Monday, 9 April 2018

গরমে রাস্তার খাবার থেকে সাবধান

মাথার উপরে কড়া সূর্য, গলগল করে ঘাম বেরোচ্ছে। অফিসপাড়ায়, ফুটপাথে শরবতের দোকানের সামনে পেলেই ঢকঢক করে খেয়ে নিলেন এক গ্লাস।
আবার দুপুরের খাবার খেলেন রাস্তার পাশের কোনো হোটেল থেকে। এরকম হরহামেশাই হচ্ছে। তবে রোদ মাথায় ঘোরাঘুরির কাজে শরীরের দিকটা মাথায় রাখতে হবে। গরমে যাই খাবার খান না কেনো সাথে প্রচুর জল পান করুন। আর ব্যাগে স্যালাইন, রোদ চশমা আর ছাতা রাখুন।


এ সময়ে হোটেল-রেস্টুরেন্টে তৈরি খাবার, জল , রাস্তার পাশে তৈরি নানা শরবত, পানীয়, হারবাল জুস, আইসক্রিম ও খাবার একেবারেই বর্জন করুন। কারণ, এগুলো প্রত্যেকটি একেকটি জটিল রোগের আধার যা আাপনার স্বাস্থ্যের সুরক্ষার চেয়ে ক্ষতিই করবে বেশি। তাই রাস্তায় তৈরি খাবার, শরবত, আখের রস, বরফ জল, আইসক্রিম প্রভৃতি খাওয়ার আগে নিশ্চিত হন সেগুলো কতটা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি।

 তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, রাস্তার খোলা খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। এসব খাবারে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। গরমকাল মানেই ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির আদর্শ সময়। খাবার বা পানিবাহিত অসুখ, যেমন টাইফয়েড, জন্ডিস এসব অনাকাক্ষিত রোগ এসময় বেশি হয়। সে জন্যই রাস্তার শরবত, খোলা খাবার বা কাটা ফল খাওয়া উচিত নয়।

 একসঙ্গে বেশি পরিমাণ খাবার না খেয়ে বারবার অল্প পরিমাণে হালকা খাবার খাওয়া উচিত। 
এ সময় শরীর থেকে ঘাম হয়ে শরীরের দরকারি লবণ-জল ঝরে পড়ে। তাই গরমে মৌসুমি সবজি ও ফল যেমন- লাউ, পেঁপে, পটল, ঝিঙে বা তরমুজ, আম, জাম, জামরুল খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। সেই সঙ্গে ডাবের জল, টাটকা ফলের রস, শসা বেশি করে খাওয়া দরকার। বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, শিম এড়িয়ে চলুন। গরমের সময় সারাদিনের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টি ও উচ্চ ক্যালরিবহুল খাবার। বাদ দিন চর্বিসমৃদ্ধ মাছ ও মাংস। 

ফুটপাথের খাবার স্বাস্থ্যের জন্য বেশিই ক্ষতিকারক। ‘স্বাস্থ্য সচেতন’ বাঙালি অফিসযাত্রীদের জন্য ঠান্ডা লাসসি, শরবত, চিঁড়া-দই বিক্রির হার এখন এক লাফে অন্তত শতকরা ৬০ ভাগ বেড়ে গিয়েছে। যদিও তাতে পেটের রোগ থেমে থাকছে না।
ফুটপাথের কথিত স্বাস্থ্যসম্মত দই কিংবা ফলের রসকে এড়িয়ে চলতে বলছে না ডাক্তাররা। ফলের রস গরমে পচে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিছুটা তাজা ফলের রস মিশিয়ে সেই গন্ধটা কোনও মতে চাপা দিয়ে যদি বিক্রি হয়, অনেকে ধরতেই পারবেন না। তবে খাদ্যে বিষক্রিয়া হলে সেটা নিয়ে বেশ ভুগতে হতে পারে।


সাধারণত ক্লান্ত অবস্থায় খাবার হজম হতে একটু বেশি সময় লাগে। তাই দুপুরের গরমে গুরুপাক খাবার না-খাওয়াই ভাল। আবার রাস্তার পাশের কোনো হোটেল থেকে বেশি মশলা দেওয়া খাবারও ঝুঁকিপূর্ণ। এতে পেটের গোলমাল থেকে জন্ডিস বাধানোর ভয় থাকেই।

রাস্তার পাশের দোকানের ফুচকা, ভাজাপোড়া ইত্যাদি লোভনীয় হলেও গরমে তা থেকে দূরে থাকাই উচিত।

প্রচন্ড গরমের সময় রাতের খাবারও হবে খুব হালকা। ঘুমাতে যাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবারের পর্ব শেষ করুন এবং বেড টাইমে এক গ্লাস লেবু জল কিংবা এক কাপ টক দই অথবা স্কিমড মিল্ক খেয়ে ঘুমাতে যান। টক দই অত্যন্ত উপকারী। গরমে নানাভাবে টক দই খাওয়া দরকার। হাই ক্যালরি অর্থাৎ রিচ ফুড রাতে খাওয়ার অভ্যাস না থাকাই ভালো।

No comments:

Post a Comment