একদিন যদি
তাকিয়ে দেখেন সূর্যের চারপাশ ঘিরে তৈরি হয়েছে একটি নতুন বড়সড় বলয়, তখন
আপনার অনুভুতি কি হবে একবার ভাবুন তো। ভাবছেন এমন আজগুবি কথা আপনাকে কেন
শোনাচ্ছি? কারণ যা বলছি তা হয় ঘটতে দেখার কিছু হলেও সম্ভাবনা আছে আপনার।
পৃথিবীর নানা দেশের নানান স্থানে দেখতে পাওয়া গেছে এমন বলয়।
সান ডগস হচ্ছে গোধূলির প্রহরের এমন একটি মুহূর্ত যখন সূর্যের দুপাশে সূর্যের মতই উজ্জ্বল আরও দুটি আলোকপিন্ড লক্ষ করা যায়। এই মুহূর্তটিকে অনেক যায়গায় মক সানস বা ফ্যান্টম সানসও বলা হয়ে থাকে এ অবস্থার বৈজ্ঞানিক নাম পারহেলিয়া। মাঝে মধ্যে দু পাশের এই আলোর প্রতিফলন থেকে থেকে বেরিয়ে আসা আলোর রেখা মিলে সূর্যের চারিদিকে একটি অর্ধ গোলাকার রিং এর মত সৃষ্টি করে।
আকাশে তিন সূর্যের উপস্থিতি এটাই প্রথম নয়। ঘটনাটি বিরল হলেও এমন ঘটেছে আরও অনেকবার। প্রস্তর যুগে প্রাকৃতিক এই ঘটনাকে অপয়া বলে মনে করা হতো।
আকাশে ভেসে থাকা বরফের ক্রিস্টালের ওপর সূর্যকিরণের প্রতিফলনই এ পারহেলিয়ার কারণ।
মাটি থেকে ৬ হাজার মিটার উঁচুতে বরফ কণা জমে মেঘ তৈরি হয়। সূর্যের আলো যখন পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয় তখন যদি বাতাসে ভেসে বেড়ানো তুষারকণায় পড়ে তখন তা ২২ ডিগ্রি কোণে প্রতিফলিত হয়। এসব তুষারকণা প্রিজমের মতো কাজ করে। ফলে প্রতিফলিত আলো সূর্যের চারদিকে বলয়ের সৃষ্টি করে। সূর্যের চারপাশে একটি গোলাকার রিংয়ের মতো আলোকচ্ছটা দেখা যায়। সূর্যোদয়ের সময়ে এ ঘটনা ঘটলে সানডগগুলো ধীরে ধীরে সূর্য থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। সূর্যের কাছে থাকলে এদের লালচে মনে হয় এবং দূরে যেতে থাকলে এরা ক্রমশ হলুদ, কমলা এবং শেষের দিকে নীলচে হয়ে যায়। মাঝখানে সূর্য থাকে আলোকচ্ছটার মতো। আর এর দু’পাশে দেখতে পাওয়া যায় সূর্যের উপচ্ছায়া। শীতপ্রধান দেশে এ ঘটনা বেশি ঘটে। কারণ সেখানে হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় বাতাসে বরফস্ফটিকের বেশি উপস্থিতি দেখা দেয়।
সান ডগস হচ্ছে গোধূলির প্রহরের এমন একটি মুহূর্ত যখন সূর্যের দুপাশে সূর্যের মতই উজ্জ্বল আরও দুটি আলোকপিন্ড লক্ষ করা যায়। এই মুহূর্তটিকে অনেক যায়গায় মক সানস বা ফ্যান্টম সানসও বলা হয়ে থাকে এ অবস্থার বৈজ্ঞানিক নাম পারহেলিয়া। মাঝে মধ্যে দু পাশের এই আলোর প্রতিফলন থেকে থেকে বেরিয়ে আসা আলোর রেখা মিলে সূর্যের চারিদিকে একটি অর্ধ গোলাকার রিং এর মত সৃষ্টি করে।
আকাশে তিন সূর্যের উপস্থিতি এটাই প্রথম নয়। ঘটনাটি বিরল হলেও এমন ঘটেছে আরও অনেকবার। প্রস্তর যুগে প্রাকৃতিক এই ঘটনাকে অপয়া বলে মনে করা হতো।
- সুইডিশ পেইন্টিং ভাদার্সোলস্তাভান-এ তিন সূর্য আঁকা রয়েছে।
- খ্রিস্টপূর্ব ৩৮৪ ও ৩২২ সালের মাঝে গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল তার মিটিওরলজি ৩ বইয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘দুটি নকল সূর্য আসল সূর্যের সঙ্গে উদয় হয়েছিল এবং সারাদিন তাকে ঘিরে থেকে আসল সূর্যের সঙ্গেই অস্ত হয়েছিল। এ দুটি নকল সূর্য সবসময় দুই পাশে থেকেছে, কখনও ওপর নিচে যায়নি। এছাড়া দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এদের সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময় বেশি স্পষ্ট দেখা গিয়েছিল।’
- খ্রিস্টপূর্ব ৩১০ ও ২৪০ সালের মাঝে কবি অ্যারাটাস তার ফেনমেনিয়া বইয়ে তিন সূর্যের আবির্ভাবের কথা বলে গেছেন। তার মতে এগুলো বৃষ্টি, বাতাস বা ঝড়ের পূর্বাভাস।
- এছাড়াও রোমান ইতিহাসে তাদের নানা বইয়ে একই সঙ্গে তিন সূর্যোদয়ের কথা উল্লেখ আছে। যেমন সিস্যারো-এর ‘অন দ্য রিপাবলিক’ বইয়ে এবং রোমান দার্শনিক অ্যাপিউলিয়াস-এর অ্যাপোলজিয়া ১৫-তে এ সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়।
- ইউরোপএর নানা অঞ্চলে নানা ভাবে বর্ণিত হয়েছে এই ঘটনা সম্পর্কে ইংল্যান্ডে ১৪৬১ সালে মরটিমেয়ারস ক্রস এর যুদ্ধে হিয়ারফরডশায়ার এক সাথে ৩ সূর্য দেখার ঘটনার বর্ণনা আছে। সে সময় ইয়র্কের কমান্ডার এডওয়ার্ড ৪ তার ট্রুপকে এই ঘটনা দেখিয়ে অনুপ্রানিত করেছিলেন এটি ঈশ্বর দ্বারা পাঠানো সংকেত বলে যার ফলে উনারা বিপুল বিক্রমের সাথে যুদ্ধে জিতেছিলেন। পরে এই ঘটনা শেক্সপিয়ার তার কিং হেনরি পার্ট ৩ নাটকে তুলে ধরেছিলেন। তবে সব থেকে পুরানো সঠিক ভিসুয়াল নির্দেশনা পাওয়া যায় সুইডিশ পেইন্টিং Vädersolstavlan এর মাধ্যমে। এর মানে হল সান ডগ পেইনটিং বা দা ওয়েদার সান পেইন্টিং।
- সুইডিশ শহর স্টকহোমে ১৫২০ সালের ২০শে এপ্রিল দুই ঘণ্টা সময় ধরে সূর্যকে ঘিরে বলয় তৈরি হয়ে থাকে। খুব দ্রুতই সে সময় একটি গুজব রটে যায় যে রাজা গুতাভ ভাজার নানা অপকর্মের কারনে ঈশ্বরের দিক থেকে এই সংকেত দেয়া হয়েছে যে রাজার ধংস নিশ্চিত। এই রটনার প্রেক্ষিতে ঘটনাটি অমর রাখতে সে সময়ের চ্যান্সেলর ও স্কলার অলাউস পেত্রি এই ছবি আঁকতে নির্দেশ দেন। পরে এই ছবি নিয়ে রাজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি এটিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন এবং অলাউস পেত্রি ও আরেকজন স্কলারকে শাস্তি দেন।আসল ছবিটি হারিয়ে গেলেও বর্তমানে ১৬৩০ সালের করা একটি কপি স্টকহোমের একটি চার্চে আজও শোভা পাচ্ছে।
- বিশ্বব্যাপী এই অ্যাটমস্ফিয়ারিক ইলিউশন ঘটে থাকে। শীত প্রধান দেশে এর সংখ্যা বেশি হলেও গ্রীষ্মপ্রধান দেশেও এমন ঘটনা দেখা গেছে প্রচুর। কিছুদিন আগে রাশিয়ার আকাশে , মঙ্গোলিয়ার আকাশে দেখা গেছে এই ঘটনা, ভিডিও চিত্রসহ প্রকাশ হয়েছে দ্য গার্ডিয়ান নিউজ সাইটে।গ্রিস, ইতালি, মেসিডোনিয়া, সুইডেন সহ মধ্য ইউরোপের অনেক দেশে এই দৃশ্য দেখা যায়।
আকাশে ভেসে থাকা বরফের ক্রিস্টালের ওপর সূর্যকিরণের প্রতিফলনই এ পারহেলিয়ার কারণ।
মাটি থেকে ৬ হাজার মিটার উঁচুতে বরফ কণা জমে মেঘ তৈরি হয়। সূর্যের আলো যখন পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয় তখন যদি বাতাসে ভেসে বেড়ানো তুষারকণায় পড়ে তখন তা ২২ ডিগ্রি কোণে প্রতিফলিত হয়। এসব তুষারকণা প্রিজমের মতো কাজ করে। ফলে প্রতিফলিত আলো সূর্যের চারদিকে বলয়ের সৃষ্টি করে। সূর্যের চারপাশে একটি গোলাকার রিংয়ের মতো আলোকচ্ছটা দেখা যায়। সূর্যোদয়ের সময়ে এ ঘটনা ঘটলে সানডগগুলো ধীরে ধীরে সূর্য থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। সূর্যের কাছে থাকলে এদের লালচে মনে হয় এবং দূরে যেতে থাকলে এরা ক্রমশ হলুদ, কমলা এবং শেষের দিকে নীলচে হয়ে যায়। মাঝখানে সূর্য থাকে আলোকচ্ছটার মতো। আর এর দু’পাশে দেখতে পাওয়া যায় সূর্যের উপচ্ছায়া। শীতপ্রধান দেশে এ ঘটনা বেশি ঘটে। কারণ সেখানে হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় বাতাসে বরফস্ফটিকের বেশি উপস্থিতি দেখা দেয়।
No comments:
Post a Comment