেও দুর্গন্ধ হবে না।
-- ফ্রিজে যেমন মাংসই রাখুন না কেন, সেগুলো অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে একদম পরিষ্কার করে রাখুন, এটা মাংসে বাজে গন্ধ হবে না, অনেকদিন পর্যন্ত সতেজ থাকবে, স্বাদ থাকবে অক্ষুণ্ণ।
-- মাছ ফ্রিজে রাখার রাখে ভালো করে কেটে বেছে, লবণ পানি দিয়ে ধুয়ে তবেই রাখুন,এতে স্বাদে কোন হেরফের হবে না, বেশ আঁশটে গন্ধ ওয়ালা মাছে সামান্য একটু ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন।

-- ফ্রিজে কাটা পেঁয়াজ রাখতে চাইলে পেঁয়াজ একটি এয়ার টাইট বাক্সে রেখে সামান্য লবণ ছিটিয়ে দিন,তারপর বাক্সতি মুখ বন্ধ করে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে নিন,ব্যাগটি সিল করে ফ্রিজে রাখুন।
-- ফ্রিজে ডিম রাখার সময় মোটা অংশটি নিচের দিকে ও সরু অংশটি ওপরে রাখুন,ডিম হাতলে না রেখে বাটিতে করে ফ্রিজের ভেতরে রাখুন।
-- কাঁচা মরিচের বোঁটা ফেলে সংরক্ষণ করুন।
-- মাছ, মাংস রান্না করার জন্য রেফ্রিজারেটর থেকে নামালে বরফ গলিয়ে বেশিক্ষণ বাইরে রাখা যাবে না। তাতে গরমে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
-- ফল যেটুকু খাওয়া হবে শুধু সেটুকুই কাটুন। বাড়তি থাকলে ফ্রিজে রেখে দিন।
-- যেকোনো রান্না করা খাবার এক বা দুই ঘণ্টার মধ্যে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর আগেই সংরক্ষণ করুন।
-- রান্না করা খাবার আগে বাতাসে রেখে ঠান্ডা করে তারপর ফ্রিজে ওঠান।
-- যেকোনো খাবার ফ্রিজে রাখার সময় ঢাকনা ব্যবহার করুন।
-- অন্য খাবারের তুলনায় রান্না করা ডাল তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় তাই ডাল প্রয়োজনমতো রান্না করুন। খাওয়ার পর বাড়তি থেকে গেলে চুলায় কিংবা মাইক্রোওভেনে গরম করে নিন। এরপর ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করুন।
-- রেফ্রিজারেটর না থাকলে বাড়তি খাবার জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে জালি দিয়ে ঢেকে রেখে দিন।
-- পুরভরা যেকোনো খাবার তৈরির সময় পুরটুকু একটু ঠান্ডা করে তারপর ব্যবহার করুন।
-- ফ্রিজ থেকে বের করেই চুলায় খাবার গরম করতে দেবেন না। বাইরে একটু রেখে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসার পর খাবার গরম করুন।
-- খাবারে যেন হাতের স্পর্শ না লাগে। তাহলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

গরমে ঘুমান আরামে – সহজ উপায় ও কৌশল--

ক্লান্তিকর দিন শেষে একটু আরামের ঘুম সবার জন্যেই দরকার। শরীর ও মন সুস্থ রাখার জন্যে পরিমিত আরামদায়ক ঘুমের বিকল্প নেই। ঠিকমত ঘুমাতে না পারলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয় না, যার প্রভাব পরে কর্মক্ষেত্রে। সারাদিনের প্রচন্ড গরম সহ্য করা গেলেও ঘুমাতে গেলে গরম বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে বাড়িতে যদি এয়ার কন্ডিশনার বা এয়ার কুলার না থাকে। উচ্চ তাপমাত্রায় আমাদের মগজ শরীরকে না ঘুমানোর নির্দেশ দেয় ফলে বিড়ম্বনা বেড়ে যায় বহুগুণ। তাহলে গরমে শান্তিতে ঘুমানোর জন্যে কী করা যায়? একটু কৌশল অবলম্বন করলেই এই গরমেও শান্তিতে ঘুমানো যায় খুব সহজেই।


ঘুমানোর আগে গোসল করুন
যদি অনেক গরম থাকে তাহলে ঘুমানোর আগে স্নান করলে শরীরের তাপমাত্রা সাধারণের তুলনায় অনেক কমে যাবে। যার ফলে শরীরে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব নিয়ে ঘুমাতে সুবিধা হবে। ঘুমানোর আগে স্নান করলে ঘুমও গভীর হবে। যদি স্নান করা সম্ভব না হয় তাহলে সারা শরীর মুছে দিতে পারেন কিংবা পায়ের পাতা কিছুক্ষন জলে ভিজিয়ে তারপর ঘুমাতে যান।
স্নান করুন স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে
বাইরে থেকে গরমে ঘেমে একাকার হয়ে বাড়ি ফিরে বরফ ঠান্ডা জলে স্নান করা উচিত না। এতে করে শরীরের ভিতরে তাপ ভিতরেই থেকে যাবে। যদি বাড়ি এসে ঘুমানোর আগে স্নান করুন তবে তা করবেন স্বাভাবিক তাপমাত্রার জলে।
ঘরের মেঝেতে ঘুমান
বিছানার তুলনায় ঘরের মেঝে ঠান্ডা থাকে। তোশকের চেয়ে কম আরামের হলেও এতে অনেক গরম কম লাগে। গরম বাতাস উপরে দিকে থাকে বেশি। তাই মেঝেতে ঘুমানো আরামদায়ক। চাইলে ঘুমানোর আগে ঘরের মেঝে জল দিয়ে মুছে নিতে পারেন। শুকানোর পর পাটি বিছিয়ে শুয়ে পড়ুন।
বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন
জানালা খোলা রাখা সম্ভব হলে খোলা রাখুন। এতে ঘর ঠান্ডা থাকবে। জানালার সামনে ভারী কাপড় ভিজিয়ে ঝুলিয়ে রাখলে বাইরের বাতাস প্রবেশের সময় ঠাণ্ডা বাতাস পাবেন। তাছাড়া ঘরে অতিরিক্ত একটা পোর্টেবল ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন। জানালার কাছাকাছি রাখলে বাইরে থেকে ঠান্ডা বাতাস ভিতরে ঢুকবে। ফ্যানের সামনে এক পাত্র বরফ রাখতে পারেন। এতে ঘরের বাতাস ঠাণ্ডা হয়ে আসবে। আবার ঘরের গরম বাতাস বাইরে বের করতে চাইলে ফ্যান জানালার দিকে ঘুরিয়ে রাখুন।
প্রয়োজন হলে একা ঘুমান
গরমের দিনে এক বিছানায় বেশি মানুষ না ঘুমানোই ভালো। গরমের সময়ে সাথে কেউ ঘুমালে তা বিরক্তির কারণ হতে পারে। কেননা বিছানায় আরেকজন মানুষ থাকা মানে তাপের আরেকটি উৎস। এ কারণে বিছানায় একা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। একজন বিছানায় এবং আরেকজন মেঝেতে ঘুমাতে পারেন। এতে হাত-পা ছড়িয়ে আরামে ঘুমাতে পারবেন।
বিদ্যুৎ ব্যবহার কমিয়ে রাখুন
সকেট থেকে প্লাগ খুলে রাখুন, আলো সব নিভিয়ে দিন, ইলেক্ট্রনিক্স গেজেট গুলোর ব্যবহার রাখুন কম। এসব গ্যাজেট তাপ উৎপাদন করে যা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ফোন এবং ল্যাপটপ রাখুন বিছানা থেকে দূরে। মোট কথা ঘর ঠান্ডা রাখার জন্যে যা করণীয় তাই করুন।
আরামদায়ক পোশাক
দিনে বা রাতে গরমের সময় সবাই একটু হালকা পোশাকই পরে থাকেন। ঘুমানোর সময়েও সবচাইতে আরামদায়ক, হালকা পোশাক পরুন এ সময়ে। হালকা ও আরামের জন্যে সুতির পোশাক বেছে নিতে পারেন। এতে ঘাম সহজে শুকিয়ে যায় ও শরীর থেকে তাপ চলে যায়।
বিছানা
গরমের দিন সম্ভব হলে বিছানার চাদর প্রতিদিন রাতে বদলে নিন। কারণ পরিষ্কার বিছানায় ঘুমালেই মনে এক রকমের প্রশান্তি আসে; যা ভালো ঘুমাতে সহায়তা করে। তবে এক্ষেত্রে বিছানার চাদর সুতির হওয়াই ভালো। আর ফোমের বিছানায় গরম লাগবে বেশি। ভালো হয় জাজিম ও তোশক ব্যবহার করলে। আরামের ঘুমের জন্যে শিমুল তুলার বালিশও ব্যবহার করতে পারেন।
খাওয়া দাওয়া
খাওয়ার ১ থেকে দুই ঘন্টা পর্যন্ত পরিপাক ক্রিয়ার জন্যে শরীর গরম থাকে। তাই শান্তিতে ঘুমাতে চাইলে ঘুমাতে যাওয়ার এক থেকে দুই ঘন্টা আগেই খেয়ে নিন রাতের খাবার। আর রাতে এমন খাবার খাওয়া উচিত নয় যা খেলে আপনার অস্বস্তির হয়।
জল পান করুন বেশি করে
স্বাভাবিক ভাবেই গরমে সবারই খুব ঘাম হয়। শরীরের সিস্টেম ঘামের মাধ্যমে তাপমাত্রা কমিয়ে আনে। এই জন্যেই দরকার বেশি করে জল পান। শরীর সতেজ রাখতে বেশি করে জল পান করা উচিত। খুব বেশি ঘামার প্রবণতা থাকলে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে ট্যালকম পাউডার মেখে নিন। এক্ষেত্রে মেনথল ফ্লেভারের পাউডার বেশ আরাম দেবে।

Wednesday, 14 March 2018

চুল পড়া বন্ধে পেঁয়াজের রসের ব্যবহার --

কীভাবে কাজ করে?
পেঁয়াজের রসে আছে প্রচুর পরিমণে সালফার। এটি মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে থাকে। এমনকি সালফার আপানার ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান আছে যা মাথার তালুকে বিভিন্ন রোগ জীবাণু হতে রক্ষা করে।
সপ্তাহে ২/৩ বার পেঁয়াজের রস ব্যবহারে এটি মাথার তালুর বিভিন্ন সমস্যা যেমন ফাঙ্গাস, খুশকি, ইনফেকশন থেকে মাথার তালুকে রক্ষা করে থাকে। এটি সব ধরণের চুলের অধিকারীরাই ব্যবহার করতে পারেন।


১। কাঁচা পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস থেকে সবচেয়ে ভাল ফল পেতে চাইলে এটি সরাসরি ব্যবহার করুন। ২/৩ টি বড় পেঁয়াজ নিয়ে ব্লেন্ড করে রস করে ফেলুন। রস মাথার তালুতে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে ম্যাসাজ করে লাগান। কমপক্ষে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ বার এটি ব্যবহার করুন। এক, দু মাসের মধ্যে আপনি পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
২। মধু পেঁয়াজের রস
এটি আপনি খেতেও পারেন আবার চুলেও ব্যবহার করতে পারেন। সিকি কাপ পেঁয়াজের রসের সাথে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন এটি পান করুন। এটি আপনার হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। এটি আপনি চুলে ও লাগাতে পারেন। ১০ মিনিট ম্যাসাজ করে শ্যম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন।

৩। পেঁয়াজের রস এবং তেল
৩ টেবিলচামচ পেঁয়াজের রসের সাথে ১ টেবিল চামাচ নারকেলের তেল,১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। সপ্তাহে তিনবার এটি আপানার চুলে ব্যবহার করুন। আপনি যদি শুষ্ক মাথার ত্বকের অধিকারী হয়ে থাকেন তবে এটি খুব ভাল ফল দিবে।
৪। পেঁয়াজ এবং লেবুর রস
৩ টেবিল চামচ পেঁয়াজের রসের সাথে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এটি মাথার তালুতে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করুন। লেবুর রস খুশকি দূর করতে অনেক বেশী কার্যকরী। আর পেঁয়াজের রস নতুন গোঁজাতে কার্যকরী।

কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা--

কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতার কথা সব চিকিৎসক, ডায়েটিশিয়ানরাই বলে থাকেন। শুধু বলেন বলেই না, আমরা নিজেরাও জানি সুস্থ থাকতে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া কতটা প্রয়োজনীয়।
পেঁয়াজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ সালফার থাকার কারণে এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাংগাল গুণ সাধারণ সর্দি, কাশি থেকে হার্টের সমস্যাও দূরে রাখতে পারে।
আর যদি কাঁচা পেঁয়াজ খেতে ভাল না লাগে? তাহলেও রয়েছে উপায়। জেনে নিন না খেয়েও কী ভাবে বিভিন্ন সমস্যায় ব্যবহার করতে পারেন কাঁচা পেঁয়াজ।

বুকে ইনফেকশন -- পেঁয়াজ কুরে নিয়ে ১-২ টেবল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্ট বুকে লাগিয়ে তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন। ইনফেকশন কমে যাবে।
কাটা-ছেঁড়া -- পাতলা করে পেঁয়াজের সাদা ফিল্ম কেটে নিয়ে কাটার ওপর লাগিয়ে গজ দিয়ে বেঁধে রাখুন। রক্ত পড়া সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে।
জ্বর -- জ্বর কিছুতেই কমছে না? পায়ের তলায় নারকেল তেল মালিশ করে পেঁয়াজের স্লাইস রেখে মোজা পরে থাকুন। জ্বর কমে যাবে।
কাশি--: পেঁয়াজ অর্ধেক করে কেটে নিন। দুটো আধা ভাগের ওপর এক টেবল চামচ করে ব্রাউন সুগার দিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। দিনে দু’বার করে খেলে কাশি কমে যাবে।
কানের ব্যথা - পেঁয়াজ কুরে পাতলা কাপড়ে বেঁধে নিন। ব্যথা কানের কাছে কাপড় বেঁধে রাখুন।
শিশুদের পেটের সমস্যা - হলুদ পেঁয়াজ ডুমো করে কেটে জলে ফুটিয়ে অনিয়ন টি বানিয়ে নিন। সেই চা শিশুদের খাওয়ালে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
বমি - বার বার বমি হচ্ছে? পেঁয়াজ বেটে রস তৈরি করে নিন। সঙ্গে বানিয়ে রাখুন পেপারমিন্ট টি। দু’চা চামচ পেঁয়াজের রস খেয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। এ বার দু’চা চামচ পেপারমিন্ট টি খান। এ ভাবে এক বার পেঁয়াজের রস, এক বার চা ১৫ মিনিট ধরে খেলে বমি কমে যাবে।

Sunday, 11 March 2018

ভারতীয় খাবার

অনেকে ভাবতে পারেন আমরা ভারতীয় তো ভারতীয় খাবারের বিষয়ে এটুকু তো জানিই। হ্যাঁ তা ঠিক। কিন্তু ভারতীয় খাবারের বিষয়ে এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা অনেকেরই অজানা। এই তথ্যগুলি বেশ মজাদারও বটে।
ভারতীয় খাবারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মশলা। শুকনো মশলা, বাটা মশলা, কত রং কত স্বাদ, কত সুগন্ধ।

--ভারতীয় খাবারে মূলত ৬ ধরণের স্বাদ পাওয়া যায়। মিষ্টি, টক, নোনতা, ঝাল, তেতো এবং কষাটে খাবার। কিন্তু সবচেয়ে মজাদার বিষয় হল কোনও একটি খাবারে আপনি এই ৬টি স্বাদই একসঙ্গে পাবেন না।
--প্রত্যেক ভারতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে মশলার ব্যবহার হয়। এই প্রত্যেক মশলার বিবিধ গুণাবলী রয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যকে সুফল প্রদানকারী গুণও রয়েছে। ভারতের মতো কোনও দেশে এত রকমের এত রংয়ের মশলা পাওয়া যায় না।
--মিষ্টির ব্যবহার মিষ্টির ব্যবহার পর্তুগীজরা চিনির ব্যবহার প্রথম ভারতে শুরু করে তার আগে খাবারে মিষ্টি স্বাদ আনতে মধু এবং মিষ্টি ফলের ব্যবহার করা হত।
Image result for indian food
--চিকেন টিক্কা মশলার রহস্য চিকেন টিক্কা মশলার রহস্য ভারতীয় এই অতি জনপ্রিয় খাদ্যটির উদ্ভব ভারতে হয়নি। যদিও এই চিকেন টিক্কা মশালার ইতিহাস নিয়ে নানা মত রয়েছে। কেউ বলেন যুক্তরাজ্যের এক ভারতীয় রেস্তোরাঁর হেঁশেলেই প্রথম দুর্ঘটনাবশত আবিস্কার হয় এই পদটি। আবার অনেকে বলেন গ্লাসগো-য় এক মুসলিম শেফ নিজের রেস্তোরাঁয় পরীক্ষা নিরিক্ষা করে এই পদটির আবিষ্কার করেন।
--দম বিরিয়ানির উদ্ভব দম বিরিয়ানির উদ্ভব দম বিরিয়ানি হল বিরিয়ানি তৈরির একটি পদ্ধতি। অযোধ্যার নবাব নিজের রাজ্যে খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হলেন। তাই তিনি নির্দেশ দিলেন বড় বড় হাড়িতে ঢাকা দিয়ে আটা ডেলা দিয়ে আটকে গরম ভাপে রান্না করা হবে। এই পদ্ধতিতে রান্নার ফলে অনেক পরিমান খাবার একসঙ্গে কম জ্বালানি খরচ করে রান্না করা যাবে। তখন কে জানত এই পদ্ধতিই পরে 'দম' নামে রসনা জগতে শোরগোল ফেলে দেবে।
--ভারতীয় খাবারের ৩ বিভাগ ভারতীয় খাবারকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সাত্ত্বিক (টাটকা, ফল সবজি ও জুস), রাজসিক (তেল, ঝাল, মশলায় পরিপূর্ণ খাবার) এবং তামসিক (মাছ, মাংস এবং সুরা)।
--সিঙাড়া ভারতের নয় সিঙাড়া ভারতের নয় সন্ধ্যেবেলা চায়ের সঙ্গে আলুর বা কিমা সিঙাড়ায় কামড় দিতে গিয়ে কখনও ভেবেছেন এই সিঙাড়া ভারতের নয়, ভারতের আমদানি মাত্র। দশম শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম এই খাদ্যের উদ্ভব হয়। মধ্য এশিয়ার এক ব্যবসায়ী ত্রয়োদশ বা চতুর্দশ শতাব্দীতে ভারতে নিয়ে আসেন এই সিঙাড়া।

ইতিহাসে চানাচুর

একটু কাঁচা পেঁয়াজ-মরিচের কুচি আর কয়েক ফোঁটা সর্ষের তেলের সাথে মুড়ি-চানাচুরের মাখানো রেসিপি সত্যি বর্ণিল করে তুলতে পারে ঘরে কিংবা বাইরের যেকোনো আড্ডা। ঘরের বৈঠক খানায় আলিশান থালা-বাসন, নিরন্নের শতছিন্ন থালা কিংবা আড্ডাবাজদের সম্বল খবরের কাগজে সমান দ্যুতি ছড়ানো এই খাবারের নাম চানাচুর। ভারতবর্ষে জন্ম অথচ একদিনও চানাচুর খাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। কিন্তু কেউকি ভেবে দেখেছি কোথা থেকে শুরু হয়েছিলো এই চানাচুরের যাত্রা। 
Image result for Bombay mix
কাদের হাত ঘুরে কালের খেয়ায় ভর করে এই চানাচুর মুড়ির সাথে কিংবা চকমকে প্যাকেটে করে হাজির হলো আমাদের হাতে হাতে কিংবা বৈঠক খানার বৈঠক-রাস্তার পাশের আড্ডাবাজিতে?
বর্তমান ভারতীয় সিনেমা শিল্পের প্রাণকেন্দ্র মুম্বাইয়ের বন্দর এলকায় মোগল যুগের মাঝামাঝি কিছু মানুষকে বিশেষ ধরণের মুড়মুড়ে ডালভাজা বিক্রি হতে দেখা যেতো। গুড়ো ডালকে বিশেষভাবে ঝাল মশলা সহকারে ভেজে বিক্রি করা হতো চুড়ানামে। সময়ের আবর্তে এই চুড়া মুম্মাইয়ের গণ্ডি পেরিয়ে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে প্রায় পুরো ভারতজুড়ে। তবে ভারতের নানা স্থানে আলুবিহীন নতুন পদের এই খাবারটি পরিচিতি পায় ভিন্ন ভিন্ন নামে। কোথাও একে ডাকা হতো চিবাড়া নামে, কোথাওবা একে চিব্দু কিংবা ভূষো নামেও পরিচিতি পেতে দেখা গেছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগে ইংরেজদের পাশাপাশি আরো অনেক ইউরোপীয় নাগরিকের আগমণ ঘটেছিলো ভারতবর্ষে। তাদের মধ্যেও বেশ মুখরোচক খাদ্য হিসেবে স্থান করে নেয় এই চুড়া। তাদের হাত ধরে এর বিস্তার ঘটে ইউরোপের নানা দেশে। অনেক ইউরোপীয় এলাকায় বেশ জনপ্রিয় এই খাবারকে ডাকা হয় ভিন্ন ভিন্ন নামে। যেমন, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের অধিবাসীরা প্রথমে মুম্বাই থেকে

উৎপত্তিলাভ করা এই খাবারকে ডাকে বোম্বে মিক্স হিসেবে।
মায়ানমারের মানুষের মাঝে ‘সারকালে চিই’ নামে পরিচিত এই ধরণের একটি খাবারের জনপ্রিয়তা মন্দ নয়। শ্রীলঙ্কাতে উত্তেজক গাছ-গাছড়ার সাথে বিভিন্ন ধরণের শুকনো কারি লিফ মিশিয়ে তার সাথে কাসাবা যুক্ত করে বিক্রি করা হয়। এর সাথে সিঙ্গাপুরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ‘ক্যাকাং পুতিই’ এর বেশ মিল রয়েছে। তবে নেপালের সেই ডালমুঠ কিংবা পশ্চিম বাংলা বা আমাদের বাংলাদেশে যে চানাচুর বিক্রি হতে দেখা যায় তার সাথে তামিল নাড়– ও কেরালার মিক্স্রারের বেশি মিল রয়েছে। সেখানে পাকোড়া, চানা ডাল, বুন্ধি, কারাসেভ, মুরুক্কু আর ওমাপড়ি একসাথে মিশিয়ে ব্রিক্রি হতে দেখা যায় যা খাবার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু। সবথেকে অবাক কাণ্ড এই চানাচুর আফ্রিকার দেশ কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, তাঞ্জানিয়া, উগান্ডা এমনকি খোদ দক্ষিণ আফ্রিকাতে পর্যন্ত বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে চিবদো বা চিবরা নামে। তবে এখানে ঝালের বদলে মিষ্টি জাতীয় চানাচুরও বিক্রি হতে দেখা যায়। আর দক্ষিণ আফ্রিকার ‘কাপে মালায়’ সম্প্রদায় এই খাবারকে তাদের মাঝে জনপ্রিয় করেছে ‘শ্লাঙ্গেতজিয়েস’ নামে।
Image result for Bombay mix
বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী এ খাবারটির সবথেকে মজার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একে আপনি মুঠো করে খেতে পারবেন। অনেক ক্ষেত্রে প্রচুর ঝালমশলা যুক্ত হলে সেটা খাওয়ার জন্য চামচ ব্যবহার করা হলেও তার সাথে চানাচুরের মূল ঐতিহ্য খাপ খায়না। আর এভাবেই চানাচুর স্থান করে নিয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এমনকি আমেরিকাতে পর্যন্ত। সেখানে যে কয়টি ভারতীয় শুকনা খাবারের আইটেম দেখতে পাওয়া যায় তার মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হচ্ছে এই চানাচুর। পাকিস্তানেও এই খাবারটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে চিবাড়া বা নিমকো নামে যার সাথে লক্ষেèৗ অঞ্চলে প্রচলিত নামের বিশেষ মিল রয়েছে। এই জাতীয় একটি অনেক বেশি ঝাল আর কুড়মুড়ে ভাজা ডালের ডিশ আমেরিকায় প্রচলিত হয়েছে গুজরাটি মিক্স বা গথিয়া মিক্স হিসেবে। এখানে চানাচুরের সাথে প্রচুর চীনাবাদাম আর অসহ্য রকম ঝাল দেয়া হয়ে থাকে। একই ধরণের খুব ঝাল একটি খাবার অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে ভুজিয়া মিক্স হিসেবে।
সমসাময়িককালে বেশিরভাগ মানুষের কোলেস্টরোল ভীতি এই আলুবিহীন ভারতীয় খাবার চানাচুরকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। খুব সম্ভবত উড়িয়া শব্দ চানাচুড়ার অপভ্রংশ থেকে বাংলায় চানাচুর শব্দটি এতো জনপ্রিয় হয়ে থাকতে পারে। তবে এই বিষয় নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা না হওয়ার নিশ্চিত করে কিছু না বলাটাই শ্রেয়। আসলে বিভিন্ন রকম ডালভাজার সাথে, অসাধারণ স্বাদের কিছু মশলা, তেল, ঝাল, সবুজ মটরভাজা, চীনাবাদাম, কর্ন আর লবনের মিশ্রণে তৈরি হওয়া সুস্বাদু একটি কুড়মুড়ে খাবারকেই আমরা জানি জানি চানাচুর হিসেবে। মীর জুমলার সময়কালে আগত বাহিনীর সাথে বেশ কয়েকজন বাবুর্চির আগমণ ঘটেছিলো বর্তমান বাংলাদেশে। একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলে সেই সময় থেকেই বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এই খাবারটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠার শেকড় খুঁজে নেয়া যেতেই পারে। সময়কাল বিচারে তাই অন্যসব মোগলাই খানার সমসাময়িক হবে এই চানাচুর। এর সময়কাল তাই কমপক্ষে ৪০০ বছর ধরে নেয়াটা বোধকরি ভুল হবে না।

Saturday, 10 March 2018

ভারতের ইতিহাসের কয়েকটি বিস্ময়কর রহস্য – যা আজ অবধি অমিমাংসিত !!!

ইতিহাস আমাদের জানায়, শেখায়। কিন্তু ইতিহাসের এমন কিছু বিষয় আছে যা সকলের কাছে অজানা। কিছু রহস্য সাম্প্রতিক, আবার কোনটা শতবর্ষের পুরনো- উত্তরের অপেক্ষায়। ভারতবর্ষেরও এমন কিছু প্রহেলিকা রয়েছে যার কোন সমাধান কয়েক প্রজন্ম ধরে অনুসন্ধান ও গবেষণা করেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এবার এমনই অমীমাংসিত ও ব্যাখ্যাতিত কিছু রহস্যের বিষয়ে জানা যাক যা পুরো ভারতবর্ষে ছেয়ে আছে। যদি এই রহস্যের কোন সমাধান পাঠকদের কাছে থেকে থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্স এ লিখতে পারেন।

ইনডাস ভ্যালি(মহেঞ্জোদারো) সভ্যতার অন্তর্ধান---



Source: Crystalinks
ইনডাস ভ্যালি সভ্যতা রহস্য ভারতের সব থেকে প্রাচীন রহস্য হিসেবে বিবেচিত। মিশরীয় এবং মেসপটেমিয়ান সভ্যতা থেকেও বৃহৎ এ সভ্যতাকে ঘিরে রয়েছে হাজার প্রশ্ন, যা আজ পর্যন্ত রহস্যে ঘেরা। ইনডাস সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতাদের পরিচয় এবং ভগ্নাবশেষ থেকে পাওয়া শিলালিপি গুলোর অর্থ এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হল এই যে, এ সভ্যতার সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহ প্রায় একই সময়ের মধ্যে ধ্বংস হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে অনেক মতবাদ প্রদান করেছেন কিন্তু কোন মতবাদই শেষ পর্যন্ত কোন উপসংহার টানতে পারেনি।

চারামা গ্রামের গুহায় এলিয়েন--


Source: Ancient UFO
ছাত্তিসগর প্রদেশের বাস্তার জেলার চারামা গ্রামের এক গুহায় প্রাচীন দেয়াল চিত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। চিত্র সমুহের আবিষ্কারক, পুরাতত্ত্বজ্ঞ জে আর ভগত এর মতে, ছবিগুলো এমন এক প্রাণীর বর্ণনা দেয় যাদের দেহাবয়ব চেহারাবিহীন মানুষের মত। একই সাথে কিছু উড়ন্ত চাকতির মত জিনিসের ছবিও আছে। মজার ব্যাপার হল, চারামা গ্রামের আশেপাশে সেই ছোট “রোহেলা” মানুষদের নিয়ে কিছু কাহিনী রয়েছে, যারা উড়ন্ত চাকতি থেকে নেমে দু-একজন গ্রামের মানুষ ধরে নিয়ে যেত। এ সকল আবিষ্কারগুলোর উপর গবেষণা চালানোর জন্যে ছাত্তিসগর ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিওলজি অ্যান্ড কালচার , নাসা এবং ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অরগানাইজেশন এর কাছে প্রস্তাব করেছে।

বিহার এর সন ভাণ্ডার গুহা--


একটি মাত্র বিশাল পাথর, তার মাঝে খনন করে বানানো বিহার এর সন ভাণ্ডার গুহা কে ধরে নেয়া হয় মগধের রাজা বিম্বিসারা এর ধন সম্পদে পৌঁছানোর পথ, যিনি নিজের ধন দৌলত লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করতেন। কথিত আছে, যখন রাজা বিম্বিসারাকে তার পুত্র অজতশত্রু বন্দী করেছিলেন, তখন রাজার স্ত্রী স্বামীর নির্দেশে সমস্ত ধনদৌলত এই গুহায় গোপন করেছিলেন। ধরে নেয়া হয়, গুহার পশ্চিম দেয়ালের গায়ে প্রাপ্ত দুর্বোধ্য কিছু লিপি সমুহ সেই দৌলতে পৌঁছানোর তথাকথিত সূত্র। ইংরেজরা একবার কামান-গোলা দিয়ে সেই পথ বের করার প্রয়াস চালিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু শুধু মাত্র গোলার কালো দাগ দেয়া ছাড়া র কিছুতে সফল হয়নি।
ভারতের গুপ্ত সংঘ

৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি-



ভারতবর্ষের “ইলুমিনাটি” সংস্করন রহস্যময় ‘৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি’ পৃথিবীর সব থেকে শক্তিধর গোপন সংঘ হিসেবে বিবেচ্য। ইতিহাস বলে, এই সংঘ খোদ সম্রাট অশোক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩ সালে, কালিঙ্গার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, যে যুদ্ধে মারা গিয়েছিল প্রায় ১লক্ষ মানুষ। এই ৯ ব্যক্তির প্রত্যেকজনের কাছে গচ্ছিত ছিল ১টি করে বই, যে বইগুলোর বিষয় ছিল সময় অতিক্রম করা, অনুজীব বিদ্যা এবং মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধবিদ্যা। এই ৯ জন মানুষের আসল পরিচয় এখন পর্যন্ত অজানা। ধারনা করা হয় যে, এই গোপন সংঘ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সংরক্ষিত এবং আজ অবধি এই সংঘ বিদ্যমান।

মীর ওসমান আলীর গুপ্তধন--


হায়দ্রাবাদ এর আসাফ জাহ রাজবংশের সপ্তম এবং সর্বশেষ নিজাম মীর ওসমান আলী খান বিখ্যাত ছিলেন তার নিজস্বতা এবং অত্যাশ্চর্য জহরত ও দৌলত এর জন্য। ১৯৩৭ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে এবং বলা হয় থাকে যে, মীর ওসমান আলী ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। উনার মৃত্যুর পর তাঁর ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং বিখ্যাত নিজাম জহরত এর সিংহভাগই উদ্ধৃত করা সম্ভব হয়নি। অনুমান করা হয় যে, হারিয়ে যাওয়া ধন দৌলত এখন ও লুকিয়ে আছে কোঠি প্রাসাদের গুপ্ত কুঠুরিতে, যে প্রাসাদে নিজাম জীবনের বেশিরভাগ অংশ কাটিয়েছেন।

লামা তেনজিন এর ৫০০ বছরের পুরনো মমি


হিমালয় পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত ছোট একটি গ্রাম ঘুয়েন। এই গ্রামে স্ব-বশ্যকরণ (self-mummification) এর প্রাচীন এক অদ্ভুত রীতির কথা জানা গেল। এই গ্রামেই একটি ছোট কংক্রিটের ঘরে পাতলা কাঁচের বাক্সে সংরক্ষিত আছে ৫০০ বছর আগের মমি। পনেরশ শতাব্দীর বৌদ্ধ ভিক্ষু সাংহা তেনজিন এর মমিটি এতটাই সুসংরক্ষিত যে মমিটির চামড়া এবং মাথার চুল দুইই অবিচ্ছিন্ন। সম্ভবত সাংহা তেনজিন এর দেহ আশ্চর্যজনকভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে মমিতে পরিণত হয়েছে।

জয়গর কেল্লার রাজভাণ্ডার--


জয়গর কেল্লার ইতিহাস ধনদৌলত আর ষড়যন্ত্রের গল্প কাহিনিতে পরিপূর্ণ। ধারনা করা হয় যে, সম্রাট আকবর এর সেনাপতি মান সিংহ আফগানিস্তান জয়ের পর লুটের সামগ্রী জয়গর কেল্লায় লুকিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৭৭ সালে যখন ভারতে “জরুরি অবস্থা” চলছিল, তখন জয়গর কেল্লা পুনরায় আলোচনায় আসে। ষে সময় গোপন তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে পুরো কেল্লায় পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে লুকনো দৌলত এর খোঁজ করা হয়। কোন সম্পদ পাওয়া না গেলেও এই ঘটনা সকলের কাছে ব্যাপক ভাবে সাড়া জাগায়। মহারানী গায়েত্রি দেবীর এ প্রিন্সেস রিমেম্বারস এ এই ঘটনার উল্লেখ আছে।

নানা সাহেব এর অন্তর্ধান


১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের অন্যতম নায়ক নানা সাহেব ব্রিটিশদের কাছে পরাজয়ের কিছুদিন পরেই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। পরবর্তীতে নানা সাহেব বা তাঁর কথিত সম্পদ যার বর্তমান মূল্য হত লক্ষাধিক, কোন কিছুরই খোঁজ পাওয়া যায় নি। ইতিহাসবিদদের মতে, নানা সাহেব কখনই বন্দী হননি, বরং তিনি তাঁর সম্পদের বেশ কিছু অংশ নিয়ে নেপালে পালিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও এই ধারনার কোন প্রমান নেই। আজ দেড়শ বছর পরেও নানা সাহেবের বা তাঁর সম্পদের গায়েব হওয়া রহস্যের কোন উত্তর পাওয়া যায় নি।

ভুতুরে গ্রাম কুল্ধারা


জয়সালমির থেকে ২০কিমি পশ্চিমে পলিওয়াল ব্রাম্মণদের কুল্ধারা গ্রাম কয়েকশ বছর আগে অত্যন্ত সমৃদ্ধিশালী এক গ্রাম ছিল। কিন্তু এক ভয়াল রাতে পুরো গ্রামের ১৫০০ জন মানুষ কোন চিহ্ন না রেখে উধাও হয়ে গেল। কথিত আছে, কুশাসক সেলিম সিংহের অন্যায্য খাজনার হাত থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের লোকজন গ্রাম ত্যাগ করে এবং যাবার সময় এলাকাটিকে অভিশপ্ত করে রেখে যায়। এ কথাও শোনা যায় যে, যারাই এই এলাকায় বসতি স্থাপনের চেষ্টা চালিয়েছে, তাদের সকলের ভাগ্যে জুটেছে নির্মম মৃত্যু। এই অভিশাপের ফলে আজ পর্যন্ত কুল্ধারাতে কোন জনবসতি নেই।
চাপাতি আন্দোলন
১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সময় পুরো দেশ জুড়ে চাপাতি বা রুটি বিতরণের ঘটনা কি কারণে ঘটেছিল সেই রহস্য আজ পর্যন্ত অমীমাংসিত। যদিও সাম্প্রতিক কিছু গবেষণামতে ধারনা করা হয় যে কলেরায় আক্রান্ত মানুষদের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা ছিল এই রুটি বিতরণ। তবে যে বিষয়ে সকলে একমত তা হল, চাপাতি বিতরণের এই ঘটনা তৎকালীন ব্রিটিশ অধ্যুষিত ভারতবর্ষে তুমুল সাড়া জাগিয়েছিল।

নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসুর অন্তর্ধান


নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসুর মৃত্যুর পেছনের চক্রান্ত এবং এর গোপনীয়তার আবরণ তাঁর মৃত্যুকে করে তুলেছে রহস্যজনক। নেতাজির ফ্লাইট তাইপেই থেকে টোকিও ছেড়ে যাবার পর কি ঘটেছিল ? নেতাজি নিখোঁজ হবার কয়েক বছর পর শোনা যায় যে তিনি উত্তর ভারতে সন্ন্যাসীর বেশে বাস করছেন। এই তথ্যের কোন ভিত্তি না থাকার পর ও পরবর্তীতে পুনরায় গুজব ছড়ায় যে, উত্তর প্রদেশের ফাইজাবাদ এর এক সাধু গুমনামি বাবা আসলে নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসু।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর অকাল প্রয়াণ


ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের দুই বছরের মাথায় লাল বাহাদুর শাস্ত্রী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে টাসকেন্ট এ সন্দেহজনক পরিস্থিতির মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে বলে ধারনা করা হয়। মৃতদেহে কালশিটে আর কাটা দাগ অনেক প্রশ্ন জাগিয়েছিল তো বটেই, ময়নাতদন্ত না করায় তাঁর মৃত্যু রহস্য আরো ঘনীভূত হয়েছে নিঃসন্দেহে।

শান্তি দেবীর পুনর্জন্ম


ভারতের প্রথম সর্বজন স্বীকৃত এবং তথ্যসমৃদ্ধ পুনর্জন্মের ঘটনা ঘটে দিল্লীর এক ছোট, অখ্যাত এলাকায়। পুনর্জন্ম গ্রহনকারীর নাম শান্তি দেবী। শান্তি দেবী নিজ পরিবারের কাছে আগের জন্মের বাড়ি এবং পরিবার সম্পর্কে যা তথ্য দিয়েছেন, সে সকল তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। পুনর্জন্মের এই ঘটনা মহাত্মা গান্ধীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তদন্ত করার জন্যে কমিটি গঠন করেন। পূর্বজন্মের বাসভূমে যাবার সময় শান্তি দেবীর সাথে মহাত্মা গান্ধী নিজেও গিয়েছিলেন।

প্রহ্লাদ যানি যোগী যিনি অন্নজল ভোগ করেননা


আহমেদবাদ থেকে ২০০কিমি দূরে আম্বাজি নামক স্থানে এক সাধু বাস করেন যিনি চুনরিওয়ালা মাতাজি নামে বেশি পরিচিত। ১১ বছর বয়স থেকে প্রহ্লাদ যানি দেবী আম্বার ভক্ত এবং দাবি করেন যে দেবী আম্বা তাকে না খেয়ে থাকার অতিমানবীয় ক্ষমতায় আশীর্বাদিত করেছেন। তিনি দাবি করেন, ১৯৪০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এক দানা খাবার বা এক ফোঁটা জল তিনি মুখে তোলেননি। ২০০৩ সালে ২১ জন মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ ধারাবাহিক কিছু নিরীক্ষা চালিয়েছিল কিন্তু চুনরিওয়ালা মাতাজির না খেয়ে বেচে থাকার রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়।