খাবার
শুধু খেলেই হয় না। সঠিক
স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দিষ্ট
সময়ের বিষয়টি আমলে রাখা
জরুরী। আর এটাই হলো
স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞদের
অভিমত। বাংলায় প্রচলিত একটি
প্রবাদ-'খালি পেটে
জল, ভরা পেটে ফল।'
গুরুজনদের একথাটি
আসলেই ফেলনা নয়। এ বিষয়ে কিছু
নিয়ম মেনে চললে আপনি সুস্থ্য
থাকবেন আমৃত্যু, সন্দেহ
নেই।পেটে ছুঁচোদের ডন-বৈঠক
চললে মনে হয় সামনে যা পাই,
তা-ই খেয়ে
ফেলি! যেমন ধরুন,
অনেকেরই সকালে ঘুম
থেকে ওঠার পর ভীষণ খিদে পায়।
তখন কোনো কিছু বাছবিচার না
করেই আমরা যা আছে, তা
খেয়েই কাজে যাই বা সকালবেলা
তাড়াহুড়া করে বের হওয়ার সময়
যা পেয়েছেন তাই মুখে দিয়ে
ছুটছেন কাজে। খালি পেটে সেসব
খাবার নাও সইতে পারে। খালি
পেট বলতে আসলে কোন সময়টাকে
বোঝায়? আমাদের পেটে
একটা খাবার কতক্ষণই বা থাকে?
খাবারের ধরন আর পরিপাকের
ক্ষমতার উপর নির্ভর করে অনেক
সময় খাবার পুরোপুরি হজম হতে
ছয় থেকে আট ঘণ্টা লাগলেও খাবার
গ্রহণের দুই ঘণ্টা পরই পাকস্থলী
খালি হয়ে যায় বলে বিবেচনা করা
হয়। আর খালি পেটে কিছু কিছু
কাজ করা একেবারেই উচিত নয়।
তাই স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি
ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর
প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে
কয়েকটি খাবারের নাম এখানে
দেওয়া হল, যেগুলো
খালি পেটে অবশ্যই এড়ানো উচিত।
কলা
কলার আরেক নাম-'সুপার ফুড'। তাৎক্ষণিক শক্তি জোগান দেয়ার জন্য কলার জুড়ি মেলা ভার। কলার অনেক পুষ্টিগুণও রয়েছে। খুব সহজেই সুস্বাদু এই ফল হজম হয়। তবে, কলা খালি পেটে খেলে এতে বিদ্যমান পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম খালি পেটে কলা খেলে এসব উপাদান রক্তে অন্য উপাদানগুলোর মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট করে। বিশেষ করে শরীরে ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা হৃৎপিণ্ড ও রক্তের ধমনির জন্য ক্ষতিকর।
ঝাল-মসলা শত্রু
বেশির
ভাগ বাঙালিই একটু ঝাল ঝাল
তরকারি খেতে ভালোবাসেন।সক্কালবেলা
ঘুম থেকে উঠেই একগাদা মশলাদার
খাবার খেয়ে নিলেন। গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা যদি থেকে থাকে, তাহলে
কিন্তু ফল খুবই ক্ষতিকর হতে
পারে। তবে পেট খালি থাকলে এমন
ভালোবাসা বিসর্জন দেওয়াই
নিরাপদ।সকালবেলা ঝাল মাংস
দিয়ে পরোটা কিংবা খিচুড়ির
সঙ্গে আচার খাওয়ার কথা ভাবতেই
জিভে জল চলে আসে।
ঝাল তরকারিতে অ্যাসিডিক
বিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, যা
খালি পেটে অসহনীয় জ্বালাপোড়া
তৈরি করে। পেটের ভেতরকার
পেশিতে সংকোচন হওয়ার ফলে
পেটব্যথাও হতে পারে। তাছাড়া
সকালবেলা মশলাদার খাবার খাওয়া
মানে গোটা দিনের জন্য অস্বস্তি
আর অ্যাসিড প্রায় নিশ্চিত।
আর এমনিতে মশলা যুক্ত খাবার
হজম হতেও সময় লাগে।
চা-কফি-সোডাকে ‘না’ বলুন
সকালে ঘুম থেকে উঠেই চায়ের পেয়ালায় চুমুক না দিলে অনেকের দিন শুরু হয় না। সুস্থ থাকতে চাইলে এই অভ্যাস আজই পাল্টান। চা-কফির মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন। খালি পেটে এই ক্যাফেইন বুকের মধ্যে জ্বালাপোড়া সৃষ্টির পাশাপাশি হজমেও ব্যাঘাত ঘটায়। যকৃত থেকে যকৃত থেকে বের হওয়া ‘বাইল’ এবং পাচক রস নিঃসরণ কমিয়ে দেয় এই পানীয়। ফলে হজম প্রণালির জন্য অন্যান্য খাবার হজম করা কঠিন হয়ে যায়। এছাড়া পাকস্থলিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে হতে পারে গ্যাস। তাই চা-কফি খাওয়ার আগে অন্তত কিছু খেয়ে নিন, অন্তত এক গ্লাস জল হলেও খান। সকালে সব সময় নাশতার পর চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। খালি পেটে চা-কফি শরীরে সেরাটোনিনের কমতি ঘটায়, ফলে সারা দিন মন-মেজাজ খারাপ থাকতে পারে।
অভ্যাসটি
ছাড়তে পারলে ভালো, তবে
ছাড়া সম্ভব না হলে কফিতে দুধ
বা ক্রিম মিশিয়ে নিন। দুধের
ফ্যাট নেতিবাচক প্রভাবগুলি
কমিয়ে দেয়। কফির ক্ষেত্রে
প্রাকৃতিক কফিকে বেশি প্রাধান্য
দিন।এমনকি ক্যাফেইনবিহীন
কফিও খালি পেটে এসিড তৈরি করে
যা বুকে ব্যথাসহ পরিপাকজনিক
বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টির কারণ
হয়। খালি পেটে কফি খেয়ে সকালের
নাস্তা না করলে সেরোটোনিনের
ঘাটতি দেখা দেয়। এতে করে পুরো
দিনটা মনমরা হয়ে থাকতে হয়।
খুব
গরম লাগছে, তাই ঘুম
থেকে উঠেই বসে গেলেন এক গ্লাস
কোল্ডড্রিঙ্কস নিয়ে—মোটেই
ভালো নয়। কোল্ডড্রিঙ্কসে
থাকা কার্বন-ডাই-অক্সাইড
কিন্তু আপনার পেটের মিউকাস
মেমব্রেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে
পারে এবং পাকস্থলীতে রক্ত
সঞ্চালনও কমিয়ে দেয়। এর ফলে
খাবার হজম হতে দেরী হয় ও হজমের
নানা সমস্যা হয়।
সোডা-কোল্ডড্রিংকে
যে চিনি বা আর্টিফিশিয়াল
সুইটনার থাকে, খালি
পেটে খেলে সেগুলি শরীরের পক্ষে
যথেষ্টই ক্ষতিকারক হতে পারে।
কারণ, এই আর্টিফিশিয়াল
সুইটনারের মধ্যে বিভিন্ন
কার্বোনেটেড অ্যাসিডস থাকে,
যেগুলি পাকস্থলীর
অ্যাসিডের সঙ্গে মিশে গিয়ে
পেট গোলানো অথবা বমি, বমি
ভাব এবং বুক-জ্বালাও
শুরু হতে পারে।
টমেটো
অনেকে টমেটো
খেতে ভালোবাসেন। কিন্তু
খালি পেটে একদম টমেটো খাবেন
না। পুষ্টিগুণে ভরপুর টমেটোর
মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
পেকটিন ও ট্যানিক অ্যাসিড।
খালি পেটে টমেটো খেলে পেকটিন
ও ট্যানিক অ্যাসিডের সঙ্গে
গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিডের
বিক্রিয়া ঘটে থাকে। এতে
পাকস্থলীতে এক অদ্রবণীয় জেলের
সৃষ্টি হয়, যেখান
থেকে পরবর্তী সময়ে পাকস্থলীতে
পাথর হয়। এ ছাড়া খালি পেটে
টমেটো খেলে গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা হতে পারে।
লেবুজাতীয় ফল
খালি পেটে টকজাতীয়
কিংবা ‘সাইট্রাস’ (কমলা)
ধরনের ফল পরিহার করাই
ভালো। টকজাতীয় ফল, যেমন
আমলকী, করমচা,
তেঁতুলে প্রচুর অ্যাসিড
থাকে। এতে পেট ও বুক জ্বালাপোড়া
করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সৃষ্টি
হয়। খালি পেটে ‘সাইট্রাস’ ফল
আপনার শৈষ্মিক ঝিল্লিকে
(মিউকাস মেমব্রেন)
ক্ষতিগ্রস্ত করতে
পারে মারাত্মকভাবে, এ
ছাড়া বুক জ্বালাপোড়া ও
গ্যাস্ট্রিকের সৃষ্টি হয়।
ফলে অস্বস্তি লাগতে পারে।
এছাড়া ফলের
অতিরিক্ত আঁশ ও ফ্রুকটোজ হজম
পদ্ধতি ধীর করে দেয়। ফলে হজমে
গণ্ডগোল বাঁধতে পারে সারাদিনই।
লেবুজাতীয় ফল যেমন কমলার জুসে
এসিড ও শক্ত ফাইবার থাকে। খালি
পেটের জন্যে এগুলি ক্ষতিকর।
এসব ফলের রস খালি পেটে খেলে
গ্যাসজনিত সমস্যার ঝুঁকি
থাকে।
খালি পেটে ফলের
রস খেতে হলে ১:১ বা
২:১ অনুপাতে রসের
সাথে পানি মিশিয়ে নিলে ভালো
হয়। তবে কেবলমাত্র লেবুজাতীয়
ফলই না, খালি পেটে
ফল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা
অবলম্বন করা উচিত।
দুগ্ধজাত খাবার পরিহার করুন
খালি পেটে আপনি এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন, কিন্তু দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়াই ভালো। গাজান প্রক্রিয়ায় বানানো দুগ্ধজাত খাবার, যেমন দই; এ ধরনের খাবার খালি পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড তৈরি করে, যা দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে ল্যাকটিক অ্যাসিডের গুণাগুণ নষ্ট করে যা দইতে থাকা ল্যাক্টিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে ও আপনার শরীরের ওভার অল যে স্বাভাবিক ব্যাকটেরিয়াল সিস্টেম, তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। । এতে অ্যাসিডিটির সৃষ্টি হয়। তাই দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার আগে অন্য কিছু খেয়ে নিন। দই খাবার পর যত খুশি খান, আপত্তি নেই।
মিষ্টি
মিষ্টি খেতে তো বাঙালী মাত্রেই ভালবাসে। আপনিও যে ভালবাসেন তা জানি। কিন্তু সকালে খালি পেটে মিষ্টি? কক্ষনো না। মিষ্টি আপনার শরীরে ইনসুলিনের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে আপনার অগ্ন্যাশয়ের ওপর চাপ পড়ে। এর ফলে আপনার ডায়াবেটিসও হয়ে যেতে পারে।
সকালে খালি পেটে
চিনি খাওয়ার অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে
যকৃত ও অগ্ন্যাশয়ের ক্ষতি
করে। এমনটি খালি পেটে পেস্ট্রি,
ডোনাট বা এই ধরনের
খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকা
উচিত। কারণ এসব খাবারে
প্রক্রিয়াজাত চিনি ছাড়াও
ব্যবহার করা হয় ইস্ট। এগুলো
পাকস্থলির আস্তরে জ্বালাপোড়া
তৈরি করে। পাশাপাশি হতে পারে
পেট-ফাঁপাভাব।
শসা ও অন্যান্য সবুজ সবজি
প্রচলিত ধারণা
হলো, সবুজ শাকসবজি
সব সময়ই স্বাস্থ্যের জন্য
ভালো। এ নিয়ে কোনো বিতর্ক
নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো,
কোন অবস্থায় ভালো?
এগুলো সবই খাওয়া শরীরের
পক্ষে ভালো, কিন্তু
ভরা পেটে। ঘুম থেকে উঠে খালি
পেটে শসা খেয়ে নিলেন এটা কিন্তু
মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ
এইসবে প্রচুর পরিমাণ অ্যামাইনো
অ্যাসিড থাকে যা খালি পেটে
খেলে অম্বল, তলপেটে
ব্যথা ইত্যাদির কারণ হয়। তাই
খালি পেটে এসব খাওয়ার অভ্যেস
থাকলে আজই ছাড়ুন।
সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর অ্যামিনো অ্যাসিড। এই অ্যাসিড শরীরের জন্য যেমন ভালো, তেমনি খালি পেটে বিষম গ্যাস্ট্রিকের সৃষ্টি করতে পারে। শাকসবজির ‘ফাইবার’ ঠিকভাবে হজম না হলে তলপেটে ব্যথাও হতে পারে।
সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর অ্যামিনো অ্যাসিড। এই অ্যাসিড শরীরের জন্য যেমন ভালো, তেমনি খালি পেটে বিষম গ্যাস্ট্রিকের সৃষ্টি করতে পারে। শাকসবজির ‘ফাইবার’ ঠিকভাবে হজম না হলে তলপেটে ব্যথাও হতে পারে।
মদপান
মদপান এমনিতেই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। খালি পেটে খাওয়া মানে বিষপান। এতে কিডনি, লিভার ও হৃৎপিণ্ড ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অ্যালকোহল পানের আগে খাবার না খেলে তা আপনার শরীরের অ্যালকোহল শোষণের ক্ষমতাকে দ্বিগুণ করে দেয়। পাশাপাশি শরীরে অ্যালকোহলের প্রভাব কমার সময়কালটাও বেড়ে যায়। ফলাফলস্বরূপ হ্যাংওভার দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং লিভার, কিডনী ও হৃৎপিণ্ডের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
পরিস্থিতি বিবেচনা
করে অ্যালকোহল না খেয়ে থাকার
অবস্থা না থাকলে ঠাণ্ডা
নন-কার্বোনেটেড
পানীয় পানের দিকে গুরুত্ব
দিন। এসকল পানীয়কে শরীর
তুলনামূলকভাবে ধীরে ধীরে
শোষণ করে। সবচেয়ে ভালো হয়
অ্যালকোহল খাওয়ার আগে অন্তত
হালকা কিছু একটা হলেও খেয়ে
নিলে।
ব্যথার ওষুধ
খালি পেটে কখনোই
এসপিরিন, প্যারাসিটামল
বা এ জাতীয় কোনো ব্যথার ওষুধ
খাওয়া উচিত নয়। এতে করে তাদের
কার্যকারীতা কমে যাবার পাশাপাশি
ভয়াবহরকমের স্বাস্থ্যঝুঁকির
সম্ভাবনা থাকে। এ থেকে সবচেয়ে
বেশি যে সমস্যা হয় সেটি হলো
জঘন্যরকমের গ্যাস্ট্রিকের
ব্যথা।
দুধ এসকল ক্ষেত্রে
বেশ ভালো কাজ করে। প্যারাসিটামল
বা এসপিরিন জাতীয় ওষুধগুলির
ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেয়
দুধ। তবে দুধ না থাকলে ওষুধগুলি
খাওয়ার আগে পানি দিয়ে ভালোভাবে
ধুয়ে নিলেও হয়।
চুইংগাম
চুইংগাম চাবানোর
সময় যে এসিডটি নিঃসরিত হয় তা
পাকস্থলীর আবরণ নষ্ট করে দেয়।
দশ মিনিটের বেশি চুইংগাম
চাবালে তা অনেকসময় গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যার কারণ হয়। এছাড়াও
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে
যে যারা বেশি চুইংগাম চাবায়
তারা ফলমূলের চেয়ে জাঙ্ক ফুডের
প্রতি বেশি আগ্রহী হয়।
যেসকল চুইংগামক
মিষ্টি করতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক
উপাদান ব্যবহার করা হয় সেগুলি
চিনি, সাইক্লামেট
বা এসপারটেম ব্যবহার করে
মিষ্টি করা চুইংগামগুলির
চেয়ে কম ক্ষতি করে। দশ মিনিটের
বেশি চুইংগাম চাবাবেন না।
এমনকি পেট ভরা থাকলেও না!
ঘুমানো
ক্ষুধা এবং শরীরের
গ্লুকোজের ঘাটতি আমাদের ঘুমে
ব্যাঘাত ঘটায়। মজার ব্যাপার
হলো, রাতে কম ঘুম
হলেও পরেরদিন আমাদের বেশি
ক্ষুধা লাগে।
খালি পেটে ঘুমানো
যেমন খারাপ তেমনি ঘুমের ঠিক
আগে গলা পর্যন্ত খেয়ে ঘুমাতে
যাওয়াটাও মোটেও ভালো না।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো সমাধান
হলো দুধ বা দুগ্ধজাতীয় কিছু
একটা খাওয়া। কারণ এসব খাবারে
প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম
ও ক্যালসিয়াম থাকে। এই উপাদানগুলি
ভালো ঘুমের জন্যে সহায়ক।
মাত্রাতিরিক্ত
শারীরিক ব্যায়াম
অনেকেই মনে করেন
যে খালিপেটে ব্যায়াম করলে
বেশি ক্যালোরি ক্ষয় হয়। সত্যিটা
হলো, এই বাড়তি ক্যালোরি
শরীরের চর্বি কমাতে তেমন কোনো
ভূমিকা রাখতে পারে না। তবে
এতে করে মাসলের পরিমাণ কমে।
শরীরে পর্যাপ্ত এনার্জি না
থাকায় ব্যায়ামের তীব্রতাও
কমে যায়।
এসব ক্ষেত্রে
সবচেয়ে ভালো সমাধান হলো হাঁটা
বা দৌড়ানো। আপনার পরিপাকজনিত
সমস্যা থাকলে যেকোনো ব্যায়ামের
পূর্বে কিছু একটা খেয়ে নেওয়া
ভালো কারণ শারীরিক ব্যায়ামের
সময় পেটে গ্যাস সৃষ্টিকারী
তরল বের হয়। খালি পেটের জন্যে
সেটি ক্ষতিকর।
ঝগড়া
বিভিন্ন গবেষণায়
দেখা গিয়েছে যে ক্ষুধা আমাদেরকে
বিক্ষুব্ধ, অস্থির
এবং অধৈর্য্য করে তোলে। এটি
হয় কারণ নিজেকে নিয়ন্ত্রণে
রাখার জন্যেও শক্তির প্রয়োজন
হয়। আর খাওয়াদাওয়া না করলে
এই শক্তিটা থাকে না।
কোনো আলোচনার
আগে খাওয়াদাওয়ার সময় না থাকলে
উষ্ণ কিছু একটা খেয়ে নিন আর
যার সাথে আলোচনায় জড়াচ্ছেন
তাকেও কিছু একটা খাওয়ান। এতে
করে আলোচনাটি আরো বন্ধুত্বপূর্ণ
হবে।
যে সমস্ত খাবার খালি পেটে খাবেন
বাদাম
সকালে উঠে বাদাম
ভেজানো খাবার অভ্যেস আছে নাকি?
যদি থাকে, তাহলে
অভ্যেসটা ছাড়বেন না। বাদাম
কিন্তু আপনার হজমের সমস্যাকে
দূর করে ও পেটে পি.এইচ.-এর
মাত্রাও স্বাভাবিক রাখতে
সাহায্য করে।
মধু
সকালবেলা খালি
পেটে একচামচ মধু কিন্তু আপনার
সারাদিনের এনার্জি বুস্টার
হয়ে উঠতে পারে! কীভাবে?
মধু আসলে আমাদের
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে
বাড়িয়ে দেয় ও ‘ফিল গুড’ হরমোন
সেরাটোনিনের মাত্রাও বাড়িয়ে
দেয়। ফলে এক চামচ মধুই সকালে
উঠে খেয়ে দেখুন। দেখবেন গোটা
দিনটা আপনার ওই ‘ফিল গুড’
এফেক্টেই কেটে গেল!
তরমুজ
তরমুজ আমাদের
শরীরে প্রচুর জলীয় উপাদান বা
ফ্লুয়িড সরবরাহ করতে পারে।
তাছাড়া তরমুজে প্রচুর পরিমাণে
লাইকোপেন থাকে, যা
আপনার চোখ ও হার্টের জন্য ভালো
হতে পারে। তাই গরমের দিনে খালি
পেটে তরমুজ খান। শরীরের জন্য
প্রয়োজনীয় জলও পাবেন আর সারাদিন
তরতাজাও থাকবেন!
ডিম
সকালে ডিম খাওয়াও
কিন্তু আপনার রোজকার ক্যালোরি
গ্রহণের মাত্রা কমাতে পারে।
তাই ব্রেকফাস্টে ডিম কিন্তু
আপনার জন্য অটোমেটিক চয়েস
হতেই পারে।
ওটস
আমরা বাঙালীরা
তো মোটামুটি এখন সাহেবি
ব্রেকফাস্টেই অভ্যস্ত হয়ে
উঠেছি। তাই ব্রেকফাস্টে ওটসও
কিন্তু আপনার জন্য দারুণ একটা
অপশন হতে পারে। আপনার পেটের
মধ্যে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড
তৈরি হলে তা আপনার পাকস্থলীর
প্রাচীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
ওটসে কিছু দ্রবণীয় ফাইবার
থাকে যা আপনার কোলেস্টেরলের
মাত্রাকে কম করতেও সাহায্য
করে।
তাহলে জেনে নিলেন
সকালে উঠে খালি পেটে কি কি
খাওয়া যায় আর কি কি খাওয়া যায়
না! এবার থেকে সেই
অনুযায়ী আপনার ফাস্টকে ব্রেক
করুন। দেখবেন আপনার শরীরও
সারাদিন সুস্থ থাকছে, আর
আপনিও।
No comments:
Post a Comment